জীবন কতো দ্রুত ফুরিয়ে যায়, তাই না লক্ষ্মী? কতো সুন্দর সময় ছিলো আমাদের। আজ সব অতীত হয়ে গেছে। বসন্ত পেরিয়ে বসন্ত এলো। কতো দেশে কতো যুদ্ধ হলো, শুধু এক তোমাকেই আমার ভোলা হলোনা। তোমার গায়ের গন্ধটুকু খুব মিস করি জানো? আর একেকটা বিশুদ্ধ বাউন্ডুলে বিকেল। অনেক হাসিখুশি থাকা হয় আজকাল। মানুষ আজো ভালোবাসে। তবু মনের মধ্যে একটা ক্ষত ভীষণ জ্বালায়। সময়ে অসময়ে, ঘুমে নির্ঘুমে, বেহুলা রাত্রিতে। আমার কে যেন নাই। আমার লক্ষ্মীটা নাই। আমার বকুটা নাই।
জানি জীবন কেটে যাবে। খাচ্ছিদাচ্ছি, ঘুরে বেড়াচ্ছি, সাহিত্য করবার চেষ্টা করছি। কামবোধ জাগ্রত হয়। এখনো চুল ময়লা থাকে। হাতের নখ খেয়ে ফেলি। চশমার কাঁচ ঘোলাটে থাকে। বুকের কাছটায় শার্টের বোতাম খোলা থাকে। আজো পুডিং ভালোবাসি। মিনিটে মিনিটে চা। আর সকালে সিগারেট ছেড়ে দেবো প্রতিজ্ঞা করে সমস্ত দিনময় সিগারেট। এখনো সুন্দর মেয়েদের ছবিতে লাইক দেই। গাছের ডালে বসে কোকিল ডাকলে কুউউ বলে নকল করবার চেষ্টা করি। আনমনে তোমাকে চুমু খাই। ভালোবাসি।
তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার নিজের প্রতি নিজের অনেক অভিযোগ আছে। মাঝে মাঝে নিজেকে চিঠি লিখে বেওয়ারিশ ঠিকানায় পোস্ট বক্সে ফেলে আসি। আমার সরল বিশ্বাস চিঠিগুলো একদিন তোমার কাছে পৌঁছাবে। কি বোকা আমি তাইনা? বাস্তবতা বুঝিনা দুই আনা, খুব ম্যাজিক রিয়ালিজম দেখিয়ে বেড়াই। জানো লক্ষ্মী- তুমি চলে যাবার পর আর ফুচকা খাইনি। ওই যে নিউমার্কেটের ওই দোকানটায়। কি যত্ন করে খাইয়ে দিতাম তোমাকে। মনে পড়ে তোমার? আর তারপর ইয়া বড় মগে করে আমাদের একান্ত আপন কফি। তাতে একটু পর পর চুমু আর হয়তো একদিন তোমার আমার সংসার হবে ভেবে কতো রাজ্যের লাল নীল হলদেটে কথা।
আচ্ছা শহর ছেড়ে চলে গেলে একটা উপদ্রব অন্তত কমে যাবে তাইনা? তোমার কথা বলো। কেমন সংসার চলছে? সুখে আছো তো? যা পাবার জন্য গিয়েছিলে পেয়েছো তো? সুররিয়ালিস্টিক কোন গাম বা আঠা কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দিয়ো তো আমাকে। বুকের ভেতর চাপ চাপ ব্যাথা। ভাঙ্গাচোরাগুলোকে হৃদয়ের আকারে জোড়া লাগাবো। আর শোন-ওই যে উপদ্রব কমার কথা বলছিলাম না! মফস্বলে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওদের বাংলা শেখাবো। নাকি আবার প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হলে স্বামীকে লুকিয়ে আর চিঠি দিবেনা? দিও গো দিও। প্রতিটা মানুষেরই বেঁচে থাকবার অধিকার আছে। যেমন আছে তোমার সুখে থাকবার অধিকার।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ৯:১৭