somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পবিত্র হজ্জ কি বর্তমান পদ্ধতিতে ফরয?

১৪ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পবিত্র দ্বীন ইসলামের ভিতরের হাজারো কর্মকান্ডের মধ্যে পবিত্র হজ্জ শুধুমাত্র একটি কর্মকান্ড- নয়, বরং দ্বীন ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে পবিত্র হজ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। হিজরীর সাড়ে ১৪০০ বছর পর মুসলমানদের অকল্পনীয় মূর্খতার কারণে পবিত্র হজ্জের মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি আহকামের মধ্যেও পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি প্রবেশ করানো হয়েছে।

পবিত্র কুরআন শরীফে উল্লেখ আছে, “আপনাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, চাঁদ কেন সৃষ্টি করা হয়েছে, বলবেন পবিত্র হজ্জ এবং সময় নির্ধারণের জন্য।” (সূরা বাক্বারা: আয়াত শরীফ ১৮৯) বর্তমান যুগের মুসলমানরা হিজরীর চন্দ্র মাস পালন না করার কারণে চাঁদের উদয়/অস্ত সম্বন্ধে কোনো ধারণা রাখে না। বছরে দুই ঈদের চাঁদ নিয়ে যে আলাপ, আলোচনা হয় তাও হয় টিভি কিংবা রেডিও থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে। কেউ পশ্চিম আকাশে উঁকি দেয় না নির্দিষ্ট দিনে চাঁদ দেখার জন্য। আর সউদী আরব? ওরাতো চলে হুকুমাতের (রাজার) নির্দেশনায়, অদৃশ্য মহান আল্লাহ পাক কিংবা হায়াতুন নবী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশনা তাদের কাছে অনেক দূরের ব্যাপার।

পবিত্র হজ্জ সংক্রান্ত বিভ্রান্তিটা যেহেতু উপলব্ধির পর্যায়ে তাই হঠাৎ করে এবং সহজেই মানুষ সঠিকটা বুঝতে পারবে ধারণা করাটা বাতুলতা। শুরুতেই আমরা সেই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা স্মরণ করবো, যেখানে বলা হয়েছে- “ঈমানের স্তর ৩টি । মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশনার বাইরে কোনো কাজ হতে দেখলে তা হাত বা শক্তি দিয়ে বন্ধ করে দেয়াটা শক্তিশালী বা সর্বোচ্চ ঈমানের লক্ষণ। দ্বিতীয় স্তরটি হচ্ছে- বন্ধ করার জন্য মুখে বলা। আর তৃতীয় কিংবা সর্বনিম্নে স্তরের ঈমান হচ্ছে ওই অবাধ্য কার্যক্রমটিকে ঘৃণা করে স্থান ত্যাগ করা।” (মুসলিম শরীফ)

যদি কোনো ব্যক্তি একটি অন্যায় কাজকে ঘৃণা করে স্থান ত্যাগ না করে ওই কাজের সাথে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় জড়িয়ে পরে, তবে পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী ওই ব্যক্তির সর্বনিম্নে স্তরের ঈমানটুকুও নেই, সে বেইমান। সে আর যা কিছু হোক ঈমানদার মুসলমান হতে পারে না।

সউদী রাজা ইহুদী-নাছারাদের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার পর থেকে কোটি কোটি মুসলমানের গত ৬৮টি পবিত্র হজ্জ, দিন আগ-পিছ করে নষ্ট করেছে। প্রশ্ন আসতে পারে, রাজার কি লাভ মুসলমানদের পবিত্র হজ্জ নষ্ট করে? প্রশ্নকারীর কাছে পাল্টা প্রশ্ন, ওবামাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, নিজেরা টুইন টাওয়ার ভেঙে ৭টি মুসলমান দেশে ড্রোন দিয়ে নির্বিচারে নিরীহ মুসলমান শহীদ করা চালু রেখে আপনার কী লাভ? মূলতঃ ওবামা বাতেল শক্তি, সউদী রাজাও বাতেল শক্তি। পবিত্র দ্বীন ইসলাম হচ্ছে মানবজাতির জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত একমাত্র হক্ব পন্থা, আর ঐ হক্বের ক্ষতিসাধণের মধ্যেই রয়েছে বাতিলের স্বার্থকতা।
হক্ব আর বাতিলের যুদ্ধ শুরু থেকে কখনো থামেনি এবং থামবেও না ক্বিয়ামত পর্যন্ত। সমস্যা শুধু তথাকথিত মূর্খ হক্বপন্থীদের নিয়ে যারা মনে করে নিজেরা হক্বপন্থী, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাতিল দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে চলে বাতিলের দিক-নির্দেশনায়।

সউদী রাজার নির্ধারিত দিনে পবিত্র হজ্জ করার পক্ষ শক্তি বলবে, কিছু কিছু বিষয় আছে ব্যক্তির কিছু করার নেই, পবিত্র হজ্জ কবুল করার মালিক মহান আল্লাহ পাক, রাজা দিন পরিবর্তন করতে পারে, তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি চাইলে তারপরও হজ্জ কবুল করতে পারেন। যুক্তিটি হঠাৎ করে গ্রহণযোগ্য মনে হলেও আসলে যুক্তিটি সম্পূর্ণ মূর্খতাপ্রসূত। যদি পাল্টা প্রশ্ন করা হয়, রাজা পবিত্র হজ্জ যিলহজ্জ মাসে না করিয়ে যদি যিলক্বদ মাসে করান তখনও কী আমাদের জন্য হজ্জ ফরয থাকবে? সঠিক উত্তর হচ্ছে, পবিত্র হজ্জ এক মাস আগে পরে করলে যে অপরাধ বা অন্যায় একদিন আগে-পরে করলেও ওই একই অন্যায়।
সউদী রাজা মুসলমানদের অজ্ঞতা সুযোগে পবিত্র হজ্জের দিন আগ-পিছ করে কোটি কোটি মুসলমানের হজ্জ নষ্ট করে প্রতি বছর এক চরম অন্যায় কাজ করে যাচ্ছে। মূর্খদের পক্ষে বিষয়টি উপলব্ধি করা দুষ্কর; তবে হিদায়েত প্রাপ্ত জ্ঞানীরা বিষয়টি ঠিকই বুঝতে পারছে।

পবিত্র দ্বীন ইসলামে যুক্তির বাইরে কিছু নেই, কোনো একটা বিষয় যুক্তি দিয়ে বুঝতে না পারলে ধরে নিতে হবে যে, আমাদের বোঝার শক্তির ঘাটতির জন্য তা বুঝা যাচ্ছে না, পবিত্র দ্বীন ইসলামের নির্দেশনায় কোনো ভুল নেই। সউদী রাজা পবিত্র হজ্জের দিন পরিবর্তন করে যে চরম অন্যায় কাজ করছে, আমরা যদি তা শক্তি দিয়ে বন্ধ না করতে পারি তবে, মুখে বলতে পারি কিংবা সর্বনিম্নে স্তরের ঈমানদার হিসেবে ঘৃণা করে বিরত থাকতে পারি। তবে যদি তার নির্ধারিত দিনে পবিত্র হজ্জ পালন করি তবে উপরোল্লিখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমরা উক্ত অন্যায় কাজে (রাজার নির্ধারিত দিনে) নিজেকে জড়িয়ে রাজার অন্যায় কাজে সহযোগিতা করছি। প্রমাণিত হয় যে, সর্বনিম্ন স্তরের ঈমান ও আমাদের মধ্যে নেই, প্রকারন্তরে আমরা সাব্যস্ত হচ্ছি বেঈমান হিসাবে, হতে পারি আমরা অনেক কিছু শুধু ঈমানদার মুসলমান ছাড়া। অর্থাৎ বর্তমান যামানাতে রাজা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ অনুযায়ী পবিত্র হজ্জ করতে সুযোগ দেন একমাত্র তবেই বিশ্ব মুসলমানদের জন্য ৩টি শর্তপূরণ সাপেক্ষে পবিত্র হজ্জ ফরয নতুবা বর্তমান পরিস্থিতিতে পবিত্র হজ্জ কোন মুসলমানের জন্য ফরয নয়। নিজেকে ঈমানদার রাখতে হলে কখনই সউদী রাজার অন্যায় কাজের সাথে জড়ানো যাবে না। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- ওরা কারা, যারা কিনা সউদী রাজার পক্ষ নিয়ে ভুল দিনে হজ্জ করাকে জায়িয ফতওয়া দেয়? এদেরকে চিহ্নিত করতে পারলে বিষয়টির গূঢ়তত্ত্ব উপলব্ধি করার সহজ হবে।

এরা হচ্ছে:
১। জামাত-শিবিরের তথাকথিত হুজুরেরা যারা সউদী রাজার অর্থে লালিত পালিত।
২। আহলে হাদীছ এবং জাকির নায়েকের পিসটিভি, দু’দলই ভারতের ‘র’ এর অর্থে নিয়ন্ত্রিত।
৩। গাফেল আবেদ, যারা প্রচুর ইবাদত-বন্দেগী করে তবে ঈমান, আক্বীদা ও শরীয়ত সম্বন্ধীয় জ্ঞানের ক্ষেত্রে গন্ডমূর্খ।
৪। উলামায়ে ‘সূ’ যারা ধর্মব্যবসায়ী যাদেরকে পবিত্র কুরআন শরীফ-এর ভাষায় বলা হয়, ‘বালহুম আদ্বল’ অর্থাৎ পশুর চেয়ে অধম।
৫। এক দল মুসলমান আছে যাদের ইসলাম সম্বন্ধে কোনো জ্ঞান নেই, তারা চলে- হয় উলামায়ে ‘সূ’দের দিক-নির্দেশনায় কিংবা নিজ বুদ্ধিতে। আক্বীদার স্বচ্ছতা এবং ফরয পরিমাণ ইলম না থাকার কারণে তারা ‘নেক সুরতের বাতিল’ দ্বারা বিভ্রান্ত।
৬। পবিত্র হজ্জের আধ্যাত্মিক উন্নতি অর্জন ব্যতীত একটি ব্যবসায়িক দিকও আছে, যেসব ব্যক্তি পবিত্র হজ্জ সংক্রান্ত ব্যবসার সাথে জড়িত তারাও না বুঝেই রাজার নির্ধারিত দিনে পবিত্র হজ্জের পক্ষে কথা বলবে।
আসুন আমরা সকলে মিলে সউদী রাজার হিদায়েতের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে দোয়া করি এবং আবেদন করি বলি যে, যদি হিদায়েত তাদের নছীবে না থাকে তবে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম এর জন্য যা ভালো মনে করেন তাই যেন করেন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:৩০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×