somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

থার্টিফার্ষ্ট নাইটে মেয়েটির সাথে আমার হাটাহাটির গল্প

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-একটু শুনবেন ?
বাইরে এতো ঠান্ডা যে আমার কানের ভিতর কথাটা খুব ভাল করে ঢুকলো বলে মনে হল না । কোন ছেলের কন্ঠ হলে হয়তো আমি সেদিকে ফিরেও তাকাতাম না কিন্তু কন্ঠটা একটা মেয়ের । কিন্তু এতো ক্ষীন লাগলো !
তবুও বাঁ দিকে ফিরে তাকালাম !

আজকে বছরের শেষ দিন, টিউশনী থেকে বের হব এমন সময় বন্ধু আসিকের ফোন ! বলল
-টিউশনী থেকে বের হয়ে গেছ ?
-হুম ! কেন ?
-আরে বাসায় আসো !
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি প্রায় সাড়ে নয়টা বেজে গেছে ! এখন আসিকের বাসায় যাবো কিভাবে যদিও আমার স্টুডেন্টের বাসা থেকে আসিকের বাসা খুব বেশি দুরে না । দুতিন মিনিটের পথ !
আমি বললাম
-এখন ?
-আসো ! পোলাও রান্না করেছি ! খেয়ে যাও !
-কিন্তু .....
আমি বলতে চাইলাম যে রাত হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সাথে পোলাও এর কথা টা মনে পড়লো ! শেষে একবার আসিকের বাসা থেকে ঘুরে আসবো বলে ঠিক করলাম ! খাওয়া গল্প শেষ করে যখন বাইরে আসলাম তখন প্রায় ১২ টা বেজে গেছে । আসিক অবশ্য বলছিল বাসায় থেকে যেতে কিন্তু এই শীতের বেলায় অন্যের বিছানার ঠিক মত ঘুম আসবে না । তার উপর ইদানিং আমার ঘুম আসতেছে ভোরের দিকে এতো রাত পর্যন্ত অন্যের বাসায় জেগে থাকাটা কেমন দেখায় ! আজকে আবার থার্টি ফার্ষ্ট নাইট ! বাসায় যেতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা না !

আমি মেয়েটির দিকে তাকালাম ! কাজীর গলির বাম পাশের মেয়েটি দাড়িয়ে রয়েছে ল্যাম্প পোষ্টের নিচে ! মেয়েটি কেমন যেন সংকুচিত হয়ে দাড়িয়ে আছে । এমন একটা ভাব যেন মেয়েটি খুব বড় কোন অপরাধ করে ফেলেছে । এখন দাড়িয়ে আছে শাস্তির অপেক্ষায় !
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মেয়েটি এখানে কি করছে !
এতো রাতে ?
যদিও এলাকাটা ভাল এলাকা ! কিন্তু রাত প্রায় ১২টা বাজতে চলেছে এই সময়ে একা একটা মেয়ে এখানে দাড়িয়ে !
সঙ্গে বয়ফ্রেন্ড থাকলে অবশ্য একটা কথা ছিল ! অথবা আশেপাশে কোন ফারারী দাড়িয়ে থাকলেও একটা কথা ছিল !
মেয়েটির পোষাক আকাশে অবশ্য ফারারী চড়ার মত না । কালো রংয়ের একটা কামিজের সাথে কালো একটা ল্যাগিংস পরেছে !
ল্যাগিংস !! :D :D
কাধে একটা ব্যাগ ! চোখে কালো ফ্রেমের একটা চশমা ! চুল গুলো খোলা !

মেয়েটি আবার বলল
-একটু শুনবেন ?
-আমি ?
-জি !
মেয়েটির গলা একটু একটু কাঁপছে ! যেন ভয় পেয়েছে কোন কিছুতে ! অথবা আমাকেও মেয়েটি ভয় পাচ্ছে !
আমি মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেলাম ! বললাম
-জি বলুন !
-আসলে .....
কিছু একটা বলতে গিয়েও মেয়েটি থেমে গেল ! ভয় কিংবা দ্বিধার কারনে মেয়ে টি কিছু বলতে পাচ্ছে না !
আমি বললাম
-দেখুন যদি কিছু বলতে চান নির্ভয়ে বলতে পারেন ! বেশ রাত হয়েছে । এভাবে এখানে একা একা দাড়িয়ে থাকাটা ঠিক না !
মেয়েটির মনে হল আমার কথাটা বিশ্বাস হল । তার উপর আমার চেহারায় একটা ভাল মানুষী ভাব আছে । মানুষ জন সহজে আমকে খারাপ ভাবে না !
মেয়েটি বলল
-আসলে আমার বাসা গাজীপুরে !
-গাজীপুর ? এতো রাতে এখানে কেন ?
-বাড়িতে রাগারাগি করে চলে এসেছি ! এক বন্ধুর বাসায় আসবো বলে ! এখন এসে দেখে সে বাসায় নেই !
-বাসায় নেই ফোন দেন !
-ফোন বন্ধ !
-আরে এটা কোন কথা ? গাজীপুর থেকে ঢাকায় আসার আগে আপনি তাকে ফোন দিবেন না ? এমন গাধামী কেউ করে নাকি ?

আমি মনে হয় একটু জোরেই কথাটা বলে ফেলেছি দেখলাম মেয়েটি চোখ ফেটে কান্না বেরিয়ে এল । যদিও মেয়েটি আপ্রান চেষ্টা করছে চোখের পানি আটকানোর ! কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল !
আমি তাড়াতাড়ি বললাম
-আচ্ছা ঠিক আছে । কান্না কাটি করতে হবে না ! দেখুন প্লিজ কান্না থামান ! এখন কি করতে চান বলুন ?
মেয়েটি চশমা খুলে চোখের পানি মুছলো ! তারপর বলল
-আপনি কি আমাকে একটু শাহবাগ পর্যন্ত পৌছে দিতে পারবেন ? ওখান থেকে আমি নিজেই চলে যেতে পারবো ।
-এতো রাতে কিভাবে যাবেন ?
-বাস পেয়ে যাবো ?
-আরে মাথা খারাপ নাকি ? এতো রাতে কোন বাস আসবে কোথা থেকে ! দেখছেন না এখান থেকে পরীবাগ যাবে ন একটা রিক্সা পর্যন্ত নাই ! গাজীপুরের বাস কিভাবে পাবেন ?
-আমার কেবল এই পথ টুকু পর করে দিন ! আমার একা একা যেতে ভয় লাগছে !

মনের ভিতর কেমন একটা খটকা লাগলো ! মেয়েটি এই পথ টুকু যেতে ভয় পচ্ছে কিন্তু গাজীপুর এতো দুর ! সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছে না ! আচ্ছা অন্য কোন মতলব নাই তো ?
যেমন সিনতাই জাতীয় কিছু ?
কে জানে ?
অবশ্য সিনতাই হওয়ার মত আমার কাছে তেমন কিছু নাই ও ! মাসে শেষে পকেট ফাকা প্রায় ! অবশ্য পকেটে মোবাইলটা আছে ! এটা গেলে একটু খারাপ লাগবে !

নিজের ভিতরেই একটু সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম । মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে কেন জানি মনে হচ্ছে মেয়েটি মিথ্যা বলছে না মানে সত্যই বিপদে পরেছে মনে হচ্ছে !! তারপরেও মেয়েটি কথা গুলো ঠিক বিশ্বাস করার মত না !
কি করবো ?
এখন ঘুরে চলে যাবো ? নাকি মেয়েটির সঙ্গে করে পরীবাগ পর্যন্ত নিয়ে যাবো ?
যা থাকে কপালে ! মেয়েটাকে নিয়েই যাই । আর যদি এর মধ্য একটা রিক্সা পেয়ে যায় তাহলে তো কথাই নাই !
আর মেয়েটিকে এখানে রেখে গেলে একটা চিন্তা মনের মাঝে রয়েই যাবে !
মনের ভিতর শান্তি পাবো না !

-আচ্ছা চলুন !
মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হল মেয়েটি যেন একটু ভয় মুক্ত হল !
আমি বললাম
-রিক্সা মনে হচ্ছে পাওয়া যাবে না । চলুন হাটা শুরু করি । যদি রিক্সা পাই তাহলে নেওয়া যাবে । ঠিক আছে ?
-আচ্ছা !

হাটা শুরু আগে আমি আরেকবার চারিদিকে দেখে নিলাম । কয়েকটা দোকান এখনও ঔষধের দোকান খোলা আছে । এগুলো মনে সারারাত খোলা থাকে ! কিন্তু এই গুলো ছাড়া চারিপাশে আর কোন জন প্রানী নেই ! মাঝে মাঝে কেবল ভুসভাস করে একেকটা গাড়ি চলে যাচ্ছে । কোন গাড়ীর ভিতর থেকে আবার ভেসে আসছে উচ্চ স্বরে হিন্দি গানের আওয়াজ !

থানা টা পার হয়ে রাষ্ট্রিও অতিথি ভবনের কাছে যখন এসেছি তখন মেয়েটি প্রথম কথা বলল !
-এদিক দিয়ে গেলে মনে হয় বেশি ঘুরে যেতে হবে ! ঐ দিকে আরেকটা রাস্তা আছে না ?
-আপনি এই এলাকা চেনেন দেখি !
-জি ! প্রায়ই আসা হয় এখানে ! সুমনের সাথে ঐ মিন্টু রোডে প্রায়ই হাটতাম !
-সুমন ?
মেয়েটি উত্তর দিতে কিছুটা সময় নিল ! কিছু একটা ভাবছে । আমাকে সুমনের কথা বলবে কি না ভাবছে ! শেষে মনে হল বলার সিন্ধান্তই নিল !
-আসলে আমি আপনাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছি !

আমরা মিন্টু রোডের দিকে হাটা দিয়েছি ! মেয়েটা যদিও বলল যে ও আমাকে একটা মিথ্যা কথা বলেছে কিন্তু আমার মনে হল যে মেয়েটা সিনতাই করার জন্য আমার সাথে আসে নাই ! অন্তত এখন যখন মিন্টু রোডের দিকে যাচ্ছি তখন তো নয়ই ! এখানে ডিবির অফিস রয়েছ তার উপর প্রতিটা বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারা ! এখানে সিনতাই করার সাহস পাবে না নিশ্চই !
মেয়েটি আমাকে এখনও বলে নি সে কি মিথ্যা কথা বলেছে ! আমি অবশ্য জিজ্ঞেস করি নি । মেয়েটির সাথে হাটতে কিন্তু খারাপ লাগছে না ! মিন্টু রোডটা আমার এমনিতেই পছন্দ ! দিনের বেলা আমি এখানে একলা একলা প্রায়ই হাটি ! আর এখন এই রাতের বেলা মিন্টু রোডের কেমন যেন একটা অন্য রকম সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছে ।
প্রত্যেকটা বাড়ির সামনে একটা করে আলো জ্বলছে । আর জ্বলছে ল্যাম্প পোষ্টের আলো গুলো ! তবুও খুব বেশি লাভ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না । অন্ধকার দুর তো হয়ই নাই তার উপর একটা আলো আধারীর খেলা শুরু হয়েছে !
আর আমি এই হিম ঠান্ডার রাতে একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে হাটছি ! আশ্চর্য ! যে মেয়েটার নাম পর্যন্ত আমি জানি না ! আরে মেয়েটার নামই তো জিজ্ঞেস করা হয় নাই !
আমি বললাম
-আরে আপনার নামটাই তো জানা হয় নাই !
-আমার নাম জেরিন ! জেরিন আফরিন !
-আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভাল লাগল জেরিন ! আমি অপু ! আপনি কি যেন একটা মিথ্যা বলেছিলেন বলছিলেন ? সুমেনর ব্যাপারে মনে হয় !
জেরিন কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল
-আসলে আমি কোন বান্ধবীর সাথে দেখা করতে আসি নি ! আমি এসেছিলাম সুমনের সাথে দেখা করতে !
-সুমন ? আপনার ...।?
-আমার বয়ফ্রেন্ড !
আমিও তাই ভাবছিলাম ! একটা মেয়ে গাজীপুর থেকে বান্ধবীর সাথে দেখা করতে চলে আসবে তাও আবার একা একা ? এটা একটু অস্বাভাবিক !
কিন্তু বয়ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করার জন্য একটা মেয়ে বঙ্গোপসাগর আর বুড়িগঙ্গা নদীও পাড়ি দিতে পারে ! কোন রকম ভয় ভীতি ছাড়াই !
-তারপর ? দেখা হয় নি !
-হয়েছে !
-তাহলে ?
এবার আমি একটু অবাক হলাম । সুমনের সাথে দেখা হয়েছে । তাহলে সে কই ? ঝগড়া হয়েছে নাকি ? হতে পারে ! হয়তো এদের অন্য কোন প্লান ছিল । কিন্তু এতো রাতে মেয়েটাকে এভাবে একা একা ছেড়ে দিল !
আশ্চর্য !
আমি বললাম
-ঝগড়া হয়েছে ?
-নাহ !
-তাহলে ? সে কিভাবে আপনাকে একা একা আসতে দিল ? এই রাতের বেলা ?
-সে আসতে দেয় নি !
-মানে কি ?
জেরিন আমার কথার কোন জবাব দিল না । অন্ধাকরের মধ্যেই দেখলাম মেয়েটার মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেল !
সমস্যা কি !
আমিও আর কিছু না বলে হাটতে লাগলাম ! শীতটা যেন কোথা থেকে আরও উড়ে এসেছে । আমি একটু কাঁপতে লাগলাম !
কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় মেয়েটার গায়ে কোন চাদর কিংবা সোয়েটার নেই ! মেয়েটর কি শীত লাগছে না ?
-আপনার শীত লাগছে না ?
-নাহ !
-লাগছে না ?
-উহু ! আমার শীত লাগে না !

কি রে ভাই ! শীত লাগে না ! হুম ! এই জন্যই মেয়েদের হট বলে ! প্রবল শীতের মাঝেও এদের কোন শীত লাগে না !

হাটতে হাটতে প্রায় মিন্টু রোডের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি ! সামনেই রুপসী বাংলার মোড় ! কিন্তু এখানে তেমন আলো নেই ! আন্ধকারটা একটু যেন বেশি !

আমি হাটছি আপন মনে ! জেরিন হাটছে আমার পাশেই ! হঠাৎই জেরিনের ভয়ার্থ গলার আওয়াজ পেলাম ! পাশে তাকিয়ে দেখি জেরিন আমার পেছনে চলে এসেছে ! যেন সামনে থেকে কিছু একটা আক্রমন করছে ওকে !
আমি কিছু বুঝতে পারলাম না ! আসলে কিসে ও ভয় পাচ্ছে !
আমি বললাম
-কি হয়েছে ?
জেরিন আরও ভয় মাখা গলায় বলায় বলল
-ও ! আমাকে মেরে ফেলবে !
আমি জেরিনের হাতের নির্দেশ অনুসারে সামনের দিকে তাকালাম ! তাকাতেই আমর চোখ কপালে উঠলো !
মাই গড !
এ আসো কোথা থেকে !
ইয়া বড় এক ছুরি এক যুবক আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে । যদিও অন্ধকার তবুও যুবকের হাতের ছুরিটা কেমন চকচক করে উঠলো !

যুবক আমাদের কাছে এসে বলল
-শুনুনন মিষ্টার ! আপনার সাথে আমার কোন বিরোধ নাই ! জেরিন কে দরকার আমার !
জেরিনের নামধরে ডাকছে তারমানে জেরিন কে যুবক চিনে ?
কে ?
সুমন না তো ?
কিন্তু এর হাতে ছুরি কেন ? চোখে খুনে নেশা কেন ?
পেছন থেকে জেরিন আমার হাত চেপে ধরেছে ! ভর জড়ানো গলায় বলল
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিবেন না ! ওর হাতে ছেড়ে দিবেন না !
যুবক বলল
-দেখুন ও আমার গার্লফ্রেন্ড ! আমাদের মাঝে আপন আসবেন না প্লিজ !
জেরিন বলল
-আমি তোমার সাথে যাবো না ! আমি তোমার সাথে যাবো না !

আমি কিছু বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে ! কিন্তু কিছু একটা যে ঠিক হচ্ছে না এটা বুঝতে পারছি ! আমার কি করা উচিৎ !
জানি না কিরা উচিৎ তবে জেরিন কে যুবকের হাতে তুলে দিতে মন বলল না যদিও তার হাতে ইয়া বড় একটা ছুরি রয়েছে !
-কই দিন !
যুবক ধমকে উঠলো !
আমার বুকের ভিতর টা দুরু দুরু করতে লাগলো তবুও বলল
-দেখুন আমি জেরিন কে আপনার হাতে তুলে দিবো না !
-ভাল হবে না আপনার জন্য !
-না হোক ! যদি ওকে নিয়ে যেতে চান তাহলে আগে ছুরিটা আমার উপর চালাতে হবে আগে !

কি কইলাম আমি ?
মাথা খারাপ হয়েছে ! এখন যদি এই ছুরি সত্যি সত্যি আমার গলায় চালিয়ে দেয় ?
কত সখ ছিল একটা বিয়া করুম ! এখন এক মাইয়ার জন্য জানটা হারাইতে হইতাছে !
এখন কি জেরিন কে নিয়ে দৌড় দিবো ? আমি জেরিনের দিকে মুখ করে ফিসফিস লরেবললাম
-আপনি দৌড় দেওয়ার জন্য রেডি থাকেন ! ঠিক আছে !
কোন উত্তর আসলো না ! আমি ঘাড় ঘুরিয়ে জেরিন কে দেখতে গেলাম তখনই আমাকে চরম ভাবে অবাক হতে হল !
আমার পিছনে কেউ নেই !
কই গেল ! আগেই কি দৌড় দিছে নাকি ?
কই না তো ! জেরিন যখন আমার পাশে হাটছিল তখন ওর পায়ের আওয়াজ পাচ্ছিলাম কিন্তু যদি ও দৌড় দিতো আমি অন্তত বুঝতে পারতাম যে ও দৌড় দিছে !
কই গেল !
আমাকে এই রকম বিপদের সামনে রেখে মেয়েটা চল যেতে পারলো !
ফজিল মাইয়া !
বদ মাইয়া !
এখন ছুরির কোপ খাবে কে ?
আমি আবার ভয়ে ভয়ে সামনের দিকে তাকালাম !
একি !
ঐ লোক গেল কই ?
আমি আরেক বার চারিদিকে ঘুরে দেখলাম !
কোথাও কেউ নাই !
না জেরিন
না ছুরি হাতে ঐ যুবক !
মানে কি ?

আমার মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না । তবে ছুরির কোপ খাওয়ার ভয়টা কমে এসেছে । কিন্তু পরক্ষনেই অন্য একটা ভয় চেপে ধরলো !
জেরিন আর ঐ যুবক কে ছিল ?
এখন আমার কি করা উচিৎ ! দৌড় মারবো নাকি ?
কি করবো বুঝতে পারছি না ! মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে ! সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না ! কিছুক্ষন দাড়িয়েই রইলাম একই ভাবে !

এমন সময় পেছনে টুংটাং আওয়াজ পেলাম ! পেছনে তাকিয়ে দেখি একটা রিক্সা আসছে !

-মামা যাইবেন নাকি ?
-হুম ! মোহাম্মাদপুর, যাবা ?
-হ ! যামু ! তয় ৭০ টেকা লাগবো !
-আচ্ছা

আমি আর কথা না বলে উঠে পড়লাম রিক্সায় ! বুকের ভিতের উত্তেজনটা একটু কমে এসেছে ! ভয়টাও একটু কমে এসেছে !
এতো ক্ষন তাহলে আমি কার সাথে কথা বললাম ? আর কার সাথেই বা হাটাহাটি করলাম ?


১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×