ঘটনা - ১
বাসা থেকে অফিসে যাচ্ছি । প্রতিদিনের মত ই বাসে উঠলাম । বাস পুরো সিটিং । কন্ডাক্টার গেটলক করে ফেলেছে । কয়েকজন দৌড়ে আসল । এসেই গেটে বাড়ি দিচ্ছি । কিন্তু কন্ডাক্টার তো গেট খুলবে না । সে পুরো চিপায় আছে । গেট খুললে বাসের ভিতরের লোকজন চিল্লাবে । আমিও চিল্লাব । আবার বাইরে থেকে গালি খাচ্ছে । এটাই বোধহয় আসল মাইনক্যা চিপা ।
তবে সত্যি যদি বলি বাইরের লোক গুলো দেখছে গেট লাগানো তারা চিল্লাচিল্লা না করে স্ট্যান্ডে যেতে পারে । কিন্তু কষ্ট করে দুই কদম হেটে যাবে না । কেন যাবে না আমার মাথায় আসে না । আরে ভাই বাস তো দুই মিনিট পর পর আছে । তাছাড়া অনেকেই আছে দেখি বাসের গেটের উপর লাফিয়ে পরেন । ভাই আপনার তাড়া থাকলে একটু তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হতেন । কিন্তু সেটা তো হবেন না । বাসার রাগ এসে সব চাপাবেন বাসের উপর সেটা তো হবে না ।
আর আপনি গালি দিয়ে তো নিজের ক্ষতি করলেন । ওই কন্ডাক্টারের কিছুই হবে না । বরং লোকজন আপনার দিকেই তাকিয়ে থাকবে । তাই গালি গালাজ না করে নিজেকে একটু পরিবর্তন করে নিন ।
ঘটনা - ২
অফিস থেকে বাসায় যাচ্ছি । কোন বাস নেই । দাঁড়িয়ে আছি সাইন্সল্যাব । চিন্তা করছি কি করা যায় । হেটেই যাবো নাকি ভাবছি । সেদিন আবার ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি । মানে পহেলা ফাল্গুন । মজার বিষয় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাপল দেখতে ভাল ই লাগছিল । রিকশায় করে জোড়ায় জোড়ায় যাচ্ছে । একবার ভাবলাম বই মেলায় যাই । তবে সারাদিনের অফিসের পর ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাস শেষ করে আর ইচ্ছে হলো না ।
আমার সামনেই এক জোড়া দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করছে । ভাবলাম সময়টা একটু মজার করা যাক । দু পা পিছিয়ে আসলাম । বাদাম কিনলাম পাঁচ টাকার । দেখতে থাকলাম তারা কি করে । অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছে বাসে উঠার । কিন্তু কোন বাস তো গেট খোলা নেই আবার যেসব বাসের গেট খোলা সেগুলোতে দাড়াবার জায়গা নেই । তারা প্রায় আধা ঘণ্টা হয়ে গিয়েছে দাঁড়িয়ে আছে । মেয়েটা বিরক্ত । শেষ কি বলব বুঝলাম না । একটু রেগে গিয়েছে ।
একটু হাসি আসল । ছেলেটার জন্য কষ্ট লাগল । বেচারা বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে । মোবাইলে কল করল দেখলাম মনে হয় উবার বা পাঠাও । মেয়ের চেহারাতে বিরক্তির শেষ সীমানায় পৌছে গিয়েছে । আজ ছেলের খবর আছে । মেয়ে বাসায় গিয়েই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বাধিয়ে দিতে পারে । মেয়েটা উত্তেজিত হয়ে কি কি জানি বলছে আমি দূর থেকে দেখছি । সে যাই হোক শেষ পর্যন্ত তারা একটা রিকশায় চলে গেল । প্রথমে মেয়েটা ছেলেটাকে উঠতে দিতে চায়নি । তারপর ঠিকই উঠিয়েছে ।
আমি ওখানে প্রায় আরও আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম । শেষে একটা বাসে উঠতে পেরেছি । বাসে উঠে ভেবেছি মেয়েটার হয়ত বাসায় প্রব্লেম ছেলেটার উচিত ছিল মেয়েটাকে তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছে দেয়া । এটা তার দায়িত্বের অন্যতম । কারন একটা মেয়ে সময়মত বাসায় না পৌছালে কি পরিমান চিন্তা হয় তা আমার চেয়ে ভাল কেউ জানে না । কারন আমার ঘরেও একটা মেয়ে আছে ।
ঘটনা - ৩
আমি অফিস থেকে প্রায় হেটে ঝিগাতলা পর্যন্ত আসি । এটা আমি প্রায় করি । হাটতে আমার ভাল লাগে । চারপাশের অবস্থা দেখতে দেখতে হাটতে ভালই লাগে । অনেক কিছু ই দেখা যায় । মজার দুঃখের আনন্দের কষ্টের সব কিছুই ।
সেদিনও হেটে ঝিগাতলা আসলাম । দেখি ইয়োলো এর শো রুমে মানুষ লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছে । এত মানুষ সচরাচর থাকে না । তাও লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে । ব্যাপারটা মজার আবার ভাবলাম এখন তো ঈদ ও না যে এত মানুষ শপিং করবে । এটা জানি বাংলাদেশের মানুষের টাকার অভাব নেই । সবাই তো আমার মতো না ।
যাইহোক পরে জানলাম যে ছাড় চলছিল । ব্যাপারটায় আমি বেশ অবাক হলাম । ছাড় দিয়েছে তো কি হয়েছে । এজন্য এত লোক আসবে । ছাড় তো সারা বছর ই চলে । এই দুই দিন আগেই দেখলাম ছাড় চলছে । তাহলে কি একটার সাথে পাঁচটা ফ্রী অফার চলছিল । আর আমরা তো আছি ফ্রী শুনলেই দৌড়দেই । অথচ এটাও যে বিজনেস সেটা তারা জানে না ।
এই ফ্রী হচ্ছে গোডাউন ক্লিয়ারেন্স । যা বিক্রি হচ্ছে না বা গোডাউন এ পরে আছে ফেলে দেয়ার চেয়ে কিছু টাকা লাভে বিক্রি করে দিলে তো কিছু তো লাভ হবে । তাই ফ্রী শোনার সাথে সাথেই দৌড় না দিয়ে ভাবুন ।
( অফিসের কাজে এতই ব্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে ব্লগে আসতে পারিনা । সামনে একটা মেলা আছে সবাইকে আমন্ত্রন জানালাম । কাল থেকে তিনশ ফিটে শুরু হবে ।)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩২