বসে থাকলে, আপনার ক্যারিয়ারও বসে থাকবে।
দৌড়ান, আপনার ক্যারিয়ারও দৌড়াবে।
(তবে কোথায় পৌঁছার জন্য দৌড় দিবেন সেটা কিন্তু
ঠিকভাবে ঠিক করা চাই!)
পাশের বাড়ির ছেলেটা ফটোগ্রাফি করে মাসে দুই
লাখ টাকা আয় করে, ওয়াও! ফটোগ্রাফি করে
এতো টাকা! তাহলে তো আমাকেও ভর্তি হতে
হয়। খালি শাটার টিপ দিয়েই এতো টাকা! তাহলে আমিও
পারবো। দে দৌড়!
বেইলি রোডের পিঁয়াজু মামা খালি পিঁয়াজু বিক্রি কইরা
ঢাকায় ৪টা বাড়ি করছে! দারুণ তো, তাহলে কি
ফটোগ্রাফি শিখবো নাকি পিঁয়াজু বেচবো! পিঁয়াজু
বানানো তো আরো সোজা! ঢাকায় ৪টা বাড়ি করা
ঠেকায় কে!দে দৌড়!
লিটন দাস, জাবি থেকে পাশ করে মাসে ১০ লাখ টাকায়
কামায়। কীসব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ
করে! এইটাতে তো দেখি টাকা আরও বেশি।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট , এইটা কোন কাজ! মাসে
১০ লাখ, ঠেকায় কে, তাহলে ফটোগ্রাফি আর পিঁয়াজু
না বেইচা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করি!
দে দৌড়!
পাশের বাসার মামুন ভাই, বুয়েট থেকে পাশ করে
ঢাকায় ১৩টা ফ্লাট কিনছে, ইস ছেলেটা যদি বুয়েটে
চান্স পাইতো, তাইলে আর চিন্তা কী! ছেলে্রে
কড়া নির্দেশ , “তোরে বুয়েটে পড়তেই
হইবো”! ছেলেও দিলো দৌড়! বুয়েটে পড়তেই
হইবো। নাভিদ ভাই বলছে, বুয়েটে পড়লে
দেশের সেরা সুন্দরীরা তোমার দরজায় আইসা
সিরিয়াল দিয়া নক করবো আর আমেরিকার ভিসা ফ্রি!
দে দৌড় – একদিকে বড়লোকের সুন্দরি মাইয়া,
আরেকদিকে দেশে থাকলে, একটু সিনিয়য় হইলে
বছরে ২৫/৩০ কোটি টাকা ব্যাপার না। তাইলে
ফটোগ্রাফির দরকার নাই, পিঁয়াজু বিক্রির দরকার নাই,
ইভেন্ট ম্যনেজমেন্টেরও দরকার নাই।
বুয়েটেই পড়তে হইবো। দে দৌড়!
কথায় কথায় ভুলে গেলাম, আসলে আমি কী হইতে
চাইছিলাম! কোথায় যাওয়া দরকার ছিলো! গেলাম
কোথায়!সেই অভাব মনের শান্তির অভাব, যার অভাবে
আসলে জীবনের ষোল আনাই মিছে। মিটার রিডার
কোটি টাকার মালিক, শিক্ষাভবনের দারোয়ারের
ইনকামও বেসুমার! সরকারি চাকুরি মানেই এক একটা
ব্যাংক! টাকার কোন অভাব নেই।
কিন্তু আমারও একটা স্বপ্ন ছিলো, সেই স্বপ্নের
খবর কী? স্বপ্নকে কবর দিলে, সে আবার
জেগে উঠবে! সেই স্বপ্নের পেছনে
দৌড়ানোটাই দরকার ছিলো, খুব দরকার ছিলো! দৌড়
দেয়ার আগেই ঠিক করতে হবে, ঠিক কোথায় দৌড়
দিতে হবে। জায়গাটা ঠিক করতে পারলে,
ভালোভাবেই টাকা আসবে আর শান্তিও থাকবে।
দৌড়টা দিতে হবে, তবে ভেড়ার পালের মতো
উদ্দেশ্যহীন নয়, মানুষের মতো।