আমি সোহাগী বলছি....
ধর্ষিতা সোহাগী
গতরাতে আমি ধর্ষিতা হয়েছি!
অলি পুরের সেই অন্ধকার গলিতে।
তাই তোমরা আমায় ধর্ষিতা সোহাগী বলেই ডাকতে পারো।
গহীন রজনি, অন্ধকার চারিপাশ
একা আমি, দুর্যোগের আভাস!!
হঠাৎ বুটের আওয়াজ!
মুখোশধারি কিছু ভদ্রলোক!
পেছন থেকে আমার মুখ চেপে ধরা হল
আমি প্রাণপণে চেষ্টা করলাম
তবে কিছুতেই পারলাম না
নারী তো সৃষ্টিগতই দুর্বল
স্বজোরে মুষ্টিঘাতের আওয়াজ!
যেন পাকা ডালিমে পাথরাঘাত
তরতর করে বেরিয়ে এলো লাল রক্ত
এক কিশরির রক্ত,এক নারীর রক্ত
এক মায়ের রক্ত!!
নাক দুটি যেন হামহামের প্রপাত
টেনে হিচড়ে নিয়ে এলো কার্লভার্টটির কাছে
সেই বিষাক্ত কার্লভার্ট!!
এক অবলার রক্তে রজ্ঞিত কার্লভার্ট।
দুজন পা ধরেছে, একজন চুল
আরো কয়েকজন...............
ভয়ে আমার শরীর নিথর হয়ে এলো
শত চেষ্টা করেও একটু চেঁচাতে পারলাম না
পারলাম না নিজেকে বাঁচাতে!
বিসন্ন অন্ধকারে কালো মুখোশ!
পশুর শরীরের বিচ্ছিরি গন্ধ
পালা ক্রমে শেয়াল, কুকুর আর হায়নার হুঙ্কার!
অসহায় হরিণির সর্বস্ব লোপাট।
আমায় বিবস্ত্র করা হল
টেনে হিচড়ে তুলে নেয়া হল চুল
হায়নার বিষাক্ত দাঁতে ক্ষত-বিক্ষত হল আমার শরীর।
পা থেকে মাথা পর্যন্ত রক্তে রজ্ঞিত আমার শরীর।
ঠিক যেন লাল বেনারসি পরা কোন রমনি।
হঠাৎ চিৎকার করে উঠলো আমার নারীত্ব
আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে এল
মাতৃত্বের ক্রন্দনে।
চারিদিকে পাখির কিচিরমিচির,
শুরু হল বানরের ছোটাছুটি,
ডাহুক কাঁদে দূর অরণ্যে......
কংক্রিটের আঘাতে চূর্ণ করা হলো আমার মস্তক।
যাহার মাঝে জন্ম
যাহার মাঝেই পূর্ণতা
আবার যাহার মাঝেই অমরত্ব
তাঁহার বিনাশেই বুঝি জাতি মুক্ত,তৃপ্ত??
অবশেষে হায়নার পেয়াস মিটলো
বনের হায়নাতো শুধু রক্ত খায়
এটি রক্ত,মাংস, বিবেক, মনুষত্য সব!
এখন আমি মৃত...........
শরীরে এক ফোটা রক্তও নেই
তাই শেয়াল, কুকুর, হায়না সব চলেগেছে................
বাবা তুমি কেঁদোনা
তোমার মেয়ে মরেনি বাবা.....
ওরা মেরে ফেলেছে
তোমার বুক খালি করেছে বাবা
বাবা,তুমি ওদের বিচার কোরো
ওদের শাস্তি দিয় বাবা
তোমরা ওদের বিচার কোরো......
তুমি কেঁদোনা বাবা
আমি আবার ফিরে আসবো......
আবার আমরা একসাথে খেলবো,
ঘুরতে যাবো ঐ তনু পাহাড়ের চূড়ায়।
অনেক মজা করবো......
আর হ্যা, আমায় কিন্তু আইসক্রিম কিনে দিতে হবে........
(সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:১৬