somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশি এবং আমার ছোট্ট একটু গল্প !!

২৬ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার আগেই ধারনা ছিল নিশি আজকে আসবে আমার সাথে দেখা করতে ! এমনটা প্রায়ই হয় ! আমার সাথে ও এমন কোন কাজ করে । আমি মনে কষ্ট পাই ! তারপর আমার সাথে দেখা করতে চলে আসে । আমি এমনি যদি ওকে বলি যে দেখা কর আমার সাথে তাহলে দেখা করবে না কিন্তু এদিক দিয়ে ঠিকই চলে আসবে দেখা করতে !
নিশি ছাদের একদম কোনায় দাড়িয়ে আছে ! তাকিয়ে আছে পাশের একটা ছাদের দিকে ! ওখানে দুটো বাচ্চা ছেলে দৌড়াদৌড়ি করছে ! আর বাচ্চা দুটির মা তাদের ধরার চেষ্টা করছে !
আমি বাচ্চা দের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিশির দিকে তাকালাম !
নিশিকে আজ সত্যি অনেক সুন্দর লাগছে ! এই কাজটা নিশি প্রায়ই করে ! আমাকে পটানোর জন্য বা তার কোন আবদার থাকলে আমি যে ভাবে ওকে দেখতে চাই ঠিক সেই ভাবে ও সেজে আমার সামনে হাজির ! আমি মুগ্ধ হয়ে ওর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকবো ! তারপর সে যে কখন তার মনের কথা আমাকে দিয়ে আদায় করে নিবে আমি টেরই পাবো না ! আসলে তখন আমার সকল মনযোগ থাকে কেবল ওর দিকে ! ও যা বলে আমি বিনা চিন্তা করে সেটা মেনে নেই !
আমি নিশিকে ভাল করে দেখতে থাকি ! নিশি আজকে সম্পূর্ণ সাদা পরে এসেছে !
আমি তন্ময় হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকি ওর দিকে ! আর মনে মনে ভাবি যে এই মেয়েটা এমন সুন্দর হয়েছে কিভাবে !
এই পোষাকে ওকে আসলেই পরীর মত সুন্দর লাগছে ! চোখে কাজল দিয়েছে সৌন্দর্যটা যেন ফুটে উঠেছে আরো ! চুল গুলো আজ খোলা না বরং টাইট করে বাধা ! আসলে আজকে ওর সব কিছুতেই কেমন একটা তীক্ষ ভাব ! তবে এক গাছি চুপ সামনে চেনে আনা !
এটাও আমার বেশ পছন্দের !
আমি ওকে সাধারনত চুপ খোলা রাখতেই বলি ! তবে যেদিন ও চুল বাধে ওকে বলি যেন সামেন কিছু চুল যেন এমনি ছাড়া রাখে । কারন বাতাসে যখন চুল গুলো যখন ওর চেহারার সামনে চলে আসে দেখতে বড় ভাল লাগে !
নিশির হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ও মেহেদিও দিয়েছে । বাহবা !
এইটুকু সময়ের ভিতরে মেয়েটা কত কিছু করে ফেলেছে !
কেবল আমাকে খুশি করার জন্য !
যাহ ! নিশির উপর যে রাগটা ছিল সেটা আর নেই ! এমন মেয়ের উপরে কি রাগ করে থাকা যায় !
আমি নিশির দিকে এগিয়ে গেলাম ! নিশি এখনও অন্য দিকে তাকিয়ে আছে ! আমি কাছে আসতেই আমার দিকে উল্টো করে তাকালো !
আমি বললাম
-কি হল ?
-কিছু না !
-আরে বাবা তাহলে কেন এমন করছো ! সেই কখন এখানে এসেছো ! এখানে এসে একবারও আমার সাথে ঠিক মত কথা বল নাই ! কেবল ঐ বাচ্চা দের দৌড়াদৌদি দেখতে এসেছ !
-দেখো না কি সুইট লাগছে না ?
-হুম লাগছে !
-আমাদের যখন এমন একটা বাবু হবে আমরাও এমন করে বিকেল বেলা বাবুটাকে নিয়ে বাইরে বের হব, ঠিক আছে ?
-হুম ! ঠিক আছে ! তুমি কি আমাকে এই কথা বলতে এসেছো এখানে ? এই এমন ভাবে আমার জন্য সেজে গুজে ...
নিশি আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুটা সময় ! তারপর বলল
-ইস ! আমি তোমার জন্য কেন সাজবো ! আমার ইচ্ছা হল তাই এমন টা পরেছি ! তোমার জন্য না !
আমি হাসলাম !
-আচ্ছা ! বুঝলাম !
নিশির মাঝে হঠাৎ কি যে হল ও ওর চোখ কেমন যেন টলমল করে উঠল !
আমি তাড়াহুড়া করে বললামা
-আরে কি হল ? কান্না কাটির কি দরকার ?
নিশি আমার দিকে তাকিয়ে বলল তুমি কাল রাতে আমার ফোন কেন ধর নাই !
-আরে বাবা আমি তোমাকে সকালে বললাম না যে আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম ! এই জন্য ধরতে পারি নি !
নিশি আবারও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন ! বলল
-মিথ্যা কথা ! তুমি আমার উপর ফোন ধর নি !
আমি খানিকটা চমকালাম ! কারন আসলেই কথাটা সত্যি ! আমার কালকে ওর উপর খানিকটা অভিমান হয়েছিল ! আমি ওর সাথে কথা বলার জন্য বসেই ছিলাম কিন্তু ওর ফোন করার কোন নামই নাই !
কালকে নাকি ওর অনেক পুরানো বান্ধবীর সাথে কথা বলবে ! লন্ডন থাকে ! স্কাইপিতে কথা হবে ! তাই আমাকে বলেছিল আমি যেন কিছুক্ষন অপেক্ষা করি ! আমি অপেক্ষায় ছিলাম ।
অপেক্ষায় আছি তো আছি !
যখনতিনটা বেজে গেল তখন আসলেই মনটা একটু খারাপ হল ! নিশির ফোন আসলো তারও প্রায় আধা ঘন্টা পরে ! আমি রাগ করে আর ফোনই ধরি নাই !
আমার থেকে যখন তার কথা বলাটাই বেশি প্রয়োজনীয় তাহলে কথাই বলুক আগে !
তারপর নিশি কয়েকবার ফোন দিয়েছিল কিন্তু আমি ফোনটা আর ধরি নাই ! কেবল তাকিয়ে ছিলমা মোবাইল স্ক্রীনের দিকে !
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গলো নিশির ফোনেই ! ও যখন জানটে চাইলো যে আমি ওর উপর রাগ করে ফোন ধরি নি কি না আমি বললাম যে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম তাই ধরতে পারি নাই !
কে জানে নিশি হয়তো আমার কথা ঠিক বিশ্বাস করে নাই !

নিশি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আমি জানি তুমি আমার উপর রাগ করেছ ?
-তাই ?
-আর কি জানো ?
-আই লাভ ইউ !
-আর ?
-আই লাভ ইউ !
আমি একটু হাসলাম ! ওর হাতটা নিজের হাতের ভিতর নিয়ে বললাম
-তোমার উপর কিআমি রাগ করে থাকতে পারি বল ?
ওর হাত টা নিজের মুখের কাছে এনে আলটো ঠোট দিয়ে স্পর্শ করলাম ! অন্য সময় হলে নিশি হয়তো একটু বাধা দিত ! এই সব নিশি একদমই পছন্দ করে না ! এমন কি ঐ টাইটের পোষাক পরিচ্ছেদও ওর ঠিক পছন্দ না ! কেবল আমাকে খুশি করার জন্যই ওর এই টা পরা !

নিশি বলল
-আসলে লিয়ানার সাথে অনেক দিন পরে কথা হচ্ছিল ! কথা বলতে বলতে কখন যে সময় কেটে গেল আমি টেরই পাই নি ! আমি জানি তুমি কথা বলার জন্য বসে ছিলে !
-আচ্ছা বাবা থিক আছে ! বাদ দাও !
-আমি সরি খুব ! আর কখনও হবে না ! তুমি প্লিজ রাগ কর না !
-আচ্ছা বললাম না বাদ দাও ! জানো আমি মোটামুটি শিওর ছিলাম যে তুমি আসবে !
-তাই ?
-হুম ! এই দেখো তোমার জন্য একটা উফার কিনে এসেছি !
-কই দেখি !!
আমি পকেট থেকে ওর জন্য কিনে আনা পায়েলটা বের করলাম ! নিশির দিকে বাড়িয়ে দিতে বলল
-নিবো না এভাবে ?
-তাহলে ?
-পরিয়ে দাও !
-আচ্ছা ! থাক তাহলে ননিতে হবে না !
-অপুপুপুপুপুপু !!
আমি হেসে উঠলাম !
বললাম
-আচ্ছা পরিয়ে দিচ্ছি !
আমি নিশির সামনে হাটু গেড়ে বসলাম ! তারপর ওকে বললাম যে ওর ডান পা টা আমার হাটুর উপর রাখতে !
-কি বলছো ? তোমার গায়ের উপর পা দিবো !
-আহা ! দাও না ! কিছু হবে না !
একটু ইতস্তত করে ও তাই করলো ! আমি কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলমা ! বার বার মনে হচ্ছিল এখন একটা ক্যামেরা ম্যান দরকার ছিল ! তা হলে কি চমৎকারই না একটা ছবি আসতো !
আমি নিজে হাতে ওকে পায়েলটা পরিয়ে দিলাম ! ঠিক যখন ও পা সরাতে যাবে তখনই ওকে কোলে নিয়ে ফেললাম !
-এই কি কর ?
-কিছু না !
-ভাল হবে না বলছি !
-না হোক ! আজ তোমার কোন ছাড়া ছাড়ি নাই সুন্দরী !
-এই ! ছাড়ো ! এই .....

ফেবু লিংক
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৫
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×