somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পের শেষ যেখানে

২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারারাত ঘুমিয়ে ছিলাম।সকাল ৭.০০টার দিকে উঠলাম। রাতে আব্বার অনেক জ্বর এসেছিল। আমি আর আম্মা মিলে বরফ দিয়ে জ্বর নামিয়েছি। তারপরও মুখ দিয়ে কফির মতো কি যেন বের হয়েছে? রাত ১টার দিকে ঘুমাতে গিয়েছি। একবার মনে হয়েছিল আজ রাতেই কি আব্বা মারা যাবে?
আমাদের ৭টা বিড়াল ছিল। একবারে ৫টা বিড়াল প্রায় হঠাৎ মারা গেল। চোখের সামনে একটা একটা করে মারা গেল। প্রথমে মসু। সবার আদরের ছিল। আমি ওকে হিংসা করতাম। আম্মার খুব প্রিয় ছিল। যখন মসুকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি আব্বার ভেস্পায় চড়ে তখন ও আমার দিকে করুণভাবে তাকিয়ে হাত দুটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। ওঁর বাঁচার কি ইচ্ছে?
আব্বা যখন বিছানায় পড়ে যায় তাঁর আগে মানিক চাচাকে ফোন দিয়ে করুণ ভাবে বলছিল আমি বাঁচতে চাই। কথাটি আমি শুনে নাই। আম্মা আমাকে বলেছিল।
কাল রাতে কতগুলো বিড়াল কি করুণভাবে নিচে কাঁদছিল! কার জন্য এই কান্না? আব্বুর জন্য? আব্বু বিড়ালদের খুব ভালবাসত। সুন্দর করে মাছ ভাঁজত। তারপর ভাত দিয়ে মাখিয়ে আলাদা আলাদা প্লেটে খেতে দিত। বেশির ভাগ ভাত নষ্ট হত।
আব্বা যখন হাসপাতালে তখন অনেকে দেখতে আসতো। সে যে কতজনকে কিভাবে কেমনভাবে উপকার করেছে আম্মা অবাক হয়ে শুনত? অন্যের বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে অথচ নিজেদের কোন বাড়ি নাই। সবার কান্না ছিল একটি মানুষের প্রতি। যে বুঝতেছে না কারা কেন তাঁর জন্য কাঁদছে।
আব্বা কখনও নামাজ পড়তো না। আমি জোর করে ঈদের সময় নামাজ পড়তে নিয়ে যেতাম। শেষের দিকে তাও যেত না। টিউমারের অপরেশনের সময় যাওয়ার আগে নাকি বলেছিল, সে এরপর ইসলামের পক্ষে কাজ করবে। বাসায় আসার পর আমাকে সব আজানের পরপর বলতো নামাজ পড়তে আর সাথে সাথে সেও নামাজ পড়তো। জানি না আল্লাহু অপবিত্র অবস্থায় তাঁর নামাজ কতটুকু কবুল করেছে। তবে আমার মনে হয় আমার আব্বু অনেক তথাকথিত মুসলিমদের থেকে সৎ ছিলেন বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে।
আব্বার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেল। বড় বড় চোখ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে । কি সুন্দর তাঁর চোখ গুলি!
আমি খালি বলছি,আব্বা তুমি এভাবে চলে যেও না।ওদিকে দিনাজপুরে আমার ছোট ফুপু সবাইকে বলছে খোকন তো চলে যাচ্ছে। ৭.৩০টা সময় আব্বা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।বুলবুল আপু ঠিক সেই সময় আসলো।মানিক চাচা একটু পরে আসলো। আব্বা আমার, আম্মার আর আমার বোনের চোখের সামনে মারা যায়। আমরা কিছু করতে পারিনি। কেউ করতে পারে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:৫৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×