somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তেরটি ন্যানো গল্প অথবা অন্য কিছু !!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এক
দরজা খুলেই মেয়েটাকে দেখতে পেলাম । মাথা নিচু করে বসে আছে কালো রংয়ের বেঞ্চটার উপরে । আমার মনে আছে আমি প্রথম যেদিন এখানে এসেছিলাম ঠিক মেয়েটির জায়গায় বসে ছিলাম ! অপেক্ষা করছিলাম কারও আসার জন্য ! মেয়েটিও হয়তো সেই রকম কারও জন্য অপেক্ষা করছে !
মেয়েটির চুল গুলো চেহারার সামনে চলে এসেছে । ঠিক মত চেহারা তাই দেখা যাচ্ছে না ! গায়ের রংটা একটু ময়লা ! তবে চুল টা বেশ লম্বা !
আমি তাকিয়ে রইলাম !
আচ্ছা মেয়েটা কি কারও জন্য অপেক্ষা করছে ?
আমার জন্য ?
নাহ !
কোন সম্ভাবনা নেই ।
মেয়েটির সাথে আমার পরিচয় হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই !
আমি পাশ দিয়ে হেটে চলে আসি ! মেয়েটি অপেক্ষা করতে থাকে হয় তো কারো জন্য !


দুই
-সিগারেট খাচ্ছ ?
-হুম !
-কবে থেকে ?
-জানি না ! সঠিক হিসাব করি নি কবে থেকে খাই !
-আমি চলে যাওয়ার পর থেকে ?
মেয়েটির কথা শুনে ছেলেটি কিছুক্ষনের জন্য থেমে গেল । সত্যি কি তাই ! কবে থেকে সে সিগারেট খাওয়া শুরু করেছে !
কে জানি একটা সময় বলে ছিল ধোঁয়া নাকি চিন্তা কে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে ! কষ্টের তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রেও নাকি ধোয়ার কোন তুলনা নেই ! ধোয়ার তীব্রতা যত বেশি হবে কষ্ট তত দ্রুত প্রশমিত হবে !
কে জানে কত টুকু সত্যি !
প্রথম যে দিন মেয়েটি হারিয়ে গেল ছেলেটি আর কিছু ভাবতে পারছিল না । ঠিক মত যেন নিঃশ্বাস নিতে পারছিল না যেন । বাসায় যাওয়া আগে সে দিনই প্রথম দুই প্যকেট নেভি ছিল পকেটে !
আসলেই সিগারেট চিন্তা অন্য দিকে নিতে পারে ! আজও তাই ছেলেটি একটির পরে একটি সিগরেট খায় ! একটু চিন্তা টা অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য !
মেয়েটির চিন্তা !


তিন
আমি যে ভালবেসে ছিলাম তা আজও আছে !
তোমার মেঘ চুলে আকর্ষন আজও আছে ।
আজও রাত কাটে কেবল তোমার ভাবনায় !
তোমার প্রেমে পাগল প্রায় আজও আমি !
কারও দিকে এখনও মন চায়না ভালবাসি একটু
আজও একটু দুষ্টামীর ভালবাসা কেবল তোমার জন্য !
একটু ভালবেসে তুমি না হয় চলেই যেও,
চলেও যাওয়ার অধিকার তোমার আজও আছে !

কেউ বলে
অন্য কোন সময় !
অন্য কোন সময় কখনও আসে না !
মনটা তো খানিক পাগল একটা
অন্য কোথায় যায়ও না !
তবুও তোমার জন্য ভালবাসা আজও আছে !
তোমার চলে যাওয়া অধিকার আজও আছে !



চার
-আমি আসবো তোমার সাথে ?
আমার কথা শুনে সুমির মুখ টা একটু যেন উজ্জল হয়ে এল !
আনন্দে ?
নাকি অন্য কিছু ?
নাকি আমি ভুল দেখলাম ! এমন কিছু তো না ! আমি তাকে একটু এগিয়ে দিতেই পারি ।
একটু রাত হয়ে গেছে । মেয়েদের একা একা যেতে দেওয়া ঠিক না !
সুমি হেসে বলল
-তোমার সমস্যা হবে না তো ?
-না হয় একটু হলই সমস্যা ! সুন্দরী মেয়েদের জন্য একটু সমস্যার না হয় সমাধান করলামই !

সুমির মুখের হাসিটা এবার বিস্তৃত হল !
মেয়েরা কি অল্পতেই খুশি হয় ?
আচ্ছা আমি যদি না হয়ে অন্য কেউ সুমিকে এই কথাটা বলতো অন্য কেউ যদি ওকে এগিয়ে দিতে চাইতো তাহলেও কি ও এমন খুশী হত ?
আমি জানি না !
-কই চল !
-হুম ! এই তো আসছি !


পাঁচ
চারিদিকটা কুয়াশায় ঢাকা ! সকাল হয়েছে বেশ কিছুক্ষন আগে কিন্তু তবুও এখনও অন্ধকার টা ঠিকই চোখে লাগছে । একটু দুরের জিনিসও ঠিক মত দেখা যাচ্ছে না ! কেমন যেন একটা ভয় ভয় করছে মেয়েটির !
একবার এদিক আরেকবার ওদিক করলো মেয়েটি !
কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে না ! কেবল একটু দুরত্ব রেখে কয়েকটা নেকড়ে মেয়েটিকে অনুসরন করছে ।
এদিকে বাড়ির রাস্তাটাও যেন কোন দিকে ?
মেয়েটি মনে হয় পথ হারিয়েছে !
কোন দিকে যাবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না !
মেয়েটি আরও কয়েকবার এদিক ওদিক তাকালো ! কাউকে সে খুজছে । কেউকে খুজছে । চেনা কেউ !
কিংবা কাছের কেউ !

কুয়াশার ভিতর এই দেখা যাচ্ছে কেউ আসছে ! মেয়েটি একটু দ্বিধা বোধ করলো । সামনে যাবে কি ?
লোকটা কে চিনে ?
তার কাছে যাওয়া কি ঠিক হবে ?
তবু ও মেয়েটি ভয় ভয় পায়ে এগিয়ে গেল অন্ধকারের ভিতর থেকে আসা লোকটার দিকে !


ছয়
জানো আমার সমুদ্র অনেক পছন্দ ছিল ! সারি সারি নাড়িকেল গাছের মাঝে দুরে দেখা যাবে নীল জলরাশি ! আমি তার হাত ধরে আস্তে আস্তে সেই নারিকেল গাছের ভিতর দিয়ে হেটে যাবো !
সূর্যটা ধীরে ধীরে ঢলে পড়বে একেবারে ঠিক সমুদ্রের পানির ভিতর !
আমি ডুবে যাওয়া সূর্যটা দেখবো তার হাত ধরে !
কিন্তু, সেই হাত টা হারিয়ে গেছে !
আমার আর সমুদ্র তীরে ডুবে যাওয়া সূর্য দেখা হয় নি !




সাত
কোন কোন দিন অকারনেই মন খারাপ হয়ে যায় ! অকারনেই সব কিছুতেই বড় কষ্ট লাগে !
প্রিয় গানটিও সে সময় বড় বেশি কষ্ট দেয় !
দুর থেকে মনে হয় কেউ যেন একজন আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে !
দুরে চলে যাচ্ছে ?
হাহ !
চলে যাচ্ছে নয় ! একজন ঠিকই দুরে চলে গেছে ! কি নির্মম ভাবে প্রকৃতি তাকে আমার কাছ থেকে দুরে নিয়ে গেছে । আমি বিন্দু মাত্র বাধা দিতে পারি নি ।


আট
-কি কর ?
-কিছু না ।
-রাগ করেছ ?
-হুম !
-খুব বেশি ?
-হুম!
-ওলেলেলে ! বাবু আমার ! রাগ করে না !
-হুম ! এই নাম্বার কার ?
-আমারই !
-আজকে হঠাৎ এই নাম্বার থেকে ! এর আগে তো দাও নাই !
-তুমি তো আর আমার নাম্বার থেকে ফোন ধরছো না ! তাই তো এই নাম্বার থেকে ফোন দিলাম !
-হুম !
-তুমি এখনও রাগ করে আছো ?
-আছি ! এখনও রাগ করে আছি !
-আচ্ছা বাবু ! এমন করে না !
-হুম !
-ওলে ওলে বাবুটা আমার ! রাগ করে না ! ওক্কে বাবু সরি ! বাবু আমার !
-ওকে ! তুমিও আর এমনটা করবা না !
-আচ্ছা বাবু ! আর করবো না ! আই লাভ ইউ !
-আই লাভ ইউ টু আমার কুটুকুটু !
-এই তুমি আমাকে কি বললে ?
-বললাম কুটুকুটু !
-কই তুমি তো আমাকে আদর করে কোন দিন কুটুকুটু বল না ! তুমি তো আমাকে পাখি বলে আদর কর !
-কই না ! আমি তো কুটুই বলি !
-অবশ্যই না ! গতকালকে ক্যাম্পাসে বসে কি বললে ?
-গত কাল ? ক্যাম্পাসে ? কোন ক্যাম্পাস ?
-কেন আমাদের ক্যাম্পাস ! উইআইবি !
-খাইছে । আমি তি জেএনইউতে পড়ি !
-কি বলছো ? কে তুমি ! মানে কে আপনি ?
-তুমি কে ? মানে আপনি কে ?
-আমি এ্যারিসা !
-হায় হায় আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম তো এ্যারিসা না !


নয়
সকাল বেলা বে রহলেই মেয়েটিকে দেখি প্রতিদিন । সকাল বেলা হাটতে আসে আমার বাড়ির সামনে । বাড়ির সামনে বেশ বড় একটা পার্ক আছে । সাথে লাগোয়া রাস্তা গাছ-গাছালীতে ঘেরা । সকাল বিকাল অনেকেই আসে এখানে । তবে মেয়েটা আসে প্রতিদিন সকাল বেলা । বলতে গেলে সবার আগেই আসে । যখন পার্কটা একাবরে ফাঁকা থাকে ।
এই জন্যই মেয়েটকে প্রথম আমার চোখে পরে । আস্তে আস্তে ভাল লাগা শুরু হয় । অনেক দিন ভেবেছিল মেয়েটির সাথে কথা বলবো কিন্তু ঠিক সাহস হয়ে উঠে নি । একবার মনে হয়েছে একটু কথা বললে কি বা যাবে আসবে । আবার মনে হয়েছে হয় তো মেয়েটি কিছুই মনে করবে না আমার সাথে হেসেই কথা বলবে ।
যখন বলবো পার্কের ঠিক পাশেই আমার বাড়িটি তোমাকে দেখি প্রতিদিন । তাই কথা বলতে এলাম !
মেয়েটি নিশ্চই অভদ্রতা করবে না । চিৎকার করে বাড়ি মাথায় করবে না ! আমি আমার বাসায় ওকে চা খাওয়ার দাওয়াত দিতেই পারি !
পারি তো ?

আজকে তাই ঠিক করেছি মেয়েটিকে বলেই দিব ! আমি বাসায় সামনে দাড়িয়ে থাকি জগিংয়ের পোষাকে । মেয়েটা এক চক্কর মারা হয়ে গেছে ! আরেক চক্কর দিয়ে ঠিক আমার বাড়ির সামনে দিয়েই যাবে ।
আমি দাড়িয়ে থাকি । এই তো মেয়েটা আসছে ।
আমার বুকের বিপবিপ ধ্বনিটা বাড়তে থাকে ।
মেয়েটি আরও কাছে আসতে থাকে । আমার বুকের কাঁপুনি আরও বাড়তে থাকে ! আসছে । এই তো মেয়েটি আসছে ।
হঠাৎ আমার বুকে একটা ব্যাথা শুরু হল !
কেন ?
এমন কেন হচ্ছে ?
আমি কি বেশি উত্তেজিত হয়ে পরেছি ?
আমার পা দুটি অবশ হয়ে আসছে । আমি দাড়িয়ে থাকতে পারছি না !
পারছি না ! পায়ে বল পাচ্ছি না !!
চোখের সামনে অন্ধকারে হয়ে আসছে ।
ঐ তো মেয়েটি এগিয়ে আসছে ।
আমি মাটিতে পরে গেলাম ! মেয়েটি আমার পাশে হাটু গেড়ে বসলো !
উদ্দিগ্ন কন্ঠে বলল
-আঙ্কেল ! আপনি ঠিক আছেন তো ?




দশ
নীলার মনাট ঠিক বিকেল বেলাটাতেই কেমন অস্থির হয়ে পরে ! কোন কিছুতেই যেন ভাল লাগে না ! বারবার মনে হয় বারান্দায় ছুটে যায় ! এদিকে নীলার মা ওকে কড়া করে মানা করে দিয়েছে একা একা যেন কিছুতেই বারান্দায় না যায় ! মায়ের সাথে বারান্দায় যেতে ভাল লাগে ?
মাঝে মাঝে নীলার মনে হয় ওর মা যেন সব কিছুতেই বেশি ! একটু একা একা বারান্দায় গেলে কি এমন হয় ?
অন্য কোথাও তো যাচ্ছে না !
অবশ্য অন্য সময় নীলার ঘর থেকে বাইরে বের হতে চায় না ! ভালও লাগে না ! নিজের রুমে নিজের খাট টার উপরে বসে কিংবা শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে । আর কন উপায়ও অবশ্য নেই শুয়ে থাকা ছাড়া !
আর সময় কাটানোর জন্য ল্যাপ্টপ টা তো আছে । এখন আবার ফেসবুক হয়েছে । সারা দিন কত বন্ধুর সাথে কথা বলা যায় ! কত কথা শেয়ার করা যায় !
এই করেই নীলার দিন চলে যায় ! বাইরে যাওয়ার খুব একটা প্রয়োজন পরেও না । কিন্তু বিকেল হলে আর কিছুতেই বিছানার উপর বসে থাকতে ইচ্ছা করে না ! মনে হয় এখনই ছুটে চলে যায় বারান্দায় !
নীলার ঘড়ির দিকে তাকালো ! প্রায় সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে ।
নীলার একটা অস্থির লাগে ! এখনই ছেলেটা যাবে । ঠিক ঠিক সাড়ে পাঁচটার সময় ছেলেটা ওদের বাসার সামনে দিয়ে হেটে হেটে যায় !
কেবল সারা দিনে এই ছেলেটিকেই নীলা দেখার জন্য অপেক্ষা করে । যে দিন দেখা হয় না সেদিন সারা রাত ঘুম হয় না ।
নীলা একবার ওর মাকে ডাক দিল !
কোন সাড়া নেই ।
মা মেন হয় বাধরুমে কিংবা রান্না ঘরে ! এখন ?
সাড়ে পাঁচটা প্রায় বাজে !
নাহ ! আর দেরি করা যাবে না !
নীলা নিজের হাতে উপর ভর দিয়ে বিছানার কোনার দিকে যাওয়া শুরু করলো !
এই তো ! খাটের ঠিক পাশেই হুইল চেয়ার টা ! একটু চেষ্টা করলেই সেখানে পৌছানো যাবে । তারপর সেখান থেকে বারান্দা ! ছেলেটি নিশ্চই এখনই আসবে !
নীলা চেষ্টা করতে থাকে !


এগার

আমার সব সময় অরিনের কাছ থেকে একটা ফোনের অপেক্ষায় থাকতাম । ক্লাসের মোটামুটি ভাল ছাত্র হওয়ার সুবাধে অনেকেই আমাকে ফোন দিতো ! টুকুটাক খোজ খবর নিতো ! আমার খোজ খবর নিলেই তো তাদের লাভ ! আমিও তাদের কে যথা সম্ভব সাহায্য করতাম । কিন্তু খুব ইচ্ছা করতো অরিন একদিন আমাকে ফোন দিক । আমার সাথে কয়েকটা কথা বলুক কিংবা আমার কাছে একটু সাহায্য চাক !
একবার ফোন করে বলুক রাইবোনেকজির থিউরী টা কি তুমি বুঝতে পেরেছো ? আমি না একটুও বুঝি নি ! একটু বুঝিয়ে দিবা ?
আমি তো বসেই আছি তোমার জন্য !
কিন্তু অরিন ফোন করে না !
অনেক দিকে আগেই অরিনের মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে রেখেছি ! ও ফোন করলেই আমার জানতে পারবো !
তবুও এমন একটা ভাব করতে হবে যেন আমার কাছে ওর নাম্বার নেই ! আমি মনে মনে অনেক কথা ভেবে রেখেছি !
কিভাবে কথা বলতে হবে ! অনেক বার রিহার্সেলও দিয়েছি !
আমি অপেক্ষা করতেই থাকি ! কিন্তু অরিনের ফোন আর আসে না !

কিন্তু একদিন ফোন চলেই এল ! যখন রিং টা বেজে উঠলো আমার ঠিক বিশ্বাস হয় নি ! বারবার দেখলাম নাম্বার টা ! সত্যিই তো ওর নাম্বার ?
নাকি আমার ভুল হচ্ছে !
আমি কাঁপা হাতে রিসিভ বাটনে চাপ দিলাম !
-হ্যালো !
কিন্তু হ্যালোটা ঠিক মত বের হল না মুখ দিয়ে মনে হল ! ওপাশ থেকে কাঙ্খিত কন্ঠস্বরটা শুনতে পেলাম এতো দিনে !
-হ্যালো ? আবীর বলছো ?
-হুম !
-হাই ! আমি অরিন ! চিন্তে পারছো ?
একবার মনে হল চিৎকার করে বলি তোমাকে চিনবো না ? কি বল তুমি ! যে কন্ঠটা শোনার জন্য আমি এতো দিন ধরে অপেক্ষা করেছি তাকে চিনবো না ? কি বল তুমি ! আমি বললাম
-হ্যা ! চিনেছি ! কেন চিনবো না !
একটু লক্ষ্য করলাম আমার গলার স্বর টা এখনও কাঁপছে !
খানিক্ষন নিরবতা !
অরিন তারপর বলল
-আসলে !
-বল !
-আগামী সপ্তাহে আমার বিয়ে ! আমি চাই আমার ক্লাসের সবাই আসুক ! তুমিও আসবে ! কেমন ?
আমার পুরো পৃথিবী যেন হঠাৎ করেই থেমে গেল !
আরিন প্রথমবার ফোন দিল তাও আবার এই খবর দিতে ! অরিন তারপর কি বলল আমর ঠিক কান দিয়ে ঢুকলো না ! আমি ফোন রেখে দিলাম !


বার
কত গুলো কষ্ট যেন জমে আছে কোথাও !
অথবা লুকিয়ে আছে ।
মাঝে মাঝে এসে ধরা দেয়,
পিছু পিছু হাটে আমার !
যতই পিছু ছাড়াতে চেষ্টা করে যাই ।
ছাড়ে না পিছু ।
কিছু হয় তো বলতে চায়
কিছু শুনতে !
আম বলি না কথা !
জীবন বাবুর সেই লাইন গুলো মনে পড়ে !
কে হয় হৃদয় খুড়ে বেদনা জাগাতে ভাল বাসে ?

কোন কোন বার হাটে ঠিক আমার পাশাপাশি,
আমাকে দেখে মুচকি হাসে !
বলে কোথাও যাও হে !
আমরা আছি, আমরা থাকবো !
তোমার মুক্তি নেই !
একটা সময় আমি ক্লান্ত হয়ে যাই !
মনে হয় আসলেই আমার মুক্তি নেই !
আমি চিরো আবদ্ধ এই কষ্ট গুলোর কাছে !
কত মানুষ এসেছে আবার কত মানুষ ছেড়ে গেছে !
এরা কখনও ছেড়ে যায় নি !




তের

-চুল কাটো না কেন ?
-খুব খারাপ লাগছে ?
-হুম ! মনে হচ্ছে আমি একটা বন মানুষের পাশের দাড়িয়ে কথা বলছি !
-দ্যা বিউটি এন্ড দ্যা বিষ্ট !
মেয়েটি একটু হেসে উঠলো ! মলিন হাসি ! সেই হাসিতে প্রান নেই !

একটা সময় ছিল যখন ছেলেটির চুল এক ইঞ্চি লম্বা হওয়ার সময় পেত না ! কানেট কাছে সারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করতো মেয়েটি !
-চুল কখন কাটাবা ? চুল কখন কাটাবা ?
-এই তো কাটাবো !
-আজকেই কাটাবো !
-এখনও কাটাও !
-আরে বাবা কাটাবো তো ! দুএকদিন পরে কাটাই !
-না ! চুল না কাটালে আজকে বিকেলে দেখা করবো না !
-মানে কি !
-এটাই !
-আমাদের পাড়ার নাপিতের মা মারা গেছে !
-অন্য নাপিতের কাছে যাও !
-অন্য নাপিতের বউ পালিয়ে গেছে !
-আরেক জন আছে না ?
-আরে সেই তিন নম্বর নাপিতের সাথেই তো পালিয়েছে !
মেয়েটি রেগে ওঠে !
-আচ্ছা ঠিক আছে ! যাও ! আজকে যদি চুলা কাটাও তাহলে একসপ্তাহ আগে যেটা দিয়ে ছিলাম আজকে সেটা পাবা !
-কি দিয়েছিলা ?
-ইস ! মনে নেই ?
-নাহ !
-ঐ যে রিক্সায়য়য়য়য় !!
কিছুক্ষন কোন কথা হয় না ! দুপাশেই চুপ !
মেয়েটি বলে
-এই আছো ?
-হুম !
-কি হল ?
-প্যান্ট পড়লাম ! বাইরে যাচ্ছি চুল কাটাতে !
-আচ্ছা ! তোমাদের এলাকায় না নাপিত নেই !
-শোন হে কন্যা ! ঐ জিনিস টার জন্য আমি সাত সমুদ্র তের নদী পার করতে পারি ! আর পাশের এলাকায় যেতে পারবো না ?
মেয়েটি হাসে মনে মনে !

এখন আর চুল কাটানো তাড়া দেয় না কেউ ! রিক্সা ভিতর লজ্জা মিশ্রিত চুমোর লোভও দেখায় না কেউ !

১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×