somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বিরহ বেলার গল্প

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ কে মিথ্যা কথা বলতে আমার একদম ইচ্ছা করে না । কিন্তু রাসেল কে মিথ্যা কথাটা বলতেই হল । মিথ্যা কথা বলতেই হল যে আজ ার তার সাথে দেখা করা হবে । জরুরী কাজ বেঁধে গেছে । তা না হলে টিয়াপাখি সাথে দেখা কিভাবে করতাম ? আর জরুরী কাজ অবশ্য ঠিকই বেধে গেছে ! টিয়াপাখির ষাথে দেখা করার চেয়ে বোধকরি আর জরুরী কাজ আমার কাছে আর নাই ।
গতকাল ঢাকা থেকে বাসায় এসেছি । আর আজকেই টিয়াপাখির সাথে দেখা হয়ে যাবে ভাবতেই পারি নি ! কাল যখন গাড়িতে ছিলাম টিয়াপাখির ফোন এসে হাজির । বললাম
-আমার সাথে দেখা করবে তো ? আমি কেবল তোমার সাথে দেখা করার জন্যই কিন্তু বাসায় আসছি ।
কিন্তু টিয়াপাখি আমাকে হতাশ করলো । বলল
-দেখা করা সম্ভব না ।
-কেন ?
-কেন মানে বোঝ না ??
আমি সব বুঝি । কিন্তু মনতো বোঝে না । কিছুতেই এই মন বোঝে না ! মনটা কেবল তোমাকে দেখতে চায় ! তোমার হাত টা ধরতে চায় !!
বাসায় আসার পরও তাই মনটা খানিকটা বিষন্নই ছিল । রাসেলকে ফোন দিয়ে বললাম যে বিকেল কোন কাজ নাই । আড্ডা মারা যাক !
রাসেলের কাছেই যাওয়ার জন্যই গোসল করছিলাম । আমার আবার গোসল করতে বরাবরই দেরি হয়ে যায় !! কেবল মাথায় পানি দিয়েছি তখনই মবাইলটা বেজে ওঠে ! আর কেঁপে ওঠে আমার বুকটা !
টিয়াপাখি ফোন দিয়েছে !!
কাঙ্খিত রিংটোনটা বেজে ওঠেছে !!
আমি ভেজা মাথা নিয়েই ঘরের দিকে দৌড় দিলাম ।
-হ্যালো !
-কি কর ?
-গোসল ! কেবল পানি ঢেলেছি !
-আশ্চর্য !! তাহলে ফোন কেন ধরলে ? পরে ধরতে !!
আমি হাসলাম । বললাম
-এখন গোসল করা থেকে তোমার ফোন ধরাটা আমার কাছে বেশি জরুরী ! এই সময় ফোন দিলা ?
-না মানে নিউমার্কেটে যাবো একটু পরে ! তুমি যদি আসো তাহলে ডেখা হতে পারে ।
-সত্যিই ??
-হুম ! আসো !! কেমন ??
-আমি আসছি । আসছি মানে চলে এসেছি !!
আর ভাল করে গোছল করা হল না । কোন রকম পানি ঢেলেই রওনা দিলাম । কতদিন পর টিয়াপাখিকে দেখবো !!
আমার টিয়াপাখিকে !!
আমি একটা ব্যাপার এখনও লক্ষ্য করি যে যখনই টিয়াপাখির সাথে দেখা হয় আমার বুকের ভিতর কেমন যেন একটা ধরফড়ানি শুরু হয় ! কিছুতেই শান্ত হয় না ।
আজও হল তাই । টিয়াপাখিকে দেখ মনটা আরো কেমন যেন উতলা হয়ে গেল । কিছুতেই মনটাকে ধরে রখতে পারছিলাম না । বারবার মনর হচ্ছিল আড়ো একটু কাছে যাই ।
হাতটা ধরি ওর !!
একটা চুম খাই !!
ইদানিং এই ইচ্ছাটা খুব প্রবল ভাবে দেখা দেয় !!
আচ্ছা এটা কি অন্যায় !
টিয়াপাখিকে বললাম কথাটা । সে চোখ রাঙ্গিয়ে বলল
-এটা অন্যায় ! এটা করা যাবে না ।
-এতো দিন পরে এসছি ! প্রায় ৪০ দিন পরে !
-৪০দিন কেন ৪০ বছর পরে এলেও এটা অন্যায় ।
মন খারাপ করে বলি
-এখন সবাই.........
কথাটা শেষ হল না । টিয়াপাখি বলল
-তাহলে সবার কাছে যাও ! আমার কাছে আসা লাগবে না ।
আমি আর কিছু বলতে সাহস পেলাম না । টিয়াপাখি একবার যেটা না বলবে সেটা হ্যা বলার কোন উপায় নাই । আমি ওর পিছন পিছন ঘুরতে থাকি !
এটাই বা কম কি !
বাসায় যাওায়র আগে টিয়াপাখিকে পাউন্ড খানেক কেক কিনে দিলাম । টিয়া পাখি কেক খুব পছন্দ করে ।
রাতের বেলা ফোন কথা হচ্ছিল !! দেখলাম মনটা ভালই ওর !! আমার মনটাও ভাল খুব । আজতো ওর সাথে দেখা হয়েছে । এটার থেকে আনন্দের বিষয় আর কি হতে পারে !
আমি বললাম
-মন ভাল তোমার ?
-হুম ! ভাল । খুব ভাল ।
-কেন ?
-তোমার সাথে দেখা হল না !
আমার মনটা ভাল হয়ে গেল আরো । আমি আবার বললাম
-কেক খেয়েছো?
-হুম ! বাড়ির সবাই খেয়েছে !
-আচ্ছা, কেক টা খেতে তোমার কতক্ষন লেগেছে ! মানে কতক্ষনে শেষ করেছ ।
-সবাই মিলে ?
-না । কবলে তুমি যত টুকু খেয়েছ সেটা খেতে কতক্ষন লেগেছে ?
-এই দুই আড়াই মিনিট । কেন ?
-আচ্ছা কেউ যদি তোমাকে তোমার প্রিয়া জিনিসটা খাওয়ায় তোমারও নিশ্চই উচিৎ তাকে তার প্রিয় জিনিসটা খাওয়ানো । তাই না?
টিয়াপাখি কি যেন ভাবলো কিছুক্ষন ! তারপর বলল
-হুম ! তা তো উচিৎ ।
-আমি তোমাকে তোমার প্রিয়া কেক খাইয়েছি ! এখন.........
-আচ্ছা বল কি খাবা ?
-বলবো ?
-হুম ! কি রান্না করে খওয়াবো ? নাকি কিছু কিনে খাওয়াবো ? তোমার প্রিয় জিনিসটাই খাওয়াব ! নাম বল !
-আমি এমন একটা জিনিস খেতে চাই যেটা রান্না করা যায় না । কেনাও যায় না । কিন্তু খেতে খুব মিষ্টি !
টিয়াপাখি খানিক ক্ষন চুপ করে থেকে বলল
-তুমি আসলেই অনেক দুষ্ট হয়ে গেল । সারাক্ষন মাথার ভিতর কেবল এই বদ চিন্তা !
-তুমি কিন্তু বলেছ দিবে !
-আসো দিচ্ছ !
-সত্যি আসবো !!
-সরররররররররররর !!
আমি বললাম
-এখনতো দিচ্ছ না । আগে কেবল বিয়ে হতে দাও । যেদিন থেকে তোমার নাম মিসেস রহমান হবে সেদিন তোমার খবর আছে !
টিয়াপাখি হাসতে হাসতে বলল
-কি করবা ? মারবে আমাকে ?!
-মারবো ?? আগে হও আমার বউ । তারপর দেখাবো মজা !! এখনতো কিছু দিচ্ছ না তখন শুধে আসলে উসুল করবো !!
-কচু করবা ? আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তুমি কিছু করতেই পারবে না । তোমার দৌড় আমার জানা আছে !!
এই বলে টিয়পাখি আবারও হাসতে থাকে !!
আসলে কথা সত্য ! ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভবই না !

যদিও গল্পের নামটা বিরহ বেলার গল্প কিন্তু কোন বিরহের কথা লেখা হয় নি । আসলে টিয়াপাখিকে সারাটা সময় এতোপরিমান মিস করি যে আলাদা করে বিরহের কথা লেখা সম্ভব না । লিখতে গেলে যেন আর লেখা শেষই হবে না !! আমি ঐ বিরহের কথা গুলো মনে রাখতে চাই না কিছুতেই !! আমি কেবল তার সাথে কাটানো সুন্দর কথা গুলোই মনে রাখতে চাই !!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১১:৩৫
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×