হাসপতালের বেডে শুয়ে থাকা এই যুবকটিকে দেখুন... না, উনি প্রাক হরতাল সংঘর্ষে আহত কেউ না, ছিনতাই করতে যেয়ে গনধোলাই খাওয়া কেউও না, কোন সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ কিছুই না..... উনি একজন ডাক্তার। মফস্বল শহর কিশোরগঞ্জ থেকে সুদূর কুমিল্লায় এসে দীর্ঘ ৫বছরের শিক্ষাজীবন পার করা একজন ডাক্তার। তার পরিবারের এক বিশাল নির্ভরতার স্থান, অনেক আশার আলো, অনেক স্বপ্নের সারথী একজন তরুণ ইন্টার্ন ডাক্তার.... তার আজ ওই বেডে এমন সাদা ব্যান্ডেজের আবরনে ঢেকে শুয়ে থাকার কথা ছিল না, কথা ছিল এমন-ই কোন বেডের পাশে দাঁড়িয়ে কোন অসহায় রোগীর সেবা দেয়ার.... কিন্তু বাস্তবতার নির্মম পরিহাসে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের তরুণ ইন্টার্ন ডা. রানা এখন তার-ই হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন....
কী ছিল তার অপরাধ??? তার অপরাধ ছিল ক্ষমতাধর ব্যক্তি চিনতে না পারা.. তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সঙ্গী কত ক্ষমতাধর তা বুঝতে না পারা... হাসপাতালে বেড খালি নাই তো কী হয়েছে! প্রয়োজনে নিজ বাড়ি থেকে এনে দিতে হবে; সিটি স্ক্যান মেশিন নিচতলায় তো কী হয়েছে! প্রয়োজনে কাঁধে করে তুলে আনতে হবে; কারন ক্ষমতা তো তাদের... তাদের তো আর কষ্ট করে পড়াশুনা করে ডাক্তার হতে হয়নি। ডাক্তাররা তো তাদের পৈত্রিক কেনা গোলাম.... ক্ষমতাসীন শক্তিধর চিনতে না পারার অপরাধ তো ক্ষমার অযোগ্য... তাই তো স্টীলের তৈরী স্যালাইন ঝুলানোর স্ট্যান্ডের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত আর রক্তাক্ত হলেন ডা. রানা। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ নিয়ে চেতন আর অচেতনের মাঝে কী তার চোখে ভেসে ওঠে পথ চেয়ে ফেরা মায়ের মুখ? সংসারের ঘানি থেকে মুক্তি চাওয়া বাবার মুখ? অনেক আদরের ছোট বোনটির মুখ? কিংবা অযুত স্বপ্ন বোনা প্রেয়সীর চোখ? কে রাখবে তার খোঁজ......
এ সম্পর্কিত আগের পোস্টটি তে চোখ বুলাতে পারেন