somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প - উপলব্ধি (৩)

১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





ঘটনা – ১

পল্টন গিয়েছিলাম একটা কাজে । কিছু কাগজ পত্র দিয়ে আসতে । একটা ল কলেজে । যদিও আমার কাজ না । মামার কাজ । তো গেলাম । ল কলেজের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলাম তখন এই ফুটপাতে বসে থাকা হকার এর দিকে চোখ গেল । লোকটা বসে বসে নিজের জিনিস পত্র সাজিয়ে রাখছে । কেউ দাড়াচ্ছে দেখছে আবার না কিনে চলে যাচ্ছে । এতে তার তেমন কোন কিছু আসছে যাচ্ছে বলে মনে হলো না । বরং সে গান শোনায় ব্যস্ত হয়ে গেল ।

তাকে দেখে আমার পৃথিবীর অন্যতম সুখী মানুষদের একজন মনে হচ্ছিল তখন । যদিও অল্প সময়ে মানুষকে বিচার করে ফেলা ঠিক নয় । তবুও তার সব কিচু দেখে মনে হচ্ছিল । পৃথিবীর অন্য কিছুর ব্যাপারে তার মাথা ব্যথ্যা কম । তার কথা হচ্ছে বেচে আছি এটা বেশি । এত চিন্তা করে কি হবে । তার চেয়ে যে কয়েকদিন বেচে থাকব অল্প খেয়ে পরে বেচে থাকি । অল্পতেই সে সন্তুষ্ট ।

আসলেই আমরা সুখের পিছনে বড্ড বেশি ঘুরে বেড়াই । অথচ ছোট ছোট বিষয়ের মধ্যেই সুখ লুকিয়ে আছে । আপনি আমি অনেক বেশি ভাবি । অথচ আমি বা আপনি চাইলে অনেক বিষয় সহজ ভাবে নিয়ে সেগুলো কে খুব সুন্দর ভাবে সেখানে থেকে বের হয়ে আসতে পারি ।
সুখ আপেক্ষিক । তবুও মানুষ সুখের খোজে ছুটে চলেছে । এই চলা থামবে না । অথচ সুখ কিন্তু আমাদের চারপাশেই আছে । শধু একটু চোখ মেলে তাকাতে হয় । জম্বিল্যান্ড মুভিতে একটা ডায়লগ আছে, Enjoy the little things ।

ছোট ছোট বিষয় গুলোকে আনন্দের সাথে নিন । দেখব সব কিছু অনেক সুন্দর হয়ে যাবে ।





ঘটনা – ২

কয়েকদিন আগে কোথাও যাচ্ছিলাম । ট্রাফিকে আটকে গেলাম । বৃষ্টির দিন ছিল । জ্যাম তো হবেই । বাংলাদেশে বৃষ্টি মানেই হচ্ছে জ্যাম আর পানি । যারা সমুদ্রে যেতে পারেন না, তাদের জন্য সুবর্ন সুযোগ হচ্ছে এই বর্ষা । বিনা খরচে ফুল মজা ।

তো জ্যাম আটকে যাওয়ার পর দেখলাম এক ভাই সাইকেল নিয়ে জ্যামে বসে আছেন । বিষয়টা এমন নয় যে তিনি ফুটপাত দিয়ে যেতে পারতেন না । ওনার ঠিক পাশ দিয়ে এক চাচা সাইকেল ফুটপাত দিয়ে নিয়ে গেলেন । কিন্তু উনি গেলেন না । যেহেতু বাইকে ছিলাম তাই ওনার পাশে গিয়ে শুধু একটা ধন্যবাদ দিলাম । উনি একটু হেসে বললেন ওয়েলকাম ।

এরপর আর কোন কথা হয়নি । জ্যাম ছাড়ল উনি সাইকেল চালানো শুরু করলেন । আমিও বাইকে ওনাকে পাস করে চলে গেলাম ।
তারপর কাজ শেষ করে যখন বাসায় ফিরছি । তখন বিষয়টা নিয়ে ভাবলাম । উনি জ্যামে নাও দাড়াতে পারতেন । সবার মত উনিও ফুটপাতে উঠে যেতে পারতেন । যদিও সাইকেল ফুটপাতে উঠালে কেউ কিছুই বলবে না । তবুও তিনি সেখান দিয়ে যাননি ।

এবার আসি, হয়ত ওই সময়ের জন্য তিনি ফুটপাতে যাননি । আচ্ছা ধরুন তো একটু একটু করে ফুটপাতে হকার বসা বন্ধ । বাইকাররাও ফুটপাতে উঠছে না । কত ভাল হতো । উনি সাইকেল নিয়ে ফুটপাতে ওঠেননি । আর আমাদের কিছু কিছু বাইকার আছেন যাদের এত ব্যস্ততা যে তারা ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে নিজের কি প্রমান করতে চায় সেটা জানি না ।

একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে একজন বাইক চালক ফুটপাতে বাইক উঠিয়েও অনেক দম্ভ নিয়ে কথা বলেছেন । তার ইংলিশ শুনে হয়ত ইংরেজরাও লজ্জা পাবে । তবে তিনি নিজেকে সঠিক বলে দাবী করতেই পারেন । কারন অনেকেই তো । তাই বলে সবাই যদি ভুল করে আমি আপনিও কি একই ভুল করব ?




ঘটনা – ৩

একটা কোম্পানিতে গিয়েছিলাম কিছু কাজে । লিফট দিয়ে উঠতে হয় । আমিও গিয়ে লিফট দিয়ে উঠলাম । যদিও হেটে ওঠাই ভাল । তারপর ও লিফট যেহেতু আছে তাই লিফট দিয়েই উঠলাম । কাজ শেষ করে নামতে যাবো তখন ই দেখলাম লিফট এর পাশে লেখা “হেটে নামুন, সুস্থ থাকুন” ।

কথাটা কিন্তু দারুন সত্যি । যদিও আমি আগের চেয়ে কেন জানি হাটা কমিয়ে দিয়েছি । তবে আজ যখন লিখছি তখন আবার মনে হচ্ছে হাটাহাটি জরুরী । আচ্ছা ফিরে যাই লেখাটায় । আমিও হেটেই নামলাম । নামতে নামতে ভাবছি । এই তিন তলায় উঠতে তো লিফট এর দরকার পরে না । হ্যা যারা হাটা চলা করতে পারে না তারা উঠবে এটা নিয়ে কোন সমস্যা নেই । তাহলে আমি কেন উঠেছি ।
আমার অফিস ৬ তলায় মাঝে মাঝে আমি হেটে উঠি । তার কারন যখন মনে হয় যে হাটা চলা কম হচ্ছে তখন ই হেটে উঠি বা নামি । আমরা প্রযুক্তির আকর্ষনে অনেক বেশি নির্ভশীল হয়ে যাচ্ছি । অথচ হওয়ার কথা ছিল উল্টো । কিন্তু প্রযুক্তি আমাদের অলস করে দিচ্ছে । হ্যা এটা প্রযুক্তির খারাপ দিক ।

আগে মানুষ অনেক বেশি কর্মঠ ছিল কিন্তু এখন একটা ক্লিক করেই সব করা যাচ্ছে তাই মানুষ কায়িক শ্রম থেকে দূরে আছে । অথচ আমদের সুস্থতার জন্য আমরা এখন কত কিছুই করি । জিম সকালে হাটা খাওয়া দাওয়া ডায়েট কন্ট্রোল সব কিছু । তারপরও আমরা অনেকটাই অলস । আমি নিজেই অলস ।

আমাদের খাবার এখন ভেজালে পরিপূর্ন । আমরা এমন একটা সময়ের মধ্যে আছি যেখানে কোনটা ভাল এবং কোনটা খারাপ সেটা নির্ণয় করা একটা বড় দুরহের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

তবে হাটার ব্যাপারটি আবার চালু করতে হবে । “নিয়মিত হাটুন, সুস্থ থাকুন”।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৩৮
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×