১৯৮৩ সালে গলাধাক্কা পাসপোর্টে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কোচবিহার গিয়েছি। তখন কোচবিহারের বিখ্যাত রাসের মেলা চলতেছিল। মেলা দেখা শেষে বারো কিলোমিটার দূরে পিসির বাড়ি ফিরছি। এখন আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন পিসি পেলেন কই? পিসিরা আমাদের গ্রামেই থাকতেন। আমার বাবাকে ভাই বানিয়েছিলেন। সেখান থেকেই আমাদের পিসি ভাইপো সম্পর্ক।
সেই সময় ভারতে টেইলর বাস চলতো। অর্থাৎ দুইটা বাস একসাথে জোড়া দিয়ে প্রথম বাসের ইঞ্জিন দিয়ে পরের বাস টেনে নেয়া হতো। পরের বাসটিতে কোন ইঞ্জিন থাকতো না। কানা মানুষকে আরেকজন হাত ধরে যেমন টেনে নিয়ে যায় এই টেইলর বাসেরও সেই অবস্থা। টেইলর বাসে ভারত সরকারের অনেক খরচ কম হতো, কারণ এক খরচে দুইটি বাস চলতো।
কোচবিহার থেকে বিকাল ৫টার পরে রওনা হয়েছি। তখন অফিস ছুটি হয়েছে। বাস ভর্তি যাত্রী। অনেকেই সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার সিটের কাছেই দুইজন ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে কথা বলছে। সম্ভাবত তারা অফিস ফেরত যাত্রী হবে। হঠাৎ তাদের কথোপোথনে কান গেল। এক ভদ্রলোক আরেক ভদ্রলোককে বলছে, বাবু কি আর বলবো, সবজির যা দাম বেড়েছে কিনে খাওয়াই মুশকিল।
দ্বিতীয় ভদ্রলোক বলল, কিছু কিনেছেন নাকি?
-- কিনবো কি করে, করোলা দেড়টাকা কেজির কম কিছুতেই দিলে না। আমি পাঁচসিকে বললুম তাও দিলে না। দিলে অবশ্য আধকেজি নিতুম।
আমার কাহিনী পড়ে হয়তো অনেকেই ভাবছেন মাত্র চারানার জন্য করোলা কিনল না! ১৯৮৩ সালে ভারতে চারানা পয়সার অনেক দাম ছিল। সেই সময় ভারতের মানুষের আয়রোজগার এবং ক্রয় ক্ষমতার বিবরণ পরে একদিন দিব।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:০১