খাঁজ কাটা ! খাঁজ কাটা !! খাঁজ কাটা গল্প!!!
.......................
আমি কিছু লিখতে গেলেই আমার চোখের নজর যতদূর যায় আমি শুধু পোড়া বেগুন ভর্তাই দেখতে পাই! তাই কবিতা, গল্প কিংবা উপন্যাস নয় আমার লেখার পাতা ভরে ওঠে শুধু পোড়া বেগুন ভর্তায়! ছোট বেলায় শোনা আপনাদের এক ছাত্রের খাজ কাটা কুমিরেরের রচনা লেখার কথা স্মরণ থাকবে হয়তো, যেখানে ছাত্রকে যে বিষয়েই রচনা লিখতে দেয়া হবে সে যেভাবে যেমন করেই কুমিরের খাজ কাটা লেজ তুলে আনবেইঃ শুনুন তবে সেই গল্প!
এক শিক্ষক তার এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে খুবই সমস্যায় আছে । শিক্ষার্থী বাংলায় খুব দূর্বল বিশেষ করে রচনা মুখস্ত তো করতেই পারেনা আবার নিজেও সৃজনশীল কিছু লিখতে পারেনা!
তাই শিক্ষক তার এই দূর্বলতা দূর করার জন্য একটি উপায় বের করলেন । তিনি ঠিক করলেন তার শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন একটি করে রচনা লিখতে দিবেন নিজের মন মত করে লিখতে। এতে করে যদি কিছু নিজে থেকে লিখতে লিখতে কিছুটা রচনা লেখায় পারদর্শী হতে পারে ।
সে অনুসারে শিক্ষক তার শিক্ষার্থীকে যেকোন প্রাণী সম্পর্কে একটি রচনা লিখে নিয়ে আসতে বলল ।
শিক্ষার্থী যথারীতি ''কুমির'' এর উপর একটি রচনা লিখে নিয়ে আসল । রচনাটি ছিল এরকম
একটি লেখা তা আমি কুমির জলে বাস করে । এর চারটি পা আছে । দুটি চোখ আছে । লম্বা চোয়াল বিশিষ্ট মুখ আছে । দাঁত খুব শক্তিশালী । এর একটি লেজ আছে । লেজের উপর খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, ................. (এভাবে লিখতে লিখতে তিন পৃষ্টা লিখে এনেছে)
এরপরের সেই শিক্ষক তার প্রিয় শিক্ষককে নিয়ে রচনা লিখতে বলায় সে লিখলো, আমার প্র
সে লিখল- আমার প্রিয় শিক্ষক এর নাম মোহাম্মদ আসাদ। তার চোখ গুলো গোলগোল।
কুমিরেরও চোখ গোল গোল। জেনে রাখা ভালো যে কুমির একটি সরিসৃপ প্রানী। এটি জলে বসবাস করে। কুমিরের পিঠ খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাজ কাটা, খাঁজ কাটা... (খাতার পাঁচ পৃষ্ঠা শেষ)।
শিক্ষক তার রচনা দেখে খুব রাগান্বিত হল । এবার শিক্ষার্থীকে গরুর রচনা লিখে নিয়ে আসতে বলল।
শিক্ষার্থী গরু সম্পর্কে লিখে নিয়ে আসল -----
গরু গৃহপালিত প্রাণী । এর চারটি পা আছে । দুটি কান, দুটি চোখ, একটি মাথা ও একটি লম্বা লেজ আছে। গরু ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করে । গরুকে নদীর ধারে ঘসে খেতে দেয়া হয় । ঐ নদীতে কুমির থাকে । কুমিরের লেজের উপর থাকে খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা ................. (এভাবে লিখতে লিখতে তিন পৃষ্টা লিখে এনেছে) ।
শিক্ষক এটা দেখে খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন । একে তো কুমিরের কাছ থেকে সরাতে হবে । তাই তিনি অন্য রকম একটি বিষয়ে অর্থাৎ উড়োজাহাজ সম্পর্কে রচনা লিখতে বললেন ।
শিক্ষার্থীও উড়োজাহাজ সম্পর্কে রচনা লিখে আনল এরকম -----
উড়োজাহাজ আকাশে উড়ে । এর সাহায়্যে সহজেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া যায় । উড়োজাহাজ মাঝে মাঝে দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে নদীতে আছড়ে পড়ে । সেই নদীতে কুমির থাকে । সেই কুমিরের লেজ থাকে খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা ................. (এভাবে লিখতে লিখতে তিন পৃষ্টা লিখে এনেছে) ।
শিক্ষক কোন উপায় না দেখে তাকে নবাব সিরাজোদ্দৌউল্লাহ সম্পর্কে রচনা লিখে নিয়ে আসতে বললেন ।
শিক্ষার্থী সিরাজোদ্দৌউল্লাহ রচনায় লিখে নিয়ে আসল ----
সিরাজউদ্দোল্লাহ বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন । ১৭৫৭ সালে তিনি পলাশীর প্রান্তরে ইংরেজদের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয় । যুদ্ধের সময় তিনি মীর জাফর, রায় দূর্লভ, জগৎ শেঠ এদের উপর বিশ্বাস করে দ্বায়িত্ব দিয়ে খাল কেটে কুমির এনিছিলেন । সেই কুমিরের পিঠে ছিল খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা, খাঁজ কাটা ...............................................
এভাবেই সেই ছাত্রের মতো আমার সব লেখাও হয়ে ওঠে ভর্তাময়। অনেকদিন বিরতি নিয়েও এ যন্ত্রনা থেকে নিষ্কৃতি না পেয়ে আবারও বেগুন ভর্তাকথনঃ
বেগুন ভর্তা আরও সুস্বাদু করতে অনুসরণ করতে পারেন।
উপকরণ: বেগুন ২,৩টি। পেঁয়াজ-কুচি বড় ১,২টি। শুকনা-মরিচ টালা ৫,৬টি। লবণ, ধনেপাতা-কুচি ও সরিষার তেল পরিমাণ মতো।
পদ্ধতি: প্রথমে বেগুন ধুয়ে মুছে নিন। এবার ছুরির আগা দিয়ে বেগুনের গেয়ে একটু দাগ কেটে অল্প তেল মাখিয়ে নিন।
গ্যাসের চুলায় বসিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বেগুনগুলো পুইড়িয়ে নিন। তারপর পোড়া বেগুনের খোসা ছাড়িয়ে নিন যতটুকু সম্ভব। মরিচ টেলে নিন।
একটি বাটিতে পেঁয়াজ-কুচি, মরিচ, ধনেপাতা, সরিষার তেল ও লবণ নিয়ে ভালো করে মাখিয়ে বেগুনগুলো দিয়ে ভালো করে ভর্তা করুন।
ব্যস, হয়ে গেল পোড়া বেগুনের ভর্তা। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন। আর আমাকে পোড়াতে থাকুন মনের হরষে! কারণ কারো পৌষ মাস আর কারো সর্বনা!
রেসিপি সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪.কম
গল্প সূত্রঃ হাসির গল্প
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৩৯