somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীরবতা (সম্পূর্ন কাল্পনিক)

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গ্রামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি হলেন নবাব আলী চৌধুরী।ঘরে আছে এক স্ত্রী।দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের কোন ছেলে মেয়ে ছিল না।আত্মীয়-স্বজনেরা দ্বিতীয় বিয়ের কথা অনেকবার বলেছিল কিন্তু রাজী হন নি।কারন সে তার স্ত্রীকে খুব ভালবাসতেন।একদিন তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ভ্রমনে বের হলেন,পথিমধ্যে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্ত্রী মারা যায়।এত বড় বাড়ী,এত সব সম্পত্তি।এবার তিনি অন্যদের কথা ফেলতে পারলেন না।দ্বিতীয় স্ত্রী ঘরে আনতে হল।দেখতে দেখতে তাদের একটা মেয়ে হল।মেয়েটির নাম রাখেন অঞ্জনা।কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মেয়েটির জন্মের সময় মা মারা গেল।বাচ্চা মেয়েটিকে তার দুসম্পর্কের এক ফুফি দেখাশোনা করেন।আস্তে আস্তে বড় হতে লাগল।মেয়েটি ছিল জেদী প্রকৃতির।সামন্য কিছুতেই রেগে যেত।দেখতে দেখতে সময় পেরিয়ে চলল।একদিন মেয়েটি মেট্রিক পাস করল।এবার তাকে কলেজে ভর্তি করাল।নিয়মিত কলেজে যায়।কিছু দিন যেতে না যেতে ক্লাসের এক ছেলেকে ভাল লেগে গেল।ছেলেটির নাম ছিল অয়ন।সেও মনে মনে তাকে খুব ভালবাসত।একদিন অয়ন মেয়েটির খাতায় লিখে দেয় "তোমার সাথে কিছু কথা আছে,আগামীকাল ক্লাস শেষে কেন্টিনে আসবে"।পরদিন কয়েকটা বান্ধবী সহ অয়নের সাথে দেখা করল।কথা হল অনেক।সেই থেকে নিয়মিত কথা হয়।এখন এদের মধ্যে অনেক ভালবাসা।অঞ্জনার দূর সম্পর্কের এক মামাত ভাই এই সম্পর্কের কথা অঞ্জনার বাবাকে বলে দেয়।মেয়ের কাছে কথাটির সত্যতা জানতে চাইল।অঞ্জনাও ঠিক ঠিক সব বলে দিল।একমাত্র মেয়ের আবদার বলে কথা।বাবাও রাজি হয়ে গেলেন।এখন দুজনেই অনার্সে পড়ে।শর্ত ছিল অনার্স পাস করতে হবে।দিন যায় মাস যায়।এ ভাবে সময় পেরিয়ে যায়। হঠাৎ একদিন অয়ন খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল।ডাক্তার কাছে নিয়ে গেল অনেকগুলো টেষ্ট করাল।এতে তার ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে।ডাক্তার অয়নের মাকে ডেকে বলল সে যে কোন সময় মারা যেতে পারে।অয়ন কথাগুলো জেনে গেল।যেহেতু তার জীবন প্রদীপ যে কোন সময় নিবে যেতে পারে।তাই সে অঞ্জনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে চাইল।এখন সে অঞ্জনার সাথে তেমন কথা বলে না।অঞ্জনা বিষয়টি লক্ষ্য করল।সে যখন অয়নের সাথে কথা বলতে চাইল অয়ন তার সাথে খারাপ আচরণ করল এবং বলল আমি তোমাকে চিনি না।তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই এবং ছিল না।অঞ্জনার সাথে আরো অনেক মিথ্যে অভিনয় করল।অয়নের কথা গুলো শুনে অঞ্জনা মনে মনে খুব কষ্ট পেল।রাগ করে বাবাকে বলল আমার জন্য পাত্র দেখ।পরে বাবাকে সব খুলে বলল।তার বাবাও বিষন কষ্ট পেল।সে জন্য মেয়েকে লন্ডন ফেরত এক ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিল।বিয়ের পর জরুরী কাজে একসপ্তাহের জন্য লন্ডন যেতে হচ্ছে বলে চলে গেল।সেখান যাওয়ার পর আর কোন যোগাযোগ করে রাখে নাই।কয়েক মাস পর অঞ্জনার কাছে ডিবোর্স লেটার পাঠায়।এখন একবুক কষ্ট নিয়ে বাবার বাড়ীতে অঞ্জনার অবস্থান।এদিকে কয়েক দিন হল অয়ন অসুস্থ হয়ে মারা যায়।আর মারা যাওয়ার সময় মার হাতে একটা চিঠি দিয়ে বলল এটা অঞ্জনার কাছে পৌছে দিও।সেই শেষ চিঠি ছিল এরুপ...

প্রিয় অঞ্জনা,
তুমি কেমন আছ?আমার সাথে রেগে আছ বুঝি?আসলে ঐ দিন আমি তোমার কাছ থেকে একটা বিরাট সত্য গোপন করেছিলাম।কিন্তু আজ তোমাকে সব খুলে বলব।নিজেকে চরম অসত্যের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে চাই।তুমি জান মাঝে মাঝে আমার বিষন মাথা ব্যাথা হত।কিন্তু ডাক্তারি টেষ্টের পর যখন জানতে পারি আমার ব্রেইন টিউমার হয়েছে তখন তোমাকে আমার কাছ থকে দূরে রাখতে চেয়েছিলাম।তাই তোমার সাথে এত সব মিথ্যে অভিনয় করেছিলাম।আসলে আমি তোমাকে মনে প্রাণে ভালবাসি।আর তোমার স্বামীকে আমার কথা বলিও না।তোমাদের সংসারে ঝামেলা হতে পারে।আমাকে ক্ষমা কর।ভাল থেকো।

এই চিঠি পড়ে অঞ্জনার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হল না শুধু দুচোখের কোনায় জ্বল।এখন সে আগের মত কারো সাথে কথা বলে না।কেউ কিছু বললে হা করে চেয়ে থাকে।আর মাঝে মাঝে চিঠিটা পড়ে নিরবে কাঁদে।কিছু দিন পর অঞ্জনা তাদের বাড়ীর দক্ষিনে বাগানের একটা গাছের সাথে ঝুলে নিজে বিসর্জন দিল।এখন তাদের বাড়ী সেই আগের মতই ফাঁকা।কোন কোলাহল নেই।নির্জন নীরবতা এসে যেন বাসা বেঁধেছে ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাঁআআআচ্চুউউউ! :) :D ;)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৩৩



হাঁচতে নাকি জানে না কেউ,
কে বলেছে বোন
এই দেখোনা কত্ত হাঁচির
ওজন শত টন।

কিম হাঁচে বাড়া ভাতে,
বাইডেন হাঁচে তার সাথে সাথে,
লালচে চীনের জোরসে হাঁচি,
কাঁদে সবুজ ঘাস।
মাদার রুশের হাঁচি দেখে
হয় যে বনবাস!!

বনবিবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেইন্ট মার্টিন ও কোক ইস্যু

লিখেছেন নিবারণ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪

বিগত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে চর্চিত বিষয়, কোকের বয়কট ও গত দুই দিন ধরে সেইন্ট মার্টিন মায়ানমার দখল করে নেয়ার খবর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্রিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, মায়ানমার সেইন্ট মার্টিন দখল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে গান গাইলাম (সাময়িক)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৪:০৮

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে আমি আদর করে 'আই' ডাকি। আইকে দিয়ে অনেক কাজই করাতে হয়। এবারে, আমাদের ৫ ভাইদের নিয়ে একটি গান বুনেছি। আমরা ৫ ভাই অনেক দিন একসাথে হই না। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×