জীবনের কাছে আমাদের কতটুকু পাওনা আছে । আমরা এক জীবনে কত কিছুই চাই । আমাদের চারদিকে কতজন থাকিয়ে দেখছি । কখনও কি ভেবে দেখেছি আমাদের চারপাশে কি হচ্ছে । কার কি সমস্যা । কে কষ্টে আছে । কে অসহায় । কে অপরাধী । নাকি আমরা সবাই অপরাধী । হয়ত আমরা সবাই ঠিক আবার সবাই ভুল ।
কবিরা সাধারনত তাদের মনের কথা গুলো ছন্দের মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে । আবার তারা এত সুন্দর ভাবে উপমা ব্যবহার করে যে মাঝে মাঝে মনে হয় কিভাবে তারা পারে । তাদের প্রতিবাদের ভাষাও দারুন । তবে মজার বিষয় হচ্ছে তারা উপমা ব্যবহার করে সুন্দর ভাবে প্রতিবাদ করতে পারে । অনেকটা সাপ মরে লাঠিও ভাঙ্গে না । তবে আমি তাদের হিংসা করি অনেক । কারন অনেক সাহিতিক্য আছেন যারা পাতার পর পাতা লিখে বুঝতে পারেন না । অপর দিকে কবিরা এক কবিতা লিখে সব কিছু বুঝিয়ে ফেলেন ।
" জীবনের ব্যাকরন " বইটি কবিতার বই । যদিও আমি কবিতা এত ভাল বুঝি না । আমার দৌড় ওই নজরুল, রবি ঠাকুর, জীবনানন্দ, জসীম উদ্দিন, রুদ্র পর্যন্ত । তবুও এবার আমি এম রহমান লতিফের " জীবনের ব্যাকরন " বইটি কিনেছি । বইটি পড়তে সময় লাগার কারন হচ্ছে কবিতা বুঝার চেষ্টা করা । বইটির সব গুলো কবিতাই জীবনের কথা বলে । আমাদের প্রতিদিনের কোন না কোন অংশ কবিতার মাঝে জড়িয়ে আছে ।
বইটিতে প্রায় ৭১টির মত কবিতা আছে । তবে আমার মনে হয় কবি আরও সময় নিয়ে বইটি প্রকাশ করতে পারতেন অথবা প্রকাশের আগে দেখে নিতে পারতেন । কারন অনেক জায়গাতে কিছু লেখা সম্ভবত ভুল ছাপা হয়েছে । তাছাড়া কিছু লাইন আমার কাছে মনে হয়েছে আরও ভাল হতে পারত । তাছাড়া যদিও কিছু কিছু কবিতায় ছন্দ ছিল, কিন্তু সেটা কবিতার শেষ পর্যন্ত ধরে রাখেননি ।
দেহ তত্ত্বের গীতি দুটি ভাল হয়েছে । যেহেতু এদুটি গান বা জারি টাইপের তাই এগুলো শেষে দিলে ভাল হতো । লতিফা গুলো ছোট তবে কেন জানি খাপ ছাড়া মনে হয়েছে । তবে কবির জীবন বোধে আমি মুগ্ধ । তার কবিতার মাঝে বাস্তবতার চিত্র ফুটে উঠেছে । অবশ্যই বলব কবি বাস্তবতা কে গুরুত্ব দিয়েই কবিতা গুলো লিখেছেন ।
সব শেষে, কবির প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা আর ভালবাসা ।
বইঃ জীবনের ব্যাকরন
লেখকঃ এম রহমান লতিফ
প্রকাশনীঃ পায়রা প্রকাশ
মেয়েদের জীবন বড়ই অদ্ভুত । তারা হয়ত নিজেরাও জানে না তাদের জীবনটা আসলে কি রকম । তবে মেয়েদের জন্ম থেকে মৃত্যু একটা লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে যায় । তারা প্রতিনিয়ত লড়াই করে । লড়াই করেই তাদের বেচে থাকতে হয় ।
লড়াই করা তাদের রক্তে মিশে আছে । জীবনের প্রতিটি ক্ষনে তারা যুদ্ধের ময়দানে উত্তীর্ন হয় । তবে তারা হেরে যায় না । জিততে না পারলেও কখনও তাদের হার হয় না । ক্লান্তি নেই তাদের । এ যেন এক অবিরাম ছুটে চলা এক লাগামহীন ঘোড়া । যার কোন গন্তব্য নেই । নেই কোন উদ্দেশ্য । যে শুধু ছুটে চলে । তবে সেও একদিন খুজে পায় গন্তব্য । তার আশ্রয়স্থল ।
"কঙ্কাবতীর কথা" তেমন এক মেয়ের জীবন কথা । যার ছোট বেলা থেকেই শুরু হয় যুদ্ধের ময়দান । যে নিজেও পরে যায় অথই সমুদ্রে শুধু হাতরে বেড়ায় । যারা বাবা তার কৈশোর শুরু হবার আগেই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় । যার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয়ে সৎ বাবার বাসায় চলে যায় । সেও যায় মায়ের সাথে তার সৎ বাবার বাসায় । কিন্তু সেখানেও তার জায়গা হয় না । খুবই অনাদরে বড় হয় সে । তার সকল কিছুই যেন হারিয়ে যায় । সে নিজের মত ই সাজিয়ে নেয় তার জগৎ । তার ভাল লাগা নাচ, গান, কবিতা ।
শান্তিনিকেতন থেকে হৃদয়ের কুঠোরিতে বন্ধন । তারপর হেটে চলা । কিন্তু সেটাও তার জন্য বয়ে নিয়ে আসে অভিশাপ । শেষ পর্যন্ত তার কি হয় সেটাই । সে ছুটে চলে অজানার উদ্দেশ্য ।
তবে আমার মনে হয় লেখক এখানে অনেক দেখিয়ে ফেলেছেন । তবে এটা সত্য কিনা জানি না । এক জীবনে এত কিছু সহ্য করা সম্ভব না । তারপরও গল্পের জন্য মেনে নিলাম । তবে কাহিনীর ক্ষেত্রে বলি হঠাত করেই কেন জানি একটু নেমে গিয়েছে । আবার হঠাত করে উচ্চতায় পৌছে গিয়েছে । তবে লেখকের লেখা নিয়ে আমার কোন আপত্তি নেই । তবে কাহিনী অসম্পূর্ন মনে হয়েছে । আরও কিছু যোগ করা যেতো ।
তবে আমি পাঠক হিসেবে বলব উপন্যাসের ক্ষেত্রে বেশি কষ্টের হয়ে গিয়েছে । আমি এতো কষ্টের উপন্যাস আমার সহ্য হয় না । তবুও বলব দারুন একটা উপন্যাস ।
বইঃ কঙ্কাবতীর কথা
লেখকঃ শায়মা হক
প্রকাশনীঃ এক রঙা এক ঘুড়ি
(বিঃদ্রঃ সম্পূর্ন ব্যক্তিগত মতামত । প্লিজ দয়া করে কেউ রাগ করবেন না । শায়মা আপু সরি । লতিফ ভাই সরি ।)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:৪০