somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরোধীদলের অবরোধ কর্মসূচি এবং নিশির সাথে আমার রিক্সা ভ্রমনের গল্প !!

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিশি কেমন একটু ইতস্তঃ করতে লাগলো । আসলে আমার প্রস্তাবটা ঠিক মেনে নিতে পারছে আবার ঠিক ফিরিয়েও দিতে পারছে না । লিয়া ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছিল, কথা শেষ করে নিশিকে বলল
-কি হল ? অপু আসবে তোর সাথে ?
নিশি চট করে একবার আমার দিকে তাকালো ! তারপর লিয়ার দিকে !
লিয়া বলল
-দেখ, বাইরের পরিস্থিতি কিন্তু ভাল না । তোকে একা ছাড়তে ঠিক মন চাইছে না । আর অপু যেহেতু ঐ দিকেই যাচ্ছে তোর সাথে যাক !
আমার মনে খানিকটা সন্দেহ দেখা দিল যে নিশি এখনই বলবে থাক আমি একাই যেতে পারবো ! কিন্তু আমি সেই সুযোগ কেন দিবো ওকে ! আমি বলল
-একটু আগে শাহবাগে পুলিশের সাথে অবরোধ কারীদের একটা সংঘর্ষ হয়েছে ! মিরপুর যাওয়ার পথে আরো এরকম বেশ কয়েকটা পয়েন্ট আছে আছে যেখানে ঝামেলা হতে পারে ।
লিয়া বলল
-আরে হ্যা ! বিপদের কথা তো বলা যায় না । তুই অপুর সাথে যা !
এই বার ইমোশনালী ব্ল্যাকমেইলের পালা !! আমি বললাম
-আচ্ছা আমার সাথে যদি নিশির রিক্সায় চড়তে অসুবিধা হয় তাহলে আমি বরং না যাই ! আমি ওর পেছন পেছন রিক্সা নিয়ে আসছি ! ঠিক আছে !
আমি জানতাম নিশি এবার কিছু বলবে ! নিশি বলল
-না মানে অসুবিধা কেন থাকবে ? আসো সমস্যা নাই ! একসাথেই যাই !
লিয়া কে রেখেই রিক্সায় উঠলাম ।
লিয়া বলল
-সাবধানে যাস ! আর অপু, মারামারি দেখে নিশিকে ছেড়ে পালিয়ে যেও না যেন !! মেয়েরা কিন্তু এই টাইপের ছেলে একটুও পছন্দ করে না ।
আমি কেবল হাসলাম । আমি ঠিকই জানি লিয়া কিসের ইংগিত দিল !!!
রিক্সা চলতে শুরু করলো !
জীবনের এই প্রথম কোন রাজনৈতিক দলকে একটা প্রাণ ঢালা অভিনন্দন জানাতে ইচ্ছা করছে । আজকে যদি অবরোধ না হতে নিশির সাথে কি রিক্সায় চড়টে পারতাম ??
অবরোধকারী জিন্দাবাদ !!

ভার্সিটিতে একটা ক্লাস হওয়ার কথা ছিল । যদিও জানতাম হবে না কিন্তু আসতে হল । আসতে হল নিশির জন্যই । যদি মেয়েটা আসে ? ওকে না দেখলে কেমন জানি লাগে বুকের ভিতর ! বিশেষ করে ওর গোলাপী ঠোটের হাসি !
একবার অবশ্য মনে হয়েছিল যে নিশিও বোধ হয় আসবে না । কারন মিরপুর থেকে এতোদুর একটা মেয়ের পক্ষে আসাটা একটু কষ্টকর । কিন্তু দেখলাম নিশি এসেছে আগেই । মনে হয় ভার্সিটির বাসে । মনটা ভরে গেল আনন্দে ! যাক আজকের দিনটা্তে মেয়েটাকে আরো কিছুক্ষন মেয়েটাকে দেখতে পাবো !
কিন্তু ভাগ্য এতো ভাল হবে কে জানতো । ক্লাস হল না । ১১ টার ভিতরেই ডিপার্টমেন্ট ফাঁকা ! আমি বসে আছি নিশির জন্য ! নিশি বসে আছে কার জন্য কে জানে ।
এমন সময় লিয়া আর নিশিকে আসতে দেখলাম । নিশির খুব বেশি কথা না বললেও লিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক ভাল । আমার কাছে এসে লিয়া বলল
-এখন কি বিপদের পড়লাম বলত ?
আমি বললাম
-কেন ? কি হল ?
-আরে মিরপুরের একটা বাসও নাই । নিশি কিভাবে বাসায় যাবে বল ? আমি ওকে বললাম আসতে হবে না ! তবুও মাত্তব্বারী করে আসছে ! এই দিনে কখনও ক্লাস হয় !!
আমি ঠিক এমন একটা সুযোগ খুজছিলাম । বললাম
-নিশি কি মিরপুর যাবা ? আমার একটু তালতলায় কাজ ছিল ! একসাথে চল তাহলে !!
লিয়া বলল
-পারফেক্ট ! তোকে একা ছাড়তে সাহস হচ্ছিল না । অপু থাকলে সমস্যা নাই । তুই অপুর সাথে চলে যা !! ও সাথে থাকলে আমি নিজেই নিশ্চিন্তে থাকতে পারবো !!
নিশি চট করে আমার দিকে তকবার তাকাল !


রাস্তা বেশ ফাঁকাই ! অন্যান্য দিন এই ইংলিশ রোডটা পার হতে কম করেও ৩০ মিনিট লাগে ! কিন্তু আজকে পাঁচ মিনিটও লাগলো না ! এর কোন মানে আছে !
আর আজকে রিক্সায়ালাও যেন একটু জোরেই চালাচ্ছে !! আমি রিক্সায়ালা কে বললাম
-মামা এতো তাড়াহুড়া কেন করছেন ? একটু ধীরে চালান ।
রিক্সায়ালা বলল
-মামা রাস্তা ঘাটের অবস্থা তো ভালা না । জলদি জলদি যাওয়াই ভালা !

নিশি কিছুই বলছে না । চুপ করে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে । যেন আমি এখানেই নেই ই !!
আবার কানে হেডফোন লাগিয়ে গাল শুনছে !
আচ্ছা আমার দিকে কি একটু তাকানও যায় না ? মানলাম আমরা ভাল বন্ধু না কিন্তু ক্লাসমেট তো । প্রায় দুই আড়াই বছর আমরা একসাথে পড়াশুনে করছি ! তার উপর নিশি খুব ভাল করেই জানে যে আমি ওকে অনেক পছন্দ করি । ইনফ্যাক্ট আমি ওকে একবার প্রোপোজও করেছিলাম ।
আর নিশি এমন ভাবে বসে আছে যেন আমার গায়ে সাথে কোন রকম স্পর্শ না লাগে । কিন্তু রিক্সা একটু ঝাকি খেলেই নিশির সাথে আমা ধাক্কা লাগছে !! আমি জানি নিশির অস্বস্থি লাগছে ! আমার একটু ভালই লাগছে !!
আমি ভেবেছিলাম নিশি হয়তো মিরপুর পর্যন্ত এই ভাবেই থাকবে । আমার সাথে একটা কথাও বলবে না । কিন্তু গুলিস্থান পার হতেই নিশি হেডফোন নামিয়ে রাখলো !
তারপর আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল
-তোমার তালতলায় কোন কাজ নাই, তাই না ?
আরে এই মেয়েটা কিভাবে বুঝে ফেলল কিভাবে ? আমার কিন্তু আসলেই তালতলায় কোন কাজ নাই ! আমি কেবল নিশির সাথে একসাথে রিক্সায় চড়ার জন্যই কথাটা বলেছিলাম ।
আমি কিছু বলতে যাবো নিশি আবার বলল
-মিথ্যা কথা বলবা না ! সত্যি কথা বল !
আমি বললাম
-সত্যি বললে রিক্সা থেকে নামিয়ে দেবে না তো !
নিশি কিছুটা সময় আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
-না ! দেব না !
আমি একটু হসেস বললাম
-না ! আমার কোন কাজ নাই !
-কেন ? জানতে পারি ?
-দেখ রাস্তার অবস্থা কিন্তু আসলেই ভাল না ! তোমাকে একা ছাড়তে যেমন লিয়া ভাল লাগছিল না, আমারও ইচ্ছা করছিল না তোমাকে একা ছাড়তে ।
-তাই ? আচ্ছা মনে কর এখান মারামারি বাঁধলো ! তুমি কি করবা ? আমাকে বাঁচাতে তাদের সাথে গিয়া ফাইট করবা ? সিনামার নায়কের মত ?
আমার মনে হল নিশির যেন খানিকটা আমাকে উপহাস করছে !
আশ্চর্য এই মেয়েটা আগে আমার দিকে ঠিক মত তাকিয়ে থাকতে পারতো না, সেই মেয়েটা আজ কত কঠিন কথা বলছে । আমি বললাম
-সিনেমার নায়ক দের মত হয়তো মারামারি করতে পারবো না কিন্তু তোমার দিকে আসা প্রত্যেকটা লাঠির কিংবা ইটের আঘাত নিজের শরীরে লাগাতে পারবো !! সেগুলো তোমার পর্যন্ত আসবে না !

নিশি মনে হয় এটা শোনার জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিল না । আমার দিকে তাকিয়েই রইলো কিছুক্ষন । আমি বললাম
-অবশ্য তোমার সাথে রিক্সায় চড়ার সুযোগটাও আমি ছাড়তে চাই নি । যদিও তোমার মনে হচ্ছে যে আমার গা দিয়ে মনে হয় গন্ধ বের হচ্ছে !!
-মানে ?
-না মানে ! যে ভাবে বসেছ আছো ! মনে হচ্ছে আমার গায়ের সাথে একটু স্পর্শ লাগলে তোমার যেন কি না কি হয়ে যাবে !
এই কথা শুনে নিশি একটু হাসলো !!

হায়রে !!
বুকের ভিতর কি যেন হাহাকার উঠল !! এই ঠোটের হাসি দেখার জন্য নির্দ্বিধায় গাড়ীর সামনে লাফ দেওয়া যায় !!

আমি বললাম
-আরো একটা কারন অবশ্য আছে ?
-কি ?
-তোমার হাসি আর তোমার চোখ ! তুমি যখন হাসো না তোমার চোখ কেমন একটা দ্যুতি ছড়ায় !!
-আচ্ছা !! কিন্তু আমার যতদুর মনে পড়ে তুমি তো আমার ঠোট দুটি বেশি পছন্দ করতে !!

ঠোঁট ?!!!??!??!
আমি খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেলাম ।
আমার প্রথম দিককার কথা মনে পড়ে গেল ! যখন নিশিকে প্রথম ভাল লেগেছিল । সত্যি বলতে কি নিশির সব কিছুই আমার পছন্দ ছিল কিন্তু সব থেকে পছন্দের ছিল তার ঠোঁট দুটো ! গোলাপী জেলির মত !
মনে হত .......!!
কেবল মনে হত ......!!
থাক আর বললাম না কি মনে হত !!

মেয়েটার জন্য সত্যি সত্যিই চোখে ঘুম নষ্ট হল । ঠিক করলাম যে আর না !! এবর কিছু করতেই হবে ! মানে প্রপোজ করতে হবে !!
কিছু করতে হবে এই লাইনের আবার ভিন্ন অর্থ বের করবেন না !
মনে হল যে একটু ভিন্ন ভাবে প্রপোজ করি । সত্যি সত্যি একদিন ওর সামনে গিয়ে হাজির হলাম ! তারপর ওকে ডাকদিলাম !
-নিশি !!
আগে নিশি সব সময় একটু সংকুচিত হয়ে থাকতো ! আগে ঢাকার বাইরে থাকতো তাই ঢাকার পরিবেশের সাথে তখনও ঠিক তাল মিলিয়ে উঠতে পারে নাই !
নিশি খানিকটা ইতস্তঃ করে আমার দিকে এগিয়ে আসল ! বলল
-বলেন ?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম ।
-বলেন ? ক্লাস মেটদের কে কেউ আপনি করে বলে !!
নিশি কিছু না বলে চুপ করেই রইলো !
আমি বললাম
-তোমার ঠোঁট দুটো আমার খুব পছন্দ ! তোমার ঠোটে একটা চুম খেতে চাই ।
আমার কথা শুনে নিশি চমকে উঠলো !
আমি আবার বললাম
-কিন্তু এইভাবে তো চুমো খাওয়া যায় না ! আমি ঠিক করেছি আগে তোমাকে বিয়ে করবো ! বিয়ের পর তোমাকে চুম খাবো !!
এবার নিশির বিশ্ময় যেন আর একধাপ বেড়ে গেল । আসলে নিশির ধারনাই ছিল না য কেউ ওর সাথে এমন ভাবে কথা বলতে পারে ।
আমি আবার বললাম
-সমস্যা আছে ! এখন তো আবার বিয়েও করা যাবে না । প্রেম অবশ্য করা যায় ! কি বল তুমি ! আমি তোমাকে অফিসিয়ালী প্রপোজ করছি ! কি বল তুমি ? প্রেম করবে আমার সাথে ?
এবার দেখলাম নিশির চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে এল !
আমি বললাম
-আরে আরে কান্নার কি হল ? আমার প্রোপোজ ফিরিয়ে দেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে তোমার ! এখনও না বলতে পরো ! আমি কেবল আমার মনে কথা টুকু তোমার কাছে বললাম !
নিশি আর দাড়ালো না ! চলে গেল !

-কি হল কি ভাবছো ?
রিক্সা ততক্ষনে শাহবাগে চলে এসেছে !!
সামনেই আমাদের কে একটা একটা পুলিশ দাড় করালো ! আমাদের কে বলল
-আপনারা কোথায় যাবেন ?
আমি বললাম
-মিরপুরের দিকে !
-মিরপুর রোড ঘুরে যেতে হবে ? বাংলা মোটরের দিকে একটু ঝামেলা হচ্ছে । রিক্সা নিয়ে যাওয়া যাবে না !!
নিশি বলল
-এতো ঘুরে যেতে হবে ?
পুলিশ বলল
-কিছু করার নেই ম্যাডাম ! এই দিক দিয়ে যাওয়া যাবে না !
আমি বললাম
-সমস্যা নাই ! আমরা ঘুরেই যাচ্ছি !!
আসলে আমার মজাই লাগছিল । যতই ঘুরে যাবো ততই আমি নিশির সাথে বেশিক্ষন এক রিক্সায় থাকতে পারবো !! এর থেকে আনন্দের কি হতে পারে ??

সাইম্সল্যাবের কাছে এসে দেখলাম নিশি আমার দিকে তাকিয়ে আছে ! আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-তোমার খুব মজা লাগছে তাই না ?
-হুম ! মজা তো লাগছে ! আমার পাশে এতো চমৎকার একজন মেয়ে বসে আছে আর সেই মেয়েটি একটু ভিত । বারবার মনে হচ্ছে কোন বিপদ হবে নাতো ! আবার সে এটা ভাবছে না খুব বেশি চিন্তার কারন নাই ! আমার পাশে একজন আছে যে সকল বিপদের হাত থেকে আমাকে বাঁচাবে !
নিশি মুখ ভেঙ্গালো আমাকে । তারপর বলল
-জি না !! আমি এসব কিছুই ভাবছি না !

ঐ দিন বিকালে লিয়া এসে হাজির আমার কাছে । পেছনে নিশি ! লিয়া সব সময় একটু উগ্র টাইপের মেয়ে ! কাউকে ঠিক ভয় পায় না ! আমার কাছে এসে বলল
-কি ব্যাপার তুই নিশি কে কি বলেছিস ?
-আমি ?
আমি খুব নিরিহ সাজার চেষ্টা করলাম । একটু হাসলাম । লিয়া বলল
-ঢং করবি না । ভাল করে বল ! কি বলেছিস ?
আমি বললাম
-আমি নিশি কে প্রোপোজ করেছি ! অফিসিয়ালী প্রোপোজ করেছি ! আশ্চর্য ভাল লাগলে বলবো না ?
লিয়া কিছু বলতে গিয়েও বলল না । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এর পর থেকে তুই নিশির ধারে কাছে আসবি না !! মনে থাকে যেন !!
আমি নিশির দিকে তাকিয়ে বলল
-আচ্ছা !

ঐ দিন নিশি আর লিয়া যখন চলে যাচ্ছিল আমি ওদের দিকেই তাকিয়ে রইলাম । কেন যেন মনে হল নিশি আমার দিকে ফিরে তাকাবে !!
কয়েক কদম এগিয়েছে এমন সময় নিশি আমার দিকে ফিরে তাকালো !
হায় !!
কি সেই চোখের দৃষ্টি !!
আমার সেদিনই মনে হল নিশির ঐ ঠোটে .......

নিশি আমাকে এড়িয়ে চলতো ! আমি যেদিকে যেতাম ও সেদিকে যেত না ! কিন্তু আমি ওর পিছু ছাড়লাম না ! আমার সব কাজেই এমন একটা ছায়া থাকতো যে আমি ওকে পছন্দ করি ! ওকে একদিন ফেবুতে ফ্রেন্ড রিকু পাঠালাম । ভেবেছিলাম ও গ্রহন করবে না । কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম ও আমার ফেবু হয়ে গেল ।
মাঝে মাঝেই ওকে মেসেজ পাঠাতাম । বিভিন্ন কথা বলতাম । কিন্তু ও ঠিক জবাব দিত না । দিলেও কেমন একটা সাধারন ভাব থাকতো ! ভাল আছি !! ভাল নাই এই সব !!

তোমার জন্য এই এনেছি
ভালবাসার রং
অনেক হয়েছে, অনেক সয়েছি
তোমার যত ঢং !
একবারও কি বলবে না তুমি
একটা মাত্র কথা !
দুরে দুরে থাকবে কত
বাড়াবে বুকের ব্যাথা !
তোমার জন্য বসে আছি
নিয়ে বুকে চোট !
কবে আসবে ভালবাসা
আর তোমার মিষ্টি ঠোট !

একদিন এইটা স্টাটাস দিলাম । দেখলাম নিশি নিজেও সেটা লাইক দিয়েছে । ঐদিন ও আমাকে চ্যাটে নকও করলো !
আমাকে বলল
-তোমার এই রকম স্টাটাস দেওয়া ঠিক হয় নি !
আমি বললাম
-কেন ? কি হয়েছে ?
-তোমার ঐ কবিতা পড়ে আমার সব বান্ধবীরা হাসাহাসি করছে !!
-কেন? খুব কি হাসির কবিতা লিখেছি ?
-দেখ তুমি যে রকম আচরন কর সবাই কিন্তু বুঝে যায় !
-কি বুঝে যায় ?
-বুঝে যায় যে .....।
-যে ????
নিশি কিছুক্ষন কিছু লিখলো না !! আমি লিখলাম
-জানো কষ্ট টা এই খানেই ! যাকে বোঝেতে চাই সেই বোঝে না !!


রিক্সা ভ্রমন আসলেই খুব উপভোগ করছিলাম । বারবার বিরোধী দল কে ধন্যবাদ দিতে লাগলাম !! যদি তারা অবরোধ না দিতো তাহলে তো এই চমৎকার রিক্সা ভ্রমন হত না !!

বিরোধীদল জিন্দাবাদ !!

কিন্তু একটু বিপদ হয়েই গেল ! রিক্সা যখন আড়ং এর কাছে তখন দেখলাম কিছু পিকেটিং কারী এদিকে আসছে !! তারমনে আসলেই একটু বিপদে পড়তে হল ! রিক্সায়ালা রিক্সা থামিয়ে দৌড় মাড়লো ! আমি কোন মতে নিশির হাত ধরলাম । তারপর ওকে প্রার জোর করেই রিক্সা থেকে নামিয়ে দৌড় দিলাম ! সামনেই আড়ংয়ের সোরূম !! যদিও সাটারটা হাফ নামানো ছিল কিন্তু দেখলাম ওটার ভিরতকার গেট টা খোলা !! কোন মতে সাটার টা খুলে নিশিকে নিয়ে ভিতবে ঢুকে পরলাম !! দেখলাম আরো অনেকই আছে সেখানে !!
রিক্সা থেকে নামার সময় নিশির হাত ধরেছিলাম । এখনও সেটা ছাড়ি নি ! আর একটা জিনিস দেখলাম আমি যেমন নিশির হাত ধরে আছি নিশিও ঠিক তেমনি আমার হাত ধরে আছি ! আমি ওর হাতের চাপ অনুভব করতে পারছি !
কিছুক্ষন পরে আমি বললাম
-আচ্ছা আমি দেখে আসি বাইরে কি অবস্থা !
-না যেতে হবে না !
এই কথা বলে নিশি আমার হাতটা আর একটু জোরে চেপে ধরলো ! যেন আমাকে যেতেই দিবে না !!
আমার এটা ভাল লাগলো খুব !!
-আরে বাবা আমি দেখে আছি কি অবস্থা ? সারা দিন তো আর এখানে থাকা যাবে না ! তাই না !
-আমিও আসছি তোমার সাথে !!
নিশি নিজেও বেরিয়ে এল !!!

যখন আড়ং থেকে বের হলাম তখন রাস্তা বেশ পরিস্কার হয়ে গেছে ! আমাদের রিক্সায়ালা কে আসতে দেখলাম ! আবারও আমাদের রিক্সা ভ্রমন শুরু হল !
একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করলাম নিশি আমার হাতটা ধরেই রেখেছে !!
জীবন টা আসলেই খুব সুন্দর মনে হল !!
এই ভাবে যদি সারা জীবন নিশির হাত ধরে রাখতে পারতাম তাহলে কি চমৎকারই না হত !!!

নিশি যখন নিজের হাতটা সরিয়ে নিতে গেল তখন আমি ওর হাতটা ছেড়ে দিলাম না ! নিশি কেবল আমার দিকে তাকালো !! চোখে কিছু একটা জিজ্ঞাসা !! আমি কেবল বললাম
-আমি কিছুতেই তোমার হাত ছেড়ে দিবো না !! যে কোন পরিস্থিতিই আসুক না কেন !! নিশি অন্য দিকে তাকালো !!!

রিক্সা চলছে ! বাতাসে নিশির চুল উড়ছে ! আমি ওর দিকে লক্ষ্য করলাম !! ওর ভেজা ঠোট কেমন যেন একটু কাঁপছে !
আমার জন্য কি কাঁপছে ?


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৪
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×