somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ - গ্লোবাল অর্থনীতি (২)

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৯ সকাল ৯:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বের জন্য দেখুন Click This Link


দ্বিতীয় পর্ব:
[বিভিন্ন আরও কিছু তথ্য ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে তথ্যের ভারে আটকা পরে গিয়েছিলাম। দেরির জন্য পাঠকের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই পর্ব কোন দিক থেকে শুরু করব তা নিয়ে একটা দোটানাও কাজ করছিল। আগের ঘোষণা মতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক জন্মানোর পশ্চাদ-পটভুমি নিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু করার কথা। কিন্তু পশ্চাদ পটভুমির span বা ওসার-বিস্তার কি হবে, কত পিছন থেকে টেনে কথা শুরু করব - এটা ছিল একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত; বেশি বিস্তারে গেলে প্রসঙ্গ খেই হারিয়ে ফেলবে জানি। আবার, বিস্তার বেশি না হলে কথা অস্পষ্ট থেকে যাবে। কাজেই এই দুইয়ের একটা ভারসাম্য ঠিক করতে বেশ সময় গিয়েছে। এই পর্ব অনেক বড়, এক পোষ্টে আটানো যায় নাই। ফলে প্রসঙ্গ পরের পোষ্টেও জারি রাখতে হয়েছে, চলবে। তবে পরের কনটিনিউ পোষ্ট, তৃতীয় পর্ব বলে প্রকাশ করব।]

International Monetary Fund (IMF) বা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের জন্ম ১৯৪৪ সালের ১-২২ জুলাই আমেরিকার নিউ হ্যাম্পসায়ারের ব্রেটন উড শহরের মাউন্ট ওয়াশিংটন হোটেলে; ২২ দিন ব্যাপী জারি এক কনফারেন্সের ফলাফলের মধ্য দিয়ে। এই কনফারেন্সের আয়োজক উদ্যোক্তা সংগঠন জাতিসংঘ অর্থাৎ যার নামে এই সভা ডাকা হয়েছিল। সভার নামটা ছিল এরকম: United Nations Monetary and Financial Conference at Bretton Woods - এটা তাই Bretton Woods Conference নামেও খ্যাত। ঐ একই সভা থেকে একই সাথে, আরও অনুষঙ্গ করণীয় হিসাবে, IBRD (International Bank for Reconstruction and Development) বা সংক্ষেপে World Bank এর জন্ম হয়।
জাতিসংঘের নামে আয়োজনটা আহ্বান হয়েছিল ঠিকই যখন জাতিসংঘ নিজেই সবেমাত্র জন্ম নেয়া শিশুও নয়, বরং এর হাতপা, আকার কেমন হবে সেই কথাবার্তার ফরমেটিভ স্তরে সে ছিল; তবে এই সন্তান যে গর্ভাবস্হায় এসে গেছে, আছে এমন একটা ঘোষণা (Declaration by United Nations, ১৯৪২) ইতোমধ্যে জারি হয়ে গিয়েছিল। জন্ম নিলে কারা সদস্য হয়ে জাতিসংঘ গঠনের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করবে, সেধরণের সভা তখনও ডাকা হয় নাই। কারণ, আলোচ্য জাতিসংঘের সদস্যপদ, ভোটিং রাইট - যেটা পরে পাঁচদেশের বিশেষ ভেটো ক্ষমতা দিয়ে সমাধান টানা হয় - এগুলো নিয়ে আলোচনা তখন নিগোশিয়েশনের পর্যায়ে ছিল। সেই স্বাক্ষর-সভা ডাকা হয় আইএমএফ-বিশ্বব্যাঙ্কের জন্মের আরও দশ মাস পরে, ৫০ দেশের প্রতিনিধি নিয়ে ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল আমেরিকার সান ফ্রান্সসিকোতে।
তাহলে কথা দাড়ালো এরকম: জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিক আইনী সংগঠন হিসাবে ১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল জন্ম লাভের আগেই কেবল Declaration by United Nations, ১৯৪২ এর উপর ভরসা করে জাতিসংঘের নামে Bretton Woods Conference ডেকে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্কের জন্ম হয়েছিল ১৯৪৪ সালের জুলাইয়ে। জাতিসংঘের অধীনেই আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান দুটো কাজ করবে - শুরুতে ভাবনা এমনটাই কাজ করেছিল, তাই। কিন্তু পরবর্তিতে আভ্যন্তরীণ পরিচালনার নিয়ম কানুন বিধি তৈরির দুই বছরে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক বেকে বসে। ব্যাঙ্ক, টাকার কারবারি, টাকার মার্কেটে (capital market) নিজস্ব আস্হা বিষ্তারের বিষয় আছে - ফলে নিজস্ব সিদ্ধান্তই শেষ কথা এর উপর কেউ নাই - এই যুক্তিতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক জাতিসংঘের সাথে সম্পর্ক আলগা করে ফেলে। বিস্তর ঝগড়াঝাটির পর শেষে একটা রফা হয়। বিশ্বব্যাঙ্কের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট John Jay McCloy এর আমলে (১৯৪৭-৪৯) ও উদ্যোগে, ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে ঘোষণা করা হয় আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক জাতিসংঘের specialized agency তবে, সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব বোর্ড অফ গভর্নরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ব্যপ্তকাল ১৯৩৯-৪৫, পরিসমাপ্ত হয় ১৯৪৫ সালের আগষ্টে। ১৯৪৪ সালের মাঝামাঝি থেকেই একদিকে যেমন পরিস্কার হচ্ছিল হিটলার ও তার অক্ষশক্তি (জর্মানী, ইটালি ও জাপান) হারছে, হারবে ফলে অন্যদিকে আগামি যুদ্ধোত্তর দুনিয়া বিশেষত ইউরোপের চেহারা আকার কেমন হবে, বিজয়ী মুল ক্ষমতাবানেরা কে কেমন দুনিয়া-ইউরোপ দেখতে চায়, কেমন দেখতে হলে পরস্পরের স্বার্থ, কনসার্ন, উদ্বেগগুলোর সমাধা হতে পারে, পরস্পরকে কোনখানে কতটুকু জায়গা করে দিতে পারে - এসব নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাকলিন রুজভেল্ট, সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ষ্টালিন ও বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের নেতৃত্ত্বে যুদ্ধের সম্ভাব্য বিজিত শক্তিত্রয় লম্বা সময় ধরে বিস্তর আলোচনা, নিগোশিয়েশনের মুলামুলি চালিয়ে গিয়েছিলেন। ১৯৪৪ সাল থেকে এই নিগোশিয়েশন তুঙ্গে উঠলেও মোটামুটি ভাবে ১৯৪১ -১৯৪৫ সাল - এই সময়কাল ছিল আজকের পৃথিবীকে আমরা যেমন দেখছি তার নির্ধারক ঘটনাগুলো ভ্রুণ আকার লাভের সময়। প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতিসংঘ, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্কের তাই একই আলোচনা নিগোশিয়েশনের সমবৈশিষ্টীয়, সমকালীয় ফলাফল। আবার প্রাতিষ্ঠানিক কাজকারবার শুরুও করে প্রায় একই সময় থেকে। যুদ্ধোত্তর দুনিয়ার রাজনৈতিক দিক মিটমাটের প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতিসংঘ আর অর্থনৈতিক দিক মিটমাটের বিষয় যেমন, মুখ থুবড়ে পড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, যুদ্ধের রসদ হিসাবে ইউরোপকে আমেরিকানদের দেয়া দেনা পরিশোধের উপায়,ইউরোপকে নতুন ঋণ ও যুদ্ধোত্তর পুণর্গঠন ইত্যাদি - সামলানোর জন্য আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্ক - এভাবে একই বৃন্তের তিন ফুল জাতিসংঘ, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাঙ্কের আবির্ভাব। তিনটা আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসাবে হাজির হলেও একই উদ্দেশ্যে গাথা বেনুনীর মত (interwoven) এরা সম্পর্কিত।

উদ্দেশ্যের এই গাথা বেনুনীর আসল কনসার্ন আবার একটাই, একটা "collective security" খুঁজছিল সকলে। এটা হয়ত বুঝা সহজ প্রত্যেক রাষ্ট্র নিজের security এর জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে ছিল, কিন্তু কেন, কার বিরুদ্ধে security, নিরাপত্তা? এই প্রশ্ন্বের উত্তর সহজ নয়। সাদা চোখে অনেকের মনে হতে পারে এটা ত্রি-রাষ্ট্র-শত্রুঅক্ষশক্তি - জার্মান, ইটালি ও জাপানের - বিরুদ্ধে পশ্চিমের সকলের। আমরা অনেকে এভাবেই ইতিহাস বুঝে এসেছি। কিন্তু এই ত্রি-রাষ্ট্র কী বাকীদের সবসময়ের শত্রু? ছিল বা আছে? ঐ তিন রাষ্ট্র ও তার গঠন, কাঠামোই কী সব সমস্যার মূলে?
না! ইতিহাস তা বলে না। কাছেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) ঘটনাবলিতে যদি দেখি - ইটালি ও জাপান প্রত্যেকেরই অবস্হান তখন জার্মানের বিরুদ্ধে বিজয়ীদের দলে। বৃটিশ ও ফ্রান্স পরস্পরের সাথে অনেক যুদ্ধ লড়েছে। কাজেই ঐ তিন বা কিছু দেশকে শত্রু চিহ্নিত করে পৃথিবীর শান্তি অন্বেষণের বয়ানের গালগল্পটা সুবিধার না, ধোপে টিকে না। কাজেও আসে না। এছাড়া, বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নাই, যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষিতে পৃথিবীর শান্তি কথা বলছে, "collective security" খোঁজ করছে - প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাসের পিছনের ৩০০ বছরে, কলোনীর যুগে কী তাদের যুদ্ধ ও পরদেশ দখল করেই কাটেনি, সমৃদ্ধ হয়নি? যুদ্ধ খুব খারাপ জিনিষ এমন একটা ধারণা তখন ছিল না, এখন দাঁড় করাতে চাইছে কেন? কিসের ভিত্তিতে, নতুন কোন নৈতিকতার ভিত্তিতে? কলোনী দখল পাল্টাদখলের যুগের নিজেদের মধ্যে এই তিনশ বছরে যুদ্ধই কী তাদের সমৃদ্ধির একমাত্র হাতিয়ার ছিল না?
কাজেই কিছু দেশকে শত্রু চিহ্নিত করে পৃথিবীর শান্তি অন্বেষণের বয়ান গালগল্প দিয়ে আমরা ইতিহাস বুঝতে পারব না, ব্যাখ্যা পাব না - এটা পরিস্কার বুঝা যাচ্ছে। কার বিরুদ্ধে "collective security" তা জানতে আমাদের অন্য কোথাও খুঁজতে হবে, শান্তির গালগপ্পে বুঁধ হলে চলবে না।
সেখানে যাবার আগে জাতিসংঘের প্রসঙ্গ যেটুক উঁকি দিয়ে ফেলেছি তার একটা আপাত হাল করে নেই। বিস্তারে যেতে এখন পারব না, তবু যেটুকু পারি শিরোনামে বলব।

জাতিসংঘ বলে কিছু একটা যে হবে ঘোষণা আকারে তা প্রথম আসে ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি; ২৬টা জাতিরাষ্ট্রের এক যৌথ ঘোষণা(Declaration by United Nations, ১৯৪২) ছিল সেটা। এই ২৬ রাষ্ট্রের এককাট্টা হবার কারণ - এরা সবাই ত্রি-রাষ্ট্র-অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে স্ব স্ব দেশে নানান মাত্রায় যুদ্ধে রত ছিল, যেন অপেক্ষায় ছিল একটা জোট, ত্রাতা, মাতব্বরের; একটা টার্নিং পয়েন্ট বা ট্রিগার পয়েন্টর দরকার ছিল। ০৭ ডিসেম্বর ১৯৪১, আমেরিকার নিজের বুকে পার্ল হারবারে জাপানী বোমা আক্রমণ ছিল সেই ট্রিগার পয়েন্ট। জাতিসংঘ ঘোষণার মাত্র ২৪ দিন আগের ঘটনা এটা। বোমা আক্রমণের ফলে জাপান-আমেরিকার পরস্পরের বিরুদ্ধে , আমেরিকার বিরুদ্ধে জার্মানের হিটলারেরও যুদ্ধ ঘোষণা হয় এতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর প্রথম দুই বছর নিরপেক্ষতার ভান করে আমেরিকার সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেই ইউরোপ বিশেষত বৃটিশদেরকে সহায়তা করে গিয়েছিল - এবার তার সরাসরি অংশগ্রহণ, শুরু। হামলার দিনকয়েকের মধ্যে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনষ্টন চার্চিলের আমেরিকা সফর - এসবের ফলাফলে এই যৌথ ঘোষণা। ঘোষণাটার নীট মানে ও উদ্দেশ্য হলো, জোট পাকানো; কে কে এই যুদ্ধে ত্রি-রাষ্ট্র-অক্ষশক্তিকে শত্রু মানছে তাদের জয়লাভের লক্ষ্যে এক প্রতিজ্ঞাপত্র। প্রতিজ্ঞার পয়েন্ট মাত্র দুইটা: ১. স্বাক্ষরকারী সকলে নিজ নিজ সম্ভাব্য সমস্ত রিসোর্স কাজে লাগিয়ে এক জোটে যুদ্ধে নামবে। ২. কেউ আলাদা আলাদাভাবে শত্রুর সাথে অস্ত্রবিরতি বা শান্তি চুক্তি (separate armistice or peace with the enemies) করবে না।
তবে এই প্রতিজ্ঞাপত্র শুরু হচ্ছে এক তাৎপর্যপূর্ণ বাক্য দিয়ে। মাস কয়েক আগে, আমেরিকার নি্উফাউন্ডল্যান্ড উপকুলের এক জাহাজে বসে ১৪ আগষ্ট ১৯৪১ সালে চার্চিল ও রুজভেল্টের আলোচনা উভয়ের যৌথ ঘোষণা হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল। Atlantic Charter নামে এর খ্যাতি আছে। জাতিসংঘ ঘোষণা বা ২৬ দেশের প্রতিজ্ঞাপত্র Atlantic Charter এর ঘোষণাকে রেফারেন্স দিয়ে নিজ ঘোষণার অঙ্গ বলে মেনে (Having subscribed) নিচ্ছে। বলছে Atlantic Charter এ উদ্দেশ্য ও নীতির কথা যা বলা আছে আমরা তা মেনেই Declaration by United Nations ১৯৪২ ঘোষণায় স্বাক্ষর করছি; "to a common program of purposes and principles embodied in the Joint Declaration of the President of the United States of America and the Prime Minister of the United Kingdom of Great Britain" ।
আসলে Declaration by United Nations, ১৯৪২ কে যদি যুদ্ধের খরচ খরচা রসদ সংস্হানের বিপদে পড়া ২৬ দেশের আমেরিকাকে দেয়া প্রতিজ্ঞাপত্রে আকুতি জানানো বলি তবে Atlantic Charter ১৯৪১ হলো একইভাবে যুদ্ধের খরচ খরচা রসদ সংস্হানের বিপদে পড়া বৃটিশদের আমেরিকাকে দেয়া প্রতিজ্ঞাপত্র ও আকুতি। শান্তির নামে (peace-loving) পরদেশ দখল অন্যায়ের বিরুদ্ধে নৈতিক বয়ান (threaten, aggression outside of their frontiers) এর কথা বলে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের মন জয়ের এক চেষ্টা। কারণ, "collective security" বা সম্ভাব্য জাতিসংঘ ধারণার পক্ষে কথা বললেই একমাত্র তাঁর মনজয় সম্ভব। তবেই তিনি প্রত্যক্ষে হিটলারের বিরুদ্ধে বৃটিশের পক্ষে দাড়াবেন। রুজভেল্টের চিন্তা যুদ্ধ পরবর্তী দুনিয়ায় বিশ্বক্ষমতা শক্তির ভারসাম্য নিয়ে, কি চেহারায় একে আঁকতে চান সেটা নিয়ে। Atlantic Charter ১৯৪১ এর পূর্ণ মূল বয়ান নিয়ে একটা আলোচনা এক্ষেত্রে ইনটারেসটিং হতে পারে। মনে রাখতে হবে, চার্চিল যখন Atlantic Charter ১৯৪১ পরদেশ দখল অন্যায়ের বিরুদ্ধে নৈতিক বয়ান ফতোয়া দিচ্ছে যার ভিত্তিতে 'শান্তির' একটা জাতিসংঘ হয় হয় করছে তখনও কিন্তু আমরা তাঁর কলোনীগ্রস্হ, ভারতবর্ষ মানে বৃটিশ ইন্ডিয়া। বৃটিশ কলোনীপ্রভু শার্দুলের এই উল্টা বয়ানে মিউ মিউ আওয়াজ সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ।

যদিও আমরা গদগদ হয়ে "শান্তির" নতুন হদিস আনার প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতিসংঘকে দেখি। জাতিসংঘের জন্মের ইতিহাস ব্যকগ্রাউন্ড বলতে গিয়ে Atlantic Charter, Declaration by United Nations (আরও একটা আছে Yalta Agreements, February 11, 1945) - এসবের কথা সম্ভ্রম সম্মানের সাথে বলতে দেখি। কিন্তু আমরা যদি সাহসের সাথে এই চুক্তিগুলোকে নির্মোহ পর্যালোচনা করতে বসি তাহলে বুঝতে পারব - দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এমন কী ঘটনা ঘটেছিল যাতে ৩০০ বছরের কলোনী লুট করে আনা সম্পদ ইউরোপের কলোনী ওস্তাদদের থেকে হস্তান্তর হয়ে আমেরিকাকে এক নম্বর বিশ্বশক্তির ভুমিকায় বসিয়ে দিল। পরদেশ দখল অন্যায় - এই নৈতিকতার চ্যাম্পিয়ান চার্চিলের Atlantic Charter, বিশ্বশান্তি আজ কোথায়? নাকি বিশ্ব আজ আরও বেশি করে অশান্ত? জাতিসংঘ কী "collective security" নিশ্চিত করতে পেরেছে? না কী ২০০৩ সালে বুশ ইরাকে হামলার প্রসঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সম্মতি আদায় করতে না পেরে জাতিসংঘকেই ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিয়েছে? অবশেষে সম্মতি ছাড়াই নিজ উদ্যোগে বুশ-ব্লেয়ার ইরাকে হামলা করেছে?
তাহলে "collective security" এর অর্থ কোথায় খুঁজব? কী ব্যাখ্যা তার। এনিয়ে আগামি পর্বে দেখা হবে। এছাড়া IMF প্রসঙ্গে ফিরতে হবে।

১৬টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×