somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Anatomy of জামাতে ইসলামী ও কিছু সোজা-সাপটা কথা

০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিরুদ্ধবাদীরা প্রধান যে অভিযোগটি করে তা হল 'রাজাকার' আর নিজেরা প্রধান যে গুনটি প্রচার করে তা হল 'ইসলামি আন্দোলনের অগ্রদূত।' মজার ব্যাপার হল এ দুটি বিষয়ের কোনটারই জামায়াত সুস্ঠু সমাধান করতে পারেনি। পূন: পূন: ব্যাখ্যা, ব্যাকাঁত্যাড়া নানান কথাবার্তার পাহাড় স্তুপ হয়েছে মাত্র। খেসারতটা দিতে হচ্ছে নবীনদের, যারা ঘটনার সময় পর্যন্ত মর্ত্যলোকেই আসেনি। উদাহরন দেয়ার মত সাংগঠনিক শৃংখলা, উচুঁ মানের নৈতিকতা সম্পন্ন ভালো একটি সংখ্যক মানুষকে দলে ভেড়াতে পারাটাও শেষ পর্যন্ত বিফলে যাচ্ছে। প্রথম বিষয়টা আসলে ভৌগলিক আর পরেরটা রাজনৈতিক। চলুন আরেকটু গভীরে যাই।
যত রকম সাফাই গাওয়াই হোকনা কেন- ২৫মার্চ১৯৭১ সালের রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যে হীন অপকর্ম করেছে তারপর পক্ষ থাকে ২টি- একদল জালেম আরেক দল মজলুম। পক্ষদ্বয়ের ভাষা, ধর্ম, বর্ন, জেলা, গোত্র নিয়ে এনালাইসিস করার কিছু নাই। সাধারন মুসলিম মাত্রই মজলুমের পক্ষ নিয়ে জালেমের বিরুদ্ধে হয় অস্ত্রধারন করবে, নয় শারীরিক ভাবে প্রতিহত করবে, নয় মৌখিক/লিখিত ভাবে প্রকাশ্যে নিন্দা করবে অথবা মনে মনে ঘৃনাপোষন করবে, অবশ্য সেটা ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর। মহানবীর(স) এ সাধারন শিক্ষাটা না নিয়ে জামাতের বিশিস্ট ইসলামি চিন্তাবিদরা যা করেছেন তা ঘোরতর অন্যায়। এটুকু জ্ঞান তাদের থাকা উচিত, না থাকলে জ্ঞান অর্জন না করার ফরজ লংঘনের দোষে দোষী। ১৯৭১- চার অংকের এই সংখ্যাটা বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের প্রতিটা ইঞ্চিতে গভীর ভাবে প্রোথিত, প্রোথিত প্রতিটা নাগরিকের হৃদয়ে। গ্রামের মানুষেরা এই সন দিয়ে বয়স হিসেব করে- বলে 'যুদ্ধের এত বছর আগে আমার জন্ম, বলে যুদ্ধের সময় আমি অমুক ক্লাসে পড়তাম, সুতরাং এখন বয়স এত।' শত, হাজার বছর পরও '১৯৭১' মোছার নয়। তেমনি ঐতিহাসিক বিষয়ের সাথে 'ভিলেন' হিসেবে নেগেটিভ ব্র্যান্ড ইমেজ দাড়ঁ করিয়ে কখনোই গরিস্ট সংখ্যক মানুষের সমর্থন পাওয়া বা নিজেদের সরকার গঠন করা সম্পূর্ন অসম্ভব। কেননা বিরুদ্ধবাদীরা সবসময়ই এটা নিয়ে প্রচারণা চালাতে থাকবে, মসলাপাতি তো থাকবেই!
আসি ইসলামী আন্দোলন ইস্যুতে। ইহা ফরজে আইন। মুসলিম মাত্রেরই কর্তব্য- যেমনটা নামাজ। আল্লাহ তা'আলাও ব্যক্তিগত ভাবে গোটা মানবজাতিকে প্রশ্ন করবে শেষ বিচারের মাঠে, দলগতভাবে নয়। সুতরাং বাংলাদেশ ইসলামের খনি হইয়া গেল আর আমি দোযখে চলিয়া গেলাম- তা হলে কি লাভ হইল! বরং চেস্টা স্বত্তেও যদি দেশটা গোল্লায় যাওয়া থেকে রক্ষা না পায় কিন্তু আমি হিসাবে বাচিয়া যাই- তাহলে তো ল্যাটা চুখে গেল। আর কে না জানে যে, শুধু দল বিশেযে নাম লেখানো, পীর বিশেষের মুরীদ হওয়া নয় বরং টোটাল লাইফের টোটাল সময়ে স্রস্টা ও সৃস্টির সাথে আমার আচরনই এ ফলাফল নির্ধারন করবে। যেমন- গৃহভৃত্যর সাথে আচরণ। যাহোক, ব্যক্তি বা পারিবারিক পর্যায়ে ইসলাম মানাতে বাংলাদেশে কোন বাধা আছে বলে আমি দেখিনা। রাস্ট্র পরিচালনায় দুস্ট লোকের সমাহার ও কিছু অনৈসলামিক আইন উন্নত মুসলিম সমাজ হবার পথে বাধা। সত্য। সুতরাং তা নির্মুলকরার জন্য সংঘবদ্ধভাবে চেস্টা করা সবারই দায়িত্ব। আর এটা যেদিন বেশীরভাগ মানুষ চাইবে, সেদিন হইবে। না চাইলে হবেনা। কিন্তু জামাতের ঘাড়ে এত বড় বোঝা আল্লাহ কোনদিন চাপালেনযে যে কোন উপায়ে, ছলে বলে কলা কৌশলে, এর সাথে ওর সাথে রাতে বিরাতে মিটিং করে বঙ্গদেশে ইসলাম কায়েম করে ফেলতে হবে! এত পলিটিক্স তো মুহাম্মদ (স) নিজেও করেননি- আর নিশ্চয়ই তার অনুসারীদের ততোধিক ক্রিটিকাল হবার প্রয়োজন নেই। ইসলামি পলিটিক্স তো সোজা, সিরাতুল মুস্তাকিম। ডাক, তোমার প্রভুর দিকে। প্রজ্ঞা, জ্ঞান, ভালো কথার মাধ্যমে। কিন্তু সো ফার, দেশের বৃহত্তম ইসলামি দল জামায়াত মানুষের কাছে এখনো দুর্বোধ্যই রয়ে গেল, জন্মের ৬৮ বছর পরও!
হাসিনার আচঁলে মাথা গুঁজে কেয়ারটেকার মিছিল আবার খালেদার পদতলে আওয়াম খেদাও সমাবেশের মধ্যে কি অমন 'ইসলামি আন্দোলন' রহস্যাবৃত থাকতে পারে। জামায়াত পুরুদস্তুর পেশাদার রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তাই 'ইসলামী আন্দোলনের' পাইওনিয়ার ও বৃহত্তম দল হয়ে বাংলার জনমানুষের 'অন্তত: বিকল্প' হিসেবে যে ব্র্যান্ড ইমেজে এত দিনে দাড় হবার কথা সে 'লাস্ট ট্রেনটি'ও তারা মিস করেছে। এখন যুদ্ধাপরাধের গদা ঘাড়ের উপর। প্রচুর মিটিং, প্রচুর এনালাইসিস, প্রচুর কূটচাল, জোট-মহাজোট নয় শুধুমাত্র সুরা ফাতেহাকে নিজেদের স্ট্রাটেজিক গাইডবুক হিসেবে নিলেও পদে পদে এত আকাম কুকাম কেউ করতে পারেনা। যেখানে বলা হয়েছে- অতি ক্ষমাশীল রবই দুনিয়া আখেরাতের মালিক। বিচার তিনিই করবেন। সুতরাং ফাইনালি সাকসেসফুল (দুনিয়াতে হতে পারে, নাও হতে পারে) লোকদেরকে ফলো করাই বেটার। বাকাত্যাঁড়া নয়, সোজা সাপটা মত ও পথ অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আ...মী..ন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:৩০
২০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×