মোবাইল অপারেটরদের মাত্রাতিরিক্ত নেট বিলের প্রতিবাদে আজ সারা দেশে ভিন্ন ধরনের এক প্রতিবাদ হয়ে গেল। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনলাইনের জন্ম নেয়া যে কোন প্রতিবাদ কর্মসূচীকেই অত্যন্ত সম্ভাবনাময় মনে করি যদিও অনেকে ভাবে অনলাইনের প্রতিবাদ কর্মসূচী খুব একটা কার্যকর নয়। অনলাইন কর্মসূচীগুলো তাত্পর্য এই কারনে যে এখানে আপাত বিচ্ছিন্ন মানুষগুলো দ্রুত একটা প্লাটফর্মে একত্রিত হতে পারে।এই মিসকল প্রতিবাদের ত্রয়ী হোস্ট ব্লগার দূর্যোধন, Sedative Hypnotics, এবং Arif R Hossain ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম চমত্কার আইডিয়ার জন্য।
এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, গত বছর মাচ এপ্রিলের দিকে সচলায়তনের ব্লগার হিমুর ভারত বনধের ডাক অনলাইনে তুমুল সাড়া ফেলেছিল।কিন্তু ভারতীয় পন্যের ব্যবহার কি সত্যিই কমেছে?খোলা চোখে উত্তরটা হচ্ছে"না "।তার মানে কি অনলাইনের আন্দোলনগুলো মোটা দাগে ব্যর্থ হচ্ছে? সেখানেও উত্তরটা হচ্ছে "না"। যে কোন আন্দোলনের ভিত্তি তৈরী হয় প্রাথমিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরীর মাধ্যমে। এবং এ পর্যায় অতিক্রম করার পরই কাঙ্খিত পরিবর্তনের শুরু হয়।এই মিসকলের প্রতিবাদের ইভেন্টে প্রায় আড়াই লাখ লোককে আমন্ত্রন জানানো হয় এবং প্রায় ত্রিশ হাজার তাতে সম্মতি জানায়।
আমাদের বেসরকারী মোবাইল অপারটরদের মধ্যে একমাত্র গ্রামীনফোন ছাড়া আর অন্য কোন কোম্পানীর শেয়ারের মালিকানা আমাদের দেশীয় মালিকানাধীন নয়। প্রতিনিয়ত এসব মোবাইল ফোন কোম্পানীকে টাকা দিচ্ছি তাদের সার্ভিসের জন্য ।আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি একই সেবা একই মূল্যে আমরা আমরা আমাদের দেশীয় মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকেও পেতে পারি? দীর্ঘদিনের অবহেলিত টেলিটকের নেটওয়ার্ক এখন প্রায় সারা দেশেই বিস্তৃত।অথচ এখনো টেলিটক নিয়ে তুমুল অপপ্রচার যে এর নেটওয়ার্ক বাজে।হ্যা স্বীকার করছি টেলিটকের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে কিন্তু দেশীয় কোম্পানী হিসেবে আমরা কি একারনে সামান্য একটু ছাড়ও দিতে পারবো না! আমাদের দেশের সব বড় বড় শহর আর জেলা সদরগুলোতে যারা বাস করছি তারা চাইলে অবলীলায় টেলিটক ব্যবহার করতে পারি।নিদেনপক্ষে যারা দুটো ফোন/সীম ব্যবহার করছি তারা একটি টেলিটক সীম সেখানে অনায়াসে রিপ্লেস করতে পারি।এতে নিজেদের টেলিটককে শক্তিশালী করতে পারবো এবং একই সাথে সরকারের মাধ্যমে এটাকে ভোক্তাবান্ধব হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
একটা রাষ্ট্র তার কোন একটি প্রজন্মের ত্যাগের মাধ্যমেই শুধু শক্তিশালী অর্থনীতি এবং সমাজ কাঠামো তৈরী করতে পারে।যার সুফল ভোগ করে প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্ম।আমরা আসলে বৃহত্তর পরিবর্তন সূচনার জন্য কতটুকু স্বার্থ ত্যাগ করতে প্রস্তুত?