somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কদর্য মোল্লার রায় ও শাহবাগ আন্দোলন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। বাঙালি অনেকবার ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখিয়েছে সহ্যের সীমা অতিক্রম করলে বাঙ্গালি কি করতে পারে। ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করে তাই কয়েকটি সাল, ’৫২, ’৬৯ ’৭১ ’৯০ যা সাক্ষী দেয় বাঙালি কতটা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে পারে। সেই বাঙালি আজ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইতিহাসের দায় শোধ করতে। বাঙালি অনেকদিন চুপচাপ দেখেছে দেখি কি হয় এই আপ্তবাক্য মনে করে। কিন্তু যখন দেখল আর দেখি কি হয় করার সময় নেই তখন তারা আবার সমবেত দলমত নির্বিশেষে। বাঙালি কি চেয়েছিল কিছুদিন আগেও এইভাবে একাত্ম হতে? হয়তো চেয়েছিল না হলে কেন একজন কদর্য মোল্লার রায়ে তারা গা ঝাড়া দিয়ে উঠবে। এটার একটায় ব্যাখ্যা থাকতে পারে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীর বিচারে এই সব কদর্য মোল্লারা ঝুলবে ফাঁসির দড়িতে অথবা দাঁড়াবে বন্দুকের গুলির সামনে। কিন্তু যখন দেখি কদর্য মোল্লারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল শাস্তি ভোগ করতে যাচ্ছে বাঙালি তা সহ্য করতে পারে নি তারা বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায়।
এই আন্দোলন বিতর্কিত করতে বা এটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিছু মানুষ রুপী জানোয়ার উঠে পড়ে লেগেছে । যেমনটি করে উঠে পড়ে লেগেছিল একাত্তরে। নব্য রাজাকারেরা এটাকে আওয়ামীলীগের সাজানো নাটক বলে প্রচার করছে আবার এটাকে বামদের আন্দোলন বলে প্রচারকরছে কেউ কেউ। আবার অতি উৎসাহিত কিছু মানুষ উৎসাহের আতিসহ্যে ট্রাইব্যুনালকেই বিতর্কিত করছে বুঝে বা না বুঝে। এই সব গুলোই যুদ্ধপরাধীর বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করছে।
ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে আওয়ামীলীগ সরকার এই বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই কিন্তু অনেকেই অনেকদিন ধরে এই কথাটায় প্রচার করতে চাচ্ছে যে এটা কোন স্বাধীন ট্রাইব্যুনাল নয় সরকার যেভাবে রায় চাচ্ছে এই ট্রাইব্যুনাল সেইভাবে রায় দিবে। তাই এই ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোন রায় গ্রহণ যোগ্য হতে পারে না। প্রমাণস্বরূপ তারা স্কাইপি কথোপকথন সামনে এনেছে যদিও সেখানে বিচারক কোথাও বলেন নি তিনি সরকার যা চাচ্ছেন সেইভাবে বিচার কাজ পরিচালনা করছেন বা সরকার বলেছে এই আসামীর এই রায় দিতে হবে। সরকার তাদের দ্রুত রায় দেয়ার জন্য বলেছিল যদিও তিনি স্বাভাবিক গতিতেই কাজ পরিচালনা করছিলেন। আসলে এটা ছিল এই বিচারকে কলঙ্কিত করার ষড়যন্ত্র মাত্র। এখন এই সময়ে এসে কদর্য মোল্লার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে যে সমস্ত মানুষ এই রায় কে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত রায় বলতে চাচ্ছে প্রকান্তরে তারা ছাগু গ্রুপকেই সমর্থন করছে। কেউ কেউ আবার আর এক কাঠি সরেস তারা এই ট্রাইব্যুনাল কেই ভেঙে দিতে বলছে।
কদর্য মোল্লার অপরাধের ধরনে আমাদের স্বাভাবিক ভাবেই মনে হয় এর ফাঁসি হওয়া ফরজে আইন কিন্তু বিচারক তাকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন দিয়েছেন। অবশ্য আইন মোতাবেক তা তিনি পারেন। কিন্তু কেন তিনি এই রায়টি দিয়েছেন তা আমরা জানি না। হয়ত তিনি মনে করেছিলেন জামাই জ্বিহাদীরা যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছে তাতে তাদের দ্বারা ভয়ঙ্কর কিছু করা অসঙ্গত হবে না তাই আইনের মধ্যে থেকেই যদি কম করে শাস্তি দেয়া যায় হইত কিছু অনাকাংখিত পরিস্থিতি থেকে দেশ কে বাঁচাতে পারবেন। কিন্তু তিনি ভাবেননি তার এই রায় এই দেশের মানুষকে কতটা প্রভাবিত করবে। ভাবেন নি যে সমস্ত মানুষ শুধু ফেসবুক ব্লগ আর চায়ের কাপেই ঝড় তলে তারা রাজপথেও ঝড় তুলবে। ভাবেননি সারা দেশের মানুষ পারলে শাহবাগে চলে আসবে। যারা আসতে পারবে না তারা নিজনিজ যায়গায় রাস্তায় নেমে পড়বে। যদি বুঝতেন এই জনস্রোতে ছাগুরা ভেসে যাবে পানার মত তাহলে হইত তিনি ফাঁসির আদেশই দিতেন।
আসিফ নজরুলের মতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে তাকে ফাঁসিতে পরিনত করার কোন সুযোগ নেই যেহেতু এটি ’৭৩ এর বিশেষ আইন বলে গঠিত ট্রাইবুনালের দেয়া রায়। এর বিস্তারিত কোন ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। যদি সেই কথায় সঠিক হয় তাহলে কি এই আন্দোলনের কোন প্রভাব পড়বে না এই বিচারে বা বানের জলে ভেসে যাবে এই আন্দোলন। না, এই আন্দোলন বিচারক কে সাহায্য করবে পরবর্তী রায়গুলোকে সঠিক এবং কঠিন করতে। বিচারকগণ বুঝবেন সারা দেশ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। যদি কোন অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে রাজাকারেরা আর এই দেশের হাওয়া জল খেয়ে বেঁচে বর্তে থাকবে না।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×