somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিছিলে ইয়াসির আরাফাত এবং বাদশাহ হুসেইন প্রকাশ্যে উচ্চশব্দে কাঁদেন, গাদ্দাফী দুইবার মূর্ছা যান।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭০ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন মিশরীয় প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুল নাসের

মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি ইয়াসির আরাফাত এবং বাদশাহ হুসেইনের মধ্যে মধ্যস্থতা করে ফিলিস্তিন এবং জর্ডানের গৃহযুদ্ধ তথা ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের অবসান ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু অতিথিরা ফিরে যেতে না যেতেই কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

নাসের গণতান্ত্রিক শাসক ছিলেন না। তিনি ছিলেন পরবর্তীকালের আর দশজন আরব স্বৈরশাসকের মতোই কর্তৃত্ববাদী। ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য তিনি ভিন্নমত দমন করেছিলেন কঠোর হাস্তে। বিরোধীদল মুসলিম ব্রাদার হুডের সদস্যদেরকে গ্রেপ্তার করেছিলেন গণহারে, তাদের নেতাদেরকে নির্যাতন করে ঝুলিয়েছিলেন ফাঁসির কাষ্ঠে।

কিন্তু তার সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এবং ইসরায়েলবিরোধী দৃঢ় অবস্থান তাকে এনে দিয়েছিল অকল্পনীয় জনপ্রিয়তা। তার মৃত্যুর সংবাদ শুনে মিশরের নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকল শ্রেণির জনগণ কাঁদতে কাঁদে রাস্তায় নেমে আসে। শতশত মানুষ রাস্তায় গড়াগড়ি দিয়ে বিলাপ করে।

জানাজার পর তার লাশবহনকারী মিছিলে শামিল হয় আনুমানিক ৫০ লক্ষ মানুষ - ধর্মীয় সমাবেশের বাইরে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাগম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মিছিলে ইয়াসির আরাফাত এবং বাদশাহ হুসেইন প্রকাশ্যে উচ্চশব্দে কাঁদেন, গাদ্দাফী দুইবার মূর্ছা যান।

মিশরের বাইরে আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশেও নাসেরের মৃত্যুতে স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল বের হয়। বৈরুতে শোক মিছিলের ভিড়ের বিশৃঙ্খলায় এক ডজনের মতো মানুষ মারা যায়। জেরুজালেমেও ৭৫ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি মিছিল বের করে। তারা শ্লোগান দেয়, নাসের কখনও মরবে না।

নাসেরের স্বপ্ন ছিল ইসরায়েলকে ধ্বংস করা, ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা এবং আরব বিশ্বে মার্কিনপন্থী রাজতন্ত্রগুলোর অবসান ঘটানো। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সেখানেই তার স্বপ্নের অবসান হয়। তার পরে আরো কোনো নেতা এত বেশি দেশের এত বেশি মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পারেনি। উল্টো তারা ক্রমেই আমেরিকা এবং ইসরায়েলের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছিল।

তার মৃত্যুর লেবাননের একটা পত্রিকা সঠিক শিরোনামটাই করেছিল: ১০ কোটি আরব আজ এতিম হয়ে গেছে।

©মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস ও রাজনীতি

কোর্টেসিঃ আলমগির কবির
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৭
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×