অনেক রাতে আমি আছি। আর একটি কুকুর আছে।
একটু কুঁজো হয়ে বসেছি, টান হয়ে বসলেই বুকে ব্যাথাটা পুরো শরীরে ছড়িয়ে যায়, পুরো শরীর জুড়ে কিলবিল করে একটা নীলাভ চাপা ব্যাথা। শরীরে কোন আঘাত নেই। ব্যাথাটার জন্ম তাই ভেতরেই। ভেতরে, অনেক গভীরে।
পিছনে জানালাটা। তার পেছনে সাঁই সাঁই করে নেমে যাওয়া পাঁচ তলা। পেছনে সোডিয়াম বাতির দুঃখী আলোয় করুণ একটা সর্পিল রাস্তা। বাতির নিচ বরাবর একটি অসুস্থ কুকুর, কুতসিত শ্লেষযুক্ত ঘেউ ঘেউ করে একমাত্র শব্দের সাক্ষি দিচ্ছে সে।
আমি একটা খুন করার চেষ্টা করছি। খানিকক্ষণ ভেবেছি কী করে নিচে নেমে কুকুরটাকে খুন করে আসা যায়। ওর কুতসিত ঘেউ ঘেউ আমাকে বিরক্ত করছিলো না। খুন করার ইচ্ছেটা আসলে আদিম একটা ক্ষোভ। সবার মাঝেই থাকে। ছুঁয়ে দেখে সবাই, কিন্তু সামনাসামনি হয় না। কিন্তু ভেবে দেখলাম, কুকুরটাকে খুন করলে আশেপাশের বাড়ির মানুষদের ঘুমের ব্যাঘাত করাটা বন্ধ হয়ে যাবে। তারচেয়ে সহজ হবে নিজেকে খুন করা।
অনেক আগে একটা গল্প লিখেছিলাম। প্রথম গল্প। পুরোটাই নিজেকে হত্যা করা নিয়ে। তখন খুব বিষণ্ণ থাকতাম। কৈশোরে বিষণ্ণ থাকার সময় ছিল সেটা। এরপর অনেকদিন গেছে। অনেক সময়েই ভেবেছি, কীরকম বদলে যাচ্ছি আমি। ক্ষোভ কিংবা নেশার চাপটা সবসময় থাকলে অনেক চেপে রাখার চেষ্টা করতে করতে একসময় শিখে গেছি। কিন্তু কোনকিছুই অনন্ত নয় বলে হয়তো হঠাত করেই এমন এক সত্যের সম্মুখীন হয়েছি যে বুকে তিমির চাপা শব্দের মত একটা চাপা নীলাভ ব্যাথা সারা বুকে কেমন ছড়িয়ে যাচ্ছে, আর একটা ধারালো ছুড়ি দিয়ে ক্রমশ খুঁচিয়ে চলেছে হাতের কাছে যা পাচ্ছে তা। নিজেকে খুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৫