মুসার পক্ষে গেলো! ওহহ, না বিপক্ষেই গেছে- চিন্তা না করেও চলেন কিছু বিষয় দেখি।
জাতীয় চরিত্রের কারণেই হোক আর ঐতিহাসিক ক্রমবিকাশের কারণ বা অন্য কারণেই হোক 'বিতর্ক' আর 'টেনে নামানো' আমাদের একটা বৈশিষ্ট হিসেবেই এখন প্রতিষ্ঠিত।
সাম্প্রতিক অত্যন্ত উত্তেজক একটা 'বিতর্ক' যা আগে থেকেই চলে আসছে, সেটা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিষয়টা 'এভারেস্টে গমন এবং সামিট। প্রথম স্থান দখলকারীর 'সন্দেহজনক' সামিট নিয়ে অন্য এভারেস্ট আরোহণকারীদের বিতর্ক অথবা প্রথম স্থান অধিকারীর 'সততা' নিয়ে এখন সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত, বিরক্ত, ক্ষুব্ধ অথবা ব্যথিত।
দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনা প্রথম এভারেস্ট জয়ীর 'প্রথম' হওয়া নিয়ে অন্যদের ইর্ষা!, সমালোচনা যা ঘটনার পর থেকেই চলছে সেটা নিয়ে কেন 'কাঁদা ছুড়াছুড়ি' এ নিয়েও অনেকে ব্যথিত, বিরক্ত।
কিন্তু আমাদের অবস্থা বিবেচনা করে এটা স্বাভাবিক ধরে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।
রাখাল ছেলের গল্পের মতো সত্যি সত্যিই চূড়ায় সামিট করে থাকলেও আগের 'রাখাল বালক গল্প' কাহিনীর কারণে সেটা প্রাপ্য ধরলেও কিছু করার নেই।
করপোরেট আশীর্বাদপুষ্ট মুসার প্রথম স্থান হাজারো বিতর্ক সত্ত্বেও যে পঞ্চম শ্রেণী অথবা সব শ্রেণী ও সাধারণ মানুষের জন্য 'মুসাই থাকবে সেটা বলাই বাহুল্য।
ইর্ষাপরায়ণ বা বিরোধীরা হয়তো 'বিতর্কিত প্রথম বাংলাদেশী এভারেস্ট জয়ী' বলেই স্বস্তি নেবেন।
ভাবছেন, এত জ্ঞান নিয়া টাইপ করতেছি কিভাবে! আমার তো এতক্ষণে এভারেস্টেই থাকার কথা। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে এভারেস্টের কাছে ধারেও যাওয়া হয়নি। দেশেই কিছু ছোট বড় টিলা, খাল-বিল জয় করেছি। সবগুলার সামিট করেছি। কিন্তু এভারেস্টে সামিট করি নাই, এটা নিশ্চিত। এ ব্যাপারে যে কোন প্রমাণ দিতে পারবো। তাই, আমার এভারেস্ট জ্ঞান নিয়ে দ্বিধান্বিত হওয়ার দরকার নাই।
একাত্তর টিভিতে শুরুর পর থেকে 'এভারেস্ট ইস্যু ও বিতর্কিত প্রথম স্থান' নিয়ে এখন দুটি পক্ষ শক্তি প্রদর্শনে মত্ত। আমাদের মতো বান্দরবানের 'টিলা সামিট' করা থেকে শুরু করে সবার কাছ্ই ব্যাপারটা মারাত্মক বিব্রতকর। বেশি বিব্রতকর বোধ হয়, পঞ্চম শ্রেণী পড়ুয়া কিশোর কিশোরীর বাবা-মা, কারণ তাদের 'বিতর্কিত প্রথম স্থান' অধিকারীর নাম মুখস্ত করেই পরীক্ষা পাশ করতে হবে।
তবে যাই হোক- এভারেস্টে উঠা, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ফটোশপ , রাখাল বালকের পূর্ববর্তী 'মিথ্যাময়' আচরণ এসব আলোচনা, সমালোচনা ছাপিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণও শুরু হয়েছে। কে, কার কি , কোথায় নানা অবান্তর আক্রমণও শুরু হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'নিজের খেয়ে প্রথম স্থান অধিকারী বালকের সত্যতা প্রমাণ অথবা মুসার 'মিছা' সামিট নিয়ে চলছে নানা বক্তব্য। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার নারী এভারেস্ট জয়ীদের নিয়েও 'রসালো' বিব্রতকর, অশোভন বক্তব্য দিচ্ছেন, উদ্দেশ্য জয়ীর আবার জয়ী হওয়া অথবা জয়ী বলে প্রমাণ করা।
আদালতে হয়তো সমাধান হবে, কিন্তু 'বিতর্কিত' শব্দ তো আর পছিু ছাড়বে না।
কেউ বলছেন, শুধু শুধু বিতর্ক কি দরকার! কিন্তু আপনি ভাবলে দেখবেন- এটাই হওয়ার কথা, এটাই হচ্ছে। আর বিতর্ক হবে না কেন! আর অস্পষ্টতা ও নানা ছল ছাতুরি যেখানে দৃশ্যমান সেটা নিয়ে আলোচনা হওয়াই উচিত। বেশি হলেই বরং প্রকৃত সত্য জানা সম্ভব।
একবার বলছিলাম করপোরেট জগতের শক্তির কারণেই 'প্রথম স্থান' অধিকারী অথবা করপোরটের আশীর্বাদপুষ্ট অন্যরা ভালোভাবেই টিকে থাকবেন! এটা মূসা বা ওয়াসফিয়া ভালো উদাহরণ।
কিন্তু এসব করে আসলে লাভ হচ্ছে কার! কার কী লাভ! আপনি ভাবছেন এটাই! আমিও। তারপরও বাঙালি সব খাইতে চায়, চেটেপুটে, লেপ্টে, গিলে, চর্বন করে দেখতে চায়, তাই তাদের সুযোগ দেন। আলোচনা চলুক। তবে, ব্যক্তিগত আক্রমণ বন্ধ করে 'মূল বক্তব্য নিয়া আলোচনাই ভালো।
আমি পর্বতারোহী নই, স্বপ্ন থাকলেও হইতে পারবো এ নিয়ে নিজেই সন্দেহযুক্ত। তাই একজন 'টিলা আরোহণকারী ' হিসেবে আলোচনার সমর্থনে কয়েকটি লিংক সংযুক্ত করলাম।
একাত্তর টিভির সংবাদ ও উত্তেজনার নতুন পর্ব
এটিএন নিউজ আওয়ার এক্সট্রা- পাল্টা আক্রমণ ও ব্যক্তিগত আক্রমণ!
মুসা ইব্রাহীমকে যে সকল প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে!- অবশ্য পাঠ্য
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৪২