ট্রি হাউস! কী অদ্ভুত একটা ব্যাপার, না? ট্রি হাউসে থাকা- বাংলায় কত সুন্দর করে "গাছ বাস" বলা যায়! নামেই কত আনন্দ!
ট্রি হাউসের শখ তো ছিল। কিন্তু বাস যে ছাল ওঠা এবড়োখেবড়ো দালানের ভীড়ে। তাই বাথরুমের ওপর স্টোররুমটাতেই কতকিছুর আয়োজন করে সাজিয়ে নিতাম! সেটা ছিল আমার "স্বপ্ন দেখার হেডকোয়ার্টার।"
হেলান দিয়ে বসার গদি, ছবি আঁকার সরঞ্জাম; একই প্রসঙ্গ- ভূত নিয়ে গল্প লেখার জন্য খাতা, কলম; একটা মাউথ অর্গান; ছুরি, কাঁচি, ব্লেড; অনামিকা রীফার থেকে চুরি করা হাতঘড়ি.. টুকরো টুকরো স্বপ্ন লাগানো সবকিছুতে ভর্তি ছিল স্টোররুম। একটা চিলেকোঠা পেলে ছোটবেলাটা আরও দারুণ যেত।
এখন স্বপ্নটা খুলে গেছে, বুঝতে পারি। অনেক ওপরেও উঠে গেছে। পাসিংপাড়ার নাম শুনেছেন? সেখানে পায়ের কাছে মেঘ জমে থাকে। বান্দরবানের গভীরে বিশাল উঁচু একটি পাহাড়ের একেবারে মাথার কাছে জটলা বাঁধা ছোট্ট একটি গ্রাম, পাসিংপাড়া। দেশের সবচেয়ে উঁচু গ্রাম। এখন স্বপ্ন সেখানে স্বাধীন একটি আশ্রয় হবে।
নিয়তির টানেই হয়তো কখনো পালিয়ে যেতে পারি। তখন ঘুরবো প্রচুর! আমি জানি, যে মুহূর্তে বুঝবো, আমি পৃথিবীকে এখন থোড়াই পরোয়া করি, সে মুহূর্ত পুরনো আমাকে গ্লাস করে নেবে। জমে থাকা সব ভয় কাপুরুষের মতো চুঁইয়ে জমা হবে আমার পায়ের কাছে। একসময় একটি বিশাল কালো জলের সমুদ্রে আমি স্বাধীন দাঁড়িয়ে থাকবো। তবে পালিয়ে যাওয়ার আগে একবার পাসিংপাড়া ছুঁয়ে দেখবো। স্বপ্নের কাছাকাছি যাওয়া বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার..