somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভিঃ মাই নেইবার টোটোরো

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এনিমেশন মুভি আমার সব সময় প্রিয় । আমি রক্তে মাংসে মানুষের মুভি দেখার থেকে এনিমেশন মুভি দেখতে বেশি পছন্দ করি । এতো বয়স হয়ে গেল তবুও এই এনিমেশন মুভি দেখার প্রতি আগ্রহ আমার কমলো না ।
যাই হোক রুমী ভাইয়ের রিভিউ পেয়ে মাই নেইবার টোটারো মুভিটা দেখা শুরু করলাম । বলতে গেলে অনেক দিন পরে খুবই চমৎকার আর শান্ত মনোরম একটা এনিমেশন মুভি দেখলাম । যে মুভি দেখার পরেই একটা আনন্দ আনন্দ অনুভূতিতে ভরে ওঠে মন ।

মুভিটির কাহিনী খুবই সহজ কিন্তু চমৎকার । একজন ইউনিভার্সিটি প্রফেসরের দুই মেয়ে । সাস্টকি এবং মেই । প্রফেসরের স্ত্রী অনেক দিন ধরেই অসুস্থ । যে হাসপাতালে সে ভর্তি তার কাছাকাছি থাকার জন্য প্রফেসর তার মেয়েদেরকে নিয়ে গ্রামের এক পুরানো বাড়িতে বসবাস শুরু করে ।

বাড়িতে বসবাসের প্রতিদিন তাদের পরিচয় হয় গ্রানির সাথে । তাদের বাসা থেকে একটু দুরে থাকে গ্রানি । একজন বৃদ্ধা । সেই এতোদিন বাড়িটা দেখা শুনা করেছে । এছাড়া আরও কানটা নামের এক প্রতিবেশী ছেলের সাথেও তাদের পরিচয় হয় । সাস্টকির সমান বয়স । তার মা নতুন প্রতিবেশীদের বাসায় খাবার দিয়ে পাঠায় তার হাতে । যাওয়ার সময় ছেলেটা বলে যায় যে তাদের বাসায় নাকি ভুত আছে ।

শুরু হয় বাবা আর মেয়েদের গ্রামের জীবন । দুই বোন সারা সময় বাড়ির ভেতরে দৌড়াদৌড়ি করে। মুক্ত পাখির মত উড়ে বেড়ায় । বড় মেয়ে সাস্টকি স্কুলে যায় । বাবা ইউনিভার্সিটিতে যায় । ছোট মেয়েকে গ্রানির কাছে রেখে যায় । সপ্তাহে মায়ের হাসপাতালে দেখা করতে যায় । সবার জন্য সময় টুকু খুবই চমৎকার কাটতে থাকে ।

এরই মাঝে একদিন মেই একটা ছোট স্পিরিট খুজে পায় । তার পেছন পেছন পেছন ঘুরতে ঘুরতে সে গিয়ে হাজির হয় এক ছোট বনের পথের ভেতরে । সেখান থেকে হাজির হয় টটোরোর আস্তানায় । টোটোরো এক ধরনের ফরেস্ট স্পিরিট । বনে থাকে । মেই টোটোরোকে দেখে ভয় তো পায়ই না বরং তার কোলে ঘুমিয়ে পড়ে । পড়ে মেইর বাবা আর বোন তাকে সেই বনের ছোট রাস্তার ভেতরে খুজে পায় । একই ভাবে একদিন সাস্টকি আর মেই তার বাবার আসার জন্য অপেক্ষা করে বাসস্ট্যান্ডে । সেদিন তার বাবা আসতে দেরি করে অনেক । তারা অনেক রাত পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করে । তখন এই টোটোরো এসে হাজির হয় সেখানে । বৃষ্টি শুরু হলে দুইবোন তাদের একটা ছাতা টোটোরোর দিকে বাড়িয়ে দেয় । একটু পরে বিশাল এক বিড়াল গাড়ি এসে হাজির হয় । সেই গাড়িতে করে টোটোরো চলে যায় ।

তারপর এক শনিবার সাস্টকির মায়ের আসার কথা থাকে । এই জন্য দুইবোন নানান রকম প্রস্তুতি নেয় । কিন্তু হঠাৎ ই সব উলটপালট হয়ে যায় । হাসপাতাল থেকে জরূরী টেলিগ্রাম আসে । তার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে । সাস্টকি টেলিফোনে তার বাবাকে জানায় । এদিকে মেই এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না । কারণ মায়ের শরীর খারাপ মানে তাদের মা এই শনিবারে বাসায় আসবে না । অভিমানে সে মায়ের জন্য তোলা ভূট্টাটা নিয়ে একাই হাসপাতালের দিকে হাটা দিয়ে । ছোট মেয়ে হওয়ার কারণে সে পথ হারিয়ে ফেলে ।

এদিকে বড় বোন সহ পুরো গ্রামের মানুষ মেইকে খুজতে শুরু করে কিন্তু কেউ পায় না কোথাও । তখন সাস্টকি টোটোরোর কাছে গিয়ে সাহায্য চায় । টোটোরো তাকে নিয়ে গাছের উপর উঠে পড়ে এবং তার সেই বিড়াল গাড়িকে ডাক দেয় । সাস্টকিকে নিয়ে বিড়ালগাড়ি ছুট দেয় । ঠিকই খুজে বের করে মেই কে ।

মুভিটা বাচ্চাটাদের একটা মুভি । বাচ্চারা দেখে মজা পাবে । কিন্তু আমি নিজেও দেখে খুব মজা পেয়েছি । কিছু কিছু মুভি আছে না যেগুলো দেখে মনের ভেতরে এমনিতেই একটা শা্ন্তি আসে, মাই নেইবার টোটারো ঠিক তেমনই একটা এনিমেশন মুভি । বিশেষ দুই বোনের গ্রামে কাটানো সময় গুলো । গ্রামের সহজ সরল মানুষের আচরন সব কিছু মিলে মাই নেইবার টোটোরো একটা উপভোগ্য মুভি । মুভি দেখে খুব ইচ্ছে হয় যেন আবারও ফিরে যাই সেই শৈশবে । শহরে বড় হয়ে ওঠা বাচ্চারা হয়তো কোনদিন এই আনন্দ উপলব্ধি করতে পারবে না কিন্তু আমরা যারা গ্রামে বড় হয়েছি তারা খুব চমৎকার উপলব্ধি করতে পারবে । শৈশবে আমরা কত কিছু কল্পনা করতাম কত ভাবে নিজেদের জগতটাকে সাজাতাম । এই মুভিটা দেখার সময়ও আমি যেন সেই শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম । ছোট বেলা থেকেই আমি খুব বেশি কল্পনা প্রবণ মানুষ বলেই হয়তো মুভিটা আমার বেশি ভাল লেগেছে ।

আপনারাও দেখতে পারেন নিঃসন্দেহ । বাসায় ছোট বাচ্চা থাকলে তাদের নিয়েই দেখতে পারেন । সময় ভাল কাটবে এই টুকু নিঃসন্দেহ বলতে পারি ! হ্যাপি ওয়াচিং !


Picture source- hepsiburada.com

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০২১ রাত ১:১৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×