somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজনেস প্লানঃ কিভাবে মিস্টার বাটপার মিস্টার বলদদের কাছে পন্য বিক্রি করলেন :D

১৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিস্টার বাটপার একজন সফল বিজনেস ম্যান হতে চায় । সে বুদ্ধি আটতে লাগলো কিভাবে বিজনেস করে অল্প সময়ের ভেতরেই টাকা আয় করা যায় । এবং এমন কী কাজ করলে সবাই কেবল তার কাছ থেকেই পন্য কিনবে । তখনই তার মাথায় বুদ্ধি এল । সে জানে মিস্টার বলদের ডিসকাউন্টে পন্য কেনার প্রতি কী দারুন ঝোক । সে মনে মনে ঠিক করেই ফেলল কিভাবে সে ডিসকাউন্ট দিয়ে বলদদের কাছে জিনিস পত্র বিক্রি করবে ।

খুব দ্রুতই সে একটা ই কমার্স সাইট খুলে ফেলল । তারপর সেখানে বিজ্ঞাপন দিল যে ব্রান্ড নিউ ম্যাকবুক এয়ার সে বিক্রি করবে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় । অবিশ্বাষ্য এক অফার । কিন্তু একটা শর্ত জুড়ে দিল যে এই ম্যাকবুক এয়ার ক্রেতাদের কাছে পৌছাতে একটু সময় লাগবে । অর্ডারদের কিছু সময়ে পরে জিনিস পৌছে দেওয়া হবে । এবং অবশ্যই সম্পূর্ণ পেমেন্ট আগে করতে হবে ।

বলদ এক দেখলো এক লাখ টাকার জিনিস মাত্র ৬০ হাজার টাকা । আর দেরি কেন এখনই অর্ডার করে দেই । সে পুরো ৬০ হাজার টাকা মিস্টার বাটপারের অফিস একাউন্টে জমা করে দিল । এবং অপেক্ষা করতে লাগলো নিজের জিনিসের জন্য ।

এদিকে মিস্টার বাটপারের পকেটে চলে এল ৬০ হাজার টাকা । সে আগেই নিজের লাভ বাবদ ১০ হাজার টাকা নিজেস্ব একাউন্টে সরিয়ে নিল । পন্য কেনার জন্য টাকা রইলো ৫০ হাজার রইলো তার কোম্পানীর একাউন্টে । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাজারে ম্যাক বুকের দাম এক লাখ টাকা । ম্যাকবুক তো আর নিজের ঘরের ক্ষেতের পন্য না যে উৎপাদন করে সে মিস্টার 'বলদ এক' কে সাপ্লাই দিবে । তাকে ম্যাকবুক এপলের কাছ থেকে কিনে আনতে হবে এবং সেটা এক লাখ টাকা দিয়েই । কিন্তু তার হাতে আছে ৫০ হাজার টাকা । বাকি ৫০ হাজার টাকা কোথা থেকে আসবে?

পরের দুই দিনে আর দুইজন - মিস্টার ''বলদ দুই'', মিস্টার ''বলদ তিন'' আরও দুইটা ম্যাক অর্ডার দিয়ে দিল । তাহলে মিস্টার বাটপারের একাউন্টে জমা হল ৬০ গুন ২ সমান এক বিশ হাজার । সেখান থেকে নিজের লাভ বাবদ ২০ হাজার টাকা নিজেস্ব একাউন্টে সরিয়ে রাখলো । বাকি রইলো এক লক্ষ টাকা আর আগের আছে ৫০ হাজার টাকা । কোম্পানীর একাউন্টে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ।

এইবার মিস্টার বাটপারের কাছে একটা ম্যাক কেনার টাকা চলে এল । সেই সেই এক লক্ষ ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ দিয়ে একটা ম্যাকবুক কিনে মিস্টার ''বলদ এক'' কে পৌছে দিল । এখন তার কোম্পানীর একাউন্টে জমা থাকলো ৫০ হাজার । কোম্পানীর মোট অর্থ ৫০ হাজার এবং কোম্পানীকে দিতে হবে দুইটা ম্যাক অর্থ্যাৎ দুই লক্ষ টাকা ।

এদিকে বিশ্বাস তৈরি হল । ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আসলেই যে ম্যাক পাওয়া যায় খবর ছড়িয়ে গেল ।

পরের চার দিনে মিস্টার ''বলদ চার'', 'মিস্টার ''বলদ পাঁচ'', মিস্টার ''বলদ ছয়'' এবং মিস্টার ''বলদ সাত'' ম্যাক অর্ডার করে ফেলল । মিস্টার বাটপারের কোম্পানীর একাউন্টে জমা হল চার গুন ৬০ হাজার সমান ২ লাখ ৪০ হাজার । সেখান থেকে লাভ বাবদ ৪০ হাজার টাকা মিস্টার বাটপার নিজের একাউন্টে সরিয়ে রাখলো । কোম্পানীর একাউন্টে জমা দিল ২ লাখ টাকা । আগে আছে ৫০ হাজার । মোট জমা হল দুই লাখ ৫০ হাজার । এই টাকা দিয়ে সে কিনে ফেলল ২ টা ম্যাকবুক । এবং মিস্টার ''বলদ দুই'' ও মিস্টার ''বলদ তিন'' পন্য ডেলিভারি দিয়ে দিল ।

এখন কোম্পানীর একাউন্টে জমা রইলো মোট ৫০ হাজার টাকা । মিস্টার বাটপারের মোট চারজনকে পন্য ডেলিভারি দিতে হবে অর্থ্যাৎ চার লাখ টাকার পন্য দিতে হবে । কিন্তু তার কোম্পানীর কাছে টাকা আছে ৫০ হাজার । মোট ঘাটটি ৩ লাখ ৫০ হাজার ।

এদিকে একটা ব্যাপার লক্ষ্যনীয় যে মিস্টার বাটপারের নিজেস্ব একাউন্টে কিন্তু ঠিকই ৭০ হাজার টাকা চলে এসেছে । এটা নিয়ে অবশ্য মিস্টার বাটপারের চিন্তা নেই । সে জানে মিস্টার বলদদের অভাব হবে না । তারা সামনের দিন আরও অর্ডার করবে । এবং সে যেমন মিস্টার বলদ দুই এবং তিনের টাকা দিয়ে মিস্টার বলদ এককে পন্য দিয়েছে, মিস্টার বলদ চার, পাঁচ, ছয়, সাতের টাকা দিয়ে মিস্টার বলদ দুই এবং তিনকে পন্য দিয়েছে । ঠিক তেমনি ভাবে এই বলদ চার, পাঁচ ছয় আর সাতকে পন্য দিতে এই রকম আরও অনেক মিস্টার বলদ পাওয়া যাবে । যেই মিস্টার বলদ গুলো

যদিও ঘাটতির পরিমানটা দিন দিন বাড়ছেই । আগে যেটা ৫০ হাজার ছিল সেটা এখন ৩ লাখ ৫০ হাজার হয়েছে । যত অর্ডার বাড়বে তত ঘাটতি বাড়বে ! তবে এটা নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই । মিস্টার বলদেরা যত দিন এক লাখ টাকার জিনিস ৬০ হাজারে পাচ্ছে ততদিন তারা অন্য কোন বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবে না ।

আরও বিশ্বাস তৈরি হল । সবার মাঝে হইচই পড়ে গেল । সবাই দেখতে পেল যে পন্য সবাই কিনতে এক লক্ষ টাকা দিয়ে সেই পন্য মিস্টার বাটপার দিচ্ছে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় । এবং মানুষ সেই ম্যাকবুক ডেলিভারিও পাচ্ছে । কিন্তু কেউ এই প্রশ্নটা করলো না যে কিভাবে একটা এক লাখ টাকার ম্যাক কিভাবে ৬০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে । মিস্টার বলদ কেবল এইটা ভাবছে নিজের লাভ হচ্ছে এটাই সব চেয়ে বড় কথা !

এইভাবে মিস্টার বাটপার তার ব্যবসা বাড়তে লাগলো । মিস্টার বলদরা কম মূল্য পন্য পাওয়ার জন্য অর্ডার করতে লাগলো । এমন কি কেউ কেউ তো আছে যারা মিস্টার বাটপারের কাছ থেকে পন্য কিনে বাইরে বিক্রি করতে লাগলো ।

দারুন বিজনেস প্লাস নয় কি ?


ইহা একদমই কাল্পনিক একটা বিজনেস প্লান । বাস্তবে সাথে এই প্লানের কোন সম্পর্ক নাই । এতো বড় বাটপার দুনিয়ার কোথাও নাই আবার এতো বড় বলদও দুনিয়ার কোথাও নাই।
নাকি আছে?
:D :D

online read - Ponzi scheme
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:১৩
১৯টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×