somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিশি অথবা ছোট্ট একটু গল্প !!

০৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে তিনটা বাজে । একটু কোমরটা সোজা করলাম । এতোক্ষন মোটামুটি বাঁকা হয়েই ছিলাম । এতো খাটাখাটনি সব ঐ ফাজিল মেয়েটার জন্য । নিজে কিছু করবে না আমার ঘারে চাপাবে !
ফাজিলের ফাজিল !

আজ সকালে ক্লাস করতেছি এমন সময় নিশি আমাকে একটা ফাইল দিয়ে বলল
-এই নে ।
-কি এটা ?
-আমার এসাইনমেন্টের টপিক ।
-আমি কি করবো ?
নিশি যেন একটু বিরক্ত হল ।
-তুই কি করবি মানে ? এসাইনমেন্ট তুই করবি আর তুই নিবি না ?
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম । কি বলে এই মেয়ে । আমি ওর এসাইনমেন্ট করতে যাবো কোন দুঃখে ! আমি খানিকটা অবাক হয়ে বললাম
-মানে ?
নিশি আমার কথা শুনতে পাই নাই এমন একটা ভাব করে বলল
-শোন কালকে জমা দেওয়ার শেষ সময় । ভাল করে করবি । নাম্বার যদি কম পাই তোর কিন্তু খবর আছে ।
কি রে বাবা ! আমি এসাইনমেন্ট করে দেবো কি না সেটার ঠিক নেই এই ফাজিল মেয়ে নাম্বার নিয়ে আমাকে ধমকাচ্ছে ।
আশ্চার্য !

আমি আর একবার আড়মোড়া ভাঙ্গছি । এখন একটু ঘুমানো দরকার । কত আড়াম করে ঘুমাতাম কিন্তু ঐ ফাজিলটার জন্য দেরী হয়ে গেল । মনে মনে নিশিকে বকতেছি আর তখনই ফোনটা বেজে উঠল । যা ভেবেছিলাম তাই ।
নিশির ফোন ! আশ্চর্যের ব্যাপার হলেও সত্য যে আমি আগে যতবার নিশিকে মনে মনে বকা দিয়েছি ও ঠিক বুঝে গেছে । কেমনে বুঝে কে জানে ? আমি ফোন রিসিভ করলাম ।
-কি কাজ শেষ ?
-হুম ।
-আমাকে বকছিলি কেন রে ?
-আমি তোকে বকছিলাম ?
-দেখ ঢং করবি না । তুই খুব ভাল করে জানিস যে আমি ব্যাপারটা টের পেয়ে যাই ।
আমি কোন কথা না বলে চুপ করে থাকি । নিশি বলল
-জানিস আজকে না জেরিনকে দেখতে এসেছিল । আমরা সবাই ওখানেই ছিলাম ।
-জেরিন ? তোর ঐ কাজিন ?
-হুম ।
-তারপর ? পছন্দ হয়েছে ?
-হবে না আবার ? তুই তো ওকে দেখেছিসই ।
-হুম ।
-আর একটা মজার ব্যাপার ঘটেছে ।
-কি ?
-ওরা আমাকেও পছন্দ করেছে ।
হঠাত্‍ করে যেন আমি একটু ধাক্কার মত খেলাম । কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললাম
-তারপর ?
নিশি বলল
তার আর পর কি ? ছেলে তো ভালই দেখলাম ।
-তুই রাজি ?
-দেখা যাক ! আচ্ছা শোন । এখন খুব ঘুম আসছে । কালকে সকাল সকাল আসিস । আচ্ছা ?
নিশি ফোন রেখে দিল ।

আমি কেবল চুপ করে কিছুক্ষন বসে রইলাম । কেন জানি সব কিছু ফাঁকা লাগছে । একটু যেন এলোমেলো । কতক্ষন ঐ ভাবে বসেছিলাম ঠিক বলতে পারবো না ফোনের আওয়াজেই আমার তন্ময় ভাঙ্গল ।
আবারও নিশির ফোন ! ঘড়িতে চারটা বেজে গেছে । তারমানে এক ঘন্টা বসেছিলাম একভাবে !
-বল !
-ঘুমাস নি ?
-এই তো ঘুমাবো !
-মিথ্যা কথা কেন বলিস ? ঘুম আসছে না তাই না ?
আমি কেন জানি লুকানোর চেষ্টা করলাম না আর । বললাম
-হুম । ঘুম আসছে না ।
-কেন ?
-জানি না ।
-আমি জানি ।
কিছুক্ষন চুপ করে রইলাম দুজনেই । হঠাত্‍ নিশি বললাম
-ঐ দিন আমার হাত ধরেছিলি মনে আছে ?

কদিন আগে নিশি হাতে খুব সুন্দর করে মেহেদি দিয়েছিল । ওর সাথে রিক্সা করে যাওয়ার সময় বললাম
-বাহ ! সুন্দর করে মেহেদী দিয়েছিস তো !
-দেখ
এই বলে নিশি হাতটা এগিয়ে দিল । আমি ওর হাতটা ধরলাম । বলে বোঝানো যাবে না কিন্তু মনের ভিতর কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছিল । একটা ভাল লাগার অনুভুতি !
তারপর থেকে সুযোগ পেলেই আমি ওর হাত ধরতাম । কেন জানি ভাল লাগতো ।

কিন্তু হঠাত্‍ আজকে ও এই কথা টা বলল কেন ? আমি বললাম
-হুম । মনে আছে ।
-এখন আমি কি করছি জানিস ?
-কি ?
-ঐ রকম ভাবে মেহেদী দিচ্ছি ।
-তাই ?
-হুম । শোন কালকে সারাদিন তোর সাথে ঘুরবো । বুঝেছিস ? কোন কাজ রাখবি না । মনে থাকে যেন । এখন ঘুমা । জেগে থাকবি খবরদার !
নিশি ফোন রেখে দিল । আমি জেগে রইলাম । কেন জানি না । নিশি বলল আমার জেগে থাকার কারন ও জানে । আসলেই কি জানে ? কালকে জিজ্ঞেস করতে হবে ।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×