somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এস আর জনি ব্লগার এবং কতিপয় নারীর আগমন!!

১৫ ই মে, ২০১৩ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-জনি ভাই !
সিড়ি দিয়ে নামছিলাম । দুইতলার পার হতেই পলিনের ডাকটা কানে এল । এই সকাল বেলা করে পলিন কেন ডাকতেছে ?
আমি একটু না শোনার ভান করে চলে যেতে চাইলাম । আগে একটা সময় ছিল পলিনের ডাক শুনেই বুকের ভিতর একটা ঢেউ উঠত ! কিন্তু যখন বুঝতে পারলাম এই মেয়েটা আমাকে অবহেলা করছে সেদিন থেকে ওর কাছ থেকে দুরে থাকতে চেয়েছি ।
ইদানিং পলিন আমাকে কেবল মোবাইলের ফ্লেক্সি করার জন্যই ডাক দেয় ।
ফাজিল মেয়ে !
হ্যা, যদি নিজের মোবাইল নাম্বারে টাকা ভরতে দিতো তাইলে একটা কথা ছিল !
প্রথম যেদিন আমাকে ডেকে বলল
-ভাইয়া এই নাম্বারে ২০ টাকা পাঠাবেন প্লিজ ।
নাম্বারটা একটা কাগজে লেখা ছিল ।
আমার মনটা তো খুশি হয়ে গেল । কয়েকদিন আগে অপু তানভীরের একটা গল্পে পড়েছিলাম বাড়িওয়ালার ভাতিজি এমন করে নিজের নাম্বারটা ছেলেটার কাছে দেয় । তারপর তাদের প্রেম শুরু হয় ।
যাক বাস্তব জীবনেও এমন হয় ! মনে একটা ফুড়ফুড়ে ভাব নিয়ে মোবাইলে টাকা পাঠালাম । ২০ টাকা বলেছিল আমি ৫০ টাকা পাঠিয়ে দিলাম ।
দেখা হলে নিশ্চই বলবে । টুকটাক কথা হবে । আর মোবাইল নাম্বারটা তো রয়েছেই আমার কাছে !
কিন্তু দুবার দেখা হওয়ার পরেও পলিন কোন টাকার কথা বলল না ।
আশ্চার্য !
একবার তো বলা উচিত্‍ ছিল । না বলার কারন বুঝতে পারলাম তার পর দিনই ।
বিকেলে ছাদে পলিনের সাথে যখন দেখা হল নিজেই গিয়ে জানতে চাইলাম ।
-টাকা গিয়েছিল কালকে !
-টাকা ?
পলিনের চোখে একটা অজানা ভাব । আমি ভাবলাম হয়তো টাকা যায় নাই । বললাম
-ঐ যে কালকে টাকা দিলে না মোবাইলে ভরার জন্য, গেছে ?
পলিন একটু দাঁত কামড়ে বলল
-বলতে পারবো না জনি ভাই ।
-মানে কি ?
-না মানে বুয়ার মোবাইল তো ! আমি ঠিক বলতে পারবো না ।
আমি থ হয়ে গেলাম । মানে একেবারে হেপাজতি হইয়া গেলাম । কি ভাবছিলাম আর কি হইল !

আমি একবার মনে করলাম পলিনের ডাকটা না শুনেই নিচে চলে যাবো কিন্তু যাওয়া হল না ।
-জনি ভাইয়া ! অফিস যাচ্ছেন ?
না । আমি এই সাত সকালে ফরমাল পোষাক পরে ম্যারাথন দৌড়ে যাচ্ছি । আচ্ছা এই মেয়ে এমন ন্যাকামো কেন করছে ? আমি একটু গম্ভীর মুখে বললাম
-এই সকাল বেলা তো অফিসেই যায় মানুষ ।
-ও হ্যা ! আমিও না একটা গাধা ।
মনে মনে বললাম গাধা না । মহিলা গাধা ! পলিন মিষ্টি করে হেসে বলল
-আপনি ব্লগ লেখেন ?
-এই টুকটাক লিখি ।
-এস আর জনি এটা আপনার নিক ?
-হুম ।
-হায় আল্লাহ ! আমি এতো দিন বুঝতেই পারি নি । আপনি খুব সুন্দর করে লেখেন ।
আমি একটু হাসার চেষ্টা করলাম । ঠিক বুঝতে পারছি না এই মেয়ে এমন করছে কেন ?
-আপনাকে একটা রিকোয়েষ্ট করবো ?
-কর ।
-আমি আপনাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠালে আপনি এক্সসেপ্ট করবেন ?
-কেন করবো না ?
-তাহলে আমি পাঠাচ্ছি । আপনি অফিস গিয়েই এক্সসেপ্ট করবেন কেমন !
-আচ্ছা ।
-তাহলে আপনি এখন জলদি জলদি অফিস যান । কেমন ! আর শুনুন ঐ কনফেশন পাতার লেখা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না কেমন ? এটা ফালতু লোকের কাজ । ভীরু লোকের কাজ ।
-আমি জানি ।
পলিন বলল
-আসলে আপনার জনপ্রিয়তা দেখে হিংসায় জ্বলতেছে তো তাই লিখছে । আচ্ছা আপনি এখন জলদি জলদি অফিসে যান । আর জলদি জলদি আমার ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট এক্সসেপ্ট করেন ।
-আচ্ছা ।
আমি আবার নামতে শুরু করলাম ।
আচ্ছা ! তাহলে পলিন ঐ কনফেশন পাতায় আমার নাম দেখে আমাকে চিনেছে ।
আসলে ঘটনা সত্য । কয়েকদিনে বেশ কয়েকটা কনফেশন এসেছে আমার নামে । ইদানিং ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট আসা শুরু হয়েছে । সাথে টুকটাক মেসেজও ।
গত পরশুদিন এক মেয়ে মেসেজ পাঠিয়েছে যে আমি তো বিয়ে করার জন্য পাত্রী খুজতেছি । সে সেই পাত্রী হতে চায় । যে কোন মূল্যেই । আমি খুব বেশি কথা আগে বাড়াই নাই । পলিনের রিকোয়েষ্টটা বাসে বসেই মোবাইল থেকে এক্সসেপ্ট করে ফেললাম ।
অফিসে ঢুকেই দেখি কলিগ সোনিয়া কেমন চোখে তাকাচ্ছে । একটু হাসিও দিল । কদিন থেকেই এই হাসি শুরু হয়েছে । ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছি না ।
খানিক্ষন এসির ভিতর বসে ঠান্ডা হলাম ।
-স্যার ।
অফিসের পিয়নটা ।
-বল ।
-একজন আপনার সাথে দেখা করতে আসছে ।
-কে ?
-আফসানা নাম বলল ।
আফসানা ? ও এখানে কি করছে ? কদিন আগেই ব্লগে একটা পোষ্ট করেছিলাম পাত্রীদেখা বা পাত্র হিসাবে ইন্টারভিউ দেওয়া । ঐ পোষ্টের চরিত্র আফসানা । মানে কদিন আগে ওর সাথে আমার বিয়ের কথা বার্তা চলছিল । খুব বেশি দুর এগোয় নাই ।
কিন্তু ঐ মেয়ে এখানে কেন এসেছে ? বয় কে বললাম
-নিয়ে এসো ।
কিছুক্ষন পরেই আফসানা রুমে ঢুকলো ।
আমি খানিকটা তাজ্জব হয়ে গেলাম । আজকে আফসানা শাড়ি পরে এসেছে । ঐ দিনকার মত এতো গহনাও পরে নি । মানে আমি ওকে সেদিন যে যে কথা গুলো বলেছিলাম সেই ভাবেই এসেছে । চেহারায় আজ কোন অহংকারি ভাব নেই বরং একটা নমনীয়তা আছে ।
-বসবো ?
-হ্যা । বসুন ।
কিছুক্ষন কোন কথা নাই । আমি বললাম
-আপনি এতো সকালে ? আমার অফিসে ?
আফসানা মিষ্টি করে হাসলো । বলল
-ঐ দিন আসলে আমার ভুল হয়েছিল । ঐ রকম আচরন আপনার প্রাপ্য ছিল না ।
-না ঠিক আছে ।
-না ঠিক নাই । আপনি বলেন আপনি কিছু মনে করেন নি !
-আচ্ছা ঠিক আছে । আমি কিছু মনে করি নি ।
-তাহলে আজকের ডিনার আমার সাথে করবেন, যদি না করেন তাহলে বুঝবো আপনি এখন আমার উপর রাগ করে আছেন ।
আফসানার আরো কিছুক্ষন কথা হল ।
আজকে কি হচ্ছে এই সকাল বেলা । সব ঐ কনফেশন পেজের দোষ ! কনফেশন পেজের কথা মনে হতেই ফেসবুক অন করলাম ।
বেশ কিছু ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট এসেছে । ইনবক্সও দেখি করেছে অনেকে । দেখতে দেখতে আটকে গেল একটা মেসেজে । সেদিনের ঐ মেয়েটা যে আমার বিয়ের পাত্রী হতে চেয়েছিল ।
আজকে লিখেছে আমি যদি ওকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করি তাহলে সে সুইসাইড খাবে ।
কি রে ভাই !
এমন পাগল হইলি কেন । আমি মেসেজের রিপ্লে দিতে যাবো দেখি পলিন আমাকে নক করল
-জনি ভাই ।
-বল ।
-আপনার লেখা পড়ছি । আপনি এতো হাসাতে পারেন ।
এরই মাঝে দেখি ঐ মেয়েটা ।
-জনি ! আমি জানি তুমি তুমি পিসি সামনে আছো । এখনই রিপ্লে দাও ।
পলিনঃ শুনেন আপনাকে একটা কথা বলতে ভুলে গেছি ।
-কি ?
ঐ মেয়েটাঃ এই তুমি কেন রিপ্লে দাও না ?
পলিনঃ শুনেন আমার কয়েকটা বান্ধবী আপনাকে রিকোয়েষ্ট পাঠাবে । আপনি খবরদার কিন্তু ওদের টা এক্সসেপ্ট করবেন না ।
ঐ মেয়েটাঃ জনি । এই জনি ।
আমিঃ কেন ?
পলিনঃ করবেন না । ব্যাস করবেন না ।
ঐ মেয়েটাঃ জনি তুমি যদি এক মিনিটের ভিতর রিপ্লে না দাও ..
ওপাশ থেকে আবার কে নক করে ?
নাহ !
আর বাঁচি না । আর একটা চ্যাট বক্স খুলতেই যাবো মোবাইল বেজে উঠল ।
আফসানা !
আজকে আমি শেষ ! হঠাত্‍ করে এতো নারীর আগমন ঘটলো কেন আমার জীবনে ?
-হ্যালো ।
আফসানা বলল
-কাজ করছেন ?
-একটু ব্যস্ত আরকি ।
-আচ্ছা বেশি সময় নেব না ।
-বলুন ।
-একটু কথা বলতে ইচ্ছা হল ।
ঐ দিকে পলিনঃ জনি ভাই । আপনি রাগ করলেন ?
ঐ মেয়েঃ কথা বলছো না কেন জনি ।
পলিনঃ বলুন না ।
ঐ মেয়েঃ এই জনি ।
আফসানাঃ আচ্ছা আপনার ঐ কবিতাটা আমি পরেছি ...
হঠাত্‍ আমার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল । চোখে মুখে কেমন যেন অন্ধকার অন্ধকার ঠেকছে ।
কেউ যেন দুর থেকে আমাকে ডাকছে ।
কে ডাকছে ?
কোন মেয়ের ডাক শুনতে চাই না আর !

(গল্পটি জনি ভাইয়ের অনুরোধক্রমে লেখা। সব চরিত্র কাল্পনিক)
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×