somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ মেলা থেকে কেনা ব্লগারদের বই পড়ার পরের মনভাব !

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে যা বুঝায় তা আমি ঠিকঠাক মত লিখতে পারি না । কেবল একটা বই পড়ার পরে মনে যা আসে সেটা বলি । ভাল লাগলে ভাল বলি খারাপ লাগবে বেশ খারাপ ভাবেই খারাপ বলি এবং বলি সরাসরি । যেহেতু আমি নিজের জীবনের কিছুটা সময় আমি বইটার পেছনে ব্যয় করেছি সেহেতু বইটা ভাল লাগলে ভাল বলা কিংবা না লাগলে সেটাকে খারাপ বলার অধিকার আমার আছে । যাই হোক এবার আমার পাঠ প্রতিক্রিয়া শুরু করি ! এবার বই মেলা থেকে বেশ কিছু সংখ্যক বই কেনা হয়েছে । সেগুলো আস্তে আস্তে পড়া শুরু করেছি । আপাতত চারটা বই শেষ হয়েছে । সেই চারটা বইয়ের ব্যাপারের কিছু লিখি ।


প্রথম যে বইটা শেষ করেছি সেটার নাম "মিথস্ক্রিয়া" লেখক "কিশোর পাশা ইমন" । প্রকাশিত হয়েছে বাতিঘর থেকে । প্রচ্ছদ করেছেন ডিলান । মোট পৃষ্ঠার সংখ্যা ৩৫১ টি । মূল্য ৩২০ টাকা । বাঁধাই আর পৃষ্ঠার কোয়ালিটি মোটামুটি ।
------------

আমাদের দেশের মৌলিক থ্রিলার গুলো জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু করেছে খুব বেশি দিন হয় নি । ভাল লাগা মৌলিক থ্রিলারের ভেতরে এতোদিন নেমেসিস এবং ২৫শে মার্চ ছিল সবার উপরে । কিন্তু মিথস্ক্রিয়া পড়ার পর সেটা বদলেছে । বইটা শুরু করার পর আমি কেবল এক টানা পড়েই গেছি আর পড়ার সময় কেবলই মনে হচ্ছিলো আমাদের নিজেদের দেশীও এমন লেখা আসলেই অনেক দিন পড়া হয় নি । একটানেই বলা চলে বইটা আমি শেষ করেছি এবং বইটা শেষ করার মনে হয়েছে অনেক দিন পরেই একটা মনের মত বই পড়ে শেষ করেছি । লেখকের কথা আগে টুকটাক জানতাম তবে ভাল করে খোজ নিয়ে জেনেছি যে লেখক আমার থেকেও বয়সে বেশ ছোট । এই ছোট বয়সেই এমন চমৎকার একটা বই যে লিখে ফেলতে পারে নিঃসন্দে সামনের জীবনে তার কাছ থেকে আরও চমৎকার সব বই আমরা পাবো । আমি কেবল বলবো যে এবার বই মেলা থেকে কেউ যদি একটা থ্রিলার কেনার কথা ভাবেন তাহলে তার এই বইটা কেনা উচিৎ । যারা থ্রিলার ভালবাসের তাদের সময় কিংবা অর্থ কোনটাই নষ্ট হবে না কিংবা বই পড়ার পরে আফসোস হবে না এটা আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি ।

কাহিনী শুরু বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান বিজ্ঞানীর রহস্যময় মৃত্যু দিয়ে । নিজের সুরক্ষিত ল্যাবে তিনি মারা যান । কিডন্যাপ হয় তার নিজের ছেলে । স্বয়ং আর্মি জেনারেল ইচ্ছায় ডাক পরে হোমিসাইডের সব থেকে চৌকশ গোয়েন্দা আসিফ আহমেদের । কিভাবে খুনী ভেতরে এসে তাকে মেরে ফেলেছে তা প্রথমে বোঝা যায় না । তবুও দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে সে কিন্তু মাঝে পথেই তাকে থামিয়ে দেওয়া হয় । কেস চলে যায় এফবিআইয়ের হাসে । তবুও হাল ছাড়ে না আসিফ । অন্য কেসের ফাকে ফাঁকেও চালিয়ে চায় কার্যক্রম এবং সেখান থেকে বের হতে থাকে অন্য রকম সব তথ্য । ঘটনা পাল্টাতে থাকে খুব দ্রুত । একটা অদৃশ্য শক্তি পেছনে লেগে থাকে তাদের । নিজের পুরো ডিপার্টমেন্ট যখন আসিফের পেছনে লেগে যায় তখন এক অপরাধীর সাথে জোট বাঁধে আসন্ন বিপদ মোকাবেলা করার জন্য । সেই সন্ত্রাসী নিজেও সেই গোপন সংঘের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে নিজের খুব আপন কাউকে বাঁচানোর জন্য । সাথে যুক্ত হয় আরেক ভ্যাম্পায়ার বয় ।

মিষ্ট্রি, থ্রিল আর একশান সব কিছুই পাবেন এই বইতে এই টুকু বলতে পারি । খারাপ যা লেগেছে সেটা উল্লেখ করার মত নয় । ই-কারে আর ঈ-কারের কয়েকটা সমস্যা ছাড়া আর বানান ভুল চোখে পড়ে নি ।

আর দেরী না করে আজকেই সংগ্রহ করে ফেলুন !



দ্বিতীয় বইয়ের নাম "জীবন বৃত্তান্তে নেই" । লেখক "কাসাফাদ্দৌজা নোমান" । প্রকাশিত হয়েছে দেশ প্রকাশনী থেকে । প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুবএষ । পাতার সংখ্যা ৯৬ টি । মূল্য ১৮০ । বইয়ের বাঁধাই আর পৃষ্ঠার কোয়ালিটি খুবই ভাল ।
---------

অনলাইনে সবাই নোমান ভাইকে চিনেন ক্ষুদ্র আর মজাদার স্টাটাস দাতা হিসাবে । আমি তাকে চিনি ছোট গল্পকার হিসাবে । ব্লগ থেকেই তার ছোট গল্প পড়তাম নিয়মিত । গতবারের ছোট গল্প সংকলনের পড়ে আশা ছিল এবার একটা উপন্যাসন লিখবেন এবং সেটা চলেও এসেছে ।

হুমায়ুন আহমেদ মারা যাওয়ার পরে খুব একটা উপন্যাস পড়া হয় নি । আসলে অন্য কারো লেখা কেন জানি খুব একটা টানতো না । ২০১২ এর পরে যা পড়েছি তার বেশি ভাগই মিস্ট্রি আর থ্রিলারই বলার চলে । আর ছোট গল্প সংকলন । তবে এই বইটা পড়ে অনেক দিন পরে অনেক ভাল লেগেছে ।

জীবনের কাছে পরাজিত তিন যুবকের কাহিনী । তিন জনই ব্যর্থ । যা চেয়েছিল তার কিছুই করতে পারে নি । আজাদের এই জগতে মা আর প্রেমিকা ছাড়া আর কেউ নি । নিত্য দিনের কাজ সেরে সে বাসায় ফিরতে থাকে । অন্ধকার রাস্তায় হাটতে হাটতেই দুজন যুবক তাকে ঘিরে ধরে । আজাদকে বলে যে তারা তাকে খুন করতে চায় । খুন করতে চায় কারন তাদের মন খারাপ ।

গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে মাওয়া ঘাটের দিকে । এভাবেই গল্প এগিয়ে চলে । আস্তে আস্তে তিন যুবকের জীবনের গল্প জানা যায় । খুনী দুজনের ভেতরে একজন মন্ত্রী ছেলে অন্যজন তার দুর সম্পর্কের মামাতো/খালাতো ভাই । ঘটনা যতই সামনে যেতে থাকে আস্তে বেরিয়ে আসতে থাকে তিনজনের গল্প । তাদের জীবনটা কেমন ছিল কি করতে চেয়েছিলো কিংবা জীবনের কাছ থেকে তারা কি পায় নি সব । একে বারে শেস বিন্দুতে তিনজনে এলে মিলিত হয় ।

উপন্যাসের সব থেকে বড় সাফল্যটা হল এখানে একটা ঘটনা ঘটার পরে পরের ঘটনাটা কি ঘটবে সেটা আপনার জানতে ইচ্ছে করবে । ঘটনার প্রবাহ খুবই চমৎকার । কোথাও আপনাকে আটকে যেতে হবে না কিংবা কোথায় পড়ার পরে মনের ভেতরে বিরক্তি আসবে না । বারবার মনে হবে আজাদ কে তারা মেরেই ফেলবে তাহলে ? আজাদ কি পালাতে পারবে ? শেষ কি হবে ? কে মারা পড়বে ? এই টুকু জানতে হলে আপনাদের বইটা পড়তেই হবে ! সময় নষ্ট হবে না এটা বলতে পারি ।



তিন নাম্বার বইটার নাম "সিনেমা হলের গলি" লেখক ইশতিয়াক আহমেদ । এটাও প্রকাশিত হয়েছে দেশ প্রকাশনি থেকে । প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুবএষ । পাতার সংখ্যা ৯৫ টি । মূল্য ১৮০ । বইয়ের বাঁধাই আর পৃষ্ঠার কোয়ালিটি খুব ভাল ।
---------

এই লেখাটা নিয়ে একটু বেশিই আশাবাদী ছিলাম । অন্তত গতবার তার আদর্শলিপি পড়ার পরে মনে হয়েছিল এই বইটাও নিশ্চয়ই ভাল হবে । আশা পূরন না হলেও বলবো যে একেবারে নিরাশ করে নি লেখক । যদিও লম্বা কাহিনী তবে কাহিনীটা তিনটি গল্পের সমন্বয় মনে হয়েছে । তিনজন আলাদা আলাদা মানুষের গল্প । খুব সাধারন তিনজন মানুষ । তিনজনের সাথে তিনজনের কোন সম্পর্ক নেই । বইটার এই জিনিসটাই আমার একটু ভাল লাগে নি ।

একজন বৈচিত্রহীন নাইট গার্ড জীবন যে নিজের জীবনে খানিকটা উত্তেজনা আনতে নিয়ম করে প্রতি শনিবার চুরি করতে যান ।
আরেকটা গল্পে দুই ভাই যে কিনা সৎমায়ের কাছে মানুষ । যাদের মনে ধারনা ছিল যে মা মানেই মনে হয় তাদের সৎমায়ের মত । কিন্তু একদিন জানতে পারে যে তাদের আসল মা এখনও জীবিত আছে তখন থেকেই বড় ভাই তাদের মাকে খুজা শুরু করে । নানার কবরের কাছে বসে থাকে এই আশায় যে যদি কোন দিন তার মা তার নানার কবরে আসে তার একটা সময়ে একটা ক্লু পেয়ে যায় । এগিয়ে চলে কাহনী ।

তিন নাম্বার কাহিনী হচ্ছে এক যুবকের যে ভালবাসে এক মেয়েকে কিন্তু সে মেয়ে তাকে মোটেই পাত্তা দেয় না । তারপর হঠাৎ করেই যুবকের ফোনে আসে প্রাণনাসের হুমকি ! সেটা জানতে পেরেই মেয়ের খানিকটা মায়া হয় যুবকের জন্য । তবে কাহিনী এখানে অন্য দিকে মোড় নেয় ।

এই মোটামুটি তিনটা কাহিনী । কাহিনীতে প্রবাহ ভাল, পড়তে বিরক্ত লাগে নি । তবে একে বারে পূর্ন সন্তুষ্টিও আসে নি ।



চার নাম্বার উপন্যাসের নাম "যে প্রহরে নেই আমি" লেখক রাসায়াত রহমান । প্রকাশিত হয়েছে আদী প্রকাশনী থেকে । প্রচ্ছদ করেছেন তন্ময় আহমেদ । বাঁধাই আর পৃষ্ঠার কোয়ালিটি মোটামুটি ।
-----------------

আগেই স্পয়েলার এলার্ট দিয়ে রাখি ।

প্রতি বই মেলাতেই এমন একটা কিংবা কয়েকটা বই পড়ার পর আফসোস হয় । কেন বইটা কিনলাম আর পড়লাম । আসলে বই কিনার সময় আমি টাকার দিক টা কখনও চিনতা করি নি কিন্তু কিছু কিছু বই কিনে মনে হয় টাকাটা এবং সময়টাই জলে গেল । এই বইটাও ঠিক তেমনই । আগের বছরের লেখকের রাফখাতা প্রথম দিকে ভাল না লাগলেও শেষের দিকে এসে ভাল ছিল কিন্তু এই বইটা পড়ে আমি পুরোপুরি হতাশ । সত্যি বলতে কি প্রথম থেকে পড়তে গিয়ে কেবল বিরক্তিই লেগেছে । যে কোন উপন্যাস ভাল লাগার ভেতরে সব থেকে বেশি দরকার একটা চমৎকার কাহিনী আর লেখকের সেই কাহিনীটাকে সফল ভাবে প্রকাশ করাটা । এই বইতে দুইটার একটাও ছিল না । এমন অনেক গল্প আছে যেখানে কাহিনী খুবই সামান্য কিন্তু লেখক সেটা এমন ভাবে প্রকাশ করেন যে অসামান্য হয়ে যায় কিন্তু এখানে আিম সেটা খুজে পাই নি ।
অথচ রাসায়াত রহমানের ২০১৪তে বের হওয়া ছোট গল্প সংকল টা পড়ে কি চমৎকারই না লেখেছিল । প্রতিটা গল্পই ছিল চমৎকার । কিন্তু এবারের উপন্যাস পড়ে খুবই হতাশ হয়েছি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৬
৩১টি মন্তব্য ৩১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোথাও ছিলো না কেউ ....

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:১৯




কখনো কোথাও ছিলো না কেউ
না ছিলো উত্তরে, না দক্ষিনে
শুধু তুমি নক্ষত্র হয়ে ছিলে উর্দ্ধাকাশে।

আকাশে আর কোন নক্ষত্র ছিলো না
খাল-বিল-পুকুরে আকাশের ছবি ছিলো না
বাতাসে কারো গন্ধ ছিলোনা
ছিলোনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নারীবাদ, ইসলাম এবং আইয়ামে জাহেলিয়া: ঐতিহাসিক ও আধুনিক প্রেক্ষাপট

লিখেছেন মি. বিকেল, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৪



আইয়ামে জাহিলিয়াত (আরবি: ‏جَاهِلِيَّة‎) একটি ইসলামিক ধারণা যা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবির্ভাবের পূর্ববর্তী আরবের যুগকে বোঝায়। ঐতিহাসিকদের মতে, এই সময়কাল ৬ষ্ঠ থেকে ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

#প্রিয়তম কী লিখি তোমায়

লিখেছেন নীল মনি, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৭:৫১


আমাদের শহর ছিল।
সে শহর ঘিরে গড়ে উঠেছিল অলৌকিক সংসার।
তুমি রোজ তাঁকে যে গল্প শোনাতে সেখানে ভিড় জমাতো বেলা বোস, বনলতা কিংবা রোদ্দুর নামের সেই মেয়েটি!
সে কেবল অভিমানে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল শুধু ভুল নয়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৬

এক
লেখাটা একটি কৌতুক দিয়ে শুরু করি। ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে শফিপুর আনসার একাডেমিতে বিদ্রোহ হয়। ৪ ডিসেম্বর পুলিশ একাডেমিতে অভিযান চালায়। এতে চারজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছিল। এটি ছিল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ময়লাপোতার কমলালেবুর কেচ্ছা!! (রম্য)

লিখেছেন শেরজা তপন, ২১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩


বাংলাদেশের বিশেষ এক বিভাগীয় শহরে ময়লাপোতা, গোবরচাকা, লবনচোরা, মাথাভাঙ্গা, সোনাডাঙ্গার মত চমৎকার সব নামের এলাকায় দারুণ সব সম্ভ্রান্ত পরিবারের বাস।
আমার এক বন্ধুর আদিনিবাস এমনই এক সম্ভ্রান্ত এলাকায় যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×