somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফাইনাল হোক মাশরাফিদের

০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডি ভিলিয়ার্স অনেক কিছুই পারেন। একত্রিশ বলে সেঞ্চুরি, আইপিএলে ডেল স্টেইনকে সুইপ করে ফাইন লেগে ছক্কা, কিংবা দুরন্ত উইকেট কিপিং। এমন কী বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে, আমরা দেখেছি এক ব্যাটার বেশি নিয়ে খেলা প্রোটিয়ারা যখন বোলিংয়ে ভুগছে ডুমিনিকে নিয়ে, ডি ভিলিয়ার্স সেখানেও দাঁড়িয়ে গেলেন ত্রাতার ভূমিকায়। মিডিয়াম পেসে উইকেট টু উইকেট বল করে গেলেন এবি, তিন ওভার বল করে পঞ্চম বোলারের কাজটা সেরে দিলেন দলের হয়ে।
বছরের পর বছর ধরে পেশাদারিত্ব, বিজ্ঞান আর ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের প্যাকেজ সাথে নিয়েও কোনো টুর্ণামেন্টের শিরোপা জেতা হয়নি প্রোটিয়াদের, প্রায় দেড় যুগ আগে ক্যালিসের উত্থানপর্বের সেই ঢাকার মাঠের উইলস কাপ বাদ দিলে। বর্ণবাদের অভিশাপ হয়তো। কিন্তু আধুনিক ক্রিকেটের এই রহস্যটি - আফ্রিকা কেনো আটকে যায় বিশ্বকাপের সেমিতেই - ভেঙে ফেলার মুহূর্তে, রাইলি রুশোর থ্রো কাজে লাগিয়ে কোরি অ্যান্ডারসনকে ফেরানো যায় যখন, যখন দরকার ছিলো সবচেয়ে বেশি, ডি ভিলিয়ার্স ক্রিকেট দেবতার খোলস ভেঙে মর্ত্যের মানুষ বলে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন আবার। এবি প্রতিষ্ঠা করে দেন আরো একটি তিক্ত সত্যও। সময়ে সময়ে, এমন কি আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্সও, পারেন না।
কিন্তু দলের প্রয়োজনে মাশরাফি বিন মর্তুজা পারেন। বিশেষ করে সাক্ষ্য দেয় গত দেড় বছরের বাংলাদেশ ক্রিকেট দল, প্রয়োজনের সময়ে মাশরাফি অবশ্যই পারেন।
ভুলিনি, ভুলবার নয় যে স্লগ ওভারে ব্রেন্ডন টেইলরের কাছে মার খেয়ে এই মাশরাফিই ম্যাচ তুলে দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের হাতে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের শিবিরেও মাশরাফি হাতে কলমে প্রমাণ করে দিয়েছেন স্লগ ওভারে নিজের অকার্যকারিতা। মাশরাফি তাই ক্রিকেটের শেষ বিচারে শুধু নশ্বর মিডিয়াম পেসার এক, কিন্তু সময়ের কাছে তার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সেই সময়, যার কাছে অস্পষ্ট হয়ে গেছেন ওই ক্রিকেটেরই শচীন আর সাঙ্গাকারার মতো মহারথীরাও।
কিন্তু অস্পষ্ট হয়নি কোহলি আর সুরেশ রায়নাদের কাঁধে চড়ে বিশ্বকাপজয়ী শচীনের সেই উদযাপন, এখনো ঝকঝকে কোনো বৈশ্বিক শিরোপা না জিতে ডি ভিলিয়ার্সের সমতলে থাকা জয়াবর্ধনে আর সাঙ্গাকারার জুটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মুকুট মাথায় তোলা লংকানদের। আরেকটু পিছিয়ে গেলে মনে পড়বে, ডি সিলভা নামের অমিত প্রতিভাধর এক ছোটোখাটো ব্যাটসম্যানের সাথে ঐ লংকারই মুকুটহীন সম্রাট অর্জুনা রানাতুঙ্গা জোট বেঁধে কেড়ে নিচ্ছেন বিশ্বকাপ, সেই গল্প। ঘড়ির কাঁটা কেড়ে নিয়েছে রানাতুঙ্গাদের। কেড়ে নিয়েছে ম্যাশের লাল বলের ওপেনিং স্পেল, কেড়ে নিয়েছে সার্জনের কাছে মাশরাফির একে দুয়ে সাতবার সমর্পিত পা’জোড়ার অনেকটা আয়ু। ক্ষুধার্ত সময়, সবকিছুর মতোই, ক্রিকেটও খেয়ে ফেলে। শুধু গল্প থেকে যায়, সময় সেটা খেতে পারে না।
আর এ জায়গাতে দাঁড়িয়েই মর্তুজাপুত্র কৌশিক ছাড়িয়ে যাচ্ছেন এবি ডি ভিলিয়ার্সকে। ক্রিকেট নামের সাহিত্যে মাশরাফির চেয়ে বেশি গল্পগাঁথা তো খুব বেশি কেউ লিখতে পারেন নি!
ভাঙা হাত নিয়ে ব্যাট করতে নেমে গ্রায়েম স্মিথ জন্ম দিয়ে দেন ক্রিকেট স্পিরিটের সুন্দরতম গল্পগুলোর একটার। আর মাশরাফি,সব ভুলে যখন কেবল স্মরণ করি এই টুর্নামেন্টে লংকানদের সাথের খেলায় ইনিংসের শেষ বলটি, চোখে ভাসে অসম্ভব এক তৃতীয় রানের জন্যে দৌড়াতে থাকেন আমাদের ক্যাপ্টেন, মনে আসে চিকিৎসকের সতর্কবাণী যে, সামান্যতম ঝুঁকিতে এমনকি সহসা পা হারানোও থাকতে পারে মাশরাফির দৈবে। কিন্তু তখনো, সেই অসম্ভব তৃতীয় রানটি নেবার মুহুর্তে, আমাদের অধিনায়কের প্রাণপণ প্রচেষ্টায় আমরা জেনে যাই, নমস্য গ্রায়েম স্মিথেরা হেরে গেছেন এই পাগলার প্রতিটি পদক্ষেপে। জেনে যাই, ক্যান্সার জয় করা এরিক আবিদাল আর ফিরে আসার গল্প বারবার নতুন করে লেখা যুবরাজ সিংদের মাঝেও ইতিহাসে মাশরাফি নামের গল্পটা লেখা থাকবে ইটালিকে। ফন্ট সেখানে বোল্ড না হলেও রঙে নিশ্চিত লাল সবুজ।
জিম্বাবুয়ের সাথে কিছুই না পাওয়ার এক টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিরীক্ষামূলক দল নামিয়ে ড্র করেছেন বলে সংবাদমাধ্যমগুলো ধুয়ে দিয়েছে ক্যাপ্টেনকে, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই ভারতের সাথে বড় ব্যবধানেই হার, সেখান থেকে ফিরে এসে পরপর দু’ম্যাচে এশিয়ার অন্য দুই জায়ান্টকে হারিয়ে দিয়ে ফাইনালে ওঠাটাই তো বিশাল এক সাফল্য। কিন্তু মাশরাফি তো যেনো গত দেড় বছরে সিনেমার চিত্রনাট্য, পেয়ে গেছেন স্বর্ণপরশ। রিচি বেনো একবার বলেছিলেন, ‘ক্রিকেট অধিনায়কের কাজের মাত্র দশভাগ হলো সামর্থ্য, আর বাকি নব্বইভাগই স্রেফ কপাল! ... তবে, কসম খোদার, ঐ দশভাগ যদি তোমার না থাকে, তবে ভুলেও তুমি ক্যাপ্টেন হতে চেয়ো না!’ মাশরাফি গত দেড় বছরে, ঐ সামর্থ্যে নিশ্চিত দশে দশ।
দেশের মাটিতে চার বছর আগে বিশ্বকাপ না খেলার দুঃখ মর্তুজাপুত্র যেন শপথ করেছিলেন দেখিয়ে দেবার। আর সেই প্রদর্শনী এমনই হলো যে বুঝে উঠলো না শার্লকের ইংল্যান্ডও, স্পিনের বদলে বাংলার বাঘের ডেরায় কী করে আড়ত বসে গেছে তরুণ পেসারদের।
অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ অভিযান কোয়ার্টার ফাইনালে থামলেও মাশরাফি বাহিনী থামলো না। দেশের মাটিতে মুশফিকে উড়ে গেলো পাকিস্তান, মুস্তাফিজে হোঁচট মহাভারতের, সৌম্যের শিকার হলো আফ্রিকাও। এসবের মাঝে মাশরাফি কোথায়?
প্রতিটা ডেলিভারির পর হাঁটুর ব্রেস ঠিক করতে করতে বোলিং মার্কে ফেরা মাশরাফি আছেন সবখানে। রুবেলের ইয়র্কারে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া ইংল্যান্ডের সামনে গর্জন করা দলের সামনে মাশরাফি আছেন, সেখানে তিনি অধিনায়ক। গতির তোড়ে উড়ে যাওয়া ধাওয়ানদের প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে তাসকিনের সাথের চেস্ট বাম্পে মাশরাফি আছেন, সেখানে তিনি ‘দোস্তো’। ভারত ধ্বসিয়ে দেয়া স্পেলের পর মুস্তাফিজের কপালে চুমো খেয়ে তাকে ক্যাপ পরিয়ে দেয়ায় মাশরাফি আছেন, এখানে তিনি পিতা।
এসব যদি সৌরভ গাঙ্গুলীর দাদাগিরি হয়, তাহলে আফ্রিকার সাথে আরাফাত সানি-নাসির হোসেনদেরকে দিয়ে বল ওপেন করানোর পাশাপাশি অকল্পনীয় সব বোলিং চেঞ্জ করে মাশরাফি জানান দিচ্ছেন-উদ্ভাবনে কিন্তু তিনি হানসি ক্রনিয়ে।
এতেও যদি সন্দেহ থাকে, তাহলে পাকিস্তানের সাথে গত ম্যাচের তরতাজা দৃশ্যটাই আরো একবার রিওয়াইন্ড করা যায়। আস্কিং রেটের বাড়তে থাকা চাপে একটু হয়তো টলে গেছেন সাকিব নামের সুপারম্যান আর মুশফিক নামের পাহাড়। আর ডাগ আউটে বাঘের মতো পায়চারি করে চলেছেন পাগলা এক অধিনায়ক। সাকিব গেলেন, তিনি নামলেন। প্রমত্ত মোহাম্মদ আমিরকে প্রথম বলেই স্ট্রেট ড্রাইভ, লং অফ, চার। দ্বিতীয় বল যখন ধেয়ে আসছে শরীর বরাবর, ইচ্ছাশক্তির সবটুকু ব্যবহার করে মানুষটা সর্বস্ব দিয়ে বল ঘুরিয়ে দিলেন ফাইন লেগে, আবার চার। ম্যাচের জয় পরাজয় কি ওখানেই স্থির হয়ে যায়নি? নিজেকে ওই নিংড়ে দেয়া, প্রতিটা মুহুর্তেই যেন নিজের জীবনের জন্যে খেলার প্রতিজ্ঞায় চোয়াল কামড়ে ধরে থাকা মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে উজ্জ্বল ছোটগল্প না হবার আর কোনো কারণ আছে?
কিন্তু সুপারহিরোর গল্প বলতে গেলে প্রায়শই আড়ালে চলে যান তাদের সহকর্মীরা। যেমনটা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সেই আনসাং হিরো, জঞ্জাল মুক্ত হতে থাকা গোথাম সিটির সেই ডার্ক নাইট।
চার বছর আগে এই এশিয়া কাপের ফাইনালে, এই পাকিস্তানের বিপক্ষেই দুই বলে চার রান তোলার ব্যর্থতা মাহমুদউল্লাহ দেখেছেন নন-স্ট্রাইকে দাঁড়িয়ে থেকে। ম্যাচ শেষে ব্যাট নিয়ে তাঁর মাঠে বসে থাকার দৃশ্য কেউ মনে রেখেছেন নাকি জানা নেই, কিন্তু মাহমুদউল্লাহ মনে রেখেছেন, জানিয়েছেন ম্যাচশেষে। সুনীল গাভাস্কার একসময় দুনিয়ার সেরা আট নাম্বার ব্যাটসম্যান বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এই রিয়াদকে। ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে বিপর্যয়ের মুখে একের পর এক ম্যাচে শাটার নামিয়ে দিয়ে, বিগত প্রজন্মের খালেদ মাসুদকেই মনে করিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশের জন্যে সে সময় বহু স্মরণীয় জুটিতে ক্রিজের একপাশ নীরবে আগলে রেখেছেন রিয়াদ, দরকারে চমৎকার অফস্পিনে ভেঙেছেন বহু বিপজ্জনক জুটি আর নিয়মিত ঢাকা পড়ে গেছেন ড্রেসিংরুমে সাকিব-তামিম-মুশফিকের ছায়ায় ‘আমরা করবো জয় একদিন’ গাইবার সময়। ফুটবল কোচদের চাকরির চাইতেও দ্রুত বদলেছে রিয়াদের ব্যাটিং পজিশন, আর সে বদলানোতে আদ্যন্ত টিম-ম্যান রিয়াদের ক্লান্তি ছিলো না কখনোই। তবু আমরা তাকে ‘হান্ট’ করে গিয়েছি নিয়মিত, ‘বিকজ হি ক্যান টেইক ইট!’
মাশরাফির পরশে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে, মাশরাফির সবচেয়ে যোগ্য ডেপুটি মাহমুদউল্লাহর বিবর্তনটাও বিশ্বকাপেই সবার চোখে পড়েছে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই টপ-অর্ডারের ভঙ্গুর দশা সামাল দিতে, বলতে গেলে নতুন বলেই ব্যাট করতে নেমে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। ওজন কমিয়ে ঝরঝরে হয়ে যাওয়া রিয়াদের ব্যাটেও বেড়েছে ধার, ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিও সেই পথ ধরে। ''হ্যামিল্টনের বাঁশিওয়ালা'' থেকে আফ্রিকার সাথে রাবাদা ভীতি জয় করে প্রতি-আক্রমণ, কিংবা এবারের বিপিএলে মুগ্ধ করা অধিনায়কত্বের সাথে এশিয়া কাপে ড্রাইভ করে দানবীয় মোহাম্মদ ইরফানকে লং অফে ওড়ানো- গোথাম সিটির লোকেরা হয়তো এবার বুঝতে শুরু করেছে মাহমুদউল্লাহ মাহাত্ম্য!
ব্যাটম্যানের কথা বলতে গেলে তো আলফ্রেডের কথাও বলতে হবে। বলতে হবে তাদের কথাও, যারা ঠিক না হবার দিনে কাঁধে হাত রেখে বলবেন, ‘হোয়াই ডু উই ফল, ব্রুস? সো দ্যাট উই ক্যান লার্ন টু পিক আওরসেলভস আপ!’
হাথুরুসিংহে আর হিথ স্ট্রিক, বাংলাদেশের সেই আলফ্রেড। দায়িত্ব নেবার প্রথম প্রহরে তারা হাত গুটিয়ে বসে রইলেন, ভারতের জার্সিতে তাদের দ্বিতীয় সারির একটি দলের সাথে ঘরের মাঠের হোয়াইটওয়াশে কেবল ‘ফল’টা দেখে গেলেন চুপিচুপি। তারপর শুরু করলেন ‘পিক’ করা, সেই যাত্রা এখনো চলছে।
ব্যাটার ধরে ধরে বল করার পরিকল্পনা, পেসারদের মনে গেঁথে দিলেন হিথ স্ট্রিক। জিম্বাবুয়ের স্বর্ণযুগে বল হাতে দারুণ গোছালো ছিলেন হিথ, আর ইনিংসের প্রথম দিকে দ্রুত গতির ওয়াইডিশ বলে ফ্ল্যাশ করা অভ্যাস কোহলির- এই মন্ত্র রুবেল হোসেনের কানে জপতে জপতে সেটা কাজে লাগিয়ে হিথ বোঝান, এখনো গোছালো তিনি।
আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার হাথুরুসিংহে ধ্বস ঠেকাতে কখনো মুশফিককে আগে পাঠান, কখনো মাহমুদউল্লাহ তার কাছে হয়ে যান প্রতিপক্ষের পেসদুর্গে পাল্টা আঘাতের অস্ত্র। আমিরের ওভার সামলাতে মাশরাফিকে সামনে ঠেলে দেওয়ার ওই সিদ্ধান্ত, হাথুরুর অগণিত ‘চেকমেইট’ এর একটিও বটে!
আরো অনেক বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমর্থকেদের মতোই, আমাদের সামনেও এখন থাকে প্রশ্নবোধক। জিজ্ঞেস করে, ডি ভিলিয়ার্সেরা যা পারেন না, মাহমুদউল্লাহ আর হাথুরুসিংহের মতন অগোচরে থাকার দল আর সাকিব-তামিম-সৌম্যের ঝলকানিতে মাশরাফি বিন মর্তুজা কৌশিক সেটা পারবেন কি না? জীবদ্দশাতেই, যখনো খেলা ছাড়েন নি, তখনই তাকে নিয়ে বই লিখে ফেলা হয় আবেগ পুঁজি করে; সেই আবেগের মানুষ, সেই মাশরাফি তার ক্যারিয়ারের এই উজ্জ্বলতম অথচ শেষভাগে এসে প্রথম বাংলাদেশি অধিনায়ক হিসেবে কোনো বহুজাতিক টুর্ণামেন্টের ট্রফি কি জিততে পারবেন?
কাজটা খুব কঠিন। প্রতিপক্ষ সেই ভারত, আইপিএলের চারাগাছ এখন বিশাল অর্থকরী বৃক্ষে পরিণত বলে যারা বহুদিন ধরেই টি-টোয়েন্টির উজ্জ্বলতম দল। অস্ট্রেলিয়ায় স্মিথ-ওয়ার্নারদের হারিয়ে এসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মহড়ার এই টুর্ণামেন্টেও ভারত উড়তে উড়তেই ফাইনালে। টাইগারদের গত দুই ম্যাচের ফলাফল ভুলে গেলে, লড়াইটা হয়ত একপেশে হবার কথা।
মাশরাফি কি পারবেন? সেই মাশরাফি, আগ্রাসী শেবাগকে প্রথম ওভারেই খেয়ে নিয়ে যিনি সূচনা করেছিলেন প্রথম ভারত বধের; সেই মাশরাফি, যার ‘ধরে দিবানি’ গোছের মজারুটিও ঢুকে গেছে চিরকালের বাংলাদেশ ক্রিকেটের রণসঙ্গীতে; সেই মাশরাফি, এখনো ইনিংসের শেষ বলে একটি অসম্ভব রানের জন্যে উপহাস করে যান তার পা হারানোর সম্ভাবনা, তিনি কি পারবেন?
... দীর্ঘদিন ধরে যোগ্য কেউ বঞ্চিত হতে থাকলে, সহানুভূতি আর সমর্থন, তার জন্যে দুটিই বাড়ে গড় মানুষের। ডি ক্যাপ্রিওর ভাগ্যে যখন অস্কার ছিঁড়ে রেভেন্যান্টের জন্যে, অথবা লিওনেল মেসি যখন নামেন বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে, সেই সমর্থন তখন দৃশ্যমান হয়ে ওঠে সামাজিক সাইটগুলোতে; আমরা জেনে যাই মুকুট জেতার আগে হৃদয় জেতা হয়ে গেছে তাদের। অগণিত হৃদয় জেতা হয়ে গেছে আমাদের মাশরাফিরও। বেলা শেষের চূড়ান্ত গান শুনবার আগেই এবার স্মারকের মুকুটটাও আসুক।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের টুর্ণামেন্ট ফাইনালে ভারতের মতো দুর্ধর্ষ প্রতিপক্ষকে হারানো সহজ নয় মোটেই। কাজটা হয়ত অসম্ভব প্রায়।
তবে একথাই যদি ভেবে থাকেন, তবে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে চিনতে আমরা ভুল করেছি। ভুল করেছি মাহমুদউল্লাহ আর গ্র্যান্ডমাস্টার হাথুরুসিংহেকে চিনতেও। কাজ কঠিন হলেই তো এই মাশরাফি ট্রিনিটি জ্বলে ওঠে।মাশরাফিদের গল্পগুলোও সুন্দরতম, সেটা ফিরে আসা কঠিন বলেই। সো, লেটস নট টেইক দা ফাইনাল ফর গ্রান্টেড। মাশরাফি- উই রিপিট- মাশরাফি, উইল নট টেইক দা ফাইনাল ফর গ্রান্টেড।
এনাদার মাস্টারপিস বাই -সুহান রিজোয়ান ভাই
পোস্ট লিংক - Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×