২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে পারিনি। আল্লাহ আরেকটা পরীক্ষা এদিকে রেখে দিয়েছিলেন। আমার স্ত্রীকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেছিলেন। সেখান থেকে.......
একরাতে বিলিরুবিন বেড়ে ১২ পার হয়ে গেল। পরদিন দক্ষিন আফ্রিকার বিরুদ্ধে ম্যাচ। মানুষকে নিয়া আল্লাহর এককটা মহাপরিকল্পনা থাকে।
আমি রক্তের জন্য দৌড়াচ্ছিলাম। টানা ২৪ ব্যাগ রক্ত দিয়েছে!! ৬ ব্যাগ প্লাজমা দিতে হয়েছে! (একটা প্লাজমা বানাতে ৬ ঘন্টা লাগে)
সবাই তখনো নড়াইলে, রাতে শরীর খারাপ দেখে আমি হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সারা রাত স্যালাইন দিলো। সকালের টেস্টে দেখা যায় বিলিরুবিন আরো বেড়েছে। ডাক্তাররা আশা ছেড়ে দিয়েছিলো। হুময়ারা তখন পেটে, তখন মাত্র ৭ মাস।
আমার এক দাদি বড় গাইনোকোলজিস্ট। উনি আমাকে ডেকে সব বললেন। বললেন,আমরা বাচ্চাকে বাঁচাতে পারবো, মায়ের অবস্থা ভালোনা। ঝুঁকি নিয়ে অপারেশন করা যায়, যদি মাকে বাঁচানো যায়।প্লাজমা নিয়ে এসে দেখি ওকে ওটিতে নিয়ে যাচ্ছে হুইল চেয়ারে করে। আমি গিয়ে দাঁড়াতেই বললো "কোন অন্যায় করলে মাফ করে দিও " ওই সময় বুঝতে পেরেছিলাম সুমী আমার কে।
আমি ওর সামনে কাঁদতে পারিনা। পিছনে এসে হুইলচেয়ার ধরলাম, দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছিলো তখন।
টানা ১১ দিন আইসিইউতে, ডাক্তারদের কথ অনুযায়ী আমরা খারাপ সংবাদ এর জন্য অপেক্ষা করতাম। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ ওকে ফিরিয়ে এনেছেন। এমন একটা ঘটনা সামলাতে হবে বলেই হয়তো আল্লাহ আমাকে বিশ্বকাপ খেলতে দেয়নি।
বই -মাশরাফি
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৫