বলেছিলাম চার উইকেটে জিতব । জিতেছি পাঁচ উইকেটে ।
যখন বৃষ্টি হচ্ছিল তখন ভাবছিলাম খেলা হবেই না । বসে বই পড়ছি আর গান শুনছি । আর ল্যাপটপে লাইভ আপডেট নিচ্ছিলাম । কিন্তু বৃষ্টি থামার নাম নেই । কি করি, কি করি । শুনলাম খেলা পরিত্যক্ত হলে আমরা চ্যাম্পিয়ন ।
একই সাথে দুই রকম অনুভূতি হলো । চ্যাম্পিয়ন হবো আবার না খেলেই চ্যাম্পিয়ন বিষয়টা ভাল লাগল না । এরই মধ্যে দেখলাম মাঠে গ্রাউন্ডস ম্যান নেমে মাঠ ঠিক করায় ব্যস্ত । যাক একটা ভরসা পেলাম খেলা হবে মনে হচ্ছে ।
একটা ঘটনা মনে পরেছিল যখন বৃষ্টি হচ্ছিল । এক বার শ্রীলংকা আর ইন্ডিয়ার একটা ফাইনাল ম্যাচ দু দিন হয়েছিল এবং দু দিন ই বৃষ্টির জন্য ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় । পরে যৌথ ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় । কত সালের মনে নেই । তবে এটাই হয়েছিল ।
খেলা শুরুর আগে আমাদের এখানেও বৃষ্টি হচ্ছিল । ঠান্ডা হাওয়া উপভোগ করলাম কিছুক্ষন । এরপর খেলা শুরু হলো । স্কোর এর দিকে চোখ দিতেই আমার মাথা ঘুরে গেলো । ২১০, এ কিভাবে সম্ভব । তারপর দেখালাম ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে এই স্কোর তাও আবার ২৪ ওভারে । এতো টি টুইয়েন্টি ফোর চালু করে দিলো ।
যাক তাও ভরসা নিয়ে স্ট্যাটাস দিলাম ৪ উইকেটে জিতব । এরপর সৌম্যের ঝড় । মনে হয় বাংলাদেশের ঝড়ের খবর পেয়ে গিয়েছিল । একদম ঝড়ের গতিতে রান হচ্ছে দেখে ভাবলাম ম্যাচ না আবার ১৫ ওভারেই জিতে যাই । তামিম শুরু না করলেই হলো । তখন আবার প্রতিযোগীতা হবে কে কয়টা ছয় মারল ।
বাংলাদেশ পাঁচ ওভারেই ফিফটি করে ফেলল । ঠিক এরপরে তামিম আউট । ঘাবড়ে গেলাম । সাব্বির নামলো । সেও সেই আগেই মত আউট । গত ম্যাচ গুলোতে ব্যাটিং দেয়নি তাই এই ম্যাচে ব্যাটিং দিয়েছিল । তাও সেই রাগ কমেনি ।
যাইহোক । এরপর মুশি এলো । আমাদের ভরসার অন্যতম না । সেও সৌম্যের সাথে তাল মিলিয়ে রান তুলতে শুরু করল । ভাবে দেখলাম এই দুজন ই শেষ করবে । কিন্তু উপর ওয়ালার ইচ্ছে অন্যরক ছিল । সৌম্য আউট হয়ে গেল । আবার ভয় ঢুকল । তীরে এসে ঢোবার রেকর্ড আর ফাইনাল জুজু । এবার হবে তো?
এবার মুশি আউট । কি হবে ভয়ে খেলা দেখাই বন্ধ করে দিলাম । ব্রাউজারের অন্য ট্যাবে গান শোনা শুরু করলাম । কিন্তু থাকতে পারলাম না । আবার খেলায় ফিরে এলাম । এসেই দেখি মিথুন আউট । ধুরর । খেলাই দেখব না । নিজেরেই তখন মনে হচ্ছিল কুফা ।
তারপর মাহমুদ্দুলাহ আর মোসাদ্দেক । কাহিনী এরপর ই রচিত হলো । ২০তম ওভার শেষে বাংলাদেশ ১৭১-৫ উইকেটে । ভাবলাম চার ওভারে ৪০ করা কোন ব্যাপার নয় ।
২১তম ওভারে রান ১৮৩ তে । এরপর যা হলো তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না । ২২ তম ওভারে মোসাদ্দেক নিলো ২৫ রান নিজের দ্রুততম ফিফটি ও দলের জয় পুরোপুরি সুনিশ্চিত হয়ে গেল ।
ইতিহাস তৈরি হলো । টানা ৬ টি ফাইনাল । হ্যা ৬ টি ফাইনাল হেরেছি । কত কষ্ট দুঃখ আর বেদনা এই বুকে জমা ছিল তা হয়ত কেউ জানবে না । বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ আনন্দে হয়ত ঘুমাবেই না । সত্যি বলতে বাংলাদেশের জন্য এই জয়টা দরকার ছিল । ম্যাশ এর জন্য একটা ট্রফি দরকার ছিল ।
শেষে এসে কিছু কথা বলতেই হয় । কন্ডিশন বলছে এবার প্রচুর রান হবে । বোলাররা মার খাবো । তেমনটাই দেখছি । তাই খুব ভেবে গেম প্ল্যান করতে হবে । একটু এদিক ওদিক হলেই শেষ ।
বাংলার বাঘদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না ।
#চ্যাম্পিয়ন
#ওয়েলডান_টাইগার্স
#ট্রাইনেশন_কাপ
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৯ রাত ১:৪৩