পোষা কুকুরের নাম রাখার ক্ষেত্রে জিমি, টমিই বেশি জনপ্রিয়। বাংলায় এত ভাল নাম থাকতে কেন এই বিদেশ প্রীতি তার সুলুক সন্ধানে অতীত ইংরেজ বিদ্বেষের কিছুটা প্রমান পাওয়া গেলেও যেতে পারে। নাম রাখার একটু সুযোগ পেলে আমার প্রথম পছন্দ ইনজি । ভক্তরা যতই কষ্ট পাকনা কেন এরকম নাদুস নাদুস, সাত লাথিতেও যে রা করেনা, তার নাম ইনজি রাখাই যুক্তিযুক্ত। ফখরুলদের রিসাফলে উঠে যাওয়া ট্রাকস্ট্যান্ডে স্থাপিত কাচাবাজারে সবেধন নীলমনি একমাত্র কসাইয়ের দোকানেই তার ঠিকুজি। ফ্রি তেল, চর্বির এতটাই সরবরাহ ছিল যে চলৎশক্তি মোটামুটি হারিয়েই ফেলেছে। কিংবা থাকলেও সেটা ব্যবহার করতে একদম ইচ্ছে জাগেনা। উচ্ছিষ্ট নাড়ি ভুড়ি, তেল চর্বির আহবান আসলে ইনজির মতই কোন রকমে দুকদম হেটে দয়পরবশ হয়ে কিছুটা হা করে। তারপর মাচানের নীচে অনন্ত বিশ্রাম। শরীরর বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থা হয়েছে পা দুটি শরীরের ভার নিতে নিতে শরীরের অর্ধেকটাতে ঢুকে গেছে। কিছুদিন বাদেই হয়তো ভুড়ি মাটিতে ঠেকবে। শেষে এমন অবস্থা হলো যে খাদ্যদ্রব্যের আহ্বানেও আর সাড়া দেয়ার শক্তি নেই। আহারদাতাকেই কষ্ট করে এগোতে হয়। ’ শালার তো মরার টাইম হয়া গেছে’, পাব্লিকের খিস্তিতে পুরাই অনুভুতিহীন।
যাপিত জীবনের নানা রঙ্গরসে, ছলাকলায়, ভিন্ন অনুভুতিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকদিন খোঁজ করা হয়নি ইনজির। ও পথে আবার যাওয়ার সুযোগে তালিকায় প্রথম কার্য ছিল ইনজির স্ট্যাটাস আপডেট। সবকিছু আগের মতোই। শুধু কসাইয়ের মাচার নীচে যিনি বিশ্রাম করছেন তার গায়ের রঙ ফিরিঙ্গিদের মতো সোনালী টাইপের। সোনালী রোমশ শরীরে হঠাত আসা চেনাইয়ের বিপুল সম্ভার। আহা.....ইনজির জন্য কয়েক ফোটা শোকে দ্রবীভুত হতেই হল। জড়বেশিষ্ট্যের পুরনো টুথপেস্টের টিউবই যেখানে ফেলে দিতে মায়া লাগে সেখানে আস্ত একটি জীবনের সমাহার ইনজির প্রয়ানে দুদন্ড শোকের জন্য আমাকে দোষাপেরা করা চলেনা। শোক সামলে উঠে এবার শাপ শাপান্ত করার পালা। 'শালার কসাই, তোদের তেল চর্বি খেয়েই তো একটা জীবন'........চকিত শাপান্তের বিরতি। ইনজি বহাল তবিয়তে ভু-লোকে বিদ্যমান। শুধু অগের সেই শরীর নেই, চেকনাইও নেই। উল্টো দিকের গলিতে দাড়িয়ে ছাল ছড়ানো গরুর থাইয়ে লোভাতুর দৃষ্টি। পাতাল ছোয়া সেই ভুড়ি কিছুটা উর্ধ্বলোক হওয়ায় শীর্ন ঠ্যাং দুটিতে ইনজিকে বেশ সুঠাম লাগছে। দখল ধরে রাখতে ফিরিঙ্গি বাবাও বেশ তৎপর। একদিকে উচ্ছিষ্ট পাওয়ার লোভে মালিক পক্ষের দিকে আবার ইনজির মতিগতির দিকেও চোখ রাখতে হচ্ছে। তবে অভিজ্ঞতায় জানি বেশি দিন দখল ধরে রাখতে পারবেনা। অফুরন্ত চেকনাইই ফিরিঙ্গি বাবার কাল হবে। ইনজিও একমাত্র প্রতিপক্ষ নয়। মোটামুটি রুগ্ন গোত্রের, সাহিত্যের ভাষায যাকে নেড়ী বলে, তেমন একজন ইনজির পেছনে দাড়িয়ে পুরো বিষয়টি ভেবে দেখার চেষ্টা করছে হয়তো বেশ ক'দিন ধরে।
দখল পাল্টা দখলের লড়াইটা আসন্ন, তবে সমঝোতার কোন সিস্টেম এদের মাধ্যে আছে কিনা বুঝতে পারছিনা। যা বুঝতে পারছিনা তা নিয়ে ভাবনারও দরকার নাই। কিন্তু একটা কিছু নিয়ে তো বিজি থাকতে হবে। যতটা সম্ভব ভদ্রতা সহকারে ঘাড় বাকিয়ে পাশের যাত্রীর ৩ টাকার দৈনিক থেকে ভাবনার খোরাক সংগ্রহের চেষ্টা চলল কিছুক্ষণ। ভিসিকে নামানোর জন্য জাবিতে শিক্ষকদের আবার আন্দোলন। ভাবনার খোরাক হিসেবে মন্দনা।
তবে ইনজিদের দখল বাণিজ্যের সাথে এর বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০২