কয়েক বছর আগে পুরান ঢাকায় আগুন লাগার একটা ঘটনা ঘটেছিল। আপনাদের অনেকের মনে থাকার কথা। সে সময়ে একটা গল্প অনলাইনে ছড়িয়ে পরেছিল । গল্পটা এই রকম ছিল যে যে বিল্ডিংয়ের আগুন লেগেছিল সেই বিল্ডিংয়ের উপর তলায় এক দম্পতি থাকত। মেয়েটি সন্তান সম্ভবা ছিল । আগুন লাগার দিন মেয়েটি নামতে পারে নি তাই তার স্বামীও তাকে ছেড়ে যায় নি । দুজনেই মারা পড়েছিল । অনলাইনে খুব মাতল হয়েছিল । কিন্তু পরে দেখা গেল এমন কিছু হয় নি । মর্গে এমন কোন লাশই আসে নি । খোজ খবর নিয়ে জানা গেল যে গল্প ভূয়া। যে আইডি থেকে এই ঘটনা ছড়ানো হয়েছিল সেটা গায়েব হয়ে গিয়েছিল । এই ঘটনার সময় আমি প্রায় অর্ধেক একটা গল্প লিখে ফেলেছিলাম এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে । কিন্তু শেষ করার আগেই জানতে পারলাম ঘটনা ভুয়া । গল্পটা আর শেষ করা হয় নি । গল্পটা এখনও ড্রাফটে রয়ে গেছে সেই অবস্থায় ।
তবে সে গল্পেরই যেন আরেকবার দেখা গেল। এমন ভিডিও আপনাদের চোখে পড়েছে হয়তো । প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনাও শুনে থাকবেন অনেকে। আগুনে পুড়ে যাচ্ছে মানুষটা । জানলা দিয়ে তাকে দেখা যাচ্ছে। লোকজন তাকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। লোকজন তাকে বের হওয়ার জন্য বলতেছে কিন্তু সে বের হচ্ছে না ।
এই গল্পটা কি সত্যই হতে পারে ? এভাবেও কেউ কি মৃত্যু বরণ করতে পারে ? নাকি এটাও কেবলই গল্প ! তবে গল্প হোক বা সত্য কী ভয়ংকর এই মৃত্যু ! তাদের কি এভাবে মৃত্যুর কথা ছিল?
আমি নিয়মিত এই বেনাপোল এক্সপ্রেসে করেই বাসায় যাই। এই ট্রেনটা আমার যাওয়া আশের জন্য একেবারে পার্ফেক্ট একটা শিডিউলে । ঢাকা থেকে রাত এগারটা পনের ছাড়ে আর চুয়াডাঙ্গাতে পৌছায় একেবারে সকাল বেলা । শীতকালে যদিও একটু অন্ধকার থাকে। স্ট্রেশনে একটু বসে থাকতে হয় । রাতের ঐ সময়টা স্টেশন থেকে আমাদের বাড়ির রাস্তায় যাওয়াটা একটু বিপদ জনক। তবে অন্য সময়ে আলো ফুটে যায় । সকাল থেকে একেবারে দিন শুরু করা যায় । আবার চুয়াডাঙ্গা থেকেও বিকেলে ট্রেন ছাড়ে আর নয়টার সাড়ে নয়টার ভেতরেই পৌছে যায় । পদ্মা সেতুর কারণে সময়টা আগের থেকে একটু পিছিয়েছ তবে সেটাতে কোন সমস্যা নেই। একেবারে চালুর দিন থেকে এই ট্রেনে আমি নিয়মিত যাতায়াত করি । মূলত এই ট্রেনটা চালু হওয়ার পরেই বাসে যাতায়াত একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছি।
এই ট্রেনেই গতদিন আগুন দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেছে। যে বা যারা এই কাজটা করেছে, সেই মানুষ গুলোর আগুন দেওয়ার সময় কি একটুও হাত কাঁপে নি? এই চারজন মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেল, জলন্ত পুড়ে মারা গেল, যখন সে জেনেছে যে তার দেওয়া আগুনের ফলেই এই মানুষ গুলো মারা গেল পুড়ে তখন তার মনের অবস্থা কেমন হয়েছে? এটা আমার বড় জানতে ইচ্ছে করে !
এদিকে বিএনপি আওয়ামীলীগের উপর আর আওয়ামীলীগ বিএনপির উপরে দোষা চাপিয়ে দায় শেষ করে দিয়েছে । এদের অবশ্য কারোই কিছু যায় আসে না। দেশের মানুষ মরলো কি বাঁচল তাতে এই দল গুলোর আদৌও কোন দিন কিছু যায় এসেছে !
কীভাবে জীবন্ত পুড়ে মরে গেল মানুষ গুলো !
ছবিসুত্র - অনিকেত প্রান্তর
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫২