somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথ হারাবেনা বাংলাদেশ /:)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
’এই ছুরিটা হাতে পেলে সবার আগে কাকে খুন করবি?’
’আসলাম’ । নিমিষেই উত্তর দিয়ে দাঁত কেলিয়ে মিলন দা’র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করছিলাম।
এই আসলাম আবার সুইডেন আসলাম নয়। আবাহনীর স্ট্রাইকার আসলাম। শালার জ্বালায় সবসময় উৎকন্ঠিত থাকতে হয়। সারাটা সময় মোহামেডানের ডি বক্সের আশে ঘোরাফেরা করে আর সুযোগ পাইলেই মিস নাই......X(
আমি মোটেও কথার কথা বলছিনা। আবাহনী মোহামেডানের কোন এক ম্যাচে আবাহণীর এক সমর্থক ইয়া বড় এক ছুড়ি হাতে এমেকাকে আক্রমন করেছিল। ভাগ্যিস পুলিশ ছিল বলে রক্ষে, নইলে ১০ মিনিটের জন্য হলেও বিশ্বকাপে খেলতে হতোনা এমেকার।

তারপর কত রোদ বৃষ্টি ক্ষয় হয়ে কত কিছু ঘটে গেল। মিলনদার ছেলে প্রীতমও দেশি বেশ সাবাল হয়ে উঠছে।

’প্রীতম, এই মুহুর্তে কাউকে খুন করতে বললে সবার আগে কাকে রাখবি’
'.................................'
ধ্বরনী দ্বিধা হও। যার নাম বলল তার কথা এখানে লিখতে সাহস পেলামনা। বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের বড় মাপের নেতা, নামের আগে ব্যঞ্জনবর্ণের সংক্ষিপ্ত রপেই পরিচিত। মাঝে মাঝে উল্টা পাল্টা কথা বলে প্যাঁচ লাগাতে ওস্তাদ..................

আমাদের কৈশোরে আক্ষরিক অর্থেই আবাল ছিলাম। তাইতো আবাহনী, মোহামেডান, কাকাবাবু, ফেলুদা, কিশোর থ্রিলার- এই জাতীয় আবালীয় কাজকর্মে ব্যস্ত থাকতাম। দেশ, জাতি গণতন্ত্র নিয়ে মোটেও ভাবার সময় ছিলন। আজকালকার সাবালীয় পোলাপান কিন্তু সেরকম নয়। রাজণীতি গণতন্ত্র, সংলাপ, তফসিল টিকফা, রামপাল নিয়ে ওদের ভাবনা দেখলে সত্যিই মতি ভাইয়ের মতো বলতে ইচ্ছে করে ..........পথ হারাবেনা বাংলাদেশ।

দুই
ছিইছির জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে আমার কোন উত্তেজনা না থাকলেও মুহিবুল মামার উত্তেজিত ফোনে বেশ উত্তেজিত হতে হল।
’ কাল বিকালে পুলাপান নিয়ে পার্টি অফিসে আয়, তারপর বাকী সব কমুনে’
’ মামা, আমার পুলাতো এখনও হাটা শিখে নাই’- নির্লিপ্ত উত্তর দেই।
’ আরে ফাইজলামী বন কর, নমিনেশন পাইতে যাইতেছি, শো-ডাউন করতে হবে। বন্ধুবান্ধব যা পারস নিয়ে আয়’
বাড়তি ঝোলের আশায় কি করে জানি ছাত্রবস্থায় জাতীয় পার্টির সাথে ভীড়ে গেছেন মুহিবুল মামা। কিন্তু সুদীর্ঘ ২৪/২৫ বছরে শুধু ঝোলই জুটেছে, এবার মনে হয় মাংসের দেখা মিলতে পারে। জিরো আওয়ারে মুহিবুল মামার আবার উত্তেজিত ফোন।
’বুঝলি, নমিনেশন যদি একবার পাই তাহলে নিশ্চিত এমপি’
’ কেমনে কি, মামা’, হিসাব কিছুতেই মিলাতে না পেরে বলি।
’ আরে আমার আসনে আওয়ামী লীগ এমনিতেই দুর্বল। আর তফসিল ঘোষণা হইছে মানে, বিএনপি আর আসবোনা। এখন ধর বিএনপির সব ভোটতো আমিই পামু’
’কস্কি মমিন’, মুখের সাথে ফোনের দুরত্ব বাড়াতে বাড়াতে বলি।

মুহিবুল মামার উৎফুল্ল মুখবদন কল্পনা করতে করতে সময় চ্যানেলে দেখি তার চেয়েও উৎফুল্ল পল্লী বন্ধুর মুখ।
’ ......লীগের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোটায়, কাজেই এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ভাল কিছু করবে’ - সহাস্য বদনে পল্লীবন্ধু সাংবাদিকদের সামনে তার চিরায়ত কবিতা আবৃত্তি করছেন। একটু মনযোগ দিয়ে লক্ষ্য করলাম পল্লীবন্ধু শুধু কথার কথা বলছেননা, তার চোখও অজানা আশায় ভরপুর, শরীরেও একই প্রতিচ্ছবি। তার ভবানায় নিশ্চয় সেই বিষয়টিই, বিএনপি না আসলে তাদের বিপুল ভোট লাঙল মার্কায় পড়বে!

৮৮’র নির্বাচনে মুহিবুল মামার নাকি ব্যালটে সিল মারতে মারতে হাত ব্যাথা হয়ে গেছিল। তবে সব ব্যালট বাক্সে ভরেননি, কিছু ব্যালট ভাগ্না, ভাগ্নের জন্য নিয়েও এসেছিলেন। আমরা সেই ব্যালট পেপার দিয়ে নির্বাচন নির্বাচন খেলতাম। সেই স্বর্নযুগে ৮৬, ৮৮’র জাতীয় নির্বাচন, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সব নির্বাচন ছিল ভোট ডাকাতির চরম উৎসব। শত শত কেন্দ্রে নিজেরা ইচ্ছেমতো নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে সিল মারা, ফলাফল আগে থেকেই নির্ধারণ করে রাখা ব্লা...ব্লা......। সেই পল্লীবন্ধুই আজ জনগনের প্রত্যেক্ষ ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির স্বপ্ন দেখছেন। একজন ভোট চোরের এই পরিবর্তন দেখে মতি ভাইয়ের কন্ঠে বলতে ইচ্ছে করে .....................পথ হারাবেনা বাংলাদেশ।

তিন
আমাদের শিশুদের নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ যে, পড়ার চাপে তাদের স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে যাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠে নিজের চেয়েও বেশি ওজনের স্কুলব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাও, বিকালে কোচিং, রাতে বিভিন্ন বিষয়ে গৃহশিক্ষকের চাপে ওষ্ঠাগত প্রাণ। সেই দিন গেল বুঝি।

প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায় একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস শিশুদের নিশ্চয় পড়াশোনার অযাচিত চাপ থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যেই। আমাদের সদাশয় মনতিরি আবার বলছেন ’ সীমিত আকারে হয়তো প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে..’ তিনি এখনও হতে পারে নিয়ে আছেন। যাই হোক দেশের ভবিষ্যত কোমলমতি শিশুদের জন্য এরকম সুবর্নউদ্যোগ দেখে মতি ভাইয়ের কন্ঠে বলতে ইচ্ছে করে ......................পথ হারাবেনা বাংলাদেশ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৩
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×