somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ মীরা এবার সত্যিই এসেছিল

১৪ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি বুড়ো লোকটার কাছে গিয়ে বললাম, দাদু আরও কিছু খাবেন? পেট ভরেছে?
লোকটা তখন চপের শেষ টুকরোটুকু মুখে পুড়েছে । চোখ বন্ধ করে কিছু সময় সেটা চিবানোর পরে গিলে ফেলল । আমার দিকে তাকিয়ে বলল, পানি খাবো ।
আমি নিজের ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে এগিয়ে দিলাম । হাতে নিয়ে সেটা থেকে বেশ খানিকটা পানি খেয়ে লোকটা আমাকে পানির বোতলটা ফেরত দিয়ে উঠে দাড়ালো । তারপর বলল, তোর ভাল হবে ।
আমি হাসলাম একটু । তারপর বললাম, উপরওয়ালার রহমতে আমি ভাল আছি অনেক ।
লোকটা যেন হাসলো একটু । চোখ থেকে আমি একটু অবাক হলাম । লোকটা বলল, ভাল আছিস কিন্তু কষ্ট আছে না একটা ! না পাওয়ার কষ্ট !
আমি একটু চমকে উঠলাম । বৃদ্ধ লোকটার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছু সময়। তার চোখে একটা স্মিত হাসির রেখা দেখা যাচ্ছে । আমার পরিস্কার মনে হল যে এই লোকটা সব জানে । আমার মনের কথা সে জানে !
লোকটা হেসে বলল, যা বাড়ি যা । চিন্তা করিস না । তুই আমার প্রতি যে মায়া দেখালি তোর মনের আশা পূরণ হবে ।

আমাকে অবাক করে দিয়ে লোকটা হাটা দিল । আমি এক জায়গাতেই দাড়িয়ে রইলাম । লোকটা দেখতে দেখতে আমার চোখের সামনে দিয়ে অন্ধকার পথে আমার চোখের আড়ালে চলে গেল । আমি কেবল তাকিয়ে রইলাম । বারবার কেবল এই একটা কথাই আমার মাথার ভেতরে কাজ করতে লাগলো যে লোকটা কিভাবে মীরার কথা জানলো? যদিও সে মুখ ফুটে মীরার কথা বলে নি তবুও আমার কেন জানি মনে হল যে লোকটা মীরার কথা জানে । তার চোখে যে হাসি আমি দেখেছি, আমি নিশ্চিত যে সে এই ব্যাপারটাই ইঙ্গিত করেছে ।
কিন্তু কিভাবে?
এই ব্যাপারটা আমি কোন দিন কাউকে বুঝতে দেই নি ।
একমাত্র আমি ছাড়া এই ব্যাপারটা আর কেউ জানে না । তাহলে এই লোকটা কিভাবে জানে?


ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত আটটার মত বাজে । প্রতিদিন অফিস থেকে বের হয়ে আমি কিছুটা সময় এদিক ওদিক হাটাহাটি করি । বাসায় আমার কেউ নেই । গ্রামে বাবা মা থাকেন । আমি ঢাকাতে একা থাকি। কাজ করি । খাই দাই আর ঘুমাই । বন্ধু বান্ধবের সংখ্যা বেশি নেই আমার । বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যারা বন্ধু ছিল তাদের বেশির ভাগই চাকরি বাকরি আর বিয়ে করে ঢাকার বাইরে চলে গেছে । কালে ভাদ্রে তাদের সাথে কথা হয় । ঢাকাতে যে কয়জন আছে তারাও ব্যস্ত নিজেদের জীবন নিয়ে । আমিও আমার জীবন নিয়ে ব্যস্ত । জীবন কেটে যাচ্ছে ভালই ।
হাটছিলাম একা একা । হঠাৎই আকাশে মেঘ জমে গেল । একটু অবাকই হলাম । বলতে বলতে ঘন কালো মেঘ থেকে প্রবল বৃষ্টির শুরু । আমি আর উপায় না দেখে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম । বাড়ির কাছে আসতে না আসতে ভিজে একেবারে তেজপাতা হয়ে গেলাম । তবে গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো ঠিক তখনই কাছেই প্রবল বেগে বাজ পড়লো । সাথে সাথেই চারিদিকে অন্ধকার হয়ে গেল সব । বিদ্যুৎ চলে গেছে । আমি অন্ধকারের ভেতরে গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলাম !

বাসায় ফিরে দেখলাম রফিক ভাই তখনও বাসায় আসেননি । রফিক ভাই সম্প্রতি নতুন প্রেমে পড়েছেন । সারাটা সময় কেবল প্রেমিকার কথা । আমি অবশ্য তার এই অভ্যাসের কথা জানি । কদিন খুব প্রেম চলবে । তারপর ব্রেক আপ হয়ে যাবে । কিছুদিন রফিক ভাই খুব মন মরা হয়ে থাকবেন । অফিস থেকে সরাসরি বাসায় চলে আসবেন । তারপর আবারও নতুন একটা প্রেমিকা জুটবে । কবছর ধরে এমনই চলছে !

আমি রাতের খাবার খেয়ে জলদি শুয়ে পরলাম । আগামীকাল সকালে আবার অফিস আছে ।

দুই
ঘটনা ঘটলো পরদিন অফিসে গিয়ে । অফিসে ঢুকতেই আমি মীরাকে দেখতে পেলাম । আমাদের অফিস টাইম সকাল দশটা । আমি ঠিক পাঁচ মিনিট আগে ঢুকি ভেতরে । আমার বাসা থেকে অফিস খুব বেশি দুরে নয় । হেটেই যাওয়া আসা করি আমি ।
গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই আমার কেন জানি মনে হল অফিসটা যেন একটু অন্য রকম । মীরাকে দেখতে পেলাম । আমাকে ঢুকতে দেখে খুব স্বাভাবিক ভাবেই হাসলো ।
এখানেই প্রথম অস্বাভাবিকত্বটা আমি টের পেলাম । মীরার সাথে আমি এই অফিসে কাজ করছি অনেক দিন । তবে আমাদের ডিপার্টমেন্ট আলাদা । ওর সাথে আমার সখ্যতা গড়ে ওঠে নি । আমার নাম সে জানে কিনা সেটা আমি নিশ্চিত না । অন্য কোন দিন সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসে না । চোখাচোখ হলেও স্বাভাবকি ভাবে চোখ সরিয়ে নিয়ে চলে যায় । রাস্তায় অপরিচিত মানুষের সাথে যেমন আচরণ আমার সাথেও তাই । এটাই স্বাভাবিক । এমনটাই এতোদিন হয়ে আসছে । তাহলে আজকে কী হল?

আমার বিস্ময়ের চুড়ান্ত করে দিয়ে মীরা আমার কাছে এগিয়ে এল । এবং আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কী ব্যাপার তোমাকে কতবার ফোন দিয়েছি? ফোন বন্ধ কেন?
আমি এবার সত্যি সত্যিই চমকে গেলাম । মীরা আমার সাথে এতোই স্বাভাবিক কন্ঠে কথা বলছে যেন আমার সাথে ওর বেশ ভাল ঘনিষ্ঠতা !
আমি কিছু সময় কেবল বিমূঢ় হয়ে দাড়িয়ে রইলাম ।
আমার মাথায় তখনও কিছু ঢুকছে না । এমন তো হওয়ার কথা না । এমনটা আসলেই হওয়ার কথা না ।

মীরা আমার সামনে এসে দাড়ালো । তারপর আমার হাতের মোবাইল ফোনটা নিজে নিজেই নিয়ে নিল । এবং সব থেকে বড় অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে সে মোবাইলের প্যাটার্ন লক খুব স্বাভাবিক ভাবে খুলে ফেলল । তারপর মোবাইলের স্ক্রিনটা আমার চোখের সামনে ধরে বলল, এই যে ৪ টা মিসকল । দেখো নি?
আমি সত্যিই অবাক হলাম । মীরার নম্বর আমি সেভ করেছিলাম । কিন্তু সেই নম্বর থেকে কোন দিন ফোন আসে নি । আসার কথাও না । কিন্তু দিব্যি দেখতে পাচ্ছি মীরার নম্বর থেকে ফোন এসেছে ।
মীরা কপট রাগ দেখিয়ে বলল, কি মশাই, বিয়ের আগেই ইগ্নোর করা শুরু করে দিয়েছো?
আমি এবার সত্যিই আকাশ থেকে পড়লাম । এই মেয়ে বলে কি!
বলছে কী !
আমার বুকের ভেতরে ধরফর শুরু করে দিয়েছে । আমি কেবল মীরার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম । কিছুই মাথার ভেতরে ঢুকছে না । বারবার মনে হচ্ছে যে কোথাও খুব বড় একটা ঝামেলা শুরু হয়েছে । এমন কিছু হচ্ছে যা হওয়ার কথা না । মীরা কেমন চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে । আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি এই চোখের দৃষ্টি । আমি এই অফিসে কাজ শুরুর পর থেকে প্রতিদিন চেয়েছি যেন মীরা আমার দিকে এই চোখে তাকাক কিন্তু আজকে যখন এই চোখে সে আমার দিকে তাকিয়েছে তখন আমার কেমন সব অদ্ভুত মনে হচ্ছে । ঝামেলাটা কোথায় আমি বুঝতে পারছি না ! এমন তো হওয়ার কথা না । তাহলে কেন হচ্ছে ?

মীরা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো তখন আমাদের অফিসের সেলসের এজিএম আজিম সাহেব অফিসের ভেতরে ঢুকলেন ! আমাদের দুজনকে একসাথে দেখে কিছু সময় ব্যথিত চোখে তাকিয়ে রইলেন । তারপর নিজের কেবিনের দিকে চলে গেলেন । আমার বিস্ময়ের ভাবটা আরও তীব্র হল ! কারণ এই আজিম সাহেবের সাথে মীরার বিয়ে ঠিক হয়েছে । মানে হয়েছিলো অথচ এখন, এখানে দেখা যাচ্ছে মীরা আমার সাথে রয়েছে !

তখনই আমার মনে হল গত রাতের সেই বৃদ্ধের কথা । সে বলেছিলো আমার ইচ্ছে পূরণের কথা !
তাহলে কি সে এই ইচ্ছে পূরণের কথা বলেছিলো ! এটা কি সম্ভব ?
আসলেই সম্ভব?

মীরা আমার দিকে তাকিয়ে গলা নামিয়ে বলল, আজিম বেটা চলে এসেছে । আমি যাই । নয়তো দেখা যাবে আমার নামে রিপোর্ট করবে ! বেটা এতো হিংসুক হবে আমি কোন দিন টের পাই নি । আরে ভাই তোকে ভাল লাগে না আমার । তোকে বিয়ে করতে চাই না । ব্যাস ! কিন্তু না বেটা আমার পিছুই ছাড়ে না ।

মীরা নিজের বিরক্তি চাপার চেষ্টাই করলো না ! আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল, যাও তুমিও কাজে যাও । আর খবরদার আমার কল ইগ্নোর করবে না বলে দিলাম । ভাল হবে না !

মীরা নিজের ডেস্কের দিকে হাটা দিল । আমি চুপচাপ নিজের ডেস্কের দিকে হাটা দিলাম । মাথার ভেতরে তখন চিন্তার ঝড় চলছে ।

দুপুর হতে আমার কাছে মোটামুটি সব পরিস্কার হয়ে গেল । মীরা সত্যিই আমার জীবনে চলে এসেছে এবং তার সাথে আমার বিয়ের কথা বার্তা পাকা হয়ে গেছে । সময়টা সম্ভবত মাস দুয়েক পরেই । এবং এটা কেবল আমার আর মীরার ভেতরে সীমাবদ্ধ নয়, সবাই এটা জানে । আমার বাসার লোকজনও জানে । বিষয়টা পরিস্কার হওয়ার জন্য আমি বাসায় ফোন দিয়েছিলাম মায়ের কাছে । মা যখন নিজ থেকে মীরার কথা জানতে চাইলো তখন আর কোন সন্দেহ রইলো না ।
মানে হচ্ছে ব্যাপারটা এমন যে মীরা কোন ভাবে এসে আমার জীবনের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে । কেউ যেন ফটোশপ দিয়ে তাকে আমার জীবনের সাথে যুক্ত করে দিয়েছে । এবং এটাই এখন সবার কাছে স্বাভাবিক একটা ব্যাপার ।

সত্যিই সত্যিই আমার জীবনটা একেবারে বদলে গেল ! আমি বাসায় এসে খেয়াল করলাম যে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে । মীরার কিছু বন্ধু আমার সাথে যুক্ত হয়ে গেছে । রফিক ভাই এখন আর আমার সাথে থাকেন না । কেন থাকেন না আমি নিজেও জানি না । বলতে গেলে সে আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে !

আমি নতুন জীবনে প্রবল ভাবে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করলাম । মীরা প্রতিদিন অফিসের পর আমার সাথে বাইরে বের হয় । আমরা অনেকটা সময় বসে বসে গল্প করি । সব কিছু আমার কাছে স্বপ্নের মত মনে হয় । মনে হয় যেন এই এখনই আমার ঘুম ভেঙ্গে যাবে । আমি বিছানায় একা নিজেকে আবিস্কার করবো ।

আমি ওর দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতাম যে ও নিজেই লজ্জা পেয়ে যেত । ওকে যখন বললাম যে ওকে আমি কবে থেকে কিভাবে পছন্দ করি ওকে নিয়ে কি কি ভাবি তখন একটু অবাক হল । সাথে খুব বেশি খুশি হল । একদিন সাহস করে রিক্সার ভেতরে ওর গালে চুমু খেয়ে ফেললাম । ভেবেছিলাম হয়তো রাগ করবে । কিন্তু রাগ করলো না । বরং লজ্জায় লাল হয়ে গেল ওর গাল দুটো । এরপর থেকে ও নিজেই আমাকে চুমু খেত । অফিসে সুযোগ পেলেই আমাকে আড়ালে কিংবা ছাদে নিয়ে গিয়ে চুমু খেত গভীর ভাবে । আমার সব কিছু ভাল লাগতো । কিন্তু মনের মাঝে সেই একটা অস্বস্তি ঠিকই কাজ করতো । বারবার মনে হত যে মীরার কাছ থেকে আমি একটা সত্য লুকিয়েছি । ওকে ঠিক সঠিক ভাবে আমি কাছে পাই নি । এর ভেতরে একটা দুই নম্বরি আছে !
যদিও এটা আমি ইচ্ছে করে করি নি তবুও এটার ভেতরে কিছু তো অসৎ পন্থা আছেই । আজিম সাহেবের সাথে মীরার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল । আমার সাথে নয় । হয়তো আজিম সাহেবও মীরাকে ভালবাসতো আমার মতই ! আমি তাকে বঞ্চিত করেছি !

তারপরই ঘটলো এক ঘটনা যেটার জন্য আমি মোটেই তৈরি ছিলাম না । সেদিন অফিস থেকে বের হওয়ার পরেই বৃষ্টি শুরু হল । আমি আগেই বলেছি আমার বাসা অফিসের কাছেই । উপায় না দেখে মীরাকে নিয়ে হাজির হলাম বাসায় । অবশ্য ততক্ষণে আমরা দুজনেই ভিজে গেছি । ভিজে শরীরে ওকে দেখে আমার শরীরের ভেতরে সত্যিই কেমন আগুন ধরে গেল । বোধকরি মীরার বেলাতেও তাই । বাসায় দরজা বন্ধ করতেই ওকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করলাম । মীরা তাতে বাঁধা তো দিলোই না বরং নিজেও তাকে সংযুক্ত হল ।
যখন আমি একেবারে উত্তেজনার শেষ সীমাতে পৌছে গেছি ওর শরীর থেকে পোশাকটা খুলে ফেলবো তখনই মনের ভেতরে সেই অস্বস্তিটা ফিরে এল । সাথে সাথেই আমি মীরার কাছ থেকে আলাদা হয়ে গেলাম !

মীরা বেশ অবাক হল আমার আচরনে । কিছু সময় অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো । আমি কোন মতে বললাম, এটা ঠিক হচ্ছে না ।
মীরা একটু হাসলো । তারপর বলল, ওকে । এটা আসলেই ঠিক হচ্ছে না । সব কিছু বিয়ের পরে ।

মীরা ব্যাপারটা সহজ ভাবেই নিল । আমি ওকে ওয়াশ রুম দেখিয়ে দিলাম । আমার একটা ট্রাইজার আর টিশার্ট দিলাম সাথে । ফ্রেশ হয়ে ও বের হয়ে এল. আমিও ততক্ষণে ফ্রেশ হয়ে গেছি । দুজনে ড্রয়িং রুমে বসে গল্প করলাম । তারপরই আমার মনে হল যে আমি কোন দিন শান্তি পাবো না যদি না সত্য কথাটা আমি ওকে না বলি !

যখন মীরাকে সব কিছু খুলে বললাম তখন মীরা হেসে ব্যাপারটা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলো । কিন্তু আমার চেহারার গাম্ভীর্য দেখে অবাক হল । আমি বললাম, জানি তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না । আমারও বিশ্বাস হয় নি । কিন্তু দেখো এটাই হয়েছে । প্রমাণ হিসাবে একটা কথা বলি যে দেখো তোমার সাথে যে এঙ্গেইজমেন্ট হয়েছে সেটার ছবি কই ? দেখো তোমার সাথে আমার সব ছবি কেবল এক মাস ধরে । এর আগে তোমার জীবনে আমার কোন অস্তিত্ব নেই ।

মীরা আমার দিকে রইলো অবাক হয়ে । তারপরই হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল । কাছেই কোথাও যেন বাজ পড়লো প্রবল ভাবে । আমি একটু কেঁপে উঠলাম । তবে বিদ্যুৎ ফিরে এল প্রায় সাথে সাথেই । এবং আমি তীব্র অবাক হয়ে খেয়াল করলাম যে মীরা আমার সাথে নেই । অথচ আমরা কাছাকাছি বসে ছিলাম । ও উঠে গেলেও আমি টের পেতাম । পুরো ঘর খুজে দেখলাম যে মীরা নেই ।


তিন
ঠিক যেভাবে মীরা আমার জীবনে এসে হাজির হয়েছিলো ঠিক সেভাবেই গায়েব হয়ে গেল । আমার জীবন সব আগের মত হয়ে গেল । রফিক ভাই আবারও আমার রুমমেট হয়ে গেল । মানে এই দের মাস আগে আমি যেমন ছিল ঠিক তেমন হয়ে গেল সব । তবে একটা পরিবর্তন ঠিকই আমি খেয়াল করলাম । সেটা হচ্ছে মীরা আমার দিকে কেমন অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকতো । যতবার ওর চোখে চোখ পড়তো ততবার আমার মনে হতে লাগলো যে মীরা যেন আমাকে খুব ভাল করে চেনে !

নিজের কাছেই একটা আফসোস হতে লাগলো খুব । কেবলই মনে হতে লাগলো যে কেন আমি সত্য কথাটা বলতে গেলাম । এটা চেপে গেলেই তো সব ঠিক হয়ে যেত । মীরা আমার হয়ে থাকতো । ওকে চাইলেই ধরতে পারতাম । চুমু খেতে পারতাম ! আর সপ্তাহ খানেক পরেই আজিম সাহেবের সাথে মীরার বিয়ে হয়ে যাবে । আমি যদি সেদিন ওকে সত্য কথাটা না বলতাম তাহলে হয়তো এই বিয়েটা আমার সাথেই হত !
রাস্তার পাশে বসে এমন কথাই ভাবছি আর আফসোস করছি তখনই আমার পাশে এসে কেউ এসে বসলো । আমি পাশ ফিরে তাকাতেই একটা ধাক্কা খেলাম । সেদিনের সেই বৃদ্ধ লোকটা । মুখে স্মিত হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । আমাকে বলল, তোর মত বোকা আমি আসলেই দেখি নি । এতো বড় সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করে ?
আমি নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বললাম, কিন্তু ....
আমাকে খানিকটা ধমকে উঠে বলল, বেটা জানিস না যে প্রেম এবং যুদ্ধে সব কিছু জায়েজ !
আমি মাথা নিচু করে রইলাম ।
বৃদ্ধ বলল, একবার বিয়ে যদি হয়ে যেত তাহলে সেটাই তোর জন্য সত্য হয়ে যেত । আর ভাঙ্গতো না । কিন্তু তুই আগে সত্য প্রকাশ করে দিয়ে সব ভেস্তে দিলি । বিয়ের পরে সত্যটা বললেও কিছু হত না ।
আমি আবারও চুপ করে রইলাম । সত্যিই মনে হয় সেটাই ভাল হত !
আমি বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে বললাম, আবার করা যায় না ?
-নাহ ! আর সম্ভব না আমার পক্ষে ! তুই ভাল মানুষ । এই জন্য তোর মনের একটা ইচ্ছে পূরণ করতে চেয়েছিলাম । খানিকটা নিয়ম ভেঙ্গেই । আর এই কাজ করা যাবে না । বুঝেসিছ! ভাল থাকিস !
লোকটা আর কোন কথা না বলে উঠে দাড়ালো । ঠিক সেদিনের মত আমার চোখের সামনে দিয়ে হেটে চলে গেল ! তারপর অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।

চার
তবে সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও যেন গল্প থাকে । আমার বেলাতেও আরও কিছু যেন বাকি ছিল । পরদিন অফিসে গিয়ে হাজির হতেই দেখলাম আমার জন্য একজন অপেক্ষা করছে । এবং সেই একজনটা আর কেউ না স্বয়ং মীরা ।
নিজের মোবাইলটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল নিঃশব্দে । দেখলাম সেখানে গ্যালারি বের হয়ে আছে । এবং সেখানে বেশ কিছু ছবি । আমার আর মীরার কিছু ছবি ! মীরা যখন আমার সাথে থাকতো তখন প্রায়ই ছবি তুলতো । রিক্সা কিংবা রেস্টুরেন্ট । এমন কি ছাদে চুমু খাওয়ার ছবিও মীরা তুলেছিলো । সেই ছবিটাও দেখা যাচ্ছে গ্যালারিতে !
-ক্যান ইউ এক্সপ্লেইন দিস ?

আমি একটু অবাক হলাম । ওর গ্যালারিতে ছবি গুলো রয়ে গেছে । আমি বললাম, আমি বলতে পারবো তবে আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না ! মীরা বলল, আমি করবো । আমি বলুন । কদিন থেকে আমি যেন পাগল হয়ে যাচ্ছি । আমার কদিন পরে আজিমের সাথে বিয়ে হওয়ার কথা । অথচ আমার চিন্তা চেতনা জুড়ে আপনি বসে আছেন । আমি বুঝতে পারছি না ! অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখছি রাতে !

আমি খানিকটা কৌতুহল নিয়ে বললাম, আমাকে নিয়ে স্বপ্ন?
মীরা একটু লজ্জিত কন্ঠে বলল, হ্যা !
-একটা স্বপ্নের কথা বলুন তো !
মীরা ইতস্তর করে রইলো কিছু সময় । তারপর আমাদের সেদিনের রিক্সার চুমু খাওয়ার ঘটনাটা বলল । আমি শুনে যা বুঝার বুঝলাম । মানে হচ্ছে মীরার সাথে আমার কাটানো এই সময় টুকু আমার মনে আছে । মীরার মনে আছে স্বপ্ন হিসাবে । স্বপ্নের ভেতরে সেগুলো ফিরে ফিরে আসছে হয়তো !

আমি ওকে বললাম শুরু থেকে । যা যা আমার সাথে হয়েছে সব কিছু । মীরা শান্ত ভাবে সব শুনলো । তারপর আর কোন কিছু না শুনতে চেয়ে মীরা নিজের মোবাইল নিয়ে উঠে চলে গেল । সারা দিন আমার কাজে মন বসলো না আর ।
অফিস একটু আগে আগেই বের হয়ে গেলাম । সোজা গিয়ে হাজির হলাম নিজের বাসায় । মনে মনে ঠিক করলাম যে কিছুদিন ছুটি নিবো । সম্ভব হলে চাকরিটা ছেড়ে দিবো । আসলে মীরা অন্য কাউকে বিয়ে করে ফেলবে, তারপর বর নিয়ে আমারই চোখের সামনেই ঘুরে বেড়াবে সেটা আমার সহ্য হবে না । আমি আসলে সহ্য করে নিতে পারবো না । চোখের সামনে না পড়লে হয়তো কষ্টটা কম হবে ।



সন্ধ্যার দিকে কলিংবেল বেজে উঠলো । এই সময়ে রফিক ভাই বাসায় ফিরে আসে সাধারণত । আজকেও সে এসেছে ভেবে দরজা খুলতে গেলাম । দরজা খুলে ফিরে আসতে যাবো তখনই আবার ফিরে তাকালাম । দরজায় রফিক ভাই নয়, মীরা দাড়িয়ে আছে !
খানিকটা ইতস্তর কন্ঠে বলল, আপনি আজকে আগে আগে বাসায় চলে এসেছে !
আমি কী বলবো খুজে পেলাম না । মীরা বলল, আমি ভেতরে আসবো?
-হ্যা হ্যা আসুন !

মীরা ভেতরে ঢুকলো । ঘরের দিকে চোখ বুলালো । আমার কাছে মনে হল যে ও যেন কিছু মিলার চেষ্টা করছে । সোফার উপরে বসতে বসতে মীরা বলল, এক কাপ কফি পাওয়া যাবে?
আমি তখনও ঠিক যেন ধাতস্ত হয়ে উঠতে পারি নি । আমি বললাম, হ্যা হ্যা । আপনি বসুন । আমি নিয়ে আসছি !

কফি বানানোর সময় আমার মাথার ভেতরে তীব্র ঝড় চলছি । আমি তখনও ঠিক বুঝতে পারছি না যে মীরা ঠিক এখানে কী করছে ? এখানে কেন এসেছে?
কফি নিয়ে ফিরে এলাম । কফি নিয়ে বসলাম ওর পাশেই । মীরা কিছু সময় চুপ করে রইলো । তারপর বলল, একটা কথা জানতে চাইবো আপনার কাছে?
-বলুন !
-আপনি চাইলেই ঐদিন আমার সাথে ঐ কাজটা করতে পারতেন ! আই মিন আমরা দুজনেই চাচ্ছিলাম ! উত্তেজিত ছিলাম ।
আমি ওর চোখের দিকে তাকালাম । দেখলাম ওর গাল দুটো লাল হয়ে গেছে । মীরা বলল, অন্য সব স্বপ্নের ভেতরে এই স্বপ্নটা আমার কাছে সব থেকে বেশি জীবন্ত !
হয়তো এটা সব শেষ ঘটনা ছিল বলেই এটা সব থেকে ভাল মনে আছে ওর ! আমি বললাম, আসলে আমি বারবার মনে হচ্ছিলো যে আপনার সাথে আমি বিট্রে করছি । সত্য বলছি না । আপনাকে যেভাবে পেয়েছি সেটা সঠিক হয় নি । কিন্তু আপনার প্রতি আমার ভালোবাসা তো দুই নম্বর নয় । ঐকাজ টা করলে হয়তো আমার ভালোবাসাটা খাটি থাকতো না আর ! সারা জীবন আমাকে এটা কষ্ট দিতো ! হয়তো আপানকে পেয়ে যেতাম কিন্তু মনের শান্তি পেতাম না !

মীরা চুপ করে আরও কিছু সময় কফি কাপের চুমুক দিল । তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি আজিমকে ঠিক ভালোবাসি না । ও সরাসরি আমার বাসায় প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো । আমিও মানা করি নি । কিন্তু ওর প্রতি কেন জানি আমার ভালোবাসা জন্মে নি কোন দিন । তবে অপছন্দ করতাম না ওকে এটা সত্য । কিন্তু কদিন থেকে বিশেষ আপনার ভাষ্য মনে আপনার সত্য বলার পরে যখন আবার ফিরে এলাম তখন আর ওকে আমার মনে ধরছে না । কোন ভাবেই না । আপনার ছবি যখন আমি প্রথম নিজের মোবাইলে দেখতে পেলাম, তারপর স্বপ্নের ভেতরে ঐ দৃশ্য গুলো ফুটে উঠতে শুরু করলো তখন সত্য বলতে আমি যেন মনের ভেতরে যে কেমন লাগছিলো আমি বলতে পারবো না । অনেক গুলো প্রশ্ন ঠিকই মনে জাগছিলো তবে সেই সাথে একটা ভাল লাগা কাজ করছিলো । কেন পাচ্ছিলাম আমি নিজেই জানি না । তবে একটা কারণ হয়তো যে আমিও যে সেই দৃশ্য গুলোতে আপনাকে ভালোবেসেছিলাম এটা জেনে আনন্দবোধ হচ্ছিলো ।

আমি মীরার দিকে তাকিয়ে রইলাম একভাবে । মীরা আবার বলল, আমি আজকে অফিসে আসার আগে বাসায় জানিয়ে দিয়েছি যে আমি আজিমকে কোন ভাবেই বিয়ে করবো না । বাসায় জানিয়েই আমি আপনার কাছে গেছি । এখন আর বাসায় যাওয়া যাবে না । আমি জানি বাসায় গেলে বাবা যে কোন ভাবে আমাকে জোর করে আজিমের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে । আপাতত অফিসেও আর যাবো না । আমার বান্ধবি আছে কাছে ওর কাছে যাচ্ছি থাকার জন্য !

মীরা একটু দম নিল । তারপর আমার দিকে তাকালো সেই ঘোর লাগা চোখে । ওর মুখ ফুটে একটা শব্দ বের হতে যাবে তার আগেই আমি বললাম, চলুন বিয়ে করে ফেলি ! আপনার কোথাও যেতে হবে না আর !
মীরা ফিক করে হেসে ফেলল । ঠিক সেই সময়েই বিদ্যুৎ চলে গেল । আমার বুকের ভেতরে আবার কেমন ধক করে উঠলো । আমার মনে হল যে এখনই হয়তো আবারও বাজ পড়বে কোথাও এবং যখন আবার বিদ্যুৎ ফিরে আসবে তখন দেখবো যে মীরা আর নেই আমার কাছে !
আমি ভীত কন্ঠে বললাম, মীরা আছো তুমি?
মীরা সাথে সাথেই বলল, আমি আছি । এই যে ....

বলেই মীরা আমার হাত স্পর্শ করলো। আমি সাথে সাথেই মীরার হাতটা ভাল করে ধরলাম । আমি ওকে পেয়েই জড়িয়ে ধরলাম অন্ধাকরের ভেটরে। বুকের ভেতরে যে ধুকধুক করা শুরু হয়েছে সেটা যেন বেড়ে গেল আরও বেশি । দেখলাম মীরা আমার মাথায় হাত রেখে বলল, ভয় নেই । আমি এবার সত্যিই এসেছি । হারিয়ে যাচ্ছি না .....



গল্পটি আগে নিজেস্ব ওয়েব সাইটে প্রকাশিত





pic source
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:০৪
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×