সমাজে সাইকোরা আমাদের মতই স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করে । আমাদের মাঝেই তাদের জীবন যাপন । কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করলেও তাদের মনের মাঝে সব সময় একটা কুটিল চিন্তা ভাবনা কাজ করে । তারা সাধারণ মানুষের মত চিন্তা ভাবনা করে না । আমিনুর রহমানও ঠিক তেমন একজন সাইকো । পেশায় সে একজন ডাক্তার । শিশু বিশেষজ্ঞ । পেশায় একজন শিশু বিশেষজ্ঞ । ডাক্তারি জীবনে সে অল্প সময়ের ভেতরেই অনেক সুনাম কামিয়ে ফেলেছে । দেশ জোড়া তার খ্যাতি । সবাই চেনে একনামে । দুইহাতে টাকা আয় করে । কিন্তু আমিনুর রহমান একজন সাইকো । সে মানুষকে নিয়ে এক্সিপেরিমেন্ট করে । বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে। তাদেরকে কষ্ট দিয়ে আনন্দ পায় । বিকৃত মস্তিস্কের একজন মানুষ ।
আমিনুর রহমানের ছোট বেলাটা মোটেও ভাল ছিল না । যখন সে ছোট ছিল তখন তার বাবা মা ভেতরে প্রবল ঝগড়া হত । এই ঝগড়া দেখেই সে বড় হয়েছে । ছোট বেলা যে সব মানুষের আনন্দে কাটে না বড় বেলায় তাদের ভেতরে নানান মানসিক সমস্যা দেখা দেয় । কেউ কেউ হয়ে ওঠে ভয়ংকর । আমিনুর রহমানের মত । এই ঝগড়ার মাঝেই এক সময়ে তার বাবার হাতে তার মা খুন হয় । কিন্তু বাবা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে না । সুকৌশলে বেঁচে যায় । তারপর তার বাবা আবারও বিয়ে করে । কিন্তু নতুন মায়ের সাথে তার ছোট চাচার এক অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয় । এটা আমিনুর রহমান নিজ চোখে দেখে । তার জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। তার মা এবং ছোট চাচার মাঝে যে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয় সেখান থেকে এক সন্তান জন্ম নেয় । আমিনুর রহমান এবার সুকৌশলে তার সেই ছোট ভাইকে মেরে ফেলে । শুরু হয় আমিনুর রহমানের হত্যার লীলাখেলা ! এক সময়ে তার সেই ছোট চাচাও তার হাতে খুন হয় । তবে বুদ্ধি দিয়ে সে এবারও বেঁচে যায় ! এই যে অপরাধ করে বেঁচে যাওয়া -এটা তাকে আরও আত্মবিশ্বাস যোগায় । সে আরও খুন করতে থাকে ! আমিনুর রহমান যখন স্কুলে পড়তো তখন এক শিক্ষক অন্য একজন ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তাকে নকলের দায়ের ফাঁসিয়ে দেয় । বড় হয়ে সে সেই শিক্ষককে খুন করে সে ।
আমিনুর রহমানের ডাক্তারী পেশার জন্য একটা বাড়ি রয়েছে । সেখানে গবেষণা ঘর রয়েছে । সেখানে সে মর্গ থেকে লাশ কিনে এনে কাটাকাকুটি করে । নানান ভাবে কেটে কুটে দেখে । এছাড়া সে গরীব মানুষের কাছ থেকে তাদের সদ্য জন্মানো বাচ্চাদের কিনে এনে তাদের উপর এক্সপেরিমেন্ট করে ।
এমনই একটা পরিবার হচ্ছে রুদ্র আর মিতুর পরিবার । রুদ্র আর মিতু গোপনে বিয়ে করে । কিন্তু মিতুর বাবা জেনে যাওয়ার পরে তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় । অনেক কষ্টে রুদ্র আর মিতুর সংসার করে । এক সময়ে রুদ্র বদলে যায়। মিতুর রতি আর আগের মত ভালোবাসা অনুভব করে না । এরই ভেতরে মিতুর বাচ্চা হবে । তখন ডাক্তার আমিনুর রহমান রুদ্রের কাছে এসে বলে তার বাচ্চা বিক্রি করে দিতে । রুদ্র ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করে দেয় । কিন্তু বাচ্চা নিয়ে চলে যাওয়ার পর রুদ্রের ভেতরে পিতৃত্ব জেগে ওঠে । সে আমিনুর রহমান বাসায় হাজির হয় এবং বাচ্চা চুরি করে আনতে যায় কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে ।

মোটামুটি এই হচ্ছে গল্প । বইটা খুব বেশি জুতসই মনে হয় নি । এই বই গত ২০১৯ এর মেলায় তিন মুদ্রন বিক্রি হয়েছে । মোটামুটি এক বসায় বইটা শেষ করা যায় । হালকা মেজাজে পড়ার মত বই ।
একই লেখকের আরেকটা বই হচ্ছে সাইকোগিরি । এটা হচ্ছে গল্প সংকলন । মোট ২৮টা ছোট গল্প রয়েছে । বেশির ভাগই আমার ভাল লাগে নি ।
সাইকো গিরি বইটা কিনতে পরামর্শ দিবো না । তবে সাইকোটা কিনে দেখতে পারেন । যেহেতু তিন মুদ্রন বিক্রি হয়েছে তার মানে পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে । আপনাদের হয়তো ভাল লাগতেও পারেন ।
(রিভিউটি নিজস্ব সাইটে আগে প্রকাশিত)
pic source
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:০৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




