ঈদ নিয়ে সবারই কিছু না কিছু স্মৃতি থাকে, আমার অনেক আছে। খুব ছোটবেলায় মা আমাদের ছেড়ে চলে যায়, তার চলে যাবার আগের একটা ঈদ এর কথা আমার মনে পরে। সেইবার ঈদে চাদ দেখা নিয়ে কি একটা ঝামেলা হল প্রথমে বলা হল যে চাদ দেখা যায় নাই কাল ঈদ হবে না তারপর রাত ১১ টা ১২ টার দিকে ঘোষণা হল চাদ দেখা গেছে কাল ঈদ হবে। আমার বয়স নয় কি দশ সেইবারই প্রথম আমাদের গ্রামে ঈদ করা ঈদ উপলক্ষে গ্রামে যাওয়া না পারিবারিক কিছু ঝামেলার কারণে ঈদের অনেক আগেই গ্রামে যাই সেখানের স্কুলেও ভর্তি হই বাবা ঢাকাতেই একা থাকেন। তো ওই ঈদে বাবা আমাদের সাথে ঈদ করার জন্য ঢাকা থেকে গ্রামে আসেন, ওই দিনটার কথা আমি কোনো দিন ভুলতে পারবনা। কেন ভুলতে পারবনা তা বুঝার জন্য একটা ঘটনা বলি, একদিন হলো কি আমি বড় মামার বাসায় গিয়েছি তো ঐখানে মামাত ভাইদের সাথে জমে যাওয়াতে আমি বাসায় আসবো না বায়না ধরলাম আম্মা শেষমেষ আমাকে রেখেই বাসায় চলে গেলেন, বাবা রাত এগারটায় বাসায় ফিরে দেখেন আমি নাই, বাবা সাথে সাথে মামার বাসায় রওনা হলেন সেখান থকে আমাকে ঘুম থেকে তুলে বাসায় নিয়ে এলেন, তারপর খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলেন। এইছিল বাবা আমার সম্পর্ক। সেই বাবা আমাদের ছেড়ে ঢাকায় আমরা গ্রামে। যেদিন বাবা গ্রামে আসবেন সেইদিন আমি দুপুর থেকে বাসস্টান্ডে, বাবা যখন বাস থেকে নামলেন তখন সন্ধা আমি দৌড়ে গিয়ে তার কোলে ওঠার চেষ্টা করলাম, পারলাম না কারণ বাবার দুহাত ভরা ঈদের বাজার। বাবা বাজার রেখে আমায় কোলে নিলেন আসেপাশের মানুষজন তাকিয়ে ছিল কারণ এত বড় ছেলেকে কোলে নেয়া কিছুটা অস্বাভাবিক ব্যাপার বটে।
বাবার কোল থেকে নামলাম বাড়ির দিকে রওনা দিলাম সারাটা রাস্তা কিন্তু আমি কিনবা বাবা কোনো কথা বললাম না। আবেগের যত প্রকাশ হল তা আমাদের নিশ্চুপতায়। আমার আবেগ প্রকাশের ধরনটা আমি বাবার কাছ থেকেই পেয়েছি। যাই হোক বাবা বাড়িতে এসে আবার বাজারের দিকে রওনা দিলেন। রাতে সত্টার দিকে জানা গেল কাল ঈদ হবে না সবাই তারাবী নামাজ পড়লেন তারপর রাতে ঘোষণা হল কাল ঈদ হবে। সেটাই ছিল আমার মার সাথে শেষ ঈদ। তারপর আমরা ঢাকায় আসি কিন্তু মা আমাদের সাথে আসতে পারেনি।
আরেকটা ঈদ এর কথা এই মুহুর্তে মনে পরছে, ক্লাস নাইনে উঠেছি হঠাৎ একদিন মাথা ব্যাথা হলো তারপর আর থামল না। প্রতিদিন সূর্যের প্রখরতার সাথে সাথে আমার মাথা ব্যথা বাড়তে থাকে আবার সূর্যের তেজ কমতে থাকার সাথে সাথে ব্যাথাও কমে। সারাদিন আমি মাথায় বালিশ চাপা দিয়ে শুয়ে থাকি সন্ধার পর বিছানা থেকে উঠি, ব্যাথা কমেছে কিন্তু ছেড়ে যায়নি। এর মধ্যে ঈদ চলে আসে, ঈদ এর দিনটা খুব খারাপ কাটে নামাজ পড়তে যেতে পারিনি ঔষধ চলছিল কিন্তু কোনো কাজ হত না। দুপুর পর্যন্ত আমি বিছানায় পরে রইলাম ব্যাথা তখন চরমে আমি চোখও ঠিক মত মেলতে পারছি না, হঠাৎ আমার মনে হলো আমি হয়ত আর বাচবো না। আমি তখন সিধান্ত নিলাম আমি ঘর থেকে বের হব এটা যে কত অদ্ভুত একটা ব্যাপার ছিল আমি এখন তা লিখে বোঝাতে পারব না। আমি বের হলাম, বাইরে এসে মনটা যেন কেমন করে উঠলো এত আনন্দ চারিদিকে যে আমি আমার ব্যাথা ভুলে গেলাম ছোটো ছোটো বাচ্চারা নতুন পোশাকে ঠিক যেন দেব শিশু লাগছে, বাচ্চামেয়েদের কাধে লাল টুকটুকে টাকার পার্স কারো হাতে চক চকে নতুন টাকা তারা হয়ত কোনো চটপটির দোকানে ঢুকে চটপটি খাচ্ছে মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে নতুন জামার দিকে কোথাও দাগ লেগে গেল কিনা, ঈদের দিনের খুবই সাধারণ দৃশ্য কিন্তু আমার কাছে অসাধারণ লাগলো আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখলাম। খুব ভালো লাগছিল সেদিন অনেক্ষণ হেটেছিলাম সন্ধা করে বাসায় ফিরেছিলাম। বাবা খুব চিন্তা করছিল।
আপনাদের অনেক সময় নষ্ট করলাম আশা করি নিজগুনে ক্ষমা করবেন। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক। ঈদ নিয়ে সবারই কিছু না কিছু স্মৃতি থাকে, আমার অনেক আছে। খুব ছোটবেলায় মা আমাদের ছেড়ে চলে যায়, তার চলে যাবার আগের একটা ঈদ এর কথা আমার মনে পরে। সেইবার ঈদে চাদ দেখা নিয়ে কি একটা ঝামেলা হল প্রথমে বলা হল যে চাদ দেখা যায় নাই কাল ঈদ হবে না তারপর রাত ১১ টা ১২ টার দিকে ঘোষণা হল চাদ দেখা গেছে কাল ঈদ হবে। আমার বয়স নয় কি দশ সেইবারই প্রথম আমাদের গ্রামে ঈদ করা ঈদ উপলক্ষে গ্রামে যাওয়া না পারিবারিক কিছু ঝামেলার কারণে ঈদের অনেক আগেই গ্রামে যাই সেখানের স্কুলেও ভর্তি হই বাবা ঢাকাতেই একা থাকেন। তো ওই ঈদে বাবা আমাদের সাথে ঈদ করার জন্য ঢাকা থেকে গ্রামে আসেন, ওই দিনটার কথা আমি কোনো দিন ভুলতে পারবনা। কেন ভুলতে পারবনা তা বুঝার জন্য একটা ঘটনা বলি, একদিন হলো কি আমি বড় মামার বাসায় গিয়েছি তো ঐখানে মামাত ভাইদের সাথে জমে যাওয়াতে আমি বাসায় আসবো না বায়না ধরলাম আম্মা শেষমেষ আমাকে রেখেই বাসায় চলে গেলেন, বাবা রাত এগারটায় বাসায় ফিরে দেখেন আমি নাই, বাবা সাথে সাথে মামার বাসায় রওনা হলেন সেখান থকে আমাকে ঘুম থেকে তুলে বাসায় নিয়ে এলেন, তারপর খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলেন। এইছিল বাবা আমার সম্পর্ক। সেই বাবা আমাদের ছেড়ে ঢাকায় আমরা গ্রামে। যেদিন বাবা গ্রামে আসবেন সেইদিন আমি দুপুর থেকে বাসস্টান্ডে, বাবা যখন বাস থেকে নামলেন তখন সন্ধা আমি দৌড়ে গিয়ে তার কোলে ওঠার চেষ্টা করলাম, পারলাম না কারণ বাবার দুহাত ভরা ঈদের বাজার। বাবা বাজার রেখে আমায় কোলে নিলেন আসেপাশের মানুষজন তাকিয়ে ছিল কারণ এত বড় ছেলেকে কোলে নেয়া কিছুটা অস্বাভাবিক ব্যাপার বটে।
বাবার কোল থেকে নামলাম বাড়ির দিকে রওনা দিলাম সারাটা রাস্তা কিন্তু আমি কিনবা বাবা কোনো কথা বললাম না। আবেগের যত প্রকাশ হল তা আমাদের নিশ্চুপতায়। আমার আবেগ প্রকাশের ধরনটা আমি বাবার কাছ থেকেই পেয়েছি। যাই হোক বাবা বাড়িতে এসে আবার বাজারের দিকে রওনা দিলেন। রাতে সত্টার দিকে জানা গেল কাল ঈদ হবে না সবাই তারাবী নামাজ পড়লেন তারপর রাতে ঘোষণা হল কাল ঈদ হবে। সেটাই ছিল আমার মার সাথে শেষ ঈদ। তারপর আমরা ঢাকায় আসি কিন্তু মা আমাদের সাথে আসতে পারেনি।
আরেকটা ঈদ এর কথা এই মুহুর্তে মনে পরছে, ক্লাস নাইনে উঠেছি হঠাৎ একদিন মাথা ব্যাথা হলো তারপর আর থামল না। প্রতিদিন সূর্যের প্রখরতার সাথে সাথে আমার মাথা ব্যথা বাড়তে থাকে আবার সূর্যের তেজ কমতে থাকার সাথে সাথে ব্যাথাও কমে। সারাদিন আমি মাথায় বালিশ চাপা দিয়ে শুয়ে থাকি সন্ধার পর বিছানা থেকে উঠি, ব্যাথা কমেছে কিন্তু ছেড়ে যায়নি। এর মধ্যে ঈদ চলে আসে, ঈদ এর দিনটা খুব খারাপ কাটে নামাজ পড়তে যেতে পারিনি ঔষধ চলছিল কিন্তু কোনো কাজ হত না। দুপুর পর্যন্ত আমি বিছানায় পরে রইলাম ব্যাথা তখন চরমে আমি চোখও ঠিক মত মেলতে পারছি না, হঠাৎ আমার মনে হলো আমি হয়ত আর বাচবো না। আমি তখন সিধান্ত নিলাম আমি ঘর থেকে বের হব এটা যে কত অদ্ভুত একটা ব্যাপার ছিল আমি এখন তা লিখে বোঝাতে পারব না। আমি বের হলাম, বাইরে এসে মনটা যেন কেমন করে উঠলো এত আনন্দ চারিদিকে যে আমি আমার ব্যাথা ভুলে গেলাম ছোটো ছোটো বাচ্চারা নতুন পোশাকে ঠিক যেন দেব শিশু লাগছে, বাচ্চামেয়েদের কাধে লাল টুকটুকে টাকার পার্স কারো হাতে চক চকে নতুন টাকা তারা হয়ত কোনো চটপটির দোকানে ঢুকে চটপটি খাচ্ছে মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে নতুন জামার দিকে কোথাও দাগ লেগে গেল কিনা, ঈদের দিনের খুবই সাধারণ দৃশ্য কিন্তু আমার কাছে অসাধারণ লাগলো আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত দেখলাম। খুব ভালো লাগছিল সেদিন অনেক্ষণ হেটেছিলাম সন্ধা করে বাসায় ফিরেছিলাম। বাবা খুব চিন্তা করছিল।
আপনাদের অনেক সময় নষ্ট করলাম আশা করি নিজগুনে ক্ষমা করবেন। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১:৩০