somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভু টু ক চা নে র ডা য় রি ✍ এই পরবাসে আবারো ঈদ আসছে

৩০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

⌚ তখন আমার ছোটবেলা চলছে। আমাদের মা পরিবারের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী! বাবা কেবল গুণমুগ্ধ প্রজার মতো নিয়মিত খাজনা দিয়ে যান। তা থেকেই মা পরিবার নামক এই ছোট সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক এবং পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় সামলিয়ে চলেন। সেই স্বাভাবিক চলমানতায় গতি কিংবা ব্যাঘাত হয়ে আসতো ঈদ। কারণ সেই ঈদে আমাদের পরিবারের সাথে আরো যুক্ত হতো সাহায্যপ্রত্যাশি কিছু নতুন মুখ।


তখনকার ঈদে নতুন কাপড় অবধারিত ছিলো। আমাদের নিয়ে যাওয়া হতো শহরের রকমারী বিপনি বিতানগুলোতে। একে তো হঠাৎ শহরে তার উপর এতো এতো নতুন কাপড়! আমি যেনো ভেবাচ্যাকা খেয়ে যেতাম। যা কিছু দিনের পর দিন রাতের পর রাত ভেবে আসতাম কিনবো বলে, তার প্রায় সবই ভুলে যেতাম। দোকানী যা দেখাতো তাই ভালো লাগতো। আমি শুধু কাপড় দেখতাম আর মায়ের মুখের দিকে তাকাতাম। আমি দেখতাম তবে মুল পছন্দের গ্রীন সিগন্যাল আসতো মায়ের কাছ থেকেই। তিনি পছন্দ করে আমাকে জিজ্ঞেস করতেন, আমি হেসে মাথা নাড়াতাম। এভাবেই কিনা হতো আমার ঈদের পোষাক। তবে মায়ের একটা বিশেষ পছন্দের কারণে আমাদের বেশ ভুগতে হতো। তিনি আমাদের যা কিনে দিতেন তা বেশ বড় এবং লম্বা হতো। পেন্ট কিনলে যতদিন পর্যন্ত সেই পেন্টের সমান লম্বা না হয়েছি ততদিন পর্যন্ত ভাঁজ দিয়েই পড়তে হতো। শার্টের ক্ষেত্রেও সেই একই অবস্থা। সাইজে আসতে আসতে পুরনো হয়ে যেতো শার্টটা। তাও সেই নতুন কাপড়গুলো পড়া হতো বিশেষ বিশেষ দিনে। আমরা মায়ের সেই সিস্টেমের সাথে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলাম এবং মানিয়েও নিয়েছিলাম ছোটবেলা থেকেই।

তারপর কত ঈদ এলাগেলো। বড়বেলাতেও ঈদ এসেছে, এখনও আসে। এই প্রবাসে কতগুলো ঈদ এসে চলেও গেলো, আবারো আসছে। আমি কেবল সেই অবুঝ বেলার না পাওয়ার দুঃখে কান্না আর পাওয়ার সুখে হাসিমাখা শৈশব হারানো বালকটাকে খুঁজি। যার কাছে মায়ের দেয়া ভাঁজ করা লম্বা পেন্ট, ইন করা বড় শার্ট আর কখনো কখনো নতুন জোতা পরে ঘুরে ভেড়ানোর দিনটাকেই ঈদ মনে হতো। মনে হতো এই বুঝি ঈদ; এই বুঝি ঈদের আনন্দ!

আজ প্যারিসের অলিগলিতে আমি আর কোনো লম্বা পেন্ট ভাঁজ দিয়ে পরা অবুঝ বালক দেখি না; কেবল দেখি এক যুবক ভীষণ ব্যস্ততা নিয়ে পথ হাঁটে। এখানে কেউ আর তার শার্টটা ছোট হওয়ার জন্য নিজেকে বড় বানাতে গাছের ডালে ঝুলে না; নতুন কাপড়ের দিন গুণে না। কেবল গুণে মাস শেষ হতে আর কতদিন বাকী! পকেটের হিসেবে প্রত্যাশার মিল হবে তো? নাকি আবারো আগামীতে হবে বলে কম্প্রোমাইজ করে নিতে হবে! এই যে প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার মধ্যে অদৃশ্য সেতু, সে কেবল যেখানে ঝুলে থাকে। আর ভাবে, এবারের প্রেরিত অর্থে সবার প্রত্যাশা মিটবে তো! ©

ফরাসি বাঙালি অনলাইন কমিউনিটি

আগের লেখাঃ

✍ রাতের ট্রেনে পিকাসো ও বাঙালি যুবক এবং আমার হ্যালুসিনেশন।
লিংকঃ Click This Link

✍ ঠিক সন্ধ্যায়; যখন প্যারিসে ঘণ্টা মিনিট ও সেকেন্ডের কাটা এক হয়!
লিংকঃ Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×