somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার পৃথিবী (দুই খন্ড একত্রে)

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বদ্ধ ঘরটাতে পায়চারী করছি। কিছু একটা ভাঙতে ইচ্ছে হচ্ছে। মোবাইলটা তুলে নিয়েও দ্রুত ড্রয়ারে রেখে তালা লাগিয়ে দিলাম। মধ্যবিত্তদের এরকম ভাঙচূড় করার শখ রাখতে নেই। কিন্তু আজকে রাগটা কিছুতেই কমছে না। কিছু একটা করতেই হবে! হঠাত্ নজর পড়ল আর্মি নাইফটার দিকে। শান দিয়ে ধারাল করে নিয়েছি। খুবই কাজের জিনিস। হঠাত্ মনে পড়ল আমি চলে গেলে বাবামার কি হবে, ছোট্ট বোনটার কি হবে? নাহ! ওদের জন্য ছোট ভাইটা, ওর বউ আছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে এক মুহুর্তে মনস্থির করে ফেললাম। ঝটপট ব্যাগে কাপড়চোপড় আরও টুকিটাকি জরুরি জিনিস নিয়ে নিলাম। এভাবে আর সহ্য করা যায় না! সবাই শুয়ে পড়েছে। বাবামার ঘরে একবার উঁকি দিয়ে তাদের শেষবারের মত দেখে নিলাম। ছোট পৃথা এইটুকু বয়সেই আমার মত একা থাকতে শিখে গেছে। ওর জন্য আলাদা করা ঘরটাতে নিঃশব্দে ঢুকলাম। দেবশিশুর মত চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে আমার বোনটা। ওর ছোট হাতটা ধরে নিঃশব্দ কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম। আমার ছোট্ট পরীটা যেন ঘুমের ভেতরেই টের পেয়ে গেল আমার কষ্ট। আমার গলা জড়িয়ে ছোট মুখখানা আমার কাঁধে গুজে দিল। ওর হাতের কালশিটেটা দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। ওর হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে বেড়িয়ে এলাম।
হেঁটেই চলে এলাম রেলস্টেশনে। জানতে পারলাম পরবর্তী ট্রেন ছাড়বে ভোর পাঁচটায়। আরও চার ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। স্টেশনের একটা খালি বেন্ঞ্চে এসে বসলাম। আমি আর্জু হাসান। আমি জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী। দেখে স্বাভাবিক মনে হলেও আমি স্বাভাবিক নই। সাধারণ মানুষদের মত সবার সাথে আমি সখ্যতা গড়ে তুলতে পারিনা। আমি নতুন মানুষদের ভীষণ ভয় পাই। ছোটবেলা থেকেই সবসময় আড়ালে আড়ালে থেকেছি সবার থেকে। বাবামা আমি স্বাভাবিক নই জানতে পারার পর থেকে আমার প্রতি অবহেলা শুরু করে। করবে নাই বা কেন? ঘরের বড়ছেলে আমি অথচ এরকম অস্বাভাবিক! তাদের এরকম অকমর্ন্য ভীতু ছেলেকে পালার কোন ইচ্ছে নেই। আমাদের বাড়ির পাশে এক নদী ছিল, সারাদিন নদীর পাড়েই আমার কেটে যেত। নদীর সাথে কথা বলতাম। এরপর আরিফের জন্ম হল। ওকে নিয়ে বাবামার সুখের অন্ত ছিল না। আরিফের জন্ম উপলক্ষে আমাদের দূরের কাছের বেশ কয়েকজন আত্নীয়কে দাওয়াত দেয়া হল।রাবু কাকার সাথে তখনই আমার প্রথম দেখা। রাবু কাকা কোন এক অদ্ভুত কারণে আমাকে ভীষণ পছন্দ করতেন। রাবু কাকাই প্রথম আবিষ্কার করলেন আমার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা। বাবামাকে তিনি খুব আগ্রহ নিয়ে জানালেও বাবামা পাত্তা দিলেন না।
রাবু কাকা আমার অবস্থা নিমিষেই বুঝতে পারলেন। তিনি নিজে আমাকে স্কুলে নিয়ে গেলেন। হেডস্যার আমার পরীক্ষা নিয়ে বেশ অবাক হলেন। তিনি আমার অবস্থা বুঝতে পেরে আমাকে ক্লাস ছাড়া শুধুমাত্র পরীক্ষাগুলো দেবার সুযোগ দিলেন। রাবু কাকা আমার জন্য একজন টিউটর ঠিক করে দিলেন। আমি ধীরে ধীরে লেখাপড়ায় খুব ভাল ফলাফল দেখাই। আমার এত ভাল ফলাফল সত্ত্বেও বাবামা কেন যেন আমার উপর সন্তুষ্ট ছিলেন না। হয়ত আমার সেই জন্মগত অস্বাভাবিকত্বের কারণেই। বাসায় মেহমান আসলে আমি দরজা বন্ধ করে লুকিয়ে থাকতাম। তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করত, বাবামাও যোগ দিত সেই হাসিতে। আমার ভীষণ কান্না পেত। ছুটে নদীর পাড়ে চলে যেতাম। এরই মাঝে আমি এইচএসসি পাস করলাম। সবার মুখেমুখে আমার নাম। বাহিরে সবার কাছে আমার নামে গর্ব করলেও বাবামা কখনই আমাকে একটুও অনুপ্রেরণা দেয়নি। আমি তাদের কাছে একটা বোঝা ছাড়া আর কিছুই না। বুয়েটে টিকে গেলাম আমি। রাবু কাকা এসে আমাকে ভর্তি করিয়ে দিয়ে গেলেন। তবে বললেন এখন থেকে আমাকে ক্লাস করতে হবে, মানুষের সাথে মিশতে হবে। আমি ভীষণ ভয় পেয়ে গেলাম। ভয়ে ভয়ে ক্লাস করলাম।
আমি জানতাম আমি ছাড়া পৃথিবীর আর সবাই স্বাভাবিক। তবে এই প্রথম মানুষের ভীড়ে এসে আমি উপলদ্ধি করলাম আমার চেয়েও এরা অনেক বেশী অস্বাভাবিক। আমি বুঝিনা আমার নতুন বন্ধুরা কেন শুধু আমাকে পরীক্ষার সময় হলে খাতির করে এবং আমার নোটগুলো নিয়ে নেয় অথচ তারা যখন কোথাও যায় তখন আমাকে দেখেও না দেখার ভান করে। আমি বুঝিনা আমার বন্ধু সাজিল কিভাবে এতগুলো মেয়েকে ভালবাসতে পারে! আমি বুঝিনা কেন সে সবগুলো মেয়েকে একসাথে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারে না। আমি বুঝিনা গাড়ি করে আসা ঐ সুজানা মেয়েটি কেন ঐ নেশার গুড়োগুলো সস্তা ছেলেদের সাথে বসে নাকে টেনে নেয়। এছাড়াও আমি বুঝি না ঐ ছেলেগুলো কেন নিজেদের বন্ধুদের সাথে এত মারামারি করে। আমি বুঝতে চাই কিন্তু বুঝতে পারি না। জিগ্যেস করার মতও কেউ নেই।
সবচেয়ে বেশী অদ্ভুত লাগে রূপা নামের মেয়েটাকে। ও সবার চেয়ে ব্যাতিক্রম হলেও দুর্বোধ্য আমার কাছে। আমি বুঝতে পারিনা কেন ও মাঝে মাঝে নিজে রেধে এনে আমাকে খাওয়ায়, বুঝিনা কেন কাজ আছে বলে আমাকে নিয়ে কোনও পার্কে, রেস্টুরেন্টে, সিনেমা হলে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুপচাপ বসে থেকে কিছু না বলে চলে যায়। তবে ও যেদিন আমাকে নদীর পাড়ে নিয়ে যেত সেদিন আমি ভীষণ খুশি হতাম। আমার খুশি দেখে সেও খুব খুশি হত। খালি পায়ে আমার সাথে নদীর পাড়ের ভেজা বালির উপর হাঁটত। শীতের শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটতে শিখেছি আমি ওর কাছ থেকে। একদিন ক্লাসে গিয়ে শুনি রূপার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, সেদিনের পর ও আর আসবে না। সেদিন খুব অদ্ভুত একটা কাজ করে ও। ইন্সটিটিউট থেকে বের হয়ে যাবার পূর্বমুহূর্তে সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছিল ভীষণ। তারপর দৌড়ে গাড়িতে উঠে চলে গিয়েছিল। সবাই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে ছিল আমার দিকে। ওর সেদিনের সেই আচরণের ব্যাখ্যা আমি খুঁজে পাইনি। তবে ওর কথা মনে পড়লে বুকের কোথায় যেন একটু ব্যাথা হয়।
একদিন বাসায় ফিরে শুনলাম রাবু কাকা ভীষণ অসুস্থ। ছুটে গেলাম আমি তার বাসায়। রাবু কাকা কথা বলতে পারছিলেন না। অনেক মানুষের ভীড় ওনাকে ঘিরে। আমাকে দেখে কাছে ডাকলেন ইশারায়। কানেকানে বললেন,
-আমার সময় হয়ে গিয়েছে আর্জু। তোকে একা রেখেই চলে যেতে হচ্ছে। তবে তোর জন্য একটা জিনিস রেখে যাচ্ছি।
রাবু কাকা আর কিছু বলতে পারেনি। পরে শুনেছি রাবু কাকা আমার জন্য একটা বাড়ি রেখে গেছে সাগরপাড়ে। আমি বুঝিনা মানুষ কেন মারা যায়। কিছুদিন পর মা অসুঃস্থ হয়ে পড়লেন। ওনারা কেউ আমাকে পছন্দ না করলেও আমি তাদের অপছন্দ করি না। বাবা বাসায় ছিল না, আরিফও তার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বেরিয়েছে। তবে আরিফের বন্ধু যে কেবল একটা মেয়ে সেটা আমি বুঝতে পারিনি। মাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার আমাকে ডেকে নিয়ে আমার কোলে ছোট্ট একটা পুতুল তুলে দিলেন। ছোট্ট পৃথার মুখের দিকে চেয়ে আমি আমার সমস্ত কষ্ট ভূলে গেলাম। নতুন একটা জগত্ অনুভব করলাম। ডাক্তার জানালেন ও আমার বোন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা এলেন। ছোট পৃথাকে দেখে তিনিও অনেক খুশি। পৃথার নাম রাখার সময় মিনমিনিয়ে আমি বলেছিলাম পরী রাখার জন্য, কিন্তু কেউ কেন যেন শুনল না। তাতে কি! সবাই সবার কথা শোনেনা আমি জানি। পৃথাকে দেখে আমার নতুন জীবন শুরু হল। ও সামান্য হাঁচি দিলেও আমার ভয়ে গা কেঁপে উঠত। ওর প্রতিটি মুহুর্তে বেড়ে ওঠার সাক্ষী আমি। ওও আমাকে ভীষণ ভালবাসত। বাবামা এটা পছন্দ করত না। তারা ভাবত আমার সাথে পৃথা বেশী সময় কাটালে পৃথাও আমার মত অস্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আমাকে নিষেধ করে দেয়া হল পৃথার কাছে যাওয়ার জন্য। আমি শুনলেও পৃথা শুনত না। এরই মাঝে আমি পাস করলাম। পড়াশোনার পার্ট চুকে গেল, একটা সফটওয়্যার কোম্পানীতে চাকরি পেলাম ভাল বেতনে। বেতনের টাকা আমি দুভাগ করতাম সবার অজান্তে। একভাগ রাখতাম পৃথার জন্য আরেকভাগ তুলে দিতাম মার হাতে। ছোট একটা অংশ নিজের নামে রাখতাম। একদিন বাড়ি ফিরে দেখি আরিফের সেই মেয়ে বন্ধু তার মাবাবাসহ বসে আছে ঘরে। জানতে পারলাম আরিফ তাকে বিয়ে করেছে বাসায় না জানিয়ে। আমি বুঝতে পারলাম না আরিফ কেন কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করবে! ও তো আমার মতো না। মেয়েটা খুব ভাল। খুব অল্পদিনেই সবাইকে আপন করে নিল। যদিও আমাকে এড়িয়ে চলত। তাতে আমি অবাক হতাম না। এরই মাঝে বাবামা একদিন আমাকে বিয়ে করার কথা বলল। আমি বুঝতে পারলাম না বিয়ে করতে হবে কেন! আমার তো কাউকে প্রয়োজন নেই। বেশ তো আছি। অচেনা কারও সাথে আমি থাকতে পারব না। বাবামা আমার কথায় বেশ বিরক্ত হলেন। তারা জানালেন পাড়াপড়শী নাকি বড় ভাইকে বিয়ে না দিয়ে ছোট ভাইয়ের বিয়ে করিয়ে দেয়া নিয়ে বেশ আজেবাজে কথা ছড়াচ্ছে। আমি বুঝতে পারলাম না আজেবাজে কথা কিভাবে ছড়ায়। আমি বিয়ে করতে রাজি হলাম না। প্রতিদিন বাবামা নানাভাবে আমাকে বুঝিয়ে, ভয় দেখিয়ে রাজি করাতে চায় কিন্তু আমি রাজি হইনা। আজ রাতেও আমাকে অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছেতাই বলে বকাবকি করছিল। এমন সময় পৃথা এসে আমার গলা জড়িয়ে ধরে কোলে চড়ল। তা দেখে মা ভীষণ রেগে গেল। পৃথাকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে আমার থেকে কিন্তু সে শোনে না। কাছেই হাত-পাখা ছিল। তুলে নিয়ে বাড়ি দিল পৃথাকে। আবার মারতে গেলে আমার শরীর দিয়ে ওকে আড়াল করলাম। আমাকে ইচ্ছে মত মেরে চলে গেল, বলে গেল আমাকে মরে যেতে, বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে। পৃথা ভীষণ কাঁদছিল ব্যাথা পেয়ে। ব্যাথা পেয়েছে ভেবে আমি ওর হাত ম্যাসাজ করে দিতে গেলাম। ও বলল ও কাঁদছে আমাকে এত বকা দেয়ায়, মারায়। আমি বুঝতে পারলাম না ঐ কারণে ও কাঁদবে কেন? হয়ত স্বাভাবিক মানুষেরা এমনই হয়। আমিও বোধহয় স্বাভাবিক মানুষ হচ্ছিলাম একটু একটু, কারণ আমিও কাঁদছিলাম ও ব্যাথা পাওয়ায়।
চোখটা আবার ঝাপসা হয়ে এল। সময় দেখলাম চোখ মুছে। পাঁচটা। হুইসেল বাজিয়ে এসে থামল ট্রেন। চট্টগ্রামের ট্রেন। রাবু কাকার দেয়া সেই বাড়িটাতে চলে যাব। একটা চাকরি খুঁজে নিয়ে সেখানেই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব। উঠতে গেলাম আমি। জ্যাকেটটা তুলে নিতে গিয়ে বাঁধা পেলাম। পাশে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। আমার ছোট্ট পরীটা আমার জ্যাকেটে মাথা রেখে ঘুমিয়ে রয়েছে!
নড়াচড়ায় ঘুম ভেঙ্গে যায় ওর। আমি তাকাতেই দুহাত তুলে কোলে তুলে নেয়ার ইশারা করল। বেচারি এত রাতে আমার পিছু নিয়ে হেঁটে হেঁটে স্টেশন চলে এসেছে ভাবতেই ভীষণ অবাক লাগছে, তারচেয়েও বেশী খুশি লাগছে। আমার পৃথিবীটা আমার সাথে আছে এখন। হাত বাড়িয়ে কোলে তুলে নিলাম ওকে। খিলখিল করে হেসে উঠল কোলে উঠে। আমিও হাসলাম। ট্রেন ছাড়ার সংকেত দিল। আমার পৃথিবীটাকে কোলে নিয়ে চড়লাম ট্রেনে। কু ঝিক ঝিক আওয়াজ করে রওনা হয়ে গেল ট্রেনটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দুটো মানুষকে নিয়ে৷
(২য় পর্ব)
ডাক্তারের চোখ দিয়ে লেজার রে বের হলে এতক্ষণে ভষ্ম হয়ে যেতাম। এই ডাক্তার সারাদিন এত রেগে থাকে কেন কে জানে! প্রেশার মাপতে যেন ঘন্টাখানেক লাগিয়ে দেবে। বিরক্ত হয়ে টান দিয়ে প্রেশার প্যাডটা খুলে ফেললাম। গর্জে উঠল ডাক্তার,
-ঐ এটা খুললি কেন? খুলতে বলেছি?
-তুমি বললেই খুলতে হবে? বলেছিনা এসবে আমার ভীষণ এলার্জি আছে। হাসপাতাল, রোগী, ঔষধ, ডা...।
দ্রুত ব্রেক কষলাম। তবে ডাক্তার তা ঠিকই বুঝে ফেলেছে। বলল,
-থামলি কেন? বল ডাক্তারেও তোর এলার্জি আছে! আমিও তো ডাক্তার, আমার কারণেও তো তোর সমস্যা হচ্ছে! আমি বরং চলেই যাই। ডাক্তার ব্যাগ গোছাতে শুরু করতেই দ্রুত থামালাম,
-আরে রাগ করছ কেন? তোমাকে তো আসতে বলেছি পৃথার জ্বরের কারণে, তুমি যদি আমাকে এভাবে জ্বালাও তাহলে কিভাবে হবে। তুমি চলে গেলেও তো কষ্ট পাব!
-আমার সাথে ফাজলামো করবি না আর্জু। আমি ভাল করেই জানি তুই কিছু বোধ করিস না। শুধু শুধু ভান করতে হবে না।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে পড়লাম। ও যেহেতু ব্যাপারটা জানে স্বীকার করে ফেলল তাহলে অভিনয়ের প্রয়োজন ফুরিয়েছে। মতিন চাচাকে ডেকে ডাক্তারকে আপ্যায়ন করতে বলে বেরিয়ে এলাম। তবে আসার সময় ওর চোখের দৃষ্টিতে রাগের চেয়ে ভিন্ন এক ধরণের পরিবর্তন চোখ এড়ায়নি।
পরিবারকে ছেড়ে আমার পৃথিবী পৃথাকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছি বেশ কয়েক বছর কেটে গেল। ছোট্ট পৃথা এখন বড় হয়েছে অনেক। স্কুলে পড়ে ও। ওদের ক্লাসের সবার মধ্যমনি। পৃথাকে লালনপালনের জন্যই মানুষের মত ব্যবহার শিখতে হয়েছে অনেকটা জোর করেই। মানুষের অনেক সাধারণ তবে অদ্ভুত্ অনুভূতি বুঝতে শিখেছি আমি। তাই বাহিরের জগতে খাপ খাওয়াতে এখন আর তেমন কোন সমস্যা হয় না। এখানে চট্রগ্রামেই একটা ইন্ঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে জয়েন করেছিলাম। ধীরে ধীরে একটা ভাল পজিশনেই ফিরতে পেরেছি। পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করিনি আমি বা পৃথা কেউই। তারাও খুঁজলেও হয়ত পায়নি আমাদের। যাই হোক, পৃথার শরীরটা ইদানিং একটু খারাপ যাচ্ছে মাঝেমাঝেই। তাই এক বন্ধুর পরামর্শে একজন ডাক্তারকে এপয়েন্ট করা হয়েছে। প্রতিদিন একবার এসে দেখে যান ওকে। আমাকে প্রথম দিনেই অভয় দিয়ে বলেছেন ভয় পাওয়ায় কিছু নেই, অসুখবিসুখ স্বাভাবিক ব্যাপার। যে বন্ধু ওনার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তার ঘনিষ্ট বন্ধু আমরা দুজনেই। তাই মাঝেমাঝে পৃথাকে নিয়ে আমাদের চারজনের ঘুরতে অথবা ডিনারে যাওয়া হয়।
সম্পর্কের লাগামটা আমি ধরে রাখতে জানলেও ডাক্তারের মত মিশুক একটা মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। আপনি থেকে সে নিজেই তুই এ নিয়ে এসেছে সম্পর্কটাকে। আমি যে এখনও তাকে তুমি করেই বলছি সেটা যেন সে কেয়ারই করে না। এতদিন অবাক লাগলেও আজ কারণটা বুঝতে পারলাম। সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলতে পারলেও অভিজ্ঞ ডাক্তারের চোখ ফাঁকি দিতে পারিনি।
গ্যারেজ থেকে গাড়িটা বের করে নিলাম। পৃথাকে স্কুল থেকে আনতে হবে। ওর স্কুলে পৌঁছতে আধঘন্টা লাগল। এরমাঝেই এত কথা ভেবে ফেললাম। এক্সিডেন্ট যে করিনি সেটাই বেশী।
স্কুলে পৌঁছতে একটু দেরীই করে ফেলেছি। আসেপাশে তেমন কোন মেয়েদের দেখতে পাচ্ছি না, সবাই বোধহয় বাড়ি চলে গেছে। আসলে ডাক্তার হঠাত্‍ আমার রক্তিম চোখ আর রাত জাগার লক্ষণ দেখে চেকাপের নাম করে আটকে না দিলে ঠিক সময়েই আসতে পারতাম।
পার্কিংলটে গাড়ি রেখে টিচার্সরুমে উঁকি দিলাম। সেখানে নেই। তাহলে নিশ্চয়ই হেডমিস্ট্রেসের রুমে। হেডমিস্ট্রেস মিসেস রকউড পৃথাকে ভীষণ স্নেহ করেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই আমাদের প্রতিবেশী। পৃথার অঘোষিত এক মা-ই বলা যায়। ঘরে ঢোকার আগে পৃথার খিলখিল হাসির শব্দ পেয়ে মুচকি হাসলাম। নিশ্চয়ই সারাদিন ক্লাসে কি মজা হয়েছে তা নিয়ে তারা হাসাহাসি করছে। দরজায় নক করে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। আমাকে দেখেই গম্ভীর হয়ে গেল পৃথা।
আমি ওকে কিছু না বলে মিসেস রকউডের খোঁজখবর নিতে লাগলাম। পৃথা যে ওখানে আছে আর ওকে যে আমি নিতে আসতে দেরী করেছি সেটা যেন আমি জানিই না! পৃথাও মুখে কুলুপ এঁটে বসে রইল। কথায় কথায় মিসেস রকউডের কুকুরের ছানাগুলোর কথা উঠল। এটা খুব পুরনো পদ্ধতি। পৃথার ক্ষেত্রে খুব কার্যকরি। ছানাগুলো ওর খুব প্রিয়। বাসায় সারাদিন ওগুলোকে নিয়ে দুষ্টুমি করে কাটায়। ছানাগুলোর ব্যাপারে কথা শুরু হতেই কখন পৃথা আড্ডায় যোগ দিল আর কখন আড্ডা শেষ করে গাড়িতে এসে উঠল সেটাই ও ভুলে গেছে ধারণা করলাম। গাড়িটা বড় রাস্তায় তুলে আনতেই ভুল ভাঙল আমার। পাশের সীট থেকে অভিমানী কন্ঠে ডাক শোনা গেল,
-ভাইয়া।
-কি রে?
-আমি কিন্তু রাগ করে আছি।
-হুম। তো আমি কি করতে পারি?
-রাগ ভাঙাতে হবে।
-কিভাবে?
-আজ রাতে মুভি দেখতে নিয়ে যেতে হবে, ডক্টর আপুর বাসায়।
প্রমাদ গুনলাম! আজকের ঘটনার পর ডাক্তারের মুখোমুখি আর না হওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু এই বিপদটার কথা তো মনে পড়েনি। পৃথাকে এক সেকেন্ডের জন্যেও কারও হাতে ছাড়তে ভরসা পাইনা। ওকে আমাকেই নিয়ে যেতে হবে। ওর সাথে তর্ক করাও বৃথা। আমাকে সবসময় হারিয়ে দেয়! অগত্যা সন্ধ্যা হতেই ওকে নিয়ে চললাম ডাক্তারের বাসায়।
ডাক্তারের ৯ তলার এপার্টমেন্টের বেল বাজাতেই দরজা খুলে দিল সে। আমাকে দেখে তার চমকে উঠা ভাব দূর করতে পারলনা। তবে পৃথাকে দেখে সামলে নিল। পৃথার প্রিয় খাবারের সুগন্ধ ভেসে আসছে ডাক্তারের কিচেন থেকে। নিশ্চয়ই পৃথা আগেই বলেছে ফোন করে যে সে আসছে। তাহলে আমাকে দেখে চমকে উঠল কেন? ভেবেছিল আমি উপরে আসবনা? হয়ত আমিও আসতাম না কিন্তু পৃথার ব্যাপারে এসব বিধিনিষেধ মাথায় রাখতে পারিনা। ভেতরে ঢুকেই ডাক্তারের সাথে রান্নাঘরে ছুটল পৃথা। ওকে রান্না শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে ডাক্তার। আমি সোফায় বসে ল্যাপটপে অফিসের কিছু কাজে ডুবে গেলাম। ঘন্টাখানেক পর কানের কাছে চিত্কার করে চমকে দিয়ে কাজ থেকে আমার ধ্যান ভাঙাল পৃথা। এত বড় হয়েও এখনও বাচ্চাদের মত কত স্বভাব রয়ে গেছে ওর। তবে ওর প্রতিটা স্বভাবে, আচরণেই ছড়িয়ে রয়েছে আমার ভালবাসা। আমাকে ধরে ডাইনিংয়ে নিয়ে গেল।
ও নাকি রান্না করেছে একটা আইটেম। আমাকে বলতে হবে কোনটা সেটা। মহাবিপদে পড়লাম। আমি মোটেই খাদ্য রসিক নই। তবে পৃথাকে না করতে পারলাম না। টেবিলের অপর প্রান্তে বসে ডাক্তারও আড়চোখে তাকিয়ে আছে। পৃথা একটা একটা করে আইটেম আমার প্লেটে দিতে থাকল আর আমি গভীর মনযোগে ওর দিকে লক্ষ রাখলাম। অনুভূতিহীন হওয়ার সুবিধে পর্যবেক্ষণ আর বিশ্লেষণে আমার খুব ভাল দখল আছে। দুয়েকটা খেয়ে ভান করলাম যেন বলতে যাচ্ছি এটাই ওর, কিন্তু বললাম না। শেষ যখন খাসির রেজালা বেড়ে দিতে গিয়ে ওর চোখেমুখে চাপা উত্তেজনা ফুটে উঠল তখন বুঝতে পারলাম এটাই ও রেঁধেছে। খেয়েই বললাম, -এটাই তোর। হাহা করে হেসে উঠল পৃথা সেইসাথে ডাক্তারও। কিছুক্ষণ পরে বলল এই একটা আইটেমই আজ ডাক্তার রেঁধেছে আর বাকিগুলো রেঁধেছে পৃথা। প্রথমে আমাকে বোকা বানাতে ভুল বলেছিল। আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না, বিব্রত হয়ে গিয়েছিলাম। ওরা আরও কিছুক্ষণ এই নিয়ে হাসিঠাট্টা করল। ডাক্তার যে আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে বুঝতে পারলাম।
খাওয়া শেষে মুভি দেখতে বসলাম সবাই। রিভস এর স্যুইট নভেম্বর। মুভি দেখতে দেখতে আমার পাশের দুইকন্যা কখনও হাসছে কখনও কাঁদছে। আমি চুপচাপ দেখে যাচ্ছি। মুভির কারও সাথে আমার মিল খুঁজতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে হেসে ফেললাম নিঃশব্দে। বাস্তব মুভির চেয়েও অদ্ভুত হয়। আমিই তার জলজ্যান্ত প্রমান।
মুভি শেষ হতে দেখা গেল ইতোমধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছে পৃথা। এরকম সবসময়েই হয়। ওকে পাঁজাকোলা করে তুলে ডাক্তারের ঘরে নিয়ে এলাম। ঘুমের মধ্যেই আমার গলা জড়িয়ে ধরে আছে। আনমনেই হেসে ফেললাম। বেশ কায়দা করে ওর ঘুম না ভাঙিয়ে ওর হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে বেরিয়ে এলাম। চলে এলাম গেস্টরুমে। কিছুক্ষণ পর ডাক্তারের ঘরের বাতি নিভে গেছে টের পেলাম। গেস্টরুমের খোলা বারান্দায় এসে দাঁড়াতে দখিনা বাতাস ঠান্ডা পরশ বুলিয়ে গেল গায়ে।
জানলা দিয়ে শহর, দূরের পাহাড়, সাগর দেখতে ভালই লাগে। বিচিত্র একটা কিছু বোধ হয় এখানে দাঁড়ালে। পেছনে মৃদু পায়ের শব্দ। ঘুরে দাঁড়াতেই অবাক হলাম। ডাক্তার দুটো কফির মগ হাতে দাঁড়িয়ে। একটা বাড়িয়ে ধরল। আমি নিতেই আমার পাশে এসে দূরের সাগরের দিকে তাকাল।
-মানুষ অনেক অদ্ভুত আর্জু। আসলে মানুষের অনুভূতিগুলো আরও বেশী অদ্ভুত। তোমার কাছে নিশ্চয়ই সবকিছু রহস্যময় মনে হয় মানুষের অনুভূতির ব্যাপারে, তাই না?
আমি কিছু না বলে কফির কাপে চুমুক দিলাম। বলে গেল ডাক্তার অনেকটা আপনমনেই। আমি কেবল তাকে দেখতে লাগলাম। দখিনা বাতাসে তার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে, হাতের মগের কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তার সেদিকে খেয়াল নেই, কন্ঠস্বর অনুভূতিহীণ হলেও চোখগুলোতে যেন কষ্টের ঝড় উঠেছে। সে বলছে,
-প্রথম তোমাকে দেখে ভাল লেগেছিল, ধীরে ধীরে ভাললাগাটা ভালবাসায় গড়ায়। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম না কেন তুমি সবসময় অত্যন্ত সচেতনভাবে আমাকে এড়িয়ে চলছ। বহুভাবে চেষ্টা করলাম তোমার কাছে আসতে কিন্তু তুমি সবসময়ই এড়িয়ে গেলে। শেষে একদিন পৃথার মুখে জানলাম তোমার এরকম হওয়ার কারণ। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি তোমাকে ভালবাসতে শেখানোর, ভালবাসার স্পর্শ তোমাকে দিতে।
রেইলিঙে রাখা আমার হাতে ওর হাতটা রাখল। আমি কিছু বললাম না। সে বলে গেল,
-কিন্তু তুমি যেন মানুষ নও। মানুষের সীমাবদ্ধতা তার মন, তার অনুভূতিতে। তুমি সেই সীমাবদ্ধতাকে পার করে গিয়েছ। তবুও তুমি নিখাদ ভালবাস পৃথাকে। সেই ভালবাসাকে কি তুমি কখনই ভাগ করে নিতে পারবে না? কিছুটা আমাকে দিতে পারবেনা?
কফির মগটা নামিয়ে রেখে ওর দিকে তাকালাম। স্পষ্ট অনুনয় ফুটে আছে ওর চোখে।আমার একটা হাত দুহাতে ধরে রেখেছে ও। আমি নিচুস্বরে বললাম,
-তুমি একজন ডাক্তার, তোমার প্রশ্নের উত্তরটা তুমি জান। আমার পক্ষে কাউকে ভালবাসা সম্ভব না। আরে আমি তো জানিই না ভালবাসা কাকে বলে। ভালবাসা, অনুভূতি চেনা আর অনুভব করায় কত পার্থক্য তা কে না জানে! আমারও ইচ্ছে করে তোমাদের অনুভূতিগুলোকে অনুভব করতে। কিন্তু তা কখনই সম্ভব না। আর পৃথাই আমার পৃথিবী। ওর প্রতি আমার বোধটাকে কি বলে আমি জানি না। যাই হোক না কেন সেটা কখনও ভাগ হয় না, হবে না।
ওর চোখে জল টলমল করছে। একটু থেমে বললাম,
-হয়ত আমার বলা উচিত আমি দুঃখিত, কিন্তু তুমি জান আমি দুঃখ বোধ করিনা।
ওর চোখ বেয়ে জলের ধারা নেমে এল। হাত তুলে ওর চোখের জল মুছতে গিয়েও থেমে গেলাম। এ জল আমার মুছে দেয়ার জন্য নয়।শুধু শুধু মায়ার সৃষ্টি কষ্টই বয়ে আনে। বেডের উপর থেকে আমার ব্যাগটা তুলে নিলাম। ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ঘুরে তাকিয়ে বললাম, -আমায় ক্ষমা করো নীলা। ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।
পরদিন পৃথাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে গেল ডাক্তার। তবে আমার সাথে দেখা হল না। এর কিছুদিন পরে একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে নীরবে বাহিরে তাকিয়ে রইল পৃথা। জানতে চাইলাম,
-আমি কি আবার দেরী করেছি?
কোন জবাব দিল না সে।
-কিরে, কি হয়েছে?
-ডক্টর আপু চলে গেছে।
আমি কিছু বললাম না। ওই বলল,
-মস্কোয় কোন এক হসপিটালে চাকরি নিয়ে চলে গেছে।
-ও আচ্ছা।
-আপু তোমাকে অনেক ভালবাসত। জান ভাইয়া?
-হুম।
-তোমার কষ্ট হচ্ছে না?
মিছেমিছি বললাম,
-হচ্ছে তো, কেন রে?
-তুমি এমন কেন ভাইয়া?
আমি কিছু বললাম না। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উইন্ডশিল্ড ওয়াইপার চলছে বিরতিহীনভাবে। পাহাড়ের সারির মাঝে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট ফাঁকা। হঠাত্‍ ব্রেক কষে গাড়ি থামালাম। সিটবেল্ট খুলতে খুলতে পৃথাকে জিগ্যেস করলাম,
- ভিজবি?
কান্নাভেজা চোখ নিয়ে ও মাথা ঝাঁকাল। দরজা খুলে নেমে এলাম দুই ভাইবোনে ঝুম বৃষ্টিতে। দাপাদাপি করে ভিজতে লাগলাম আমি। কিছুক্ষণের মাঝেই কান্না বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে গেল পৃথার মুখ থেকে। সেখানে এত বড় হয়েও বৃষ্টিতে রাস্তার কিনারের কাদাপানিতে আমার দাপাদাপি দেখে হাসি ফুটে উঠল। পৃথাও এসে আমার দাপাদাপিতে যোগ দিল। এই দুজনের আর কোন দিকেই যেন খেয়াল নেই। সময় থমকে গেছে এখানে। পৃথিবী এর মাঝেই বিদ্যমান। তারপরেও অন্ধকার কোন রাতে দখিনা বাতাসে এলোমেলো উড়তে থাকা চুলের অপরূপ এক রূপসীর ছবি যখন আমার মনে পড়ে, কোথায় যেন হারিয়ে যাই আমি মুহুর্তের জন্য নিজের অজান্তেই।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×