somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হলুদে হলুদে দেশ ভরে গেল - লুল

০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নানা মুনির নানা মত। কিন্তু তাই বলে কারো মত মুনিঋষি হতে চাই না। সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনগুলোর সাথে দীর্ঘদিনের কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকেই কিছু বিষয় পরিস্কার করার লক্ষে এই লেখা।

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে “জাগো ফাউন্ডেশন” এবং এর অঙ্গসংগঠন “ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ”। এই দুটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন করভী রাখসান্দ। এরা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে “Universal Children Day” পালন করার মধ্য দিয়ে।

সবকিছুরই ভালো এবং মন্দ দুটি দিকই থাকে। এরা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের গরীব এবং সামাজিক অধিকার বঞ্চিত শিশুদেরকে নিয়ে ভাবে, তাতে কোন বিতর্ক নেই। কিন্তু এই ভাবনা চিন্তার ফলাফলের দিকগুলো নিয়ে অনেকের আপত্তি।

আমি এখানে সেই আপত্তিকর বিষয়গুলোকে কয়েকটি পয়েন্ট করে বলতে চাইঃ

১। আপনাদের উদ্দেশ্য কতটা সৎ?

জাগোকে বলছি, একটি পথশিশুকে শিক্ষা দেওয়ার আগে শিশুশ্রম বন্ধ করার জন্য কাজ করাটা কি বেশি যুক্তিযুক্ত নয়? আপনাদের ইভেন্টের ড্রেস কিন্তু এই শিশুরাই বানাচ্ছে। আপনাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই তাতে। দিব্যি দায়-দায়িত্ব অস্বীকার করে পাস কাটিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা মনে হয় জানেন না, কোন কারখানায় আপনাদের পোশাক বানানো হচ্ছে? প্লিজ, দয়া করে বলবেন না যে জানেন না। যদি বলেন জানতেন না, তাহলে বলতে হবে, আপনারা আপনাদের লোগো, ডিজাইন কার হাতে তুলে দিয়েছিলেন?

এইসব কথা থেকে কি আপনাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠে না; প্রস্ন কি জাগে না মনে যে আপনারা শিশুদের কে নিয়ে অসুভ খেলায় মেতে উঠার মাধ্যমে নিজেদের প্রমোশন চালানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন?

২। বাংলাদেশের সংস্কৃতি কি? বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের উপার্জন ক্ষমতা কোন পর্যায়ের?

বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে অনেক কিছুই বেমানান যা আপনাদের নিয়োজিত ভলান্টিয়াররা করে যাচ্ছে। বাসায় কিংবা কোন পার্টিতে কে কি পড়ল তা নিয়ে কাররি কিছু যায় আসে না, অথবা সেটা নিয়ে কথা বলা পুরই অযৌক্তিক। কিন্তু আপনারা কাজ করছেন সমাজের নিম্মবিত্ত সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে। আপনারা কাজ করছেন জনসাধারণের মাঝে, আপনারা কাজ করছেন রাস্তাঘাটে। এইসব জায়গায় বেলাল্লাপনা করার অর্থ কি? আমি ৭০০০ ভলান্টিয়ারের কথা বলছি না। আমি বলছি আমাদের সমাজের আধুনিক (!) শ্রেণীর কিছু ছেলে-মেয়েদের কথা। জানেন তো, এক গ্লাস দুধে এক ফোঁটা বিষ মিশালে পুরোটাই বিসাক্ত হয়ে যায়? এইটা কি আপনাদের ব্যর্থতা না? আপনারা ওয়ার্কশপ করিয়েছিলেন, আপনারা কি এইসব ছেলেমেয়েদেরকে পোশাকজ্ঞান নিয়ে কোন ধারণা দিতে পারেননি? যদি বলেন এটা আপনাদের দায়িত্ব না, তাহলে বলতে হয়, এইসব ছেলেমেয়েরা সমাজেরই অংশ। আপনারা কাজ করছেন সমাজকে নিয়ে। তাই এই দায়বদ্ধতা আপনারা এড়াতে পারেন না। আর আপনারা যদি এদেরকে শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হন তাহলে আপনাদের পরিচালিত স্কুল গুলো বন্ধ করে দিন, কারণ আমার মত অনেকেই চায় না, বড় হয়ে সেই শিশু গুলো আপনাদের নিয়োজিত কিছু নোংরা ভলান্টিয়ারদের পোশাকজ্ঞান অনুসরণ করুক। এরপরে কেউ যদি সেইসব ভলান্টিয়ারদের ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমগুলোয় প্রকাশ করে, আপনাদের নিয়োজিত সাঙ্গপাঙ্গরা কি করে ইভ-টিজারের মামলায় ফাঁসানোর মত স্পর্ধা দেখাতে পারে????


৩। বাংলা মাধ্যম বনাম ইংরেজি মাধ্যম।

এই তর্কটার আধুনিক জনক কিন্তু আপনারাই। আশ্চর্য হলেন? প্রেস ব্রিফিং এ কিন্তু আপনারা বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের কথা উল্লেখ করেননি। করেছেন শুধু ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের কথা। বিশ্বাস হয় না??? নিচের লিঙ্কটি দেখুন তাহলে এক নজর ঃ
Click This Link
তাহলে জনসাধারন (আপনাদের চোখে অশিক্ষিত – মূর্খ, Typical বাঙ্গালি ব্লগার) যখন এই নিয়ে কথা বলছে আপনারা এই নিয়ে উচ্চবাচ্য করার সাহস পান কোত্থেকে???


৪। টাকা পয়সার ক্যাচাল

সব জায়গাতেই এই নিয়ে বাঁক-বিতণ্ডারে ভাই। সবাই যখন এত কথা বলছে...... তখন আপনারা এই UCD ইভেন্টের Financial Statement টা প্রকাশ করে দিলেই তো পারেন; সবার মুখে কুলুপ এঁটে যায় তাতে। এইটা আমার মনে হয় না, এমন কোন হাজার কোটি টাকার ইভেন্ট ছিল যে যার জন্য ২-৩ দিনের বেশি সময় লাগবার কথা Financial Statement তৈরি করতে। নাহলে ভাইজান, মৌনতাই সম্মতির লক্ষণ বলে একটা প্রবাদ মনে করিয়ে দিতে চাই। আর কোন ভলান্টিয়ার কত টাকা মেরে খেল, তা নিয়ে কথা বলা অযৌক্তিক। কেননা, তা ভলান্টিয়ারের দেশপ্রেম এবং সততার উপর নির্ভর করে। সেই জন্য জাগোকে দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু ভাইজান, ঐযে, আয়- ব্যয়ের প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই গেল।

৫। কর্পোরেট - স্পন্সর

আপনারা যেইসব স্পন্সর যোগাড় করেছেন এবং তাদের অর্থ ব্যয় করেছেন তা দেখে একটা কথাই মনে আসে – ব্যবসা। কারণ, আপনাদের ইভেন্টের বিশাল বিশাল ব্যানার এই রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ঝুলেছে। আপনারা সমাজসেবা করছেন নাকি শিশুসেবা করছেন নাকি কর্পোরেটদের বিভিন্নভাবে সুখ (!) দিয়ে যাচ্ছেন? জাগো কোন ভলান্টিয়ারের কাছ থেকে কোন মাসিক চাঁদা আদায় করে না। কোন ইভেন্টের আগে যেই সাইন আপ মানি নেওয়া হয় তা দিয়ে ভলান্টিয়ারের টি-শার্ট, খাবার এবং পরিচয় পত্রের খরচ বহন করা হয়। তাহলে এইসব ইভেন্ট স্পন্সরদের অর্থ কোথায় যায়? যদি বলেন, শিশুদের উন্নয়নের জন্য, তাহলে তাদের স্পন্সর করা অর্থ কি যথেষ্ট নয় যে রাস্তায় নেমে মানুষকে জ্বালাতন করে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে?

৬। সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেন কি করে? লজ্জা তো একটু হলেও থাকা উচিতরে ভাই!!!

আপনারা রাস্তায় নামলেন টাকা সংগ্রহের উদ্দেশে, টাকা সংগ্রহ করলেন সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য, বললেন Primary Education For All. কিন্তু এর পুরো বিষয়টি কিভাবে ঢেকে গেল? আপনারা নাকি শুধুই প্রচারণা চালিয়েছিলেন??? নিচের লিঙ্কের লেখাটি বারবার পড়ি এবং এর অর্থ বুঝার চেষ্টা করি ঃ
Click This Link
এই লেখাটির কোথাও অর্থ সংগ্রহের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

পরিশেষে কিছু বলে যাই, আমার এই লেখা পড়ে অনেক JAAGOFIEDরা বলবেন যে, আগে কিছু করেন তারপর সমালোচনা করেন। তাদের কে বলব, অনেক দূর পাড় হওয়ার পড়েই এই লেখার স্পর্ধা করেছি। কখন কি করেছি তার বিবৃতি দিয়ে নিজেই নিজের নোংরা প্রমোশন চালাতে চাই না।
আরেক দল আছেন, বলবেন যে, আমি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে এই লেখা লিখেছি। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই যে, আমি জাগো কে দেখেই উদ্ধুত হয়েছিলাম সামাজিক কাজের জন্য। জাগো বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের দ্বারা পরিচালিত One of the Pioneer-Youth Base Foundation। কিন্তু অর্থের লোভ অথবা ক্ষমতা মানুষের মন কে কখন কোন দিকে নিয়ে যায় তা বলা মুশকিল।

করভী রাখসান্দ কে বলব, পুরোটাই বাংলায় লিখলাম। আপনার অথবা আপনার ইংরেজি মাধ্যমের ভলান্টিয়ারদের বুঝতে অসুবিধা হলে নিচে কমেন্ট করতে বলবেন, ইংরেজি তে ট্রান্সলেট করে দেওয়ার চেষ্টা করব। আর একটি কথা, দয়া করে ও –লেভেলস, এ-লেভেলস অথবা স্কুল কলেজ পড়ুয়া কাউকে দিয়ে কথার উত্তর দেওয়ানোর চেষ্টা করার চেয়ে নিজে অথবা আপনার অফিসিয়াল সহযোগীদের বলুন উত্তর দিতে। কারণ, সেই সব ভাইবোনেরা অনেক কিছুই না বুঝে সিনিয়রদের সাথে অযথা তর্কে মেতে উঠে যা বেশিরভাগ সময় দৃষ্টিকটু হয়।[/si

সংগৃহীতঃ http://www.nagorikblog.com/node/6526
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৪০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×