কুসুম্বা মসজিদ নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার কুসুম্বা গ্রামের আত্রাই নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত ৪শ’৬২ বছর পুরাতন একটি অতি প্রাচীন সুলতানি আমলের মসজিদ।
কুশুম্বা যেতে নওগাঁ সান্তাহার রেল স্টেশন থেকে সিএন জি করে বালুডাঙা বাসস্ট্যান্ড সেখান থেকে বাসযোগে রাজশাহী মহাসড়ক ধরে মান্দা ফেরিঘাট এর কাছাকাছি নামতে হবে। অথবা রাজশাহী থেকে মহাসড়ক হয়েও যাওয়া যায়
বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে মুদ্রিত ধুসর বর্ণের পাথরের তৈরি মসজিদটি শূর আমলে বাংলার স্থাপত্য রীতিতেই নির্মিত। যদিও নির্মাণ কাল নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি আছে তবে মূল প্রবেশ পথে শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয় এই মসজিদটি ৯৬৬ হি. বা ১৫৫৮ খ্রিষ্টব্দ
watch the full documentary on YouTube
বাংলায় আফগানদের শাসন আমলে শূর বংশের শেষ দিকের শাসক গিয়াসউদ্দীন বাহাদুর শাহ-এর রাজত্বকালে জনৈক সবরখান বা সোলায়মান নামে ধর্মান্তরিত এক মুসলমান মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে কথিত আছে।
নিচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৫৮ফুট, প্রস্থে ৪২ফুট। দুই সারিতে মোট ৬টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে।১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদের তিনটি গুম্বজ নষ্ট হয়েছিল। পরে সেগুলো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সংস্কার করেন। মসজিদের গায়ে পাথরের খোদাইকৃত সূক্ষ্ম কারুকার্য রয়েছে। এর পূর্বপ্রান্তে তিনটি প্রবেশপথ আছে । মোট মিহরাব আছে ৩টি, যার সবগুলো কালো পাথরের তৈরি। মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি মেঝের সমান্তরাল গায়ে খোদাইকৃত পাথরের সূক্ষ্ম নকশা রয়েছে ।
মসজিদের ভিতরে উত্তর-পশ্চিম কোনের কোণের ‘বে‘তে অবস্থিত মিহরাবটি একটি উচু প্লাটফর্মের মধ্যে স্থাপিত । একটি সিঁড়ি দিয়ে এ প্লাটফর্মে উঠা যায়
ধারণা করা হয়, এই আসনে বসেই তৎকালীন কাজী এলাকার বিচার কার্য পরিচালনা করতেন।
মসজিদটির সম্মুখে গ্রামবাসী ও মুসল্লিদের পানির চাহিদা পূরণের জন্য ৭৭ বিঘা জমির উপর প্রায় ১২০০ ফুট লম্বা ৯০০ ফুট আয়তনের একটি বিশাল ঘাট বাঁধানো কুশুম্বা দীঘি আছে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অধীনে পুরাকৃতির মধ্যে কুসম্বা মসজিদটি অন্যতম। এখানে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী আসেন মসজিদটি ভিড় জমান। ২০১৭ সালে মসজিদের চতুর্দিকে আলোকসজ্জার কাজ এবং দিঘির পাড়ে ফুলের বাগান নির্মান করা হয়।।দর্শনার্থীদের জন্য মসজিদটির পাশে পিকনিক স্পট ও বিশ্রামাগার রয়েছে। কিন্তু দর্শনাথীদের ফেলে দেয়া পাস্টিকের প্যাকেট ও অন্যান্য ময়লা ,আবর্জনা ইতিমধ্যে দীঘি ও মসজিদটির পরিবেশ নষ্ট করছে। এটি একটি ধর্মীয় স্থান তাই এর পবিত্রতা ও পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে প্রশাসন ও আমাদের আরো দায়িত্ববান হওয়া উচিত।