somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস এবং সেই ভয়াল রাতের স্মৃতি..........

১৩ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আরেকটি ঘুর্নিঝড় আসছে। বাংলাদেশের সব মানুষই শংকিত। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যাপরটা অন্যরকম। আমার হাত পা কাপতে শুরু করেছে, গলা শুকিয়ে আসছে এখুনি, দুপুরে ভাত খেতে পারিনি। আল্লাহর কাছে সারাক্ষন প্রার্থনা করছি কোনমতে যেন এ ঝড় বাংলাদেশে যেন আঘাত না হানে। আমি জানি এ ধরনের ঘুর্নিঝড় এর তান্ডব। আমি নিজেই যে এর শিকার হয়েছিলাম।

১৯৯১ সালের কথা। আমরা থাকতাম চট্টগ্রামের হালিশহরে ১ তলা একটা বাসায়। সম্ভবত ২৯ এপ্রিল সকালে ১০ নম্বর সিগনাল দেয়া হয়। আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেইনি কারন এর আগে আরো দুবার সিগনাল দিলেও সে ঝড় অন্য দেশের ওপর দিয়ে গেছে। ২৯ তারিখ সারা দিন গুমোট ছিলো আবহাওয়া। বিকেল ৩ টার দকে হালকা বাতাস শুরু হয়। সাড়ে ৫টার দিকে শুরু হয় ঝড়। সেকি প্রচন্ড ঝড়। আমাদের ১ তলা বিল্ডিং এর ছাদ উড়ে যাবার দশা। এক পর্যায়ে একটি দরজা ভেংগে যায় ঝড় এ। আমরা সবাই ভাংগা সে দরজা চেপে ধরে দাড়িয়ে থাকি যাতে সেটা আরো না ভাংগে।

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হঠাত চিৎকার শুনি বাইরে "পানি পানি" বলে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসায় পানি উঠে যায়। মিনিট খানেকের মধ্যেই ঘরে প্রায় ৩ ফুট পানি চলে আসে। আমরা কোন মতে বের হয়ে সামনের দোতলা বিল্ডিং এ গিয়ে উঠি। তখন ওই এলাকায় একটিই দোতলা বিল্ডিং ছিলো। সেখানে তখন কয়েকশ মানুষ। কোনমতে ঠেলেঠুলে উঠে পরলাম। ঝড়ের গতি তখোনো বাড়ছে। পানিও বেড়ে প্রায় ১ তলার ছাদ ছুয়েছে। আশ্চর্যের কথা হলো তখন যদিও রাত ১০ টা কিন্তু দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ছিলো আকাশ।

১১ টার দিকে সে দোতলা বিল্ডিং টাও কাপতে লাগলো ঝড়ে। কার্নিশের কিছুটা অংশ উড়ে গেলো বাতাসে। সবাই জোড়ে জোড়ে আল্লাহকে ডাকতে লাগলো। কেউবা আযযান দিতে শুরু করলো। এমনি করে বিভীষিকাময় কয়েকটি ঘন্টা পার করে ভোররাত ৪ টার দিকে ঝড়ের গতিবেগ কমে এলো। সকালে আমরা ফিরে এলাম লন্ড ভন্ড আমাদের বাসায়।

জীবনে অনেক কিছুই ভুলে যাবো ভলবো না সে রাতে বিভীষিকা। আল্লাহ যেনো কোনদিন কাউকে এমন অভিজ্ঞতা না দ্যান। আমীন।

নোট : যারা জানেন না তাদের বলছি সেদিনের সে ঝড় বাংলাদেশের উপকুলে ২২৫ কি:মি: বেগে আছড়ে পরেছিলো। এতে সরকারী হিসেবেই মারা যায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ আর বেসবরকারী হিসেবে ৩ লাখ। এক পরিবারের ১০ জনের সবাই মারা যাবার কথাও শুনেছি। পরদিন দৈনিক ইত্তেফাক ৮ কলামে শিরোনাম করে : কাদো, বাংলাদেশ কাদো।
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×