somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিনিশিং লাইন !!

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমিনুল ইসলাম জুতার ফিতা বাঁধতে বাঁধতে তার সহকারী জাবেদকে ডাক দিলেন । জাবেক একটু দুরে ক্লাবের কয়েকটা ছেলেকে কি যেন বলছিল । ডাক শুনে আমিনুল ইসলামের দিকে এগিয়ে এল ।
-বলুন স্যার ।
-সবাই চলে এসেছে ?
-মোটামুটি স্যার । আর দশ মিনিটের ভিতরেই অনুশীলোন আরাম্ভ হবে ।
-আচ্ছা ।

আমিনুল ইসলাম আবাহনী স্পোটিং ক্লাবের জুনিয়র সেকশনের একজন কোচ । প্রতিদিন সকালবেলা জুনিয়র খেলোয়ারদের প্রশিক্ষনের দায়িত্ব তার উপর থাকে । আমিনুল ইসলাম জাবেদকে বলল জাবেদ
-এই ছেলেটা কি আমাদের ক্লাবের কেউ ?
-কোন ছেলেটা ?
-ঐ যে দৌড়াচ্ছে ।

জাবেদ আমিনুল ইসলামের নির্দশিত দিকে তাকাল । আমিনুল সাহেব বলল
-এখন তো জুনিয়রদের সময় । এই ছেলেটা এখানে কি করছে ? আর আমাদের কি এভাবে মাঠের চারপাশে দৌড়ানোর কোন অনুশীলোন আছে নাকি ?
-আসলে স্যার ছেলেটা আমাদের ক্লাবের কেউ না । কদিন থেকেই দেখছি ছেলেটা এখানে এসে দৌড়ায় । সেই ভোর বেলা থেকে । স্যার আসতে মানা করে দেবো নাকি কাল থেকে ?
-না থাক, দরকার নাই ।

জাবেদ চলে গেল ছেলে গুলোর কাছে । আমিনুল ইসলাম ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলেন ।
বয়স কত হবে ?
তেইস চব্বিসের বেশি হবে না । আর ছেলেটাকে দেখে পেশাদার দৌড়বিদের মত মনে হচ্ছে না । কেমন দুর্বল আর এলোমেলো ভাবে পা ফেলছে ।

আমিনুল ইসলাম খানিকটা কৌতুহলী হলেন ছেলেটার দিকে । ছেলেটার চেহারা দেখেই মনে হচ্ছে দৌড়ানোর খুব বেশি অভ্যাস নেই । তাহলে ছেলেটা দৌড়াচ্ছে কেন ?

জগিংয়ের জন্য মানুষ সকালে দৌড়ায় সেটা এক জিনিস ! কিন্তু এটা ঠিক সেই রকম মনে হচ্ছে না । জগিং করতে এসে মানুষ নিশ্চই আবাহনী মাঠের বিশটা চক্কর মারবে না ! ছেলেটার দৌড়ানোর অবস্থা দেখে তিনি ভাবছিলেন ছেলেটা আর খুব বেশিক্ষন দৌড়াতে পারবে না । তার মনের কথা মনেই মনেই রয়ে গেল, ছেলেটা মাঠে ভিতর পরে গেল ।

কেউ ছেলেটাকে খুব বেশি লক্ষ্য করছিল না, তাই কেউ দৌড়েও এল না । আমিনুল ইসলামের মনে হল তিনি ছেলেটার কাছে একবার যান। জানতে চান যে সে কে এবং কেন এরকম ভাবে এখানে দৌড়াচ্ছে । কিন্তু কি মনে হল আর গেল না । ছেলেটা ততক্ষনে উঠে বসেছে । দুর থেকেই আমিনুল ইসলাম দেখতে পেলেন যে ছেলেটা এখনও মুখ হা করে দম নিচ্ছে ।



অপু মনে হল ও আর এই পৃথিবীতে নেই ! কিছুক্ষন যেন দম নিতেই পারছে না । মুখ হা করে কিছুক্ষন মাঠে ভিতর শুয়ে রইলো উপুর হয়ে ! দম নেওয়ার চেষ্টা করছে । কিন্তু ফুসফুসটা এতো জোরে লাফাচ্ছে যে যে ঠিক মত বাতাস যেন ঢুকতে পারছে না ।
আরো পাঁচ মিনিট পরে অপু উঠে বসলো । এখন একটু ভাল করে দম নিতে পারছে । মনে মনে ভালবো আজকেও হল না ।
আজ প্রায় মাস খানেক ধরে অপু চেষ্টাটা করে যাচ্ছে। অপু জানে ওর মত মানুষের পক্ষে এটা করা খুব বেশি সহজ না কিন্তু আবার একবারে খুব অসম্ভবও না ।
প্রথম যেদিন অপু আবাহনী মাঠটা চক্কর মারা শুরু করেছিল অপু খুব ভাল করেই মনে আছে কেবল ৭ টা চক্কর মারার পরই অপু থমকে গিয়েছিল ।
আর আজ ? প্রায় মাস খানেক পর আপু আজ একবারে ৪১ বার চক্কর মেরেছে । প্রতিবারই অপু যখন থেমে যায় বা পড়ে যায় ওর মনে হয় যেন পুরো পৃথিবীতে আর কিছু নেই । ওর পা দুটো যেন আর কোনদিন চলবে না । কিন্তু তবুও সে কোথা থেকে শক্তি পায় কে জানে ?

যতবারই অপু তার শক্তি হারিয়ে ফেলতে যায় ততবারই কেবল নিশির চেহারাটা ভেসে উঠে । অপুর মনে হয় নিশিকে ওর বোঝাতে হবে যে অন্য সবার মত সে ওকে ছেড়ে যাবে না । ওর জন্য অপু সম্ভব সব কিছু করতে পারে !
আসলেই তো সব কিছু করতে পারে । তা না হলে নিশির মাত্র একটা মুখের কথা শুনে ও কেন এভাবে প্রতিদিন এভাবে দৌড়াদৌড়ি করবে !
খানিকটা হাস্যকর শোনাবে !
পাগলামোও বটে !
কিন্তু ভালবাসায় পাগলামো না থাকলে কি চলে ?

অপুর এখনও মনে আছে সে দিনটা ! পরপর তিনবার নিশি অপুর প্রোপোজ ফিরিয়ে দিয়েছিল ! তবুও অপু বারবারই নিশির দুয়ারে গিয়ে হাজির হয় ! একবার কি করলো নিজের হাত কেটে বড় করে লিখল আই লাভ ইউ !!
এটা দেখে নিশি যেন আরো খেপে গেল ।
ওর সাথে সে কি রাগারাগি !
নিশির ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলল
-তুই কেন করছিস এটা ? এমন পাগলামো কেন করছিস ?
-তোকে ভালবাসি ! তাই !
-শোন অপু কারো ভালবাসা গ্রহন করার মানষিকতা এখন আমার নাই !
অপু কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল
-তুই আমাকে কত দিন ধরে চিনিস ?
-অনেক দিন ধরে !
-তাহলে তোর কেন মনে হল রিয়াদের মত আমিও তোকে ছেড়ে চলে যাবো ?
নিশি কিছুক্ষন অপু দিকে তাকিয়ে রইলো ! তারপর বলল
-শোন অপু স্বার্থে আঘাত লাগলে ভালবাসা পালানোর পথ খুজে পায় না ! বুঝেছিস ?
অপু এবার নিশির হাতটা একু জোরে ধরে বলল
-তুই কি প্রমান চাস বল ?
-প্রমান ? তুই কি মনে করিস এই ভাবে হাত কেটে নিজের রক্ত দিয়ে নাম লিখলেই আমার প্রতি ভালবাসা প্রমান হয়ে গেল ?
-তুই আমাকে কি করতে বলিস ? কি করলে তোর মনে হবে যে আমি তোকে ভালবাসি !!
নিশি ওকে বলল
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমার জন্য একটা কাজ কর ! আমি জানি তুই খুব অলস টাইপের ছেলে ! ঘুমাতে তোর খুব ভাল লাগে ! আমার জন্য প্রতিদিন তুই তোর এই আলসামী ছেড়ে দে ! আমাদের বাড়ির সামনে যে আবাহনী মাঠটা আছে না তুই যেদিন ঐ মাঠে একবারে ১০০ চক্কর মারতে পারবি সে দিন বুঝবো তুই আমার জন্য সব করতে পারবি !
-নিশি এটা আবার কি ধরনের কথা হল ? তুই খুব ভাল কর জানিস আমি এটা করতে পারবো না । ১০০ চক্কর মারা সম্ভব না বল ?
-এই তো , লাইনে এসেছিস !! তাহলে এর পর থেকে আমাকে ভালবাসিস এই কথাটা আর মুখে আনিস না ! যেদিন ১০০ চক্কর মারতে পারবি সেদিন দেখবি আমি ফিনিশিং লাইনে তোর জন্য দাড়িয়ে আছে ! এর আগে না ।

অপুর জন্য একটু কষ্টেরই ছিল ! যে অপু কোনদিন সকাল ১০ আগে ঘুম থেকেই উঠে নাই সে এখন প্রতিদিন আযানের সময় ঘুম থেকে উঠে. এখানে এসে দৌড়ানো শুরু করে । অপুর বিশ্বাস একদিন ও ঠিকই পারবে । নিশির মনে বিশ্বাস জাগাতে পারবে ।


আমিনুল ইসলমের মনে হয়েছিল ছেলেটার দৌড়ানোর কারোরিই চোখে পড়ছে না । পড়লেও হওতো কেউ লক্ষ্য করছে না । স্পোর্টিস মাঠ ! যে কেউ প্রাক্যটিস করতেই পারে এখানে এতো লক্ষ্য দেওয়ার কি আছে । কিন্তু মাঠে পশ্চিম পাসের বড় বিল্ডিং থেকে একটা মেয়ে প্রতিদিন ভোর বেলা থেকেই ছেলেটির দৌড়ানোর দেখে আর চোখ মোছে । নিশি কোনদিন ভাবতেও পারে নি অপু ওর মুখে কথাটা এতো সিরিয়াসলি নেবে । নিশি কেবল অপুকে কাটানোর জন্যই এমন কথা গুলো বলেছিল।
কিন্তু পাগল ছেলেটা এমন কিছু করে ফেলবে সেটা ও কিভাবে জানতো !

প্রতিদিন অনু যখন ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায় সব থেকে বেশি কষ্ট লাগে নিশির । বাথরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে অনেকক্ষন কাঁদে ।
অপু এই পাগলামো দেখে নিশি নিজেই অপু কাছে গিয়েছিল এসব বন্ধ করতে । অপু ভালবাসা গ্রহনও করেছিল । কিন্তু অপু তবুও থামেনি । কেবল নিশিকে বলেছিল যে আজ যদি আমি এটা না করতে পারি আমি নিজের কাছেই পরাজিত হয়ে যাবো ! আমার সারা জীবন কেবল একটা কথাই মনে হবে আমি মনে হয় আমার ভলবাসার মানুষটিকে ঠিক মত ভালবাসতে পার নি । তার জন্য এই সামান্য কাজটুকু করতে পারি নি !
নিশি প্রতিদিন ভোর হলেই ওদর বারান্দায় চলে আছে । অপেক্ষা করতে থাকে অপু জন্য !
এক ভাবে তাকিয়ে থাকে অপুর দিকে !!


আজ আমিনুল সাহেব একটু তাড়াতাড়িই মাঠে দিকে রওনা দেন ! এখনও সূর্য ঠিক উঠে নাই ! গত কাল অপু ছেলেটা ৮৯ বার আবাহনী মাঠটা চক্কর মেরেছে । এটা তিনি নিজে গুনেছেন । প্রথম থেকে আস্তে আস্তে এভাবে এগিয়ে কালকে ছেলেটা ৮৯ এসে ঠেকেছে । আজ তাও চার মাস ধরে ছেলেটা এই চেষ্টাটা করে যাচ্ছে ! যেদিন জাবেদের মুখে ছেলেটার কথা শুনেছেন সেদিন থেকেই ছেলেটার প্রতি একটা আগ্রহ বোধ করেছেন । তারপর ছেলেটার এই দৌড়ানোর পেছনে আসলে কারন যেদিন জানতে পারলাম বেশ অবাক হয়েছিলেন । মনে মনে ভেবেছিলেন মানুষ এমন পাগলও হয় ! মেয়েটিকেও দেখেছেন প্রতিদিন । মাঠের পাশেই মেয়েটির বাসা ! সেই সকাল থেকে বাসার বারান্দায় দাড়িয়ে ছেলেটির দিকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে ।

আশ্চর্য মানুষের মন ! নিজের ভালবাসা কথা জানান দিতে মানুষ কত কিছুই না করে !
আমিনুল সাহেব মাঠে পৌছে দেখেন অপু দৌড় শুরু করে দিয়েছে ! স্কোর বোর্ডের দিকে তাকিয়ে দেখেন ইতিমধ্যে ৯ বার হয়েও গেছে । মাস খানেক আগে থেকেই এই স্কোর বোর্ডটা ব্যবহৃত হচ্ছে । অনুমুতি তিনি নিজেই দিয়েছেন ।
জাবেকে দেখলেন একটা চেয়ার নিয়ে এগিয়ে আসতে ! আমিনুল ইসলাম দেখলেন উনার মত আরো অনেকই এসেছে আজকে । অবশ্য প্রতিদিনই বেশ কিছু লিক আসে ছেলেটার দৌড় দেখতে ! ছেলেটার কিছু বন্ধু বান্ধবও আছে । ছেলেটাকে উৎসাহ দেয় । তিনি নিজেও দেন !

স্কোর বোর্ডে যখন ৮৫ তখন তিনি চার পাশে তাকিয়ে দেখেন মাঠের চারপাশে অনেক লোকের সমাগম হয়ে গেছে । এতো লোক এর আগে আসে নি ! কেউ কেউ আবার অপু নাম ধরে স্লোগানও দিচ্ছে !
আমিনুল সাহেবের মনে হচ্ছে আজকে ছেলেটা করে ফেলবে !
কিন্তু কালকে ছিল ৮৯ আজ কি পারবে একবারে ১১ বার টপকে যেতে ?
প্রতিদিন ছেলে একটা কি দুটো করে এগিয়ে যেত ।
প্রথম দিকে ২/৩ বার বেশি করে চক্কর মারত আগের দিনের থেকে ! কিন্তু দিন যত সামনে যাচ্ছে সেই ৩/২ কমে যেতে থাকে । কদিন থেকে কেবল একটা চক্কর বেশি মেরেই ছেলেটা বসে পরে ! আর পারে না !
তাহলে আজ কি কেবল ৯০ এসেই থেমে যাবে ছেলেটা !

৮৮ এসেই অপু অবস্থা একটু খারাপ হয়ে গেল ! একটু যেন এলোমেলো ! আমিনুল ইসলামের মনে হল ছেলেটা আজকে আর পারবে না !
৮৯ চক্কটা শেষও হল না তার আগেই অপু পরে গেল ! আমিনুল ইসলাম খানিকটা কষ্ট নিয়েই ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলো ! আর কয়দিন লাগে কে জানে ? তিনি উঠতে যাবেন ঠিক তখনই দেখলেন অপু আবার উঠে পড়েছে টলতে টলতে !
পাশে থেকে কত গুলো ছেলে আবারও চিৎকার দিয়ে উঠল !!

অপু মনে হল ওর হৃদ-পিন্ডটা এখনই ফেটে যাবে !! দম নিতে কষ্ট হচ্ছে ! আর পা দুটো যেন আসড় হয়ে গেছে ! আর একটা পাও যেন ফেলতে পারবে না । এখনও ৮৯ কম্পিলিট হয় নি !
তাহলে কি আজ এখানেই ! ভবেতে ভাবতেই অপু সমস্ত শক্তি শেষ হয়ে গেল !
কিসে যেন আটকে আপু মাঠের মধ্যে উপুর হয়ে পরলো ।
আজ অনেক মানুষ এসেছে । বন্ধুরা এসেছে ওকে উৎসাহ দিতে ! অপু জানে নিশিও ওকে দেখছে ওদের বারান্দা থেকে !! আজও কি মেয়েটা হতাশ হয়ে ফিরে যাবে ?
না ! আজ কে না !!
নট টু ডে !

অপু হঠাৎ কেন আবার শক্তি ফিরে পেল । বুকটা এখনও লাফাচ্ছে ! এখনও ঠিক মত বাতাস নিতে পারছে না । তবুও অপু উঠে দাড়াল !আজ তাকে পারতেই হবে .....!
আজ তাকে পরতেই হবে !
অপু আবার উঠে পড়লো !

৯০....৯১......৯৭....৯৮....৯৯......

আর একবার ! আর মাত্রটা একটা বার !! কিন্তু অপুর যেন আর কিছুতেই একটা পা এগোতে পারছে না !! হাটুর নিচ থেকে কোন সারা শব্দ সে পাচ্ছে না ! কেবলই মনে হচ্ছে কিছু একটা একটু যেন নড়ছে ! সব থকে কষ্ট হচ্ছে নিঃশ্বাস নিতে । অপু ফুসফুস টা ঠিক মত মত বাতাস টানতে পারছে না ! তবুও অপু এগিয়ে চলছে .....
আজ তাকে পারতেই হবে !!
আজ তাকে .......


আমিনুল ইসলাম খানিকটা চিন্তা নিয়েই ছেলেটার দিকে তাকাল ! সকাল বেলাতেই তার মনে হয়েছিল ছেলেটা আজ কিছু করবে ! চারপাশে ততক্ষনে অনেক লোক জড় হয়ে গেছে ! সবাই একসাথে চিৎকার করছে । ছেলেটাকে উৎসাহ দিচ্ছে ! কিন্তু তিনি ভাবছেন অন্য কথা !
ছেলেটা কি একবারে এতো পরিশ্রম সহ্য করতে পারবে ? প্রতিদিন একটু একটু করে এগুচ্ছিল ঠিক ছিল । কিন্তু আজকে একেবারে ১১ ধাপ এগোনো !! ছেলেটার হার্টের জন্য সহ্য করা কষ্টকর হয়ে যাবে ! আর ছেলেটার অবস্থাও খুব বেশি ভাল না । মুখ দিয়ে লালা পড়ছে ইতি মধ্যে !
ছেলেটা আটকানো দরকার !
কিন্তু আর মাত্র একটা চক্কর !! এই সময়ে ছেলেটাকে থামানোও তো উচিৎ হবে না !
কিন্তু যদি কিছু হয়ে যায় ?
ঐ তো ছেলের বন্ধুরা ফিনিশিং লাইনের জন্য ফিতা ধরেছে ! সবাই একসাথে চিৎকার করছে !!

নিশির প্রথমে ঠিক বিশ্বাস হল না যে অপু আজকেই করে ফেলবে !! যখন ৮৯ এসে অপু পড়ে গিয়েছিল তখনই নিশির বুকের ভিতরটা কেমন করে উঠেছিল । প্রতিদিন যখন ও শেষ চক্কর টা মেরে পরে যেত বেশ কিছুক্ষন চুপ করে শুয়েই থাকতো ! উঠতো না ! কিন্তু আজকে তেমন কিছু হল না ।
অপু আবার উঠে দাড়াল ! আবার শুরু করলো দৌড় !! দেখতে দেখতে ৯৯ হয়ে গেল ।
এই তো এর বন্ধুরা ফিনিশিং লাইন ধরেছে !
নিশির মনে হলে ফিনিশিং লাইনে ওর থাকা উচিৎ !! ও আর কিছু ভাবতে পারলো না । কেবল বারান্দা থেকে দৌড় শুরু করলো ! যে করেই হোক অপু আগে ওকে পৌছাতেই হবে !! অপু যেন ফিনিশিং লাইনে এসে ওকেই দেহতে পায় ! প্রথমে যেন ওকেই জড়িয়ে ধরতে পারে !!

অপুর দম অনেক আগেই শেষ হয়ে এসেছিল ! এতোটা পথ ও কিসের জোরে আসলো ও বলতে পারবে না !
বার বার মনকে বলল এই তো আর বেশি দুর না ।
এই ফিনিশং লাইনটা দেখা যাচ্ছে !!
ঐ যে শুভ আর নাসিম লাল ফিতা ধরে আছে !!
ঐ যে ওরা লাফাচ্ছে !
অপু আর একটু আর একটু খানি পথ !!
নিজেকে বোঝালো !
কিন্তু ফিনিংলাইনটা যেন ওর কাছে আরো দুর মনে হল !
এতো দৌচ্ছে তবুও কেন জানি ঠিক মত পৌছাতেই পারছে না ! আস্তে আস্তে যেন সেটা দুরেই চলে যাচ্ছে !!

ঠিক তখনিও অপু নিশিকে দেখতে পেল !! একদম ফিনিংলাইনে নিশি দাড়িয়ে আছে !
ওকে যেতে হবে !! নিশির কাছে যেতে হবে !! ফিনিংলাইনটা ক্রস করতেই হবে !!!!
আর মাত্র কয়েক পা ! আর মাত্র কয়েক কদম দুরত্ব !!





পরিশিষ্ট: অপু ঠিক লাল ফিতাটার কাছে গিয়ে পড়ে যায় ! অপুর হাতটা কোন মতে একবার ফিনিংলাইনের ফিতাটা স্পর্শ করে । যেটা অপু মনে করেছিল নিশির হাত । কিন্তু নিশি তখনও ফিনিশিং লাইনের কাছে পৌছাতে পারে নি !
তারপর অপু আর উঠতে পারে নি ! নিশি যখন পৌছালো তখন অবাক হয়ে দেখল কয়েকজন মানুষ অপুকে নিয়ে মাঠে দরজার দিকে দৌড়াচ্ছে !!

কাছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল নিয়ে গেলে ডাক্তার অপুর নার্ভস চেক করে অপুকে মৃত ঘোষনা করে ! কারন হিসাবে বলা হয় অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারনে অপু হার্ট প্রেশার সহ্য করতে পারে নি ! হার্ট ফেইল করেছে !!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সে কবিতায় অন্য কেউ ছিলনা..

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১২




সে কবিতায় অন্য কেউ ছিলনা—
শুধু আমিই ছিলাম, তোমার পরম আরাধনা হয়ে;
যেন কত জনমের সাধনা!
আবেগ আপ্লুত এই আমি তখন
বুঝে গেছি —স্বার্থক আমার কবিতা লেখা,
স্বার্থক সাধনা।

প্রেম যেন এক সদ্য প্রস্ফুটিত অপরাজিতা ফুল
স্বার্থক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইলশেগুঁড়ি নয় গল্পটা ইলশে গরুর

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৭


মাদের বাজারে সারাবছর মাছই বিক্রি হত আর এক পাশে হাস মুরগীর ডিমাশে পাশের দশ বিশ পঞ্চাশ গ্রাম আর চরের মানুষ সদাই পাতি আনাজ মাছ দুধ নিয়ে আসত সেখানে বিক্রি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যাপিত জীবন: একটি ইন্টার্ভিউ এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ।

লিখেছেন জাদিদ, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৪০

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান - বাংলাদেশে তাঁদের ফ্যাক্টরি, চায়নার অফিস এবং ঢাকার অফিসের জন্য বিভিন্ন পদে লোক নেয়ার জন্য বিডি জবসে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো। সেখানে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে যোগ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীর প্রতি অসম্মান (সাময়িক পোস্ট)

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০



গতমাসে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বিএনপির নারী নেত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছিলেন। সেসব নিয়ে হৈচৈ হয়েছিল খুব। বিএনপির পক্ষ থেকে ঝাড়ু মিছিলও বের হয়েছিল। বক্তব্যটা যে শিষ্টাচার বহির্ভুত, তা বলার অপেক্ষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৈয়দ আব্দুল হাদীর কালজয়ী কিছু গান

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭



এ বছরের মেরিল প্রথম আলো পুরষ্কার অনুষ্ঠানের ইউটিউব ভিডিও ফেসবুকে কিছুটা টেনে দেখতে গিয়ে আটকে গেলাম এই প্রজন্মের চার তরুনের কন্ঠে সৈয়দ আব্দুল হাদীর কিছু গান শুনে। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×