somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগার অপু তানভীরের আল্টিমেটাম এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি !! খুব খিয়ালকৈরা !!

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিশির সকাল থেকেই কেন জানি খুব অশান্তি লাগতেছে । কিছুতেই শান্তি পাচ্ছে না মনের ভিতর । বার বার কেবল মনে হচ্ছে অপু যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেটা সে যদি পালন করে ?
কর্মসূচি ?
হাস্যকর ?
এই অপুটা এমন সব কথা বার্তা বলে ! আর নিশি নিজেও ওর ভাষায় বলতেছে !
কি হাস্যকর !
কর্মসূচি ! হাহাহা !

গতকাল রাতে যখন অপুর সাথে কথা হচ্ছিল এক পর্যায়ে অপু ওকে বলল
-আমি তোমাকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম ! সেই টাইম কিন্তু পার হয়ে গেছে ! এখন নতুন কর্মসূচি দিবো ?
নিশি হেসে বলল
-কর্মসূচি ? আল্টিমেটাম ? মানে কি ?
-মানে বুঝো না ? তুমি জানো না আমি ব্লগার ! এখন আমরা কেবল কর্মসূচি আর আল্টিমেটাম দেই !
-তাই না ? তা তুমি কি আল্টিমেটাম দিয়েছিলে শুনি ?
-তোমার মনে নাই ! আমি কি বলেছিলাম তোমাকে ?
নিশি বলল
-আচ্ছা বলগার সাহেব বলেন কি আপনি কি আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন ?
-আমি তোমাকে ছবি পাঠাতে বলেছিলাম মনে নাই ! সময় বেধে দিয়েছিলাম আজ রাত পর্যন্ত ! তুমি পাঠিয়েছ ?
-আচ্ছা ! আচ্ছা ! এই টা আপনার আল্টিমেটাম !
নিশি হাসতেই থাকে !

আসলেই অপু কদিন থেকেই ওকে দেখার জন্য কেমন উঠে পরে লেগেছে ! সব কথা বলে ! আর ঘুরে ফিরে সেই একই কথা ! কবে ছবি পাঠাবা ?
আচ্ছা এভাবে কি যেকোন একটা ছেলেকে ছবি পাঠনো যায় !
অবশ্য অপু যেকোন একটা ছেলে না ! এই কয়দিনে কেমন একটা মায়া জন্ম গেছে ওর উপর !
প্রথম যখন অপুর গল্প পড়ে কেমন একটা অনন্দ অনুভুত হয়েছিল ! কিন্তু নিশির নিজের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে ! তাই চাই নি কখনই যেন সীমা অতিক্রম না করে !
কিন্তু মন কি এসব মানে ?
না কোন কথা শুনে ?
প্রথমে ওর ইয়াহুতে যুক্ত হল ! তারপর ওর ফেসবুকে ! সারা দিন কেবল ওর সাথেই কথা বলতো !
নিশির আম্মু অবশ্য খুব বকাবকি করতো এসব দেখে !
তার একই কথা ! সারা দিন কোন কাজ নাই কেবল ল্যাপ্টপের সামনে বসে থাকা !!
নিশি এসব কোন কিছুই কানে নেয় নি !
কেবল সারা দিন অপুর সাথেই কথা বলেছে ! কি যে ছিল ! নিশি যেমনটা ব্যাকুল হয়েছিল অপু নিজেও তেমন টা হয়েছিল ! আর ব্যপার টা যখন ওরা দুজনেই যখন বুঝতে পারলো তখন আর কেউই দুরে থাকতে পারে নি !

প্রথমে ওরা ঠিক করেছিল যে কেবল নেটেই ওদের যোগাযোগ করবে ! কিন্তু ফোন নাম্বার আদান প্রদান করটে দেরি হল ! আগে তো সারা দিন নেটে থাকতো এখন সারা দিন কানে ফোন লাগিয়ে কথা বলা শুরুহল !
নিশির মা এবার বলতে লাগলো কি ব্যপার তোমাকে তো আগে এতো গান শুনতে দেখি নি এখন এতো গান শুনো কেন ?
আসলে নিশি ওর মাকে বলেছিল যে কানে হেডফোন লাগিয়ে এখন সে গান শুনে !
কথা যখন হত না তখন মিনিটে মিনিটে মেসেজ ! এটাও যেন একটা অভ্যাসে পরিনত হল !

নিশির মনে আছে একদিন সকালবেলা ওর এক ভাইয়ের বাসায় ওর যাওয়ার কথা ছিল ! বাড়িতে ঢোকার আগে ওকে ফোনকরে মানা করে যেন আর মেসেজ না দেয় ! যে কারো চোখে পরতে পারে কিন্তু অবাক হবার বিষয় যে কয়েক মিনিট পর পর ও নিজেই মোবাইল চেক করতে লাগলো যে কোন মেসেজ এসেছে কি না !!
কি অদ্ভুদ ব্যাপার !

অপু কিছুক্ষন চুপ করে থাকল । তারপর বলল
-আচ্ছা তোমার হাসি আসছে তাই না ?
-তো আর কি আসবে ! তোমরা ব্লগাররা কেবল আল্টিমেটাম আর কর্মসূচিই দিটে পারো ! কাজের কাজ কিছুই হয় না !
-শুনো তুমি আমাকে অন্য কারো সাথে তুলনা কইরো না ! অপু তানভীর যা বলে তাই করে !
নিশি হাসতে হাসতে বলল
-আমি জানি আমার ক্ষতি হয় এমন কিছু তুমি কোন দিন করতে পারবো না !
-তা পারব না ! কিন্তু আমি কষ্ট পাই এমন কাজ যদি আমি করি !
নিশি এবার একটু যেন চিন্তিত হল !
অপু এই কথাটা কেন বলল ? নিশি খুব ভাল করেই জানে অপু মাঝে মাঝে খুব পাগলামো করে ! নিশি বলল
-কি কর্মসূচি দিবা তুমি ? আরে দুর, কি করবা তুমি ?
অপু বলল
-শুনো, আমি শান্তি প্রিয় ব্লগার ! আমার সব কাজ হল শান্তিময় !
-মানে কি ?
-মানে হল, আজকের পর থেকে যত দিন তুমি আমাকে তোমার ছবি পাঠাবা না ততদিন আমি দুপুরে বেলা কিছু খাবো না !
-মানে কি ?
-তুমি শুনেছ আমি কি বলেছি ! যদি তুমি চাও আমি অনাহারে কষ্ট না পাই তাহলে তুমি আমাকে ছবি পাঠাবা !
-দেখ এটা কিন্তু ইমোশনাল ব্লাকমেইল !
-তুমি যদি তাই মনে কর তা হলে তাই ! দেখ সোনাপাখি ভালবাসায় সব কিছু জায়েজ আছে ! সব কিছু করা যায় !!
-না, তুমি এটা করবা না !
-হা হা হা ! আমি আগেই বলেছি ! আমি যা বলি তাই করি ! এবং এটা আমি করবো ! আমার কর্মসূচি আমি পালন করবো ! শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি !


নিশি খুব ভাল করেই জানে ওর পক্ষে ছবি পাঠানো সম্ভব না ! এই কথাটা ও আগেই বলেছে অপুকে ! অপু তখন মেনেও নিয়েছিল ! কিন্তু এখন এমন সব পাগলামো করছে !
কেন করছে ?
দুপুরের আগে অপুকে ফোন দিয়ে লাভ নাই ! ও ঘুমিয়ে থাকে ! এই সময়টা নিশির খুব উৎকন্ঠায় কাটে ! নিশির কেবল মনে হতে লাগলো বিরোধীদলের কর্মসূচিতেও সরকার এতো উৎকন্ঠা বোধ করে না যত না ও নিজে করছে !
বারবার মনে হচ্ছে ও খাবে না ! এটে কেমন করে হয় !
এটা কোন কথা হল ?

বেলা ১২ টার দিকে অপু নিজেই ফোন দিল !
-কই তুমি ?
অপু বলল
-এই তো ঘুম থেকে উঠলাম !
-খাবা না ?
-খাবো ! তুমি ছবি পাঠিয়েছ ?
-প্লিজ অপু ! এমন করে না ! তুমি আমার দিকটা একটু ভেবে দেখার চেষ্টা কর ! আমি পারবো না !
-ওকে সমস্যা নাই তো ! আমি তো বলি নি আমি আর খাবোই না ! মানে আমরন অনশন তো করছি না ! কেবল এক বেলা আহার বর্জন করেছি ! সমস্যা তো নাই ! মানুষকি একবেলা খেয়ে বাচে না !
-দেখো ভাল হবে না বলতেছি ! তুমি এখনই খাবা ! দুপুরে খাবা !
-জি না সোনা পাখি ! আমি খাবো না ! আমি এক কথার মানুষ ! যা বলেছি টা করবই !
-প্লিজ ফ্লিজ বলে লাভ নাই !!

দুপুর বেলা নিশি কিছু মুখে নিতে পারলো না ! বারবার মনে হতে লাগলো অপু কিছু খাচ্ছে না ও কিভাবে খাবে ?
নিশির মা ওকে না খেতে দেখে বলল
-কি ব্যাপার খাচ্ছিস না কেন ?
-ভাল লাগছে না মা !
নিশি হাত ধুয়ে উঠে পরলো ! আর পারছে না ! নিশি খুব ভাল করে বুঝে গেছে এই পাগলটার হাত থেকে ওর নিস্তার নাই ! ও যা বলবে এখন ওর তাই করতে হবে !
অপুকে ফোন দিল ও !
-বল জান পাখি আমার !
-ঢং রাখো !
-ঢং ?
-তুমি খাবা না ?
-না ! রাতে খাবো !
-প্লিজ !
ও পাশে থেকে গানের আওয়াজ ভেসে আসে ! অপু গান গাইছে !
-এই ! এই পাজি ছেলে ! তুই আমার কথা শুনিস না কেন ?
-শুনি তো মিষ্টি মেয়ে ! তুমিও শুনো না আমার কথা !
নিশি বলল
-তোমার খিদে লাগে নি ! কষ্ট হচ্ছে না ?
-সত্যি কথা বলবো ?
-হুম ! একটু কষ্ট হচ্ছে ! না খেয়ে থাকার অভ্যাস নাই তো !!

নিশির কেমন জানি অসহায় বোধ হয় ! বুকের মাঝে কেমন একটা অস্থির মত লাগে !!
নিশির কেবল মনে হল ওর নিজের কষ্ট হচ্ছে !
না !
আর একটা মুহুর্তও না !
নিশি বলল
-আমি এখনই ছবি পাঠাচ্ছি ! প্লিজ খেয়ে নাও ! প্লিজ !!

নিশি জানে এটাই শেষ না ! আস্তে আস্তে অপু ওর সব দাবী গুলো ঠিকই আদায় করে নিবে ! নিশির কিছুই করার থাকবে না !

এই পাগল ছেলেটাকে নিয়ে কি করবে ও !


ফেবু লিংক
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০০
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×