somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি ফেসবুক পোষ্ট এবং ব্লগার বেঈমান আমির জীবনে ঝড়ের পূর্ভাবাস !!

০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকাল থেকে অপেক্ষা করছি । যে কোন সময় ঝড় এসে পড়তে পারে । অবশ্য যে কাজ করেছি আমি ভেবেছিলাম এঞ্জেলিকা কাল রাতেই আমাকে ফোন করবে ।
কিন্তু করে নি ।
আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে ও আজ হাজির হবে । তারপর মোটামুটি ঝড় তুলে দেবে ।
নিউইয়ার্ক বাসী যেমন স্যান্ডির জন্য অপেক্ষা করছে আমি তেমন অপেক্ষা করছি সাইক্লোন এঞ্জেলিকার জন্য ।
আমোরে এঞ্জেলিকা ।
অবশ্য আমি ঠিক এখনো জানি না এঞ্জেলিকা ঠিক কি বেগে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়বে । তবে সব রকম প্রস্তুতি মুলক ব্যবস্থা আমি নিয়েই রেখেছি । দেখা যাক !
ঘড়িতে যখন সাড়ে দশটা বাজে এঞ্জেলিকা অফিস রুমে এসে ঢুকলো ।
আমি প্রতিরোধ মুলক ব্যবস্থা আরো জোরদার করলাম । এঞ্জেলিকা খুব স্বাভাবিক ভাবে আমার সামনের চেয়ারটাতে এসে বসল ।
আমি প্রতিরোধ আরো জোরদার করলাম ।
প্রথম ধাক্কাট ঠিকমত প্রতিহত করতে পারলেই আমি যুদ্ধে জয়ী হব । এঞ্জেলিকা এখনও চুপ করেই বসে আসে ।
আসলে প্রবল ঝড়ের আগে যেমন একটা দমকা হাওয়া ছাড়ে আভাস দেয় যে বড় কোন কিছু আসছে এটা তারই লক্ষ্যন ।
আমি এঞ্জেলিকাকে বছর দুয়েক ধরে চিনি । খুব ভাল করেই ওর স্বভাব আমি চিনি । বড় রকমের ঝগড়া শুরু করার আগে ও এই নিরবতা ।
-এই সানিয়াত টা কে ?
এঞ্জেলিকার প্রথম কথা ।
আমি বিগলিত হাসি দিয়ে বললাম
-কোন সানিয়াত ?
এঞ্জেলিকার চোখ একটু ছোট হল ।
-সানিলা সানিয়াত । তোমার ফেসবুক ফ্রেন্ড ।
-আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড ? সিওর তুমি ?
-মোশাররফ ফাজলামী করবা না । তুমি খুব ভাল করে জানো আমি কি বলছি ।
-এই নামে তো ...
-মিস্টার মোশাররফ মিথ্যা কথা বলবা না ।
আমি বুঝতে পারছি এঞ্জেলিকা নিজের রাগটা চেপে রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু খুব বেশিক্ষন রাখতে পারবে বলে মনে হয় না । আমাকে বলল
-ফেসবুক অন কর ।
-কি ?
-ফেসবুক অন কর ।
আমার ফেসবুক অনই ছিল ।
এঞ্জেলিকা আমাকে ওয়ালে দেখিয়ে বলল
-এটা কে ?
আমি এমন একটা ভাব করলাম যেন এই নাম আমি প্রথম দেখছি । এঞ্জেলিকা ভুরু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন । তারপর বলল
-তুমি এটাকে চিনো না ? এমনি এমনি একশটা কমান্ট করলো মানুষ ? তারমধ্যে দেখছি তোমার নিজেরই তো তিরিশটা । কি লিখেছ এতো ? আর কোন মেয়ে তোমার ওয়ালে পোষ্ট করবে কেন ?
-আরে কত মেয়েই পোষ্ট করে ।
-শোন তোমার দেশি মেয়েদের মত আমাকে তুমি ভুগোল বোঝাতে পারবা না । তুমি এমন কি টম ক্রুজ না যে মেয়েরা তোমার পিছে পিছে আসবে । তোমার ওয়াল প্রেমের বানী লিখে ভরিয়ে ফেলবে । আমার হৃদর তোমার হাতে দোলে । আহা দোলে । ফাজিল মেয়েটা আবার লিখেছে দোলাও । তিনবার লিখেছে দোলাও ! আর তুমি দোলাচ্ছ ?
-দেখো যে কেউ লিখতে পারে ! আমি কি করবো ?
এঞ্জেলিকা আমার দিকে ঠান্ডা চোখে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষন । তারপর বলল
-তোমার ব্লগে এক ছোট ভাই আছে না কেমন ন্যাকা ন্যাকা গল্প লিখে । ঐ গল্প পড়ে নিজেকে ঐ গল্পের নায়ক ভাবতে শুরু করেছ ? শোন মিস্টার হুসেন মোহাম্মদ মোশাররফ, জীবনটা তোমার ঐ ব্লগারের লেখা ফাউল গল্পের মত না যে তুমি যা করবা আর মেযে গুলো সব মুখ বুজে সহ্য করে নিবে ? তা তুমি ভেবো না । আমার বাবাকে তুমি চেনা না ?
আমার খুব ইচ্ছা করছিল বলি যে কেন তুমি চেনো না ? কিন্তু এই কথা বললে এঞ্জেলিকা রাগে ফেটে পরবে । এমনিতেই বেশ রেগে গেছে ও ।
আমার মনে হল এবার সত্য কথাটা বলে দেওয়াই উচিত্‍ ।
এঞ্জেলিকার বাবার কানে যদি কথা যায় তাহলে ব্যাপারটা একটু ঘোলা হয়ে যাবে । ওর বাবা রোমের বিখ্যাত ল ইয়ার দের একজন । ফান না আবার গলায় ফাঁস হয়ে দাড়ায় ।
এঞ্জেলিকা উঠে দাড়াল ।
-আমোরে একটু শোন !
-তোমার সাথে আমার কোন কথা নাই । আমি আমার বাবার কাছে যাচ্ছি ।
-হেই বেবি ! একটু শোন । বেবি । আমোরে ! এঞ্জেলিকা শুনো ।
কিন্তু কে শুনে কার কথা ?
এঞ্জেলিকা আর দাড়ালই না ।
আমি পড়লাম মহা চিন্তায় । এই যে হুমকি দিয়ে গেল তাতে তো একট একটু চিন্তার বিষয় তো বটেই ।
সব দোষ ঐ ফাজিলটার । আমার আর এঞ্জেলিকার সব কিছু ঠিক মতই চলছিল । কিন্তু ঐ ব্যাটা অপু তানভীরের কথা শুনতে গিয়েই এই ঝামেলাটা সৃষ্টি হল ।
ব্যাটার সাথে একদিন ফেসবুকে চ্যাটিং করছিল । এঞ্জেলিকার কথা জানতোই সে । আমাকে বলল
-ভাই অপু কি আপনাকে সত্যি অনেক ভালবাসে ?
-হুম অনেক বাসে ।
একটু গর্ব করেই বলল । কথাটা আসলেই সত্য । আমোরে আসলেই আমাকে অনেক ভালবাসে । অপু বলল
-আর একটু ভালবাসা বাড়াইতে চান ?
-মানে ? কিভাবে ?
-শোনেন মেয়েরা সব কিছু সহ্য করে নেয় কিন্তু প্রেমের ক্ষেত্রে কম্পিটিটর একদম সহ্য করে না । যখন সে দেখবে যে অন্য কোন মেয়ে আপনার প্রতি ইন্টারেস্টেড তখন সে একটু ইনসিকিউর ফিল করবে । তখন আপনার প্রতি তার ভালবাসা আরো বেড়ে যাবে ।
-সত্যি নাকি ? এমন ন্যাকামো মেয়েরা করে নাকি ?
-আরে করে মানে হান্ড্রেড পার্সেন্ট করে ।
-তা আমি এমন মেয়ে আমি পাবো কোথায় ?
-আরে তৈরি করে ফেলেন ?
-কিভাবে তৈরি করবো ? এটা কি হালুয়া রুটি নাকি চাইলাম আর তৈরি করে ফেললাম ।
অপু এক গাদা হাসির ইমো পাঠালো ।
-দাড়ান ।
একটু খানি অপেক্ষা করতেই দেখলাম একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এসে হাজির । রিকোয়েস্ট ওপেন করে দেখলাম একটা মেয়ে ।
সানিলা সানিয়াত !
এটা আবার কে ?
চ্যাটিংয়ে আবার নক ।
-ভাই পেয়েছেন ?
-এটা কার রিকোয়েস্ট ?
-আরে ভাই একসেপ্ট করেন । তারপর দেখেন মজা ।
আমি রিকোয়েস্ট গ্রহন করলাম । সব চুপচাপই ছিল । গতকাল ঐ সানিয়াত আমার ওয়ালে একটা পোষ্ট করলো ।
আমার হৃদয় তোমার তোমার হাতে দোলে ।
পোষ্টটা মোটামুটি সবাই দেখেছে । আর সবাই এতো ইন্টারেস্টেড হয়ে গেল যে দেখতে দেখতে একশ এর উপর কমান্ট এসে হাজির ।
অপু ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে জানালো যে ঝড় শুরু হয়ে গেছে আপু মনে । দেখবেন কাল সকালের ভিতরেই আপু এসে হাজির হবে । একটু রাগারাগি করবে কিন্তু শেষে দেখবেন কি বলে । একটু ঠিক মত সামলাতে পারলেই হল ।
আমি সেটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম কিন্তু এঞ্জেলিকা যে কথা বলে গেল তাতে তো এখন আমার খবর হয়ে যাচ্ছে । এই মেয়ে যদি সত্যিই ওর বাবার কাছে যায় আমার তো খবর আছে ।

এঞ্জেলিকার বাবা রোমের একজন বিখ্যাত ল-ইয়ার । আমি লোকটাকে খুব ভাল করেই চিনি । লোকটা যে মানুষ কে কিভাবে বিপদে ফেলতে পারে তা খুব ভাল করেই জানি !
ইনফ্যাক্ট এঞ্জেলিকার সাথে পরিচয় হয়েছেই ওর বাবার মাধ্যমে । এঞ্জেলিকার বাবা ওলিন ডিনোমরিয়া আমাদের কম্পানির লিগ্যাল এডভাইজার । কম্পানির একটা বিষয় নিয়ে মিস্টার ওলিনের সাথে বেশ কয়েকবার সিটিং হয়েছে । কখনও অফিসে আবার কখনও ওনার বাসায় । এরকম একব সিটিংয়ে এঞ্জেলিকার সাথে পরিচয় আমার ।
লম্বা কালো চুল আর নীল চোখের দিকে আমি কিছুক্ষন কেবল তাকিয়েই ছিলাম ।
ও হাসতো । জল তরঙ্গের মত সেই হাসি আমাকে বিমোহিত করে রাখতো । একদিন এঞ্জেলিকাকে লাঞ্চে নিয়ে গেলাম । মেয়েটার দিকে ভাল করে তাকিয়ে থাকি । এঞ্জেলিকা হেসে বলল
-এমন করে তুমি তাকিয়ে থাক কেন ? আমি আগেও দেখেছি । তুমি বাবার সাথে কথা বলছ কিন্তু তাকিয়ে আছ আমার দিকে । কেন বল তো ?
আমি বাংলায় বললাম
-সখি তোমারে দেখিয়া চিন চিন করে বুকে বাজে সুখে ব্যাখা ।
-মানে ? তুমি কি বললে বুঝি নাই ।
আমার বাংলা বোঝাতে বেশ খানিকটা বেগ পেতে হল । বোঝানো শেষে হলে এঞ্জেলিকা বলল
-চিন চিন ব্যাথা মানে কি ? আর আমাকে দেখে চিন চিন হওয়ার কারন তো বুঝলাম না ।
আমি কেবল তাকিয়ে রই মেয়েটার দিকে । আস্তে আস্তে আমার সম্পর্ক ভাল হতে থাকে ।
বিশেষ করে ওর বাংলা কবিতার প্রতি একটা আকর্ষন তৈরি হয় । ওকে কবিতা শোনাতাম তারপর আপ্রাণ চেষ্টা করতাম তার অর্থ বোঝাতে । খুব চমত্‍কার কাটছিল দিন গুলো ।
কেন যে ব্যাটা ফাজিলটার কথা শুনতে গেলাম !!
এখন এঞ্জেলিকা যদি ফিমেল হ্যারেজমেন্ট অথবা সিটিং কেস করে দেয় , আমি পড়ে যাবো মহা বিপদে ।
জব যাবে তার উপর আবার ইটালীর ভিসা যাবে । আমাকে সোজা দেশে পাঠিয়ে দেবে ।
এই সব হয়েছে ঐ ব্যাটা ফাজিল অপু টার জন্য । ঐ ফাজিলটাকে যদি হাতের সামনে পেতাম থাপড়াতে দাত খুলে দিতাম ।
ব্যাটা ফাজিলের ফাজিল ।
ঐ দেখ ফাজিলের নাম নিয়েছি আর ফাজিলটা হাজির । ফেসবুকে নক করেছে ।
-ভাই কেমন আছেন !
-ভাল আছি ।
(একবার তোরে কাছে পাই তারপর বোঝাবো কত ভাল আছি !)
-কাম হইছে ভাই ?
-হুম ।
(খুব কাম হইছে !)
-আপুনি এসেছিল ।
-হুম এসেছিল ।
-কি বলেছে ? আমি যেমনটা বলেছি হয়েছে না ?
-খুব হয়েছে ।
মনে মনে বললাম একবার এদিক ওদিক কিছু হোক তারপর তোকে মজা বোঝাবো । দেশে গিয়ে তোকে খুজে বের মজা দেখাবো ।
ভুল ভাল গল্প লিখে মানুষকে বিভ্রান্ত করা তখন বের করবো ।

কয়েকবার ফোন দিতে গিয়েও ফোন দিলাম না । এঞ্জেলিকার মেজাজ এখন গরম আছে । এখন আমি প্রে করতে পারি যে ও যেন এই গরম মেজাজ নিয়ে ওর বাবার কাছে না যায় । গেলেই খবর আছে আছে ।

এঞ্জেলিকা আসলেই মিষ্টি একটা মেয়ে । ওকে ভাল লাগার প্রধান কারন ছিল বাঙালী মেয়েদের মত লম্বা কালো চুল । ইতালীর মেয়েরা সাধারনত এতো লম্বা চুল রাখে না তার উপর আবার কালো চুল । আর সাথে ছিল ওর নীল চোখ ।
আমি বুঝতে পারতাম এঞ্জেলিকা নিজেও এই বিষয়টা বেশ ভালই বুঝতে পারত । ওর চোখে তাই একটু প্রস্রয়ের হাসি আমি প্রায় দেখতাম । আর তাছাড়া আমাকে খুব একটা অপছন্দ করার মত খুব একটা কারনও নেই । আর একটা কারন অবশ্য ছিল ।
এঞ্জেলিকার পড়াশুনার বিষয় ছিল বিশ্ব ভাষা ও সাহিত্য । আমার বলা কবিতা আর বাংলা ভাষার প্রতিও ওর বেশ আগ্রহ ছিল । তাই আমাদের কাছে আসতে খুব বেশি সময় লাগে নি । সব কিছু ঠিকই ছিল কেবল ঐ ফাজিলটার কথা না শুনলেই হত ।

দিনটা বিষন্ন ভাবেই কাটলো । মনের ভিতর একটু সংঙ্কাও অবশ্য ছিল । ফেসবুকে ঢুকে সবার আগে ঐ সানিলা সানিয়াতকে আনফ্রেন্ড করলাম । অপু তানভীর কে অনফ্রেন্ড করতে গিয়ে করলাম না ।
যোগাযোগ রাখি ।
যদি যেমন তেমন কিছু হয় তাহলে ব্যাটাকে একটা ধোলাই দিতে হবে না ? সন্ধ্যার একটু আগে অফিস থেকে বের হলাম । কয়েক কদম এগিয়েছি এমন সময়ই ফোন বেজে উঠল ।
এঞ্জেলিকার ফোন ।
রাগ কি কমলো ?
নাকি ও ওর বাবার সাথে কি বলেছে সেটা বলতে আমাকে ফোন করেছে ? খোদা জানে !
আমি ফোন রিসিভ করলাম ।
-কোথায় যাও ?
কন্ঠস্বর শুনে একটু সংশয় কাটলো । রাগ মনে হয় কমলো একটু। বললাম
-অফিস থেকে বের হলাম । বাসায় যাবো ।
-দাড়াও ।
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না ও দাড়াও বলতে কি বলতে চাইল । একটু পরেই পেছন থেকে কেউ আমার কাধে হাত রাখল । পেছনে ঘুরে দেখি এঞ্জেলিকা দাড়িয়ে ।
আমি বেশ অবাক হলাম ওকে দেখে । সকালবেলা যে রকম রাগত ভাব দেখেছিলাম এখন ততটাই নমনীও মনে হল । আর সব চেয়ে অবাক হলাম ওর পোষাক দেখে ।
সাদা আর নীল রংয়ের একটা সেলোয়ার কামিজ । এটা আমি ওকে কিনে দিয়েছিলাম ।

আমি তো ভয়েই ছিলাম কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অপুর কথাই ঠিক ছিল । আমার মনে তখনও অবশ্য একটু সন্দেহ ছিল । কাল অপুকে যখন বললাম
-আচ্ছা তুমি যা বললে তার সবই ঠিক আছে । কিন্তু ইটালীও মেয়েরাও কি বাঙালী মেয়েদের মত ঐ রকম আচরন করবে ?
-আরে ভাই , মেয়ে ইটালীও হোক আর বাঙালী হোক সবাই এক রকম অচরন করবে ।
-তাই । না ? তুমি নিশ্চিত তো ?
-একদম ১০০ নিশ্চিত ।

মাঝ খান দিয়ে যে রকম হয়েছিল আমি তো ভয়ই পেয়েছিলাম । আমি এঞ্জেলিকার একটু কাছে গিয়ে ওর হাত ধরলাম ।
-আই এম সরি ।
-কেন সরি কেন ?
-ঐ যে সকালবেলা তোমার সাথে মিসবিহেব করলাম ।
-না না । ঠিক আছে । আমি কাজই এমন করেছি । কিন্তু বিশ্বাস কর আমার একদম দোষ ছিল না ।
-তাহলে ঐ মেয়ে তোমার ওয়ালে ঐ কথা কেন লিখল কেন ?
-আরে ওটা কোন মেয়ে না । অপু কে চিনো না ?
-কোন অপু ?
-ঐ যে ব্লগে লেখে ? তোমাকে যার গল্প পড়ে শোনাই ?
-হুম ।
-ঐ টা ওর ফেইক একাউন্ট । ও কেবল একটু মজা করেছে ।
এঞ্জেলিকা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে রইল ।
-সত্যি বলছ তো ?
-একদম সত্যি ?
আমি একটু অবাকই হলাম । এঞ্জেলিকার চোখ দিয়ে টুপ করে একফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো ! আমার আর একটু কাছে এসে এঞ্জেলিকা বলল
-জানো কাল রাতে আমি একটুও ঘুমাতে পারি নি ! বারবার মনে হচ্ছিল যে আমার খুব প্রিয় কিছুতে অন্য কেউ ভাগ বসাচ্ছে ! এটা আমার কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না ।
ব্যাটা তো ঠিকই বলেছিল ! ভালবাসার প্রতিযোগি কেউ সহ্য করে না !
এঞ্জেলিকা আবার বলল
-এইজন্য সকাল বেলা ঐরকম ব্যবহার করলাম । প্লিজ কিছু মনে কর না !
-না না । ঠিক আছে । তোমার তো রাগার রাইট আছে !
এঞ্জেলিকা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তবে এই রকম কাজ আর কারবা না ! ঠিক আছে !

আমি আবার করি এই কাজ ! আমার দরকার নাই ভালবাসা বৃদ্ধি করার !!





আমার কিছু কথাঃ
বেশ কিছু দিন ধরে কেন জানি কোন গল্পই লিখতে পারছিলাম না । যদিও যা লিখি খুবই হালকা টাইপের লেখা । তবুও নিজের আনন্দের জন্য লিখি তো । নিজের পছন্দের মানুষ গুলোর জন্য লিখি । কদিন থেকে সেই লেখাও আসছিল না । এমন না যে মাথা কিছু আসছিল না, মাথা ভিতরে সব কিছু ছিল কিন্তু মন থেকে কেন জানি লেখা আসছিল না । অনেক চেষ্টা করেও কোন লেখা আসছিল না । মনে হল বুঝি আমার লেখার ইতি বুঝি এখানেই ।
কিন্তু সেদিন মোশাররফ ভাইয়ের ফেবু ওয়ালে এক মজার পোষ্ট দেখলাম । সানিলা সানিয়াতের পোষ্ট । সেখান থেকে গল্প লেখার আইডিয়াটা এল । একটু ভয় ছিল লেখাটা শেষ করতে পারবো না । কিন্তু এক বৈঠকে লেখাটা শেষ হল ।
অনেক ভাল লাগছিল এই ভেবে যে না আমি আবার লিখতে পারছি । এটাই সব থেকে আনন্দের কথা !!!
একটু ভয়ে ছিলাম মোশাররফ ভাই লেখাটা পড়ে কি মনে করে ! কিন্তু লেখাটা উনি পজেটিভলি নিসেন । ওনাকে ধন্যবাদ ।
আর এটা কেবলই একটা কাল্পনিক গল্প ! আর কিছু না । কেবলই মজা করার জন্যই লেখা !
কিন্তু একটা কথা । গল্পটা কাল্পনিক হলেও কিন্তু ফেসবুক পোষ্ট টা কিন্তু সত্যি হয়েছিল ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৪
৬২টি মন্তব্য ৬২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×