অনেকদিন যাবত ব্লগে লেখা হয়ে উঠছে না। লিখতে খুব ইচ্ছা করে কিন্তু কি বিষয় নিয়ে লিখব কিছুই মাথা দিয়ে বের হয়না। মাথাটা দিনে দিনে ভোতা হয়ে যাচ্ছে মনে হয়...
রোজার মাস প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে, এখন ঈদের কেনা কাটার ধুম ঢাকা শহরে। অবশ্য ঢাকার কিছু কিছু মানুষেরা প্রথম রোজার দিন থেকেই মনে হয় ঈদের কেনাকাটার জন্য মার্কেট গরম করে ফেলেন। কিভাবে যে পারে সেটা তারাই ভাল জানেন, মার্কেটে আমার কোন কালেও যেতে ভাল লাগতো না। ঈদের সময় তো একদমই না। অনেকে বলে বসে আপনি মেয়ে মানুষ হয়ে শপিং করা পছন্দ করেন না !!!...
ছোটবেলায় ঈদের সময় আব্বু আম্মুর হাত ধরে যেতাম মার্কেটে। তখন অন্য রকমের আনন্দ লাগতো, কত সুন্দর সুন্দর জামা কাপড় দেখতাম, যাই দেখতাম কিনতে মন চাইতো। কিন্তু একটার বেশী জামা কখনোই কেনা হত না। যেহেতু আমি আমার খালাতো ভাইবোনদের মধ্যে ছিলাম সবার ছোট তাই খালাদের কাছ থেকেও ঈদের জামা কাপড় পেতাম ভালই। ওতেই অনেক খুশি থাকতাম। একবার আমার স্কুলের ( তখন ক্লাস নাইন বা টেন হবে) একটা বান্ধবী আমাকে জিজ্ঞাসা করে ছিল তোর এবার ঈদের জামা কয়টা...সে এও বললো, আমি এইবার ঈদে ১১ টা জামা বানিয়েছি। শুনে আমার খুব লজ্জা লেগেছিল ওকে বলতে যে আমি মাত্র ১ টাই জামা বানিয়েছি। যাইহোক সেটা না হয় ছোটবেলার কথা যদিও বয়সে তেমন ছোট ছিলাম না আমরা তখন। আমার সেই প্রাণ প্রিয় বান্ধবীর সব কিছুকেই বড়াই করে ফুটিয়ে তোলার একটা স্বভাব ছিল সব সময়ই। এখন সে কোথায়, কেমন আছে কে জানে...অনেক বছর কোনো যোগাযোগ নাই।
প্রতি বছরই ঈদ আসে, বাংলাদেশে থাকতে রোজার ঈদে কিছু না কিছু কেনাকাটা করা হতো... বাচ্চাদের জন্য তো অবশ্যই। এখন এই প্রবাসে
থাকতে থাকতে ভুলেই গেছিলাম যে ঈদের জন্য নতুন জামা কাপড় কিনতে হয়। ব্লগে কিছু কিছু লেখা পড়ে হঠাৎ মনে হলো আমাদের সেই সংস্কৃতিটার কথা। আমাদের বাচ্চারা মনে হয় কখনো জানবেই না যে, ঈদ আসলে মার্কেটে যেয়ে নতুন জামা কাপড় কেনাকাটার একটা ধুম পড়ে যায় বাংলাদেশে। সেখানে সবাই কত মজা করে ঈদের দিনে, যেটা এই প্রবাসী বাচ্চারা কখনো কল্পনাও করে না। তারা শুধু জানে ঈদের জন্য ২/৩ দিন স্কুল বন্ধ থাকে...ঈদের দিন একটা নতুন কাপড় পরতে হয় যেটা আগে থেকেই ঘরের আলমারিতে তোলা থাকে... পোলাও কোরমা আর মিষ্টি জাতীয় কিছু খাবার রান্না করা হয় যেটা তারা তেমন একটা পছন্দ করে না কারণ তাদের পিৎজা,বারগার আর স্যান্ডউইচ বেশী ভাল লাগে।
ঈদের দিনে সালাম করে যে সালামী পাওয়ার একটা আনন্দ ছিল আমাদের মাঝে সেটাও এই বাচ্চারা উপভোগ করবে না কখনো।
জীবনের সবকিছু কেমন যেন পাল্টে গেছে, একঘেয়ে হয়ে গেছে ...এখন আর ঈদের দিনে মোটেও ভাল লাগে না বরং আরও বেশী খারাপ লাগে। সুদূর প্রবাসে একা একা ঈদ করার যে কি আনন্দ তা ভাল ভাবেই টের পাওয়া যায়। আমরা আছি আবার এমন একটা দেশে যেখানে এশিয়ান মানুষ একদম নাই বললেই চলে এখন অবশ্য কিছু কিছু এশিয়ান আসা শুরু করেছে, মুসলিম খুবই কম তাও এই ঘানার মুসলিমদের সাথে আমাদের কোনোই মিল নাই কোনো দিক দিয়ে, এরা বেশীর ভাগই খ্রিষ্টান সংষ্কৃতির মত... তবে এইবার আমরা ঠিক করেছি কোরবানী ঈদটা অবশ্যই বাংলাদেশে যেয়ে সবার সাথে করবো, ইনশাল্লাহ...
*** অনেক হাবিজাবি কথা লিখে আপনাদের বিরক্ত করলাম...অনেকদিন কিছু লিখা হয় না, লিখতেও মন চাচ্ছিল তাই লিখলাম...বিরক্তি লাগলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ থাকলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




