somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোবাইল চোরের কেরামতিতে আমি রীতিমত মুগ্ধ!!

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইউনিভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে আমি একটা অ্যাড ফার্মে পার্টটাইম জব করতাম। একদিন স্টুডিওতে ঢুকে দেখি তানভীর ভাই একটা ইয়াং ফেস্ট এর স্টেজ ডিজাইন করছে। ব্যাকড্রপের নিচের দিকে অনেকগুলো অ্যাবসট্রাক্ট ইয়াং ফিগার, এর মধ্যে একটা ফিগার ছিলো ক্রিকেট ক্যাপ উল্টা করে মাথায় দিয়ে পিঠে হ্যাভারস্যাক ঝুলিয়ে হেটে চলা এক যুবকের। তানভীর ভাই ওইটা দেখিয়ে বললেন, ‘এইটা তোমাকে মনে করে এঁকেছি’। শুনে মনে নিশ্চয় কিছুটা ভালো লাগা জমেছিলো, আজও তাই ঘটনাটা মনে আছে।

পিঠের ওই ব্যাগ আমার ট্রেডমার্ক। স্মরণাতীত কাল থেকেই পিঠে ব্যাগ নিয়ে ঘোরাঘুরি করা আমার অভ্যাস। পুরোনো বন্ধুরা দেখা হলেই বলে, ‘কি রে, এখনও ব্যাগ নিয়েই ঘুরিস?’ আমি তখন কিছুটা গর্ব আর কিছুটা লজ্জা মাখানো হাসি হাসতে থাকি। কারণ ওই ব্যাগ তখনও আমার সাথেই রয়েছে।

কিন্তু গতকাল ওই ব্যাগই 'কাল' হলো। এক চোর বাবা আমার পিঠে থাকা অবস্থাতেই আমার ব্যাগ সাফা করে দিয়েছে। এত কম সময়ের মধ্যে সে এই কম্ম করেছে যে আমি রীতিমত ইমপ্রেসড! আমার কপাল খারাপ যে ওই হাত সাফাইয়ের মধ্যে আমার যক্ষের ধন মোবাইল ফোনসেটটাও পড়ে গেছে।

ঘটনা হলো, গতকাল অফিস শেষে পুলিশ প্লাজার ওখান থেকে হাতিরঝিলের বোটে উঠলাম, রামপুরা যাবো। বোটে ওঠার পর ফোনে কিছু একটা দেখতে দেখতেই রামপুরা চলে আসলো, নামার সময় আমার সেই ব্যাগটা কোলের উপর থাকায় ফোনটা ব্যাগের পকেটে চালান করে দিয়ে ঘাড়ে ঝুলিয়ে নেমে গেলাম; যেহেতু রাস্তা পার হয়ে টেম্পুতে উঠে আবার ফোনটা বের করতে হবে।

এরপর যথারীতি রাস্তা পার হয়ে টেম্পুতে উঠার লাইনে দাঁড়ালাম, মাত্র ৩ থেকে ৫ মিনিটের মামলা। লাইনে দাঁড়িয়ে পিঠ থেকে ব্যাগ হাতে নিয়েই দেখি মামলা খতম, পয়সা হজম। সাথে আমার সাধের ফোনটাও। এমন কি ইয়ার ফোনটাও। এত কম সময়ে এত নিখুঁতভাবে কাজটা করেছে, পুরো স্যালুট ওই ব্যাটাকে। কিচ্ছুটি টের পেলাম না। আমাকে ডাকলো বাবা আর আমি হয়ে গেলাম হাবা!!
তবে ওই চোর ব্যাটা যদি বুনো ওল হয়, আমি তবে বাঘা তেতুল। ইতোমধ্যেই ওই ফোনসেট র‌্যাবের সার্ভেইল্যল্স লিস্টে যুক্ত হয়ে গেছে। ফোন অন করলেই কপ করে গিয়ে ঘেটি ধরে নিয়ে আসা হবে...

আমার ফোনটা ছিলো স্যামসাং গ্যালাক্সি এস সেভেন। লন্ডনে থাকা এক বন্ধু এই ফোনটা আমাকে দিয়েছিলো বছর দেড়েক আগে। না হলে এই ফোন কেনার সাধ্যি আমার কোনোকালেই হতো না। সেই সুন্দর ফোনটা হারিয়ে এমনিতেই মন খারাপ, তার উপর কাল রাতে লন্ডনে তিথিকে ফোন দিয়ে বলতেই এমন এক ঝাড়ি দিলো যে দুঃখ আরেক ডিগ্রি বেড়ে গেল চড়চড় করে... আমার না কি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার যোগ্যতা নেই...

একবার খালি পেয়ে নি, ব্যাটারে, সব রাগ ঝাড়া হবে ওই চোরের পিঠে ‘এনশাল্লাহ’। এবারের সংগ্রাম.. .. ..

ছবি কৃতজ্ঞতা: www.jiyowoman.com
ফটোগ্রাফার: অনাবিষ্কৃত

সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:২৫
২৪টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×