১৯৮৩ সালে ভারতের পশ্চিম বঙ্গে বেড়াতে গিয়েছি। উঠেছি জলপাইগুড়িতে বসবাসরত আমাদের গ্রামের এক হিন্দু দাদার বাড়ি। আমায় পেয়ে দাদারা খুব খুশি। বৌদিও খুব রসিক মানুষ, সারাদিন তার সাথে ইয়ার্কি ঠাট্টা করেই দিন কাটে।
এক দিন দুপুরে খেতে বসেছি, আমার পাশে দাদাও বসেছে। আমার পাতে ডিম ভাজা আর আলু ভর্তা দেয়ার পরে বৌদি খুব আগ্রহ নিয়েই বলল, ঠাকুর পো ছ্যাঁচড়া খাবে?
চিন্তায় পড়ে গেলাম খেতে বসে বউদি কি আবার নাক ছ্যাঁচড়া দিবে নাকি, সেই ভয়ে তাড়াতাড়ি বললাম, না না, আমি ছ্যাঁচড়া ট্যাচড়া খাই না।
আমার কথা শুনে বউদি মুখ কালো করে হাত গুটিয়ে বসে থাকল। পাশের দাদা ভর্তার পরে সবজির তরকারি নিয়ে মজা করে খাচ্ছে অথচ আমি পাশাপাশি বসে শুধু আলু ভর্তা দিয়ে ভাত খাচ্ছি। মনে মনে ভাবলাম নিশ্চয় বউদি আমার উপর ক্ষেপে গেছে, তা না হলে দাদাকে তরকারি দেয় আর আমাকে জিজ্ঞেসও করে না। শুকনা ভর্তা দিয়ে আর কতক্ষণ খাওয়া যায়, লজ্জা টজ্জা ফেলে বললাম, বউদি ঐগুলা দিবেন না?
বউদি বলল, একটু আগেই তো না করলে।
কথার আগা মাথা না বুঝেই মুখটা কালো করে বললাম, আমি কখন না করলাম।
এই তো একটি্ আগেই তো বললে, আমি ছ্যাঁচড়া ট্যাচড়া খাই না।
তাড়াতাড়ি বললাম, সত্যিই তো বলছি বউদি, আমি ছ্যাঁচড়া ট্যাচড়া খাই না ঐগুলা তো না করি নাই।
বউদি চোখ কপালে তুলে বলল, মর জ্বালা, ঐগুলাই তো ছ্যাঁচড়া।
আহাম্মক হয়ে গেলাম, নাম না জানার কারণে শুকনা ভাত খেলাম। আমি জানি পাওনা দারকে যে বার বার ঘুরায় তাকে ছ্যাঁচড়া বলে, তরকারি আধাপোড়া হলে তাকে ছ্যাঁচড়া পোড়া বলে, নাকে খত দেয়াকে নাক ছ্যাঁচড়া বলে কিন্তু পাঁচমিশালি সব্জির তরকারির নাম যে ছ্যাঁচড়া এটা তো জানা ছিল না।
ছবি ঃ অন্তর্জাল
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯